Author Archives: Hosna Jannat Tonny

স্টার আপেল: দেশে চাষযোগ্য বিদেশি ফল

star-apple

স্টার আপেল গ্রীস্মম-লীয় ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Chrysophyllum cainito L.। এটি মূলত সফেদা গোত্রের একটি সুস্বাদু ফল। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিদ্যমান দুর্লভ গাছসমূহের মধ্যে একটি হলো স্টার আপেল। এর কয়েকটি গাছ রয়েছে কৃষি অনুষদের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সামনে। গাছগুলো বেশ বড়। সবুজ আপেলের মতো ফল ধরে। ফলগুলো পাকলে হাল্কা বেগুনি রঙ ধারন করে। ফলের ভিতরে মাঝে সাদা এবং চারপাশে উজ্জ্বল বেগুনি রঙ বিদ্যমান। ফলের ভিতরে চারটি বিচি থাকে, দেখতে গাবের বিচির মতো, তবে আকারে অনেক ছোট। ফলটি মিষ্টি স্বাদযুক্ত এবং খেতে বেশ সুস্বাদু। ফলের স্বাদ সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। কখনো গাব কিংবা সফেদার স্বাদের মতো মনে হয়।

নামকরণ
স্পেনে এটাকে কাইমিটা বা এস্টেরেলা, ওয়েস্ট ইন্ডিজে পোম সুরেট, বারবাডোজে স্টার পাম, কলম্বিয়াতে কাইমো, আর্জেন্টিনাতে আগুয়ে বা অলিভোয়া, চীন বা সিঙ্গাপুরে এটাকে চিকল ডুরিয়ান বলা হয়। তবে এর ভেতরের বীজগুলো ও পাল্প স্টার এর মতো থাকায় সাধারণভাবে এটাকে স্টার আপেল বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এটি ভালোভাবেই অভিযোজিত।

উৎপত্তি ও বিস্তার
সাধারণভাবে স্টার আপেল সেন্ট্রাল আমেরিকার ফল বলা হলেও এ নিয়ে মতভেদ আছে। কারও মতে এর উৎপত্তি মেক্সিকো ও পানামা অথবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গুয়াতেমালা, উত্তর আর্জেন্টিনা, পেরু, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুজ, বারমুদা, হাইতি, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও হাওয়াই প্রভতি অঞ্চলে বর্তমানে স্টার আপেল চাষ হয়।

গাছের বৈশিষ্ট্য
স্টার আপেল গাছ বৃহৎ আকারের শোভাময়ী বৃক্ষ। উচ্চতা সাধারণত ৮-৩০ মিটার, কা- ১-৩ মিটার, বাদামি রোমশ এবং শাখা কাটলে সাদা কষ বের হয়। পাতা দোরঙা। অর্থাৎ ওপরের পিঠ গাড় সবুজ ও নিচের পিঠ মেরুন বাদামি। পাতা কিছুটা ডিম্বকার, বর্শার ফলার মতো। এই গাঢ় সবুজ চর্মবৎ পাতার নিচের দিক খয়েরী রঙের সুক্ষ রোমযুক্ত। পাতা ৫-১০ সেমি. লম্বা ও ৪-১০ সেমি. চওড়া হয়ে থাকে। পত্র কক্ষে ছোট গুচ্ছে সবুজাভ হলুদ বর্ণের ফুল উৎপন্ন হয় যাতে ৫টি দল থাকে।

ফল গোলাকার কখনো সামান্য লম্বাটে, ৫-১০ সেমি. লম্বা এবং ৫-১০ সেমি. ব্যাসযুক্ত সবুজ থেকে বেগুনি বর্ণের হয়ে থাকে। ফলের ভিতরে নরম জিলেটিনযুক্ত দুগ্ধবৎ সাদা মিষ্টি স্বাদযুক্ত পরস্পর সংযুক্ত ৬-১১টি কোষ থাকে যা কেন্দ্রীয় অক্ষের চতুর্দিকে ঘনসন্নিবিষ্ট থাকে। আড়াআড়ি কাটলে এটা এ স্টার বা তারার মতো দেখায় বলে সম্ভবত এ ফলটিতে স্টার আপেল বলা হয়।

আবহাওয়া ও মাটি
স্টার আপেল ট্রপিক্যাল বা সাব ট্রপিক্যাল অঞ্চলে এলাকায় ৪২০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত জন্মাতে দেখা যায়। গরম আবহাওয়ায় এটা ভালো জন্মে। তাপমাত্রা হিমাংকের বা তার নিচে নেমে গেলে এ গাছ মারা যায়। স্টার আপেল যে কোন ধরনের সুনিষ্কাশিত গভীরতা সম্পন্ন বেলে থেকে এঁটেল মাটিতে চাষ করা যেতে পারে।

জাত
স্টার আপেল এর ফলত্বকের রঙ অনুসারে দুই ধরনের জাত দেখা যায়। একটি সবুজ ও অন্যটি বেগুনি রঙের হয়ে থাকে। ভালো ফল ধরে এমন গাছ থেকে অঙ্গজ উপায়ে তৈরিকৃত কলম লাগানো ভালো। শাখা কলমের চারা ২-৪ বছর পর অপরদিকে বীজ এর চারায় ৭-১০ বছর বয়সে ফল দেয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্টার আপেল বীজ থেকে উৎপন্ন চারা ব্যবহার করা হয়। এর বীজে বেশ কয়েক মাস অংকুরোদগম ক্ষমতা থাকে এবং রোপণের পর দ্রুত (৭-১০ দিন) চারা গজায়। গুটি কলমে ৪-৭ মাসে শিকড় আসে। একই জাতের গাছের বীজ থেকে উৎপাদিত চারার উপর বাডিং বা গ্রাফটিং এর মাধ্যমে ও বংশবিস্তার করা যায়। বাডিং বা গ্রাফটিং এর চারা লাগানোর ১-২ বছর পরই গাছে ফল ধরতে শুরু করে অপরদিকে বীজ চারা থেকে রোপিত গাছ ৫ থেকে ১০ বছর পর ফল ধরে।

চাষাবাদ
ভালো নিকাশযুক্ত যে কোন রকম মাটিতে স্টার আপেল গাছ ভালো জন্মায়। ৬-৮ মিটার দূরে দূরে বর্গাকারে বা ষড়ভূজী পদ্ধতিতে অন্যান্য ফল যেমন আম লিচু ইত্যাদির মতো করে গাছ লাগানো যায়। মাঝারি আকারের গাছ বিধায় চারা লাগানোর আগে চারার জায়গায় ৪৫ সেন্টিমিটার (১ হাত) ব্যাসের ৪৫ সেমি. গভীর গর্ত করে তাতে ১ ঝুড়ি পচা আবর্জনা বা পুকুরের তলার সার মাটি, আধা  কেজি টি.এস.পি বা ১ কেজি এস.এম.পি অথবা ৩ কেজি হাড়ের গুঁড়া, ২৫০ গ্রাম এম.পি অথবা ২ কেজি চুলার ছাই দিয়ে তা ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে এবং তার ৭-১০ দিন পর চারা লাগাতে হবে।

সদ্য লাগানো চারা গাছে প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত সাপ্তাহিকভাবে নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। পরবর্তীতে মাটিতে রস না থাকলে সেচ দিতে হয়। তবে গাছে ফুল আসার পর পানি সেচ দিলে ফল ধারন বৃদ্ধি পায়। স্টার আপেল গাছে তেমন সার প্রয়োগ করা হয় না তবে দুর্বল মাটিতে সার প্রয়োগে ফলের আকার ও ফলন বাড়ে।

ফল সংগ্রহ
শীতের শেষ থেকে গ্রীস্মের প্রথম পর্যন্ত স্টার আপেল এর পাকা ফল সংগ্রহ করা যায়। তবে আমাদের দেশে চৈত্র মাসে (মার্চ-এপ্রিল) সবচেয়ে বেশি পাকা স্টার আপেল পাওয়া যায়। গাছ থেকে পাকা ফল এর রঙ কিছুটা হালকা হয়ে এলে আর ফলত্বক স্পঞ্জ এর মতো বা রাবার বলের মতো নরম হলে ফল সংগ্রহ করা হয়। কাঁচা ফলে আঠা ও কষ্টাভাব থাকে ফলে খাওয়া যায় না। গাছ থেকে সাবধানে পাড়তে হয় কেননা মাটিতে পড়লে নরম ত্বকের এ ফল ফেটে যায় ও বাজারমূল্য কমে যায়।

ফলন
একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ফলন্ত গাছ থেকে গাছের আকারভেদে প্রতিটি ৫০-১০০ গ্রাম ওজনের ১৫০০-৩০০০টি ফল পাওয়া যেতে পারে যার ওজন ৬০ থেকে ২৫০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণভাবে পাকা ফল ২-৩ দিন রাখা গেলেও নিম্ন তাপমাত্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত এ ফল সংরক্ষণ করা যায়। স্টার আপেল এর বীজ ও খোসা বাদে ভেতরের মাংসল অংশ খাওয়া যায়। পাকা ফলের মাঝ বরাবর ছুরি দিয়ে কেটে চামচ দিয়ে ভেতরের অংশ তুলে খেতে এটা খুবই সুস্বাদু। এর নরম শাঁস থেকে বীজ আলাদা করে ডেজার্ট হিসাবে ও সালাদের সাথে খাওয়া যায়। জ্যামাইকাতে এটাকে বিবাহ উৎসবে খাওয়া হয়। অনেকসময় স্ট্রবেরি ও ক্রীম সহযোগেও স্টার আপেল খাওয়া হয়।

ফলের পুষ্টিগুণ
এ ফলটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে প্রোটিন থাকে ০.৭২-২.৩৩ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৪.৬৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭.৪-১৭.৩ মিলি গ্রাম, ফসফরাস ১৫.৯-২২.০ মিলিগ্রাম ও আয়রন ০.৩০-০.৬৮ মিলিগ্রাম।

নানাবিধ ব্যবহার
স্টার আপেল গাছের কাঠ থেকে বিভিন্ন ধরনের দামি আসবাবপত্র তৈরি করা যায়। রাবার তৈরিতে এ গাছের নির্যাস ব্যবহার করা হয়। এ গাছের ব্যাপক ওষুধিগুণও রয়েছে। স্টার আপেল এর পাকা ফল খেলে ফুসফুসের প্রদাহ ও নিউমোনিয়া রোগের উপশম হয়। এর ফল ডায়াবেটিস রোগে ব্যবহৃত হয়। ভেনিজুয়েলাতে পাকস্থলী ও অন্ত্রের গোলযোগে কম পাকা ফল খাওয়া হয়। তবে এরূপ কাচা ফল বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। পানিতে ফুটানো ফলের খোসা, বাকল ও পাতার কষ পেক্টোরাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর ট্যানিন সমৃদ্ধ বাকল উত্তেজক হিসেবে, ডায়রিয়া প্রতিরোধে, আমাশয়ে, রক্তপাত বন্ধে এবং গনোরিয়া রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। কিউবাতে এটা ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

আজকাল প্রায়শই কিছু নার্সারির লোকেরা এ গাছকে আপেল গাছ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। যে গাছটিকে আপেল গাছ বলা হচ্ছে, সেটি আপেল নয়, স্টার আপেল ফলের গাছ। এদেশে আপেল হবে না। কারণ আপেল জন্মাতে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় বরফ পড়তে হয়। স্টার আপেল দেখতেও অনেকটা সবুজ আপেলের মতো। তাই ওকে আপেলের ভাই বলা চলে। এ দেশে আপেল হয় না সত্য তবে স্টার আপেল হয়। গাজীপুরে বিএআরআইয়ের উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে স্টার আপেলের বয়সী গাছটাতে যেভাবে ডাল ভেঙে ফল ধরেছে, তাতে অবাক না হয়ে পারা যায় না। তা থেকে আশা করা যায় এ দেশে ও ভালো ফল ফলতে পারে।

পাহাড়ি অঞ্চলে স্টার আপেল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বসতবাড়িতেও শোভাময় এ গাছটি লাগানো যেতে পারে। সামনে আসছে বর্ষাকাল। দেশের বিভিন্ন নার্সারিতে এ গাছটির চারা পাওয়া যায়। আপনার বাগানবাড়ির শোভা বর্ধন ও বৈচিত্র্য আনার জন্য দু’ একটা স্টার আপেল গাছ বাড়ির আঙ্গিনায় লাগাতে পারেন।

সুত্রঃ AgriNews24.com

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, প্লাণ্ট প্যথলজি বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

Nutrition Olympiad 2017 Taking the youths on board

Malnutrition is one major challenge for Bangladesh to achieve the related sustainable development goal by 2030. The potentials of youths’ engagement in addressing the nutrition-related challenges and encountering malnutrition in Bangladesh came into focus during the Nutrition Olympiad 2017, held on March 6 last at the Krishibid Institution Bangladesh, Khamar Bari. The Bangladesh Institute of ICT in Development (BIID) jointly with the Department of Agricultural Extension (DAE), INGENAES/USAID organised the event. ICT Division, BASIS, ULAB, Farm Fresh, Nutrition Clubs and other organisations also supported the event as partners. The Nutrition Club initiative of BIID hosted the event.

The Nutrition Olympiad proved to be an excellent platform for networking and knowledge sharing. A rich combination of activities made the event enlightening. Activities included nutrition hackathon, showcasing Nutrition Club activities, demonstration of homestead / school gardening, networking, drawing food plates, award giving ceremony and workshop.

Dr Sue Lautze, FAO Representative Bangladesh, inaugurated the session while Md. Manzurul Hannan, Director General, Department of Agricultural Extension (DAE) and representatives from the private sector and development partners joined the event. Dr Sue recognised the day as her best day in Dhaka after seeing all the enthusiastic youth volunteers committed to addressing the malnutrition challenge in Bangladesh.

Members from various Nutrition Clubs had the opportunity to showcase their activities and uniqueness in the stalls to the audience.  A separate stall was set up for displaying BIID’s newest innovative product Nutrition Gift Pack (NGP). The Nutrition Gift Pack was launched during the event. The Gift Pack received excellent feedback from buyers and visitors.

The concept of Nutrition Club (NC) has been introduced by BIID to promote nutrition awareness among communities by engaging young volunteers from schools and universities to spread the nutrition messages all over the country. The clubs are hosted and guided by the academic institutions and the BIID facilitates basic training on nutrition introduce various nutrition-sensitive activities, share communication materials etc. BIID and the respective NC set targets, develop annual plan of action and strategies to achieve the goals. The NC functions under a standard operating procedure (SOP) developed by BIID.

Primarily the NCs focus on building awareness about nutrition among students, parents and communities, sourcing of nutrition-rich foods and smart cooking. Around 10 Nutrition Clubs are functional now and the BIID foresees to extend the network up to 100 by 2017.

The BIID introduced the Nutrition Gift Pack (NGP) initiative during the Nutrition Olympiad to spread the nutrition awareness to the community level through a sustainable business model. Currently the nutrition gift pack consists of a Food Plate. The food plate is basically a communication material designed for pregnant women. The objective of the Food Plate is to raise awareness regarding nutrition among pregnant women; the plate indicates the proportion of food from each food group that should be consumed during the time of pregnancy. The NGP will be available through the Nutrition Clubs and local partners.

The BIID plans to bundle nutrition inputs such as seeds of vegetables and fruits in the NGP soon with collaboration from the private sector partners. The objective for introducing these inputs will be to encourage household members to pursue homestead gardening so that they can consume a healthy proportion of fruits and vegetables throughout the year.

Buy One Give One is the principle of the Nutrition Gift Pack model. Once someone buys a Gift Pack (Premium) another similar item will be given to the under-privileged community. Therefore, the person buying the premium gift pack will be performing a charitable act by spreading awareness about nutrition. There will be also regular packs available to ensure access to the NGP by everyone for their own use.

The BIID considers the Nutrition Gift Pack as most innovative and sustainable way to fight stunting and malnutrition, it will in the long run significantly contribute to improve health status of underprivileged communities and achieve SDGs 1, 2 and 5.

The event ended with a call for collaboration to organise the next Nutrition Olympiad 2018 on a bigger scale and ensure wider participation.

Source: Financial Express

06 May, 2017

ছাদে বাগান প্রযুক্তি

images23
ছাদে বাগান কাকে বলে
সাধারণত: পাকা বাড়ির খালি ছাদে অথবা বেলকনীতে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে ফুল, ফল, শাক-সবজির বাগান গড়ে তোলাকে ছাদে বাগান বলা হয়। ছাদে বাগান সৃজনের সময় খেয়াল রাখতে হবে বাগান সৃজনের জন্য ছাদের কোন প্রকার ক্ষতি যেন না হয়। এজন্য রোপনকৃত গাছের টব গুলো ছাদের বীম বা কলামে নিকটবর্তী স্থান বরাবর স্থাপন করতে হবে। ড্রাম অথবা টব স্থাপনের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন এগুলো সরাসরি ছাদের উপরে বসানো না হয়। এতে ছাদ ড্যাম্প বা সেঁতসেঁতে হয়ে যেতে পারে। তাই রিং-এর উপর বা ইটের উপর এগুলো স্থাপন করলে নিচে দিয়ে আলো বাতাস চলাচল করবে এবং ছাদও ড্যাম্প হতে রক্ষা পাবে। নেট ফিনিসিং এর মাধ্যমেও ছাদকে ড্যাম্প প্রতিরোধ করা যায়।
ছাদে চাষ উপযোগী গাছ
ক) আম- বারি আম-৩ (আম্রপালি), বাউ আম-২ (সিন্দুরী);
খ) পেয়ারা- বারি পেয়ারা-২, ইপসা পেয়ারা-১;
গ) কুল- বাউ কুল-১, ইপসা কুল-১ (আপেল কুল) , থাই কুল-২;
ঘ) লেবু- বারি লেবু -২ ও ৩, বাউ কাগজি লেবু-১;
ঙ) আমড়া- বারি আমড়া-১, বাউ আমড়া-১;
চ) করমচা- থাই করমচা;
ছ) ডালিম- (দেশী উন্নত);
জ) কমলা ও মাল্টা – বারি কমলা-১, বারি মাল্টা – ১;
ঝ) জামরুল- বাউ জামরুল-১ (নাসপাতি জামরুল), বাউ জামরুল-২ (আপেল জামরুল) ইত্যাদি।
ঞ) সবজি- লাল শাক, পালং শাক, মুলা শাক, ডাটা শাক, কলমী শাক, পুইঁশাক, লেটুস, বেগুন, টমেটো, মরিচ ইত্যাদি।
ছাদে গাছ লাগানোর পদ্ধতি
ক) হাফ ড্রাম এর তলদেশে অতিরিক্ত পানি নিস্কাশনের জন্য ১ ইঞ্চি ব্যাসের ৫ / ৬ টি ছিদ্র রাখতে হবে।
খ) ছিদ্র গুলোর উপর মাটির টবের ভাঙ্গা টুকরো বসিয়ে দিতে হবে।
গ) ড্রামের তলদেশে ১ ইঞ্চি পরিমাণ ইটের খোয়া বিছিয়ে তার উপর বালি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
ঘ) সমপরিমাণ দোঁআশ মাটি ও পঁচা গোবরের মিশ্রণ দিয়ে ড্রামটির দুই তৃতীয়াংশ ভরার পর হাফ ড্রাম অনুযায়ী ড্রাম প্রতি মিশ্র সার আনুমানিক ৫০-১০০ গ্রাম প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভাল ভাবে মিশিয়ে দিতে হবে এবং সম্পুর্ণ ড্রামটি মাটি দিযে ভর্তি করে নিতে হবে।
ঙ) ১৫ দিন পর ড্রামের ঠিক মাঝে মাটির বল পরিমাণ গর্ত করে কাংখিত গাছটি রোপন করতে হবে। এ সময় চারা গাছটির অতিরিক্ত শিকড়/ মরা শিকড় সমূহ কেটে ফেলতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে মাটির বলটি যেন  ভেঙ্গে না যায়।
চ) রোপিত গাছটিতে খুটি দিয়ে বেধে দিতে হবে।
ছ) রোপনের পর  গাছের গোড়া ভালভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।
জ) সময়ে সময়ে প্রয়োজন মত গাছে পানি সেচ ও উপরি সার প্রয়োগ, বালাই দমন ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঝ) রোপনের সময় হাফ ড্রাম প্রতি ২/৩ টি সিলভা মিক্সড ট্যাবলেট সার গাছের গোড়া হতে ৬ ইঞ্চি দুর দিয়ে মাটির ৪ ইঞ্চি গভীরে প্রয়োগ করতে হবে।
ঞ) গাছের বাড়-বাড়তি অনুযায়ী ২ বারে টব প্রতি ৫০/১০০ গ্রাম মিশ্র সার প্রয়োগ করে ভাল ভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
ট) গাছের রোগাক্রান্ত ও মরা ডালগুলো ছাটাই করতে হবে এবং কর্তিত স্থানে বোর্দ পেষ্ট লাগাতে হবে।
বালাই দমন
বালাই দমনে পরিবেশ বান্ধব আইপিএম বা আইসিএম পদ্ধতি অনুসরন করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিরেকে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার না করে জৈব রাসায়নিক বালাই নাশক যেমন- নিমবিসিডিন, বাইকাও ব্যাবহার করা যেতে পারে।
মিলি বাগঃ পেয়ারা, কুল, লেবু, আম, করমচা, জলপাই, বেগুন প্রভৃতি গাছে এ পোকার আক্রমন দেখা যায়।
লক্ষনঃ পাতার নিচে সাদা তুলার মত দেখা যায়। পোকা উড়তে পারেনা। টিপ দিলে হলুদ পানির মত বের হয়ে আসে। গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে, পাতা লাল হয়ে যায়, পাতা ও ফল ঝরে পড়ে, ফলের আকার বিকৃত হয়ে যায় অনেক সময় পাতায় শুটি মোল্ড রোগের আক্রমন হয়।
দমনঃ হাত বাছাইয়ের মাধ্যমে পোকা দমন করতে হবে। প্রয়োজনে জৈব বালাই নাশক প্রয়োগ করতে হবে।
সাদা মাছিঃ পেয়ারা, লেবু, জলপাই, বেগুন প্রভৃতি গাছে এ পোকার আক্রমন দেখা যায়।
লক্ষনঃ পাতার নিচে সাদা তুলার মত মাছি পোকা দেখা যায়। পোকা উড়তে পারে। গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে, পাতা লাল হয়ে যায়, পাতা ঝরে পড়ে, পরবর্তী মৌসুমে ফলের উৎপাদন ব্যাপক হারে হ্রাস পায়। পাতায় শুটি মোল্ড রোগের আক্রমন হয়।
দমনঃ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হুইল পাউডার মিশিয়ে পাতার নিচে সেপ্র করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
শুটি মোল্ডঃ ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয়। পাতার ওপর কাল কাল পাউডার দেখা দেয়।  গাছের ফলন ব্যহত হয়। আক্রমর ব্যাপক হলে পাতা ও ফল ঝরে যায়।
দমনঃ টিল্ট-২৫০ ইসি, প্রতি লিটার পানিতে ০.৫০ মিঃলিঃ মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
সুত্রঃ www.krishibangla.com

বহুগুণে গুণান্বিত কাসাভা

kasava-cover-pic20170408164820

আফ্রিকা মহাদেশের বেশির ভাগ মানুষ কাসাভা খেয়ে জীবন ধারণ করে। তবে বাংলাদেশে এখনো এটি নিতান্তই অপরিচিত। গুল্মজাতীয় এ উদ্ভিদটি বাংলাদেশে চাষ না হলেও পাহাড়ে-জঙ্গলে দীর্ঘদিন থেকে এ গাছ জন্মায়। স্থানীয়ভাবে কাসাভার ব্যবহার আছে অনেক আগে থেকেই। গ্রামের মানুষ কাসাভার কন্দকে ‘শিমুল আলু’ বলে। গাছটির পাতা অনেকটা শিমুল গাছের মতো দেখতে বলেই হয়তো এরকম নামকরণ।

পুষ্টিগুণ

কাসাভা আটার পুষ্টিগুণ গমের আটার চেয়ে অনেক বেশি। এই আটা থেকে রুটি ছাড়াও অনেক প্রকার সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায়। কাসাভা ভিটামিনের দিক দিয়েও শীর্ষে। কাসাভার খাদ্যমানের মধ্যে প্রোটিন আছে ১০ শতাংশেরও বেশি। অ্যামাইনো অ্যাসিড ও কার্বোহাইড্রেট আছে যথাক্রমে ১০ ও ৩০ শতাংশ। আরো আছে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ। খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম কাসাভা আলুতে রয়েছে ৩৭ গ্রাম শর্করা, ১.২ গ্রাম আমিষ, ০.৩ গ্রাম চর্বি, ৩৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ০.০৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৩৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং ১৪৬ ক্যালরি খাদ্যশক্তি।

রোগ প্রতিরোধ

সব পুষ্টিগুণ মিলে সেলুলোজের সঙ্গে পাওয়া যাবে মিনারেল ও ফাইবার গ্লুটামিন। এর আঠালো অংশ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ উপশমের ক্ষেত্রে কাজ করে। কাসাভা ফাইবার বাড়তি কোলেস্টরলের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে। এমনকি এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।

বাজারজাত

সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে কাসাভা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ইতোমধ্যে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাসাভা থেকে আটা ও স্টার্চ তৈরি করে বাজারজাতকরণের উদ্যোগে নিয়েছে।

kasava-pic-in-(1)-sm20170408164355

প্রক্রিয়াজাত

কাসাভা আলুকে প্রক্রিয়াজাত করে তা থেকে আটা ও স্টার্চ পাওয়া যায়। এই আটা দিয়ে রুটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবার পাওয়া সম্ভব। প্রতি কেজি আলু থেকে আটা ও স্টার্চ মিলিয়ে প্রায় ৩৪০ গ্রাম পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এক হেক্টর জমি থেকে বছরে প্রায় ২৫.৫ মেট্রিক টন অর্থাৎ ৩ হাজার ৪০০ কেজি কাসাভা আটা ও স্টার্চ পাওয়া সম্ভব।

খাদ্যসামগ্রী
কাসাভার আটা দিয়ে রুটি ছাড়াও পাঁপর, চিপস, নুডলস, ক্র্যাকার্স, বিস্কুট, কেক, পাউরুটি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। কাসাভা আলু যেমন সিদ্ধ করে খাওয়া যায়, তেমনই তরকারি করে মাছ-মাংসের সঙ্গে খাওয়া যায়।

kasava-pic-in-(2)20170408164734

সুত্রঃ www.jagonews24.com

০৮ এপ্রিল ২০১৭

মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষা করবেন যেভাবে

পৃথিবীতে তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ মাটি। সেই এক ভাগ মাটিতেই মানুষের বসবাস। তাই মাটিতেই নির্ভর করে মানুষের জীবিকা। ফলে মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করা মানুষের প্রধান কাজ। ফসল ফলাতে মাটির গুরুত্ব অপরিসীম। মাটির গুরুত্ব বুঝেই এর আর্দ্রতা নির্ণয় করতে হয়।

Soil-in-(1)20170506161114

উত্তম মাটি ভালো ফসলের জন্য একান্ত জরুরি। কেননা বীজ বপন করা থেকে বেড়ে ওঠা পর্যন্ত বিষয়টি নির্ভর করে জমি তৈরির উপর। জমির মাটি কীভাবে তৈরি করা হবে তা নির্ভর করে বীজের আকৃতির উপর এবং আর্দ্রতার উপর। অাসুন মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষার পদ্ধতিগুলো জেনে নেই।

পরীক্ষা পদ্ধতি

• প্রচলিত জ্ঞানের মাধ্যমে মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষা করা যায়।
• মাটি হাতে মুঠি করে নিয়ে জোড়ে চাপ দিতে হবে।
• চাপ দেওয়ায় মাটি থেকে পানি বের হলে বুঝতে হবে মাটি এখনো ভেজা। ভেজা মাটি চাষের উপযোগী নয়।
• মাটি থেকে পানি বের না হলে তা চাকা বা বলের আকার ধারণ করে।
• মাটির চাকা কোমর সমান উচ্চতা থেকে ফেললে যদি ভেঙে না যায়; তখন বুঝতে হবে মাটি ভেজা।
• ভেজা মাটিতে লাঙ্গল চালাতে ২-৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে।
• মাটির বলটি যদি সম্পূর্ণ ভেঙে যায় তাহলে চাষ দেওয়া যাবে।
• মাটি যদি চাকা বা বল কোনোটির আকারই ধারণ না করে তাহলে বৃষ্টি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
• মাটির আর্দ্রতার জন্য সেচ দিয়ে জো বা রস আনতে হবে।

Soil-in-(2)20170506161109

উপকারিতা

• এ পরীক্ষার সাহায্যে কৃষক সঠিক সময়ে সুন্দর ও পরিপাটি করে জমি তৈরি করতে পারেন।
• যার ফলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আয় বৃদ্ধি সম্ভব।

সুত্রঃ www.jagonews24.com

০৬ মে ২০১৭, শনিবার

ব্রিধান২৮ জাতে ব্লাস্ট রোগের ব্যাপক আক্রমণ

18318832_10209337205206737_503835835_o

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ বিডিটাইমস৩৬৫ কে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে সারাদেশে ধানের ব্লাস্ট রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি জানান, ব্লাস্ট রোগের নমুনা সংগ্রহ ও মাঠের বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) একটি যৌথ প্রতিনিধি দল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধানের ব্লাস্ট আক্রান্ত জমি পরিদর্শণ করে। এসকল অঞ্চলে ব্লাস্ট রোগে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয়েছে ব্রিধান২৮ জাত। এছাড়াও ব্রিধান২৯, ব্রিধান৫০, ব্রিধান ৬১, ব্রিধান ৬৩ জাতেও আক্রমন পরিলক্ষিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ধানের ব্লাস্ট রোগের মহামারির কারনে ১০-১৫ শতাংশ ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ জানান, ব্লাস্ট বাংলাদেশে ধানের প্রধান রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছরই এ রোগ অল্পবিস্তর দেখা দেয়। তবে এবছর সারাদেশে আক্রমনের মাত্রা ব্যপক। বিশেষকরে উত্তরাঞ্চলে আগে এ রোগ খুব একট দেখা যেতনা। পাতা ব্লাস্ট, গীট ব্লাস্ট এবং শীষ ব্লাস্ট – এই তিন ধরনের ব্লাস্ট রোগের মধ্যে নেক বা শীষ ব্লাস্ট সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকর। পাইরিকুলারিয়া ওরাইজি নামক ছত্রাকের আক্রমনে এই রোগ হয়ে থাকে। এ বছরে ধানের ব্লাস্ট রোগের মহামাররি জন্য ঐ ছত্রাকের অনুকূল আবহাওয়াকে দায়ী করেন তিনি। আগাম বৃষ্টিপাত, ঝড়ো আবহাওয়া, দিনে অধিক তাপমাত্রা, রাতের নিন্ম তাপমাত্রা, সকালের কুয়াশা ও শিশির এবং অধিক আদ্রতার কারনে ঐ ছত্রাকের প্রকোপ বেড়েছে বলেও জানান তিনি। আক্রমণের তীব্রতার কারনে একই গাছে পাতা ব্লাস্ট, গীট ব্লাস্ট এবং শীষ ব্লাস্টের আক্রমণ হয়েছে। পূর্বে পাতা ব্লাস্টের প্রকোপ বেশী পরিলক্ষিত হলেও এবছর শীষ ব্লাস্টের আক্রমণ ছিল সর্বাধিক। সাধারনত লিফ ব্লাস্টের আক্রমণে পাতায় খাদ্য তৈরি ব্যহত হয়, নোড ব্লাস্টের আক্রমণে উদ্ভিদ মাটি থেকে কোন খাদ্য উপাদান ও পানি শোষণ করতে পারে না এবং নেক ব্লাস্টের আক্রমনে ধানের শীষের গোড়া পঁচে যায়। এ কারনে এবছর ধানের ফলনের ব্যপক ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার এক কৃষক জানান, “গরম ও ঝড়ো হাওয়া আসার পর থেকে এ রোগ দেখা দিয়েছে এবং কয়েকদিনের মধ্যে সারা ক্ষেতে ছড়িয়ে গেছে। ২৮ ধানেই এ রোগ বেশী হয়েছে।”
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাসরুর বলেন, আগামীতে এ রোগ প্রতিরোধে কৃষকদেরকে ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্রিধান২৮ ব্লাস্ট রোগের প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ায় আগামীতে এ জাতটি চাষ না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও রোগটি প্রতিরোধে ধান কাটার পর নাড়া-খড়কুটো জমিতেই পুড়িয়ে ফেলা, আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ না করা, শোধিত বীজ ব্যবহার করা, অতিরিক্ত পরিমান ইউরিয়া ব্যবহার না করা, পটাশ সার পরিমান মতো ব্যবহার করা, জমিতে সবসময় পানি ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদরা। এছাড়াও কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘা প্রতি প্রায় ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করে সেঁচ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ধানের থোড় আসার পর একবার এবং ফুল আসার পর আবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে রোগ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। রোগ প্রতিরোধে (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমনঃ নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি ১০ লিটার পানিতে ৭.৫ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা, অথবা প্রতি লিটার পানিতে ট্রাইসাইকাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমনঃ ট্রপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি ০.৮১ গ্রাম বা এ রোগের জন্য অনুমোদিত অন্যান্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
এছাড়াও আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ আগামী বছর ব্রিধান২৮ এর পরিবর্তে ব্রিধান৫৮, ব্রিধান ৬৭, ব্রিধান ৬৯ সহ অন্যান্য ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাতের ধান চাষের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন আমরা উন্নত গবেষণার জন্য এ রোগের জীবানু সংগ্রহ করেছি। ব্লাস্ট প্রতিরোধী ধানের জাত উদ্ভাবনে উন্নততর গবেষণা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সুত্রঃ বিডিটাইমস৩৬৫, ৬মে, ২০১৭ 

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ বিডিটাইমস৩৬৫ কে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে সারাদেশে ধানের ব্লাস্ট রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি জানান, ব্লাস্ট রোগের নমুনা সংগ্রহ ও মাঠের বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) একটি যৌথ প্রতিনিধি দল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধানের ব্লাস্ট আক্রান্ত জমি পরিদর্শণ করে। এসকল অঞ্চলে ব্লাস্ট রোগে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয়েছে ব্রিধান২৮ জাত। এছাড়াও ব্রিধান২৯, ব্রিধান৫০, ব্রিধান ৬১, ব্রিধান ৬৩ জাতেও আক্রমন পরিলক্ষিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ধানের ব্লাস্ট রোগের মহামারির কারনে ১০-১৫ শতাংশ ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।  
আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ জানান, ব্লাস্ট বাংলাদেশে ধানের প্রধান রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছরই এ রোগ অল্পবিস্তর দেখা দেয়। তবে এবছর সারাদেশে আক্রমনের মাত্রা ব্যপক। বিশেষকরে উত্তরাঞ্চলে আগে এ রোগ খুব একট দেখা যেতনা। পাতা ব্লাস্ট, গীট ব্লাস্ট এবং শীষ ব্লাস্ট – এই তিন ধরনের ব্লাস্ট রোগের মধ্যে নেক বা শীষ ব্লাস্ট সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকর। পাইরিকুলারিয়া ওরাইজি নামক ছত্রাকের আক্রমনে এই রোগ হয়ে থাকে। এ বছরে ধানের ব্লাস্ট রোগের মহামাররি জন্য ঐ ছত্রাকের অনুকূল আবহাওয়াকে দায়ী করেন তিনি। আগাম বৃষ্টিপাত, ঝড়ো আবহাওয়া, দিনে অধিক তাপমাত্রা, রাতের নিন্ম তাপমাত্রা, সকালের কুয়াশা ও শিশির এবং অধিক আদ্রতার কারনে ঐ ছত্রাকের প্রকোপ বেড়েছে বলেও জানান তিনি। আক্রমণের তীব্রতার কারনে একই গাছে পাতা ব্লাস্ট, গীট ব্লাস্ট এবং শীষ ব্লাস্টের আক্রমণ হয়েছে। পূর্বে পাতা ব্লাস্টের প্রকোপ বেশী পরিলক্ষিত হলেও এবছর শীষ ব্লাস্টের আক্রমণ ছিল সর্বাধিক। সাধারনত লিফ ব্লাস্টের আক্রমণে পাতায় খাদ্য তৈরি ব্যহত হয়, নোড ব্লাস্টের আক্রমণে উদ্ভিদ মাটি থেকে কোন খাদ্য উপাদান ও পানি শোষণ করতে পারে না এবং নেক ব্লাস্টের আক্রমনে ধানের শীষের গোড়া পঁচে যায়। এ কারনে এবছর ধানের ফলনের ব্যপক ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। 
চুয়াডাঙ্গা জেলার এক কৃষক জানান, “গরম ও ঝড়ো হাওয়া আসার পর থেকে এ রোগ দেখা দিয়েছে এবং কয়েকদিনের মধ্যে সারা ক্ষেতে ছড়িয়ে গেছে। ২৮ ধানেই এ রোগ বেশী হয়েছে।”
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাসরুর বলেন, আগামীতে এ রোগ প্রতিরোধে কৃষকদেরকে ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্রিধান২৮ ব্লাস্ট রোগের প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ায় আগামীতে এ জাতটি চাষ না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও রোগটি প্রতিরোধে ধান কাটার পর নাড়া-খড়কুটো জমিতেই পুড়িয়ে ফেলা, আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ না করা, শোধিত বীজ ব্যবহার করা, অতিরিক্ত পরিমান ইউরিয়া ব্যবহার না করা, পটাশ সার পরিমান মতো ব্যবহার করা, জমিতে সবসময় পানি ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদরা। এছাড়াও কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘা প্রতি প্রায় ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করে সেঁচ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ধানের থোড় আসার পর একবার এবং ফুল আসার পর আবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে রোগ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। রোগ প্রতিরোধে (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমনঃ নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি ১০ লিটার পানিতে ৭.৫ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা, অথবা প্রতি লিটার পানিতে ট্রাইসাইকাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমনঃ ট্রপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি ০.৮১ গ্রাম বা এ রোগের জন্য অনুমোদিত অন্যান্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।
এছাড়াও আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ আগামী বছর ব্রিধান২৮ এর পরিবর্তে ব্রিধান৫৮, ব্রিধান ৬৭, ব্রিধান ৬৯ সহ অন্যান্য ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাতের ধান চাষের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন আমরা উন্নত গবেষণার জন্য এ রোগের জীবানু সংগ্রহ করেছি। ব্লাস্ট প্রতিরোধী ধানের জাত উদ্ভাবনে উন্নততর গবেষণা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

হাওরে ফসলডুবির সমাধান হাতেই আছে, তবে…

868852f4647f4fe1bea628d4b1e668b0-590dad87e6d74

আগাম বন্যা বা ঢলের সামনে পড়ে কৃষক কোন মিনতি করেন?

প্রকৃতির কাছে মিনতি করেন আরও কয়েকটা দিন সময়, যাতে ধান বা পাট কাটার উপযুক্ত হয়।
আগাম বন্যার আগাম প্রতিরক্ষা তাঁরা পেতেন যদি আগাম ফসলের বীজ সরকার তাঁদের দিত।
গত বছরের জুলাই-আগস্টের বন্যার সময় ফরিদপুরে পদ্মার চরের কৃষকের আহাজারি শুনেছি, ‘আর কয়টা দিন যদি পাইতাম!’
সে সময় থেকেই আগাম ধানের বীজ নিয়ে একজন কাজ শুরু করে দেন। বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী। তিনি অযৌন বীজ উৎপাদন (এফআইএস) সংক্রান্ত তিনটি নতুন জিন আবিষ্কার করে এপোমিক্সিসের সূচনা করেন। শিক্ষকতা ও গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট হেলথ, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ফ্রান্সের ইকোল নরমাল সুপিরিয়রের মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থায় একটি গবেষক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ ছাড়া জন্মস্থান সিলেটের কুলাউড়ার নিজস্ব খামার ও গবেষণাগারে জিন গবেষণা চালু রেখেছন। এখানেই তাঁর নেতৃত্বে একদল গবেষক ৩০০ জাতের ধানের প্রকরণ উদ্ভাবন করেছেন এবং অনেক বিলুপ্ত জাতের ধানের বীজ ফিরিয়ে এনেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সঙ্গে বৈঠক করে শনিবার দুপুরে নিজের খামার এলাকা সিলেটের কানিহাটিতে ফিরছিলেন। তখন ফোনে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
আবেদ চোধুরী বলছিলেন, ‘বর্তমান বোরো ফসল পানির দেশের জন্য অনুপযোগী। এই ধান হয় ১৩০ থেকে ১৬০ দিনে। হাওরের প্লাবন হয় এপ্রিল মাসে। আমাদের এমন এক জাতের ধান লাগবে, যা ১ এপ্রিলের আগেই কেটে ফেলা যায়। সুপার আর্লি বন্যার মোকাবিলায় চাই সুপার আর্লি ধানের জাত। বন্যার সঙ্গে মানানসই তেমন জাতই হলো আউশ। আউশ কথাটা এসেছে আশু থেকে; ভাষার অপনিহিতি নিয়মে লোকমুখে আশু হয়ে গেছে আউশ। এটা সুপার আশু ধান। অথচ এই শস্যের ইতিহাস আমরা ভুলে গেছি। হাজার বছর ধরে এটার বিকাশ হয়েছে। এর বিভিন্ন জাতের চাষ হতো হাওর ও জলাভূমি এলাকায়। দুই মাসে ফুল আসত বলে দুমাই বা দুমাহি কিংবা ষাট্টাও বলে। কোনো এলাকায় বলে কাছালট, চেংরি ও বাওরস। যে ধান আউশে হয় ৭৫ দিনে, সেটা বোরোতে হবে নব্বই দিনে। নব্বই দিনের জাতের ধান আমরা মাঠেও পরীক্ষা করেছি। আগামী বছর এটা হাওরে লাগালে ঢল আসার আগেই ফসল কেটে ঘরে তোলা যাবে। অথচ এমন সব দারুণ জাতকে আমরা নির্বাসিত করেছি।’

সুত্রঃ প্রথম আলো, ০৬ মে, ২০১৭

18076833_1431975770199888_420672062447943318_o

পটুয়াখালী মুগডাল মেলা ২০১৭

পটুয়াখালী মুগডাল মেলা ২০১৭

পটুয়াখালী, ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ঃ ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ ২৩ শে এপ্রিল পটুয়াখালী জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যায়ামাগারে ‘‘পটুয়াখালী মুগডাল মেলা ২০১৭” অনুষ্ঠিত হয়েছে । মেলায় মুগডাল শষ্যের  উৎপাদন ও বিপননের সাথে জড়িত সকল প্রতিষ্ঠান যেমন, অর্থ লগ্নিকারী, সেবা প্রদানকারী (বীজ, সার, মেশিনারি, ভোক্তা পণ্য, পরিবহন ইত্যাদি), মুগডাল ক্রেতা/মিলার এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক এসএমই ক্লাব এবং মুগডাল চাষিরা অংশগ্রহণ করেন। মেলার উদ্বোধন করেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকী। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন অনেক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পরে আমন্ত্রিত অতিথিগণ মেলা স্টল ঘুরে দেখেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত এসএমই ক্লাব-এর ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, টেকসই বিপনন ও মূল্য সংযোজন কৌশল-এরমধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে ব্যবসায় প্রসারের লক্ষ্যে মেলার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও অর্থ ব্যবস্থাপনা, বাজার সংযোগ এবং মুগডাল বিপনন বিষয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এসএমই ক্লাবের সদস্যদের মাঝে প্রশিক্ষণের সনদপত্র বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে মেলা উপলক্ষে আয়োজিত মুগডাল রেসিপি প্রতিযোগিতার বিজয়ীদেরকে পুরস্কার দেয়া হয়। মেলাটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি) এসএমই ক্লাব, পটুয়াখালী চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রীজ ( পিসিসিআই) ও ইউএসএআইডি কৃষি সম্প্রসারণ সহযোগিতা কার্যক্রম প্রকল্প। উক্ত কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ইউএসএআইডি এগ্রিকালচারাল ভ্যালু চেইনস প্রকল্প।

মুগ সংগ্রহ ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা

আমাদের দেশের কৃষক ভাইদের মাঝে ফসল সংগ্রহ ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত যথোপযুক্ত জ্ঞান ও প্রয়োজনীয় উপকরণাদির অভাব থাকায় প্রতি বছর মোট উৎপাদিতফসলের ১০ শতাংশ ফসল বিনষ্ট  হয়। তাই একজন সচেতন কৃষি-ব্যবসায়ী এবং চাষির ফসল সংগ্রহ ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা স¤পর্কে সম্যক ধারণা রাখা খুবই জরুরী।

মুগকাটার উপযুক্ত সময়

  • মুগের ফল বা পড বাদামী/কালো রং ধারণ করলে বুঝতে হবে দানা পরিপক্ক (পাকা) হয়েছে।
  • জাত ভেদে পাকার পর ২-৩ বার মুগের ফল বা পড সংগ্রহকরতেহবে।
  •  অধিকাংশজাতে সব পড একই সাথে না পাকার কারণে ২-৩ বার সংগ্রহ করতে হয়।
  •  পাকা ফল বা পড সাধারণতঃ সকালে বা বিকালে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সংগ্রহ করা ভাল। শেষবার ফল বা পড গাছসহ কাচি দ্বারা কেটে ফসল সংগ্রহ করতে হবে।

মাড়াই

  • সংগ্রহকৃত ফসল (ফল বা পড) তাড়াতাড়ি মাড়াই করার স্থানে নিতে হবে যাতে দানা ঝরে না যায়।
  • ফল বা পডগুলো/গাছগুলো ১-২ দিন ছড়িয়ে দিয়ে রোদে শুকোতে হবে।
  • হাতের তালুতে ফসলের ফল/পড নিয়ে ঘষা দিলে মচমচ শব্দ হলেই বুঝতে হবে যে মাড়াই এর সময় হয়েছে।
  •  ভালভাবে শুকানোর পর কাঠ বা বাঁশের লাঠি দ্বারা পিটিয়ে বা গরু কিংবা ট্রাক্টর/পাওয়ার টিলার/মেশিন দিয়ে মাড়াই করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন মাড়াইয়ের সময় দানা ভেঙ্গে ডাল বের না হয়।
  •  মাড়াইকৃত মুগবীজ ঝেরে বা বাতাসে উড়িয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

মুগবীজ শুকানো, ঝাড়াই ও বাছাই

  •  মাড়াইকৃত বীজ সংরক্ষণের আগে কয়েকদিন ভালভাবে রোদে শুকাতে হবে।
  •  সংরক্ষণের পূর্বে কুলারসাহায্যে দানাবাতাসেউড়িয়েপরিষ্কার করতেহবে।
  •  প্রয়োজনে চালুনী দিয়ে চেলে পুষ্ট দানা বাছাই করতেহবে।
  •  ধাতব পাত্র ছাড়া অন্য যে কোন পাত্রে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রোদে শুকানোর পর বীজ ঠান্ডা করতে হবে।
  •  বীজ দাঁতে চিবিয়ে নিশ্চিত হোন যে, বীজগুলো ভালোমত শুকানো হয়েছে।
  •  সংরক্ষণের সময় বীজের আর্দ্রতা শতকরা ৮-৯ ভাগ থাকা উত্তম।

মুগবীজ সংরক্ষণ পদ্ধতি

  •  পরিষ্কার বীজ ৩/৪টি রোদ দিয়ে শুকিয়ে গুদাম জাত করতে হবে।
  •  আর্দ্র ও পোকামাকড় মুক্ত পাত্রে শুকানো বীজ ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করতে হবে।
  •  মাটির পাত্র যেমন মটকি/কলসি হলে বীজ সংরক্ষণের পূর্বে আলকাতরার প্রলেপ দিয়ে নিতে হবে যাতে পাত্রের ভিতর বায়ু প্রবেশ করতে না পারে।
  • বীজসংরক্ষণের পর পাত্রের মুখ ভালভাবে বন্ধ করে দিতে হবে যাতে বায়ু প্রবেশ করতে না পারে।
  • বীজের পরিমান পাত্রের ধারন ক্ষমতার চেয়ে কম হলে বীজ এর উপর একটি মোটা পলিথিন বিছিয়ে উপরের ফাঁকা জায়গা শুকনো বালি, তুষ বা ছাই দিয়ে পাত্রটি ভর্তি করুন। পাত্রে বীজ রেখে পাত্রের মুখ ভালভাবে বন্ধ করতে হবে।
  • বীজ সংরক্ষণে পলিথিন ব্যাগ/ধাতব টিন বা ড্রাম ব্যবহার করা উত্তম।
  • যে পাত্রেই বীজ রাখা হোক না কেন তা মেঝে থেকে উপরে (চকি /মাচায়) রাখতে হবে।
  • সংরক্ষিত বীজ মাঝে মাঝে (বিশেষ করে বর্ষাকালে)রৌদ্রে শুকিয়ে স্ব স্ব পাত্রে পুনরায় রেখে দিতে হবে।

মুগ-এর বিপণন ও পরিবহন

মুগ দানা প্লাস্টিক/চটের বস্তায় ভরে গরুর গাড়ী, ভ্যান, নসিমন বা ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়ে থাকে। দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে বৃহত্তর বরিশালে কৃষকগণ মুগের বস্তা বা ঝুড়ি মাথায় করে অথবা নৌকায় করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে যায়। তবে পরিবহণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন দানা কোন ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। দুরে পরিবহণের সময় বস্তা গুলি ত্রিপল দিয়ে ঢেঁকে নেওয়া ভাল যাতে বৃষ্টি কিংবা কুয়াশায় মুগদানার ক্ষতি না হয়।

Source: USAID Agricultutral Value Chains project

পটুয়াখালীতে মুগ ডাল মেলা

মুগ ডাল উৎপাদনে দেশের শীর্ষে পটুয়াখালী জেলা। বিশ্ববাজারে এ জেলার মুগ ডালের বাজার সৃষ্টিসহ কৃষকদের এই ডাল চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পটুয়াখালীতে গতকাল রোববার দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় ‘মুগ ডাল মেলা’।
ইউএসএআইডি অ্যাগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস প্রকল্পের সার্বিক সহযোগিতায় পটুয়াখালী জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যায়ামাগারে মুগ ডাল মেলা যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি), ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন এসএমই ক্লাব, পটুয়াখালী শিল্প ও বণিক সমিতি এবং কৃষি সম্প্রসারণ সহায়তা কার্যক্রম প্রকল্প।
সকাল ১০টায় মেলা উদ্বোধন করেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিআইআইডির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদ উদ্দিন আকবর, কৃষি সম্প্রসারণ সহায়তা প্রকল্পের দলনেতা বিদ্যুৎ হালদার, উপদলনেতা ফাহাদ আল জর্জি, পটুয়াখালীর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, এসএমই ক্লাবের সদস্য কবির শিকদার, আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ঘুরে দেখেন।

সূত্র: প্রথম আলো, ২৪ এপ্রিল ২০১৭