Author Archives: Hosna Jannat Tonny

ফল গাছের জোড় কলম পদ্ধতি

ভুমিকাঃ

সাধারণ ভাবে একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের জন্ম হওয়ার পদ্ধতিকে গাছের বংশ বিস্তার বলে। অন্য কথায়, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ যৌন কোষ বা তার অংগজ কোষ থেকে নুতন স্বতন্ত্র গাছ সৃষ্টি করে তাকে বংশ বিস্তার বলে। বংশ বিস্তার দুই প্রকার যথাঃ ১। যৌন বংশ বিস্তার ও ২। অযৌন বংশ বিস্তার। ফল গাছ রোপনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভাল, উন্নতমান ও মাতৃগুন সম্পন্ন ফল পাওয়া। এ কারণে, ফল গাছ রোপনের ক্ষেত্রে যৌন পদ্ধতির তুলনায় অযৌন পদ্ধতির চারা/ কলম গুরুত্বপূর্ন। কারন এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা/কলম রোপন করলে মাতৃগুনাগুন সম্পন্ন ফল পাওয়া যায়, গাছে তাড়াতাড়ি ফল ধরে এবং গাছ ছোট হয় বিধায় অল্প পরিসরে অনেক গাছ রোপন করা যায়। অযৌন বংশ বিস্তার পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ক্লেফ্ট গ্রাফটিং বা ফাটল জোড় কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি।এ পদ্ধতিতে একাধিক ফল গাছে কলম করা যায়। অন্যান্য জোড় কলম গুলোর তুলনায় ফাটল জোড় কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি কারন এ পদ্ধতিতে কর্তিত স্থানের দুই পাশ দিয়ে জোড়া লাগে বিধায় জোড়াটি সবল হয় এবং সহজে জোড়া স্থানটি ভাংগার সম্বাবনা থাকে না। তুলনামুলক ভাবে এ পদ্ধতি অন্যান্য জোড় কলম পদ্ধতি গুলোর তুলনায় সহজ, সফলতার হার বেশী এবং খরচও কম পড়ে।

উপকরনঃ

এ কলম করতে গ্রাফটিং চাকু, ব্লেড, সিকেচার, পলিথিন ক্যাপ, পলিথিন ফিতা, সুতলী, পরিবেশ সহনশীল একটি ষ্টক গাছের চারা, কাংখিত গাছের ডগা বা সায়ন এবং দক্ষ মালি ইত্যাদি।

কলম করার উপযুক্ত সময়ঃ

মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কলম করার উপযুক্ত সময়। কারন এ সময় বাতাসে আদ্রতা ও গাছের কোষের কার্যকারিতা বেশী থাকে। ফলে তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশী পাওয়া যায়।

স্টক তৈরীঃ

অনাকাংখিত কিন্তু পরিবেশ উপযোগী গাছের বা স্থানীয় জাতের বীজ হতে চারা তৈরী করতে হবে যাতে কাংখিত জোড়া লাগানো সম্ভব হয়।

স্টক চারা তৈরীর ধাপ সমুহঃ

১) পরিনত গাছ হতে সুস্থ ও সবল বীজ সংগ্রহ করা।
২) স্টক চারাটি সরাসরি মাটি বা পলিব্যাগে তৈরী করা।
৩) যদি চারাটি মাটিতে তৈরী করা হয় তবে মাটি ভাল ভাবে কুপিয়ে ঝুরঝুরা করে আগাছা পরিস্কার করে প্রয়োজনীয় জৈব সার মিশিয়ে বেড আকারে করতে হবে। বেডটির প্রস্থ্য যেন ১ মিটার এর বেশী না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর পর বেডে ২৫ সেমিঃ পর পর লাইন করে প্রতি লাইনে ২০ সেমিঃ পর পর চারা/ বীজ রোপন করতে হবে এবং কলম করার পূর্ব পর্যন্ত স্টক চারা গুলোর সকল প্রকার পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে।
৪) চারা পলিব্যাগে তৈরী করলে ২০ সেমিঃ x ১২ সেমিঃ পলিব্যাগ নিতে হবে। দোঁয়াশ মাটির সাথে অর্ধেক পচা গোবর ও কম্পোস্ট মিশিয়ে পলিব্যাগ ভরতে হবে।
৫) প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ বা চারা রোপন করতে হবে। চারা গজানোর পর পলিব্যাগ গুলো যেন কাত হয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অন্যথায় চারার গোড়া বাঁকা হয়ে যাবে।
৬) এবার ব্যাগটি বেডে ২৫ x ২০ সেমিঃ দুরত্বে রোপন করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে পলিব্যাগটি যেন মাটির সমান্তরালে থাকে। এতে খরা মৌসুমে পানি সেচ কম লাগে এবং চারাটি সুস্থ ও সবল হয়।
৭) সুস্থ, সবল এবং নিরোগ চারা পাওয়ার জন্য আগাছা, রোগ ও পোকা-মারড় দমন করতে হবে। প্রয়োজনে গাছে সার ও সেচ দিতে হবে।

স্টক চারার বয়স ও সায়ন নির্বাচনঃ

১) আমঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ৯-১২ মাস হবে।
খ) উৎকৃষ্ট ও কাংখিত মাতৃগাছ থেকে সুস্থ ও সবল সায়ন নিতে হবে।
গ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হবে।
ঘ) সায়নটির ডগায় একটি সুপ্ত কুড়ি থাকতে হবে।
ঙ) সায়নটির রং গাঢ় সবুজ থেকে কালচে সবুজ হবে এবং
চ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
ছ) আমের সায়ন মাতৃগাছে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় পাতা কেটে ফেলাকে ডিফলিয়েশন বলে। ১০ দিন পূর্বের ডিফলিয়েশন করা সায়ন দিয়ে কলম করলে তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশী হয়।

২) কাঠালঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ২-৩ সপ্তাহ হতে হবে।
খ) সমব্যাস সম্পন্ন ১-২ মাস বয়সের কাংখিত গাছের ডগা সায়ন হিসেবে নিতে হবে।
গ) সায়নটির শীর্ষ কুঁড়ি কয়েক দিনের মধ্যে বিকশিত হবে এমনটি হতে হবে। যার রং গাঢ় সবুজ কিন্ত টিপ দিলে শক্ত মনে হবে।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
ঙ) সায়নটি দৈঘ্যে প্রায় ১০ সেমিঃ হবে।

৩) জলপাইঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে কচি ১০-১৫ সেমিঃ অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
গ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৪) পেয়ারাঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ৯-১২ মাস হতে হবে। স্টক হিসেবে পলি পেয়ারার চারা ব্যবহার করলে উইল্ট প্রতিরোধী গাছ তৈরী করা সম্ভব।
খ) পেয়ারা ডালের ডগার কচি অংশে ৪টি ধার/খাজ থাকে। এই ধার বা খাজের ঠিক নিচের গোলাকার অংশটিকে সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
গ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হওয়া ভাল।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৫) কামরাংগাঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে।
গ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) একটি ডগা হতে একাধিক সায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৬) আমলকিঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে ।
গ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) একটি ডগা হতে একাধিক সায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৭) লেবুঃ

ক) স্টক চারার বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাসার্ধ্য স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে।
গ) লেবু ডালের ডগার কচি অংশে ৪টি ধার/খাজ থাকে। এই ধার বা খাজের ঠিক নিচের গোলাকার অংশটিকে সায়ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ঘ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হওয়া ভাল।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৮) কুল বা বরইঃ

ক) স্টক চারাটির বয়স ১.৫-২.০ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে ।
গ) সায়নের রং সবুজ বা সবুজাব হবে। ডগাটির আগাথেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ বাদ দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ অংশ সায়ন হিসেবে নিতে হবে।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
পদ্ধতি
ক) সাধারনত স্টক গাছের গোড়া হতে ১৫-২০ সেমিঃ উপরে গ্রাফ্টিং করা হয়।
খ) খেয়াল রাখতে হবে যেন জোড়া স্থানটির নিচে অবশ্যই যেন কিচু পাতা থাকে।
গ) এবার সিকেচার দিয়ে নিদ্দিষ্ট উচ্চতায় স্টক গাছের মাথাটি সমভাবে কেটে অপসারন করতে হবে।
ঘ) এবার চাকু দিয়ে স্টক গাছের মাথাটি ২-৩ সেমিঃ লম্বালম্বি ভাবে চিরে দিতে হবে এবং সায়নের গোড়ার উভয় পাশ একই ভাবে ২-৩ সেমিঃ তেরছা কাট দিতে যেন গোঁজ বা তিলকের মত হয়।
ঙ) এবার স্টক গাছের কর্তিত অংশে সায়নের কর্তিত অংশ সমান ভাবে প্রবিস্ট করাতে হবে।
চ) অতপর জোড়া লাগানোর যায়গাটি পলিথিন ফিতা দিয়ে পেচিয়ে শক্ত ভাবে বেধে দিতে হবে।
ছ) এবার একটি পলিথিন ক্যাপ বা টুপি দিয়ে সায়নের মাথা হতে জোড়ার নিচ পর্যন্ত ঢেকে বেধে দিতে হবে।

ব্যতিক্রমঃ যেহেতু কাঠলের ২-৩ সপ্তাহের স্টক চারায় গ্রাফটিং করা হয় তাই স্টক চারায় কোন পাতা থাকেনা এবং কলমটি চাকুর পরিবর্তে ব্লেড দিয়ে করতে হয়।

পরবর্তী পরিচর্যাঃ

ক) কলম করার সময় অতিরিক্ত রোদ থাকলে উপরে হালকা ছায়ার ব্যবস্থা করলে সফলতার হার বেড়ে যায়।
খ) স্টক গাছে অনাকাংথিত কুশি বের হওয়ার পর পরই ভেংগে দিতে হবে।
গ) কলমের বেড/ব্যাগে প্রয়োজনীয় রসের ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ঘ) সায়নের মাথায় কুঁড়ি গজানোর সাথে সাথেই পলিথিনের ক্যাপটি খুলে দিতে হবে।
ঙ) জোড়াটি স্থায়ী হয়ে গেলে অথাৎ কলম করার প্রায় তিন মাস পর পলিথিনের ফিতাটি খুলে দিতে হবে।
চ) বেডের/ ব্যাগের আগাছা, রোগ ও পোকা-মাকড় দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
ছ) চারার বাড়-বাড়তি কম হলে উপরি সার প্রয়োগ করতে হবে অথবা ফলিয়ার স্প্রে করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে ইউরিয়া মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।

Source: http://digitalkrishi.dae.gov.bd

গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করে আপনিও হতে পারেন স্বাবলম্বী

 

গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ একদিকে যেমন লাভজনক, অন্যদিকে তেমন নান্দনিক। বাজারে এ ফুলের চাহিদাও প্রচুর। বাড়ির আঙিনা, ছাদসহ যে কোনো ধরনের মাটিতে চাষ করতে পারেন এ ফুল। সে জন্য জেনে নিন নিয়ম-কানুন।

যে কোন ধরনের উর্বর মাটিতেই গ্লাডিওলাস চাষ করা যায় তবে সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেঁলে দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য উত্তম। মাটির পি এইচ মান ৬-৭ এর মধ্যে থাকা উচিত। মাটির ঠান্ডা আবহাওয়ায় এ ফুল ভাল জন্মে। সাধাণত ১৫-২০ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা এ বৃদ্ধি ও ফুল উৎপাদনের জন্য উপযোগী। গ্লাডিওলাস প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা আলো পছন্দ করে। তাই রৌদ্রজ্জ্বল জায়গা এবং ঝড়ো বাতাস প্রতিরোধের ব্যবস্থা আছে এমন জায়গা এই ফুল চাষের জন্য নির্বাচন করা উচিত।

জাতঃ

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গ্লাডিওলাস ফুলের বারি গ্লাডিওলাস-১, বারি গ্লাডিওলাস-২ ও বারি গ্লাডিওলাস-৩ জাতগুলো উদ্ভাবন করেছে। এই জাতগুলো আমাদের দেশের সব জায়গায় চাষাবাদ উপযোগী।

বংশ বিস্তারঃ

বীজ, করম ও করমেলের মাধ্যমে গ্লাডিওলাসের বংশ বিস্তার করা যায়। সাধারণভাবে চাষের জন্য করম রোপণ করা হয়। ৪-৫ সেমি ব্যাসের করম ব্যবহার করা ভাল।

জমি তৈরি ও সার প্রয়োগঃ

গ্লাডিওলাস চাষে উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর। এসময় ভালভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হয়। সাধারনত গ্লাডিওলাস চাষে প্রতি বর্গমিটারে ৫-৬ কেজি পচা গোবর বা জৈব সার, ১০ গ্রাম ইউরিয়া, ৩০ গ্রাম টিএসপি এবং ৩০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োজন। শেষ চাষের সময় টিএসপি, এমওপি ও গোবর সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের অর্ধেক রোপনের ২০-২৫ দিন পর এবং বাকি অর্ধেক পুষ্পদন্ড বের হওয়ার পর উপরিপ্রয়োগ করতে হবে।

করম রোপনঃ রোপনের আগে বীজ ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে নিলে অঙ্কুরোদগম তরান্বিত হয়। বীজকে রোগ মুক্ত করতে ডাইথেন-এম ৪৫এর মধ্যে ভিজিয়ে (১০ লি. পানিতে ৩০-৩৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে) ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। সারি থেকে সারি ২০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছ ১৫ সেমি দূরত্ব রেখে মাটির ৫-৬ সেমি গভীরে রোপন করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যাঃ

জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজন মত সেচ দিতে হবে। প্রতি সেচের পর জমিতে জো আসলে নিড়ানি দিয়ে জমি আলগা করে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের প্রথম উপি প্রয়োগের পর সেচ দিতে হবে এবং জমিতে জো আসলে মাটি ঝুরঝুরে করে দুই সারির মাঝখানের মাটি গাছের গোড়ায় তুলে দিতে হবে। বাতাসে গাছ হেলে পড়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য ছোট ছোট খুটি বা প্লাস্টিকের রশি টেনে দেওয়া প্রয়োজন। গ্লাডিওলাসে সীট ব্লাইট রোগে পাতা ও ফুল আক্রান্ত হয় এবং ফিজিরিয়াম রট জীবানুর আক্রমণে কান্ড ও গোড়া পচে যায়। উভয় রোগের জন্য ১৫ দিন অন্তর বেভিস্টিন (.২%) বা ডাইথেন এম ৪৫ রোগ নাশক স্প্রে করতে হবে। পোকার জন্য রাইসন বা পারহেকথিয়ন স্প্রে করতে হবে।

ফুল সংগ্রহঃ

সাধারণত স্পাইকের নিচ থেকে ১-২টি পাপড়ি ফুটলে ফুল সংগ্রহ করতে হয়। ফুল সংগ্রহের পরপরই বালতি ভর্তি পানিতে সোজা করে ডুবিয়ে রেখে পরে নিম্ন তাপমাত্রায় (৬-৭ডিগ্রী) সংরক্ষণ করা উত্তম। স্পাইক কাটার সময় গাছের গোড়ায় ৪-৫টি পাতা রাখতে হবে তাহলে করম পুষ্ট হবে।

করম তোলা ও সংরক্ষণঃ

সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসে করম তোলা হয়। ফুল ফোঁটা শেষ হলে পাতা হলুদ হয় ওে গাছ মারা যায়। এসময় গাছের গোড়া খুঁড়ে সাবধানে করমগুলি সংগ্রহ করা হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন করম কেটে বা আঘাতপ্রাপ্ত না হয়। করম সংগ্রহের পর বড় ও ছোট করম বাছাই করে ছায়ায় শুকাতে হবে। সংরক্ষণের আগে করমগুলোকে ০.১% বেনলেট বা ০.২% ক্যাপটান দ্রবণে ৩০ মিনিট শোধন করে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর করমগুলো ছিদ্রযুক্ত পলিথিন ব্যাগে ভরে ঘরের শকনো ও ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।

ফলনঃ

প্রতিহেক্টর জমিতে প্রায় ২৪ টন ফুল বা স্টিক পাওয়া যায়। একইভাবে প্রায় ১০ টন উন্নত করম পাওয়া যায়।

Source: https://khabor365.com/

মাছের রোগ

wound fish

মাছের রোগ বালাই নিরাময় ও প্রতিকার

রোগের নাম/আক্রান্ত মাছের প্রজাতি/রোগের লক্ষন ও কারণ/চিকিৎসা ও ঔষধ প্রয়োগ/প্রতিষেধক/প্রতিকার

) রোগের নামছত্রাক রোগ (সেপ্রোল্গেনিয়াসিস)
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – রুই জাতীয় ও অন্যান্য চাষ যোগ্য মাছ।

রোগের লক্ষন কারণ
ক. আক্রান্ত মাছের ক্ষতস্থানে তুলার ন্যায় ছত্রাক দেখা দেয় এবং পানির স্রোত যখন স্থির হয়ে যায় কিংবা বদ্ধজলায় অথবা হ্যাচারী ট্যাংকে যেখানে অনিষিক্ত ডিমের ব্যাপক সমাগম ঘটে উহাতে ছত্রাক রোগ দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করে। এমনি ধরনের প্রাকৃতিক জলাশয়ে প্রায় শতকরা ৯৮ ভাগ মাছের ডিম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেপ্রোলেগনিয়া প্রজাতি এ রোগের কারণ।

চিকিৎসা ঔষধ প্রয়োগ
ক. হ্যাচারিতে লালনকৃত ডিমগুলোকে ২৫০ পিপিএম পরমালিন দিয়ে ধৌত করা।
খ. খাচা এবং পেনে চাষকৃত আক্রান্ত মাছগুলোকে শতকরা ৩-৫ ভাগ ফরমালিন দিয়ে ২-৩ মিনিট গোসল দেয়া।
গ. বিকল্প হিসাবে শতকরা ৫ ভাগ লবন পানিতে গোসল দেয়া যেতে পারে।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. হ্যাচারীর প্রতিটি যন্ত্রপাতি ও ট্যাংক সম্পূর্ণরুপে পরিষ্কার করার পর শতকরা ১০ ভাগ ফরমালিন পানি দিয়ে ধৌত করা।
খ. অনিষিক্ত ও মৃত ডিমগুলোকে অবিলম্বে হ্যাচারি ট্যাংক থেকে সরিয়ে নেয়া এবং অধিক খাদ্য প্রয়োগ না করা।

) রোগের নামমাছের ক্ষত রোগ (ইপিজুটিকআরসারেটিভসিনড্রোম )
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – শোল, গজার, টাকি, পুঁটি, বাইম, কৈ, মেনি, মৃগেল, কার্পিও এবং তলায় বসবাসকারী অন্যান্য প্রজাতির মাছ।

রোগের লক্ষনকারণ
ক. এ রোগের মুল কারণ এ্যাফানোমাইসিস ইনভাডেনস্ নামক ছত্রাক দ্ধারা মূলতঃ মাছের মাংসপেশী আক্রান্ত হয়। এছাড়া কিছু ব্যবকটিরিয়া, প্রোটোজোয়া সংশ্লিষ্ট আছে বলে জানা যায়। রোগাক্রান্ত হওয়ার পূর্বে পানির গুনাগুনের অবনতি ঘটে, যেমন ঃ

i) হঠাৎ তাপমাত্রার কমতি (১৯° সেঃ এর কম)।
ii) পি, এইচ-এর কমতি (৪-৬)।
iii) এ্যালকালিনিটির কমতি (৪৫-৭৪ পিপিএম)।
iv) হার্ডনেস-এর কমতি (৫০-৮০ পিপিএম)।
v) ক্লোরাইড এর স্বল্পতা (৩-৬ পিপিএম)।

চিকিৎসাঔষধপ্রয়োগ
ক. নিরাময়ের জন্য ০.০১ পিপিএম চুন ও ০.০১ পিপিএম লবন অথবা ৭-৮ ফুট গভীরতায় প্রতি শতাংশ জলাশয়ে ১ কেজি হারে চুন ও ১ কেজি হারে লবন প্রয়োগ করলে আক্রান্ত মাছগুলো ২ সপ্তাহের মধ্যে আরোগ্য লাভ করে।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. আগাম প্রতিকার হিসাবে আশ্বিন কার্তিক মাসে বর্ণিত হারে লবন ও চুনের প্রয়োগ করলে আসন্ন পরবর্তী শীত মৌসুমে মাছের ক্ষত রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায়।

) রোগের নামক্ষত রোগ
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – সিলভার কার্প

রোগের লক্ষন কারণ
ক. উপকূলীয় অঞ্চলে মাছ চাষের পুকুর বন্যায়প্লাবিত হলে ক্লোরাইডের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির (৩০ পিপিএম এর অধিক) ফলে কেবল মাত্র সিলভার কার্প মাছে দ্রুত ক্ষত রোগ দেখা দেয়।

চিকিৎসাঔষধ প্রয়োগ
ক. আক্রান্ত পুকুরে তিন ভাগের দুই ভাগ পানি মিঠাপানির দ্ধারা পরিবর্তন করা।
খ. প্রতি শতাংশ জলাশয়ে ৩/৪টি হারে চালতা ছেঁচে সারা পুকুরে ছড়িয়ে দিতে হবে।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. বর্ণিতহারে চালতা প্রয়েগের ফলে ক্ষতরোগ আক্রান্ত সিলভার কার্প দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
খ. পুকুরকে বন্যামুক্ত রাখুন।

) রোগের নাম -পাখনা অথবা লেজ পঁচা রোগ
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – রুই জাতীয় মাছ, শিং মাগুর ও পাঙ্গাস মাছ।

রোগের লক্ষন কারণ
ক. প্রাথমিক ভাবে পিঠের পাখনা এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য পাখনা আক্রান্ত হয়। এ্যারোমোনাড্স ও মিক্সোব্যাকটার গ্রুপের ব্যাকটেরিযা দ্ধারা এ রোগের সৃষ্টি হয়।
খ. পানির পি-এইচ ও ক্ষরতার স্বল্পতা দেখা দিলে এ রোগ দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা ঔষধ প্রয়োগ
ক. ০৫ পিপিএম পটাশযুক্ত পানিতে আক্রান্ত মাছকে ৩-৫ মিনিট গোসল করাতে হবে।
খ. পুকুরে সার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. রোগজীবানু ধ্বংসের পর মজুদকৃত মাছের সংখ্যা কমাবেন।
খ. প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করুন।

) রোগেরনামপেটফোলারোগ
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – রুই জাতীয় মাছ, শিং মাগুর ও পাঙ্গাস মাছ।

রোগের লক্ষন কারণ
ক. মাছের দেহের রং ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং পানি ও সঞ্চালনের মাধ্যমে পেট ফুলে যায়।
খ. মাছ ভারসাম্যহীনভাবে চলাচল করে এবং পানির ওপর ভেসে থাকে । অচিরেই আক্রান্ত মাছের মৃত্যু ঘটে।
গ.  এ্যারোমোনাড্স ব্যাকটেরিয়া এ রোগের কারণ।

চিকিৎসা ঔষধ প্রয়োগ
ক. খালী সিরিঞ্জ দিয়ে মাছের পেটের পানিগুলো বের করে নিতে হবে। প্রতি কেজি মাছের জন্য ২৫ মিঃ গ্রাঃ হারে ক্লোরেমফেনিকল ইনজেকশন দিতে হবে। অথবা,
খ. প্রতি কেজি খাবারের সাথে ২০০ মিঃ গ্রাঃ ক্লোরেমফেনিকল পাউডার মিশিয়ে সরবরাহ করা।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. পট্রতি শতাংশ জলাশয়ে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করুন।
খ. মাছের খাবারের সাথে ফিশমিল ব্যবহার করুন।
গ. মাছকে সুষম খাদ্য সরবরাহ করবেন।
ঘ. প্রাকৃতিক খাবার হিসেবে প্লাংকটনের স্বাভাবিক উৎপাদন নিশ্চিত করুন।

) রোগের নামসাদা দাগ রোগ
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – মৃগেল ও রুই মাছের পোনা।

রোগেরলক্ষনকারণ
ক. পোনা মাছের আঁইশ, পাখনাসহ সারা দেহে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা দাগ দেখা দেয়
খ. প্রায় ২ সপ্তাহকালীন সময় অব্যাহত থাকে।
গ. এ রোগ ব্যাকটেরিয়া জনিত।

চিকিৎসাঔষধপ্রয়োগ
ক. মাছের সংখ্যা কমিয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি করা। জীবানু মুক্ত পানিতে দুই সপ্তাহের মধ্যে মাছ স্বাভাবিকভাবেই আরোগ্য লাভ করে। বিশেষ কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পোনা মাছের লালন পুকুর প্রস্তুত করলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব এড়ানো যায়।

) রোগের নামমিক্সো-বোলিয়াসিস
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – রুই জাতীয় মাছ

রোগেরলক্ষনকারণ
ক. মিক্সো-বোলাস প্রজাতির এককোষী প্রাণী রুই জাতীয় মাছের বিশেষ করে কাতলা মাছের ফুলকার উপরে সাদা কিংবা হালকা বাদামী গোলাকার গুটি তৈরী করে বংশ বৃদ্ধি করতে থাকে। ক্রমান্বয়ে ঐ গুটির প্রভাবে ফুলকায় ঘা দেখা যায় এবং ফুলকা খসে পড়ে। শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যাঘাত সৃষ্টিতে মাছ অস্থিরভাবে ঘোরাফেরা করে এবং খাবি খায়। শেষ রাতের দিকে ব্যাপক মড়ক দেখা যায়।

চিকিৎসাঔষধপ্রয়োগ
ক. অদ্যাবধি এই রোগের সরাসরি কোন চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয় নাই।
খ. তথাপিও প্রতি শতাংশ জলাশয়ে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করলে পানির গুনাগুন বৃদ্ধি পেয়ে অম্লত্ব দূর হয়। পরজীবিগুলো ক্রমান্বয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় এবং মাছ নিষ্কিৃতি লাভ করে।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. পুকুর প্রস্তুতকালীন প্রতি শতাংশ জলাশয়ে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করে মাটি শোধন করা হলে আসন্ন মৌসুমে এ রোগের প্রকোপ থাকে না।

Source: http://www.ais.gov.bd/site/ekrishi/afad0c56-3abe-4ad5-a9c2-e5537bbb3fa2

 

কৃষি কাজে কোকো পিটের ব্যবহার

images

কোকো পিট একটি জৈব উপাদান যা নারিকেলের আঁশ এর থেকে বাছাই করা এক প্রকার গুঁড়ো উপাদান। এই জৈব উপাদান সম্পূর্ন স্বয়ংক্রিয় আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ইলেকট্রিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই কোকো পিটের ব্লক তৈরি করা হয়, যা আধুনিক কৃষি খামারীরা তাদের কৃষিজ খামারে ব্যবহার করে থাকেন।

কোকো পিট এর ব্যবহারঃ

কোকো পিট উন্নত বিশ্বে বীজ তলা তৈরি, হাইড্রপোনিক্স চাষাবাদ, বাড়ীর ছাদে বাগান করার পাশাপাশি অনেক দেশে মাটির বিকল্প মাটিতে তৈরিতে অন্যান্য জৈব উপাদানের সাথে সাথে এই কোকো পিট জৈব উপাদান মিশ্রণ করে থাকে। বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য মাটি অনেক ওজন ধারণ করে থাকে এবং আমাদের দেশের শহরে বাগান করার জন্য ভালো মানের মাটি সংগ্রহ করা একটি দূর্লভ কাজের মধ্যেই পরে। তাই আমাদের দেশেও খুব ধীর গতিতে হলেও এখন কোকো পিটের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য এই কোকো পিটের ব্যবহার উন্নত বিশ্বে তেমন বেশী প্রচার করতে হয় না কিন্তু আমাদের দেশে এই কোকো পিটের ব্যবহারে এখনো মানুষের সচেতনা তেমন তৈরি হয়নি বিধায় মানুষ এখনো ছাঁদ বাগান করার জন্য এই কোকো পিট ব্যবহার শুরু করতে পারে নাই।

ছাঁদ বাগান করার জন্য এটি একটি খুবই ওজন কম এবং বেশী পরিমাণ জলীয় অংশ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ১০০% জৈব উপাদান।
কোকো পিটে প্রাকৃতিকভাবে অপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান থাকে।
কোকো পিট হালকা এবং ঝুরঝুরে হবার কারনে এর ভিতরে খুব সহজে মাটিতে উদ্ভিদের জন্য খাদ্য তৈরিতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।
কোকো পিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কোকো পিটের পি এইচ এর মাত্রা থাকে ৪.২ থেকে ৬.২ এবং এর ভেতরে ক্ষারত্ব সহনশীল পর্যায় থাকে বলে উন্নত বিশ্বে এই কোকো পিটের ব্যবহার সব চাইতে বেশী।
কর্পোরেট ফার্ম গুলো বীজ জার্মিনেশন থেকে শুরু করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ করার জন্য এই কোকো পিট বহুল আলোচিত।
ওজনে হালকা হওয়াতে পরিবহণে সহজ তাই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহণ এবং ছাঁদে বগান করার জন্য এই কোকো পিট অধিক ব্যবহার হয়।
বানিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে এখনো সেইভাবে কোকো পিট ব্যবহার শুরু হইনি তবে প্রাপ্তী এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা অনেক বেশী প্রয়োজন তবেই এর ব্যবহার দিন কে দিন বাড়বে। বাংলাদেশে খুব বেশী কোম্পানি এই কোকো পিট আমদানী করে না আর যারা করছে তারাও খুব বেশী মার্কেট না থাকার কারনে খুব বেশী পরিমাণ আমদানী করতে সাহস পায় না। আমাদের দেশে এর যপোযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত হলেই আমাদের দেশে এর ব্যপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং দাম ও তখন অনেক কমে যাবে।

COCO-PEAT

বর্তমানে নার্সারী গুলো ৫০ কেজি থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে যা সম্পূর্ন পি এইচ নিয়ন্ত্রন করা থাকে না এবং এর ভেতরে অনেক জলীয় অংশ থাকে বিধায় পরিমানে বেশী ক্রয় করেও শুঁকানোর পরে তা পরিমানে কমে যায় বিধায় ক্রেতা সাধারণত খুশী হতে পাড়ে না। আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস এই প্রচারণায় যে এর ব্যবহার শুরু হলেই এর বাণিজ্যিক আরো প্রসার ঘটবে এবং দাম ও কমে যাবে।

নিচু এলাকার জন্য উত্তম ফসল ভাসমান সবজি চাষ

নিচু এলাকার জন্য উত্তম ফসল ভাসমান সবজি চাষবাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই জলাবদ্ধপ্রবন। যেখানে সাধারণত কোনো ধরনের ফসল ফলানো যায় না। এমন এলাকার জন্য সবচেয়ে ভাল হল ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ।  ভাসমান এ পদ্ধতিকে তারা স্থানীয় ভাষায় বলে ধাপ পদ্ধতি বা বেড় পদ্ধতি। পানিতে ভাসমান বলে ভাসমান পদ্ধতি। আর কচুরিপানা টেপাপানা দিয়ে ধাপে ধাপে এ কাজটি সাজানো হয় বলে ধাপ পদ্ধতিও। দূর থেকে মনে হয় সবুজের জৈব গালিচা। দেখলে তখন মনে হয় অনিন্দ্য সবুজ সুন্দর ভুবন। সেখানে পুরুষ মহিলাদের সম্মিলিত বিনিয়োগে সৃষ্টি হচ্ছে দেশের এক প্রতিশ্রুত ইতিহাস আর সমৃদ্ধির হাতছানি। জোয়ারের পানিতে ভাসছে, আর ভাটায় জেগে উঠা উজানি চরে ভিন্নভাবে জেগে উঠেছে এসব। কৃষক দিনের পর দিন দেখে, শুনে, বুঝে প্রয়োজনে ভাসমান বা কচুরিপানার ধাপ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। বর্ষায় এসব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর নিচু জমি জলে বন্দি থাকে। জলাবদ্ধতা আর কচুরিপানা অভিশাপ কৌশলের কারণে পরিণত হলো আশীর্বাদে। ধারণা করা হয় পদ্ধতিটি প্রথম বের করেন বরিশাল অঞ্চলে। সেখানেই শুরু হয় ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ।

ভাসমান ধাপের উপরে বিভিন্ন রকম সবজির দৌলা দিয়ে মনের মাধুরি দিয়ে সাজায় নান্দনিক ভাসমান বীজতলা। সেসব ভাসমান বীজতলায় কোনোটায় পেঁপে, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটি আবার অন্যগুলো টমেটো, বেগুন, করলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সবুজ ফুলকপি, শসার চারা উৎপাদন এবং লাউশাক, লালশাক, পালংশাক, ডাঁটাশাক বা সাদা শাকের চাষও করেন। এসব ভাসমান বীজতলাগুলো যাতে ভেসে না যায়, সেজন্য তারা শক্ত বাঁশের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে। শুকনো মৌসুমে পানি সরে গেলে সেসব কচুরিপানার ধাপ জমিতে মিশে জৈব পদার্থের অতিরিক্ত জোগান দেয়। জমি হয় উর্বর। শুকনো মৌসুমে এখানকার মানুষরা চাষ করে বোরো ফসল। এত দিন তারা ভাসমান বীজতলায় কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করত না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে অল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার ব্যবহার করে ভালো ফল পাচ্ছেন। আগে যেখানে সবজির চারাগুলো ছিল কিছুটা লিকলিকে দুর্বল এখন আধুনিক ব্যবস্থা অবলম্বনে আর মানসম্মত বীজ ব্যবহারে শক্ত সবল স্বাস্থ্যবান চারার ফলনে সুফল পাচ্ছেন।

Source:  শারমিন সুলতানা, ০৫-০৬-২০১৭

http://krishi.gov.bd/

নারিকেল চাষাবাদ

নারিকেল একটি অর্থকারী ফল ও তৈল জাতীয় ফসল। ইহা Palmaceae পরিবার ভূক্ত একটি উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম Cocos nucifera. বিশ্বের ৮০টিরও অধিক দেশে নারিকেলের চাষ হয়ে থাকে। নারিকেল গাছ নানা কাজে লাগে। গাছ থেকে ঘর তৈরীর কাঠ/ খুটি পাওয়া যায়। কঁচি ডাবের পানি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর পানীয়। পুস্পমঞ্জুরী কাটলে যে রস পাওয়া যায় তা হতে গুড় ও তাড়ি তৈরী হয়। নারিকেল ছোবড়া দিয়ে দড়ি, মাদুর তৈরী হয়।

নারিকেলের মালা দিয়ে একটিভেটেড কাঠ কয়লা, বাটি, বাক্স, ঘর সাজাবার দ্রব্যদি তৈরী হয়। পাতা দিয়ে মাদুর, ঘর আচ্ছাদন এবং শলা দিয়ে ঝাড়ু তৈরী হয়। নারিকেলের কোপ্রা হতে বিভিন্ন উপদেয় খাবার, কেশ তৈল তৈরী হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে নারিকেলের তেল খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর প্রধান নারিকেলের উৎপাদনকারী দেশ হলো ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ইত্যাদি । বাংলাদেশে মাথাপিছু নারিকেল আহরনের পরিমান একটিরও কম পক্ষান্তরে শ্রীলংকায় এর পরিমান ১৪০ টি।

জাত

নারিকেল সাধারণত দুই প্রকার
(১) লম্বা জাত ও (২) খাটো জাত।
লম্বা জাতঃ গাছ দীর্ঘাকার, ৮/৯ বছরে ফলবান হয় এবং ৬০/৭০ বছর পর্যন্ত ফল ধরে থাকে।
খাটো জাতঃ গাছ খাটো। গাছ ৩/৪ বছরে ফলবান হয় এবং ৩০-৪০ বৎসর ফল ধরে।বারি কর্তৃক অবমুক্তায়িত জাত
বারি নারিকেল -১
গাছ মধ্যম আকৃতির । সারা বছর ফল ধরে। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছে বছরে ৬৫-৭৫ টি নারিকেল ধরে। ফল ডিম্বাকর । ফলের গড় ওজন ১২০০ – ১৪০০ গ্রাম। শাঁসের ওজন ৩৭০-৩৯০ গ্রাম। শাঁসের পুরুত্ব ৯.৯ -১১ মি.মি । তেলের পরিমান ৫৫-৬০% এবং জাতটি ফল ঝরা রোগ সহনশীল।

বারি নারিকেল -২
বড় আকৃতির জাত । একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছে ৬৫-৭৫ টি নারিকেল ধরে। ফলের গড় ওজন ১.৫-১.৭ কেজি। শাঁসের পুরুত্ব ১০-১২ মি.মি। তেলের পরিমান ৫০-৫৫ % । এটি পাতার দাগ রোগ সহনশীল একটি জাত। দেশে সর্বত্রই চাষ উপযোগী জাত।

বীজতলা ব্যবস্থাপনা

বীজমাতা নির্বাচনঃ
একইরূপ যত্ন নেয়া সত্বেও দেখা যায় কোন কোন গাছ দেরীতে বড় হয় এবং ফল প্রদান করে। আবার কোন কোন গাছ তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং ফল ধরে। কোন গাছ বৎসরে ৩০/ ৪০ টি আবার কোন গাছ ১০০ টির বেশী নারিকেল ধরে। নারিকেলের আকার ও শাঁসের মধ্যেও বেশ তারতম্য দেখা যায়। এসব কারণে বীজ সংগ্রহের সময় বীজমাতা ও বীজ নারিকেল বাছাই করে নেয়া উচিৎ।
১) এক সংগে অনেক গাছ আছে এমন যায়গা হতে বীজমাতা নির্বাচন করা উচিৎ।
২) প্রতিটি গাছে বৎসরে ১০০ টি নারিকেল এবং ৩০ কেজি শাঁস/কোপ্রা উৎপন্ন হয়।
৩) বীজমাতার বয়স ২০-৬০ বৎসর হতে হবে এবং প্রতিকুল অবস্থায় বেশী ফল ধারণক্ষম।
৪) গাছে পাতার সংখ্যা ৩৫-৪০ টি থাকবে।
৫) পাতা মুকুটে আট-সাট ও সুশৃঙ্খল বিন্যাস থাকবে।
৬) পাতার বোটা খাটো এবং প্রসস্থ ধরণের হবে।
৭) নারিকেল মাঝরি হতে বড় আকারের এবং
৮) আকৃতি গোলাকার হতে হবে।
৯) নির্বাচিত বীজমাতা গাছে আলকাতরা দিয়ে গোলাকার বা ক্রস চিহ্ন দিতে হবে। 

ভাল বীজের বৈশিষ্ট্যঃ
১) বীজের খোসা পাতলা, খো্‌ল বড় ও শাঁস পুরু হওয়া বাঞ্চনীয়।
২) বীজের মধ্যে প্রচুর পানি থাকতে হবে।
৩) বীজ রোগ ও পোকা-মাকড় মুক্ত হতে হবে।
৪) বীজ গোলাকার ও পরিধি ৪৫-৫৫ সে.মি হলে উত্তম।
৫) বীজের উপরিভাগ মসৃন এবং উজ্জ্বল হতে হবে।
৬) বীজ অবশ্যই পানিতে ৪৫ ডিগ্রী থেকে ডিগ্রী কৌনিক কোনে ভাসতে হবে।

বীজ সংগ্রহঃ
বীজমাতা গাছ হতে প্রতি মাসে নারিকেল পাওয়া গেলেও বেশীর ভাগ নারিকেল চৈত্র হতে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। পাকা নারিকেলের রং তামাটে বা খয়েরী রংয়ের হয়। পাকা নারিকেল গাছ হতে সরাসরি নীচে না ফেলে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে নামানো উত্তম। গাছ হতে বীজ সরাসরি নিচে ফেলে দিলে বীজের ভ্রুন আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং গজানোর হার কমে যায়।

বীজতলা তৈরীঃ
সংগৃহীত বীজ সাথে সাথে বীজতলায় না বসিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে ২/৩ সপ্তাহ সাজিয়ে রেখে হালকা পানি ছিটালে বীজের অংকুরোধগম দ্রুততম হয়। আগে গজানো চারা তাড়াতাড়ি ফল দেয় এবং বেশী ফল ধরে। বেলে ও দোঁ -আশ মাটি বীচতলার জন্য উত্তম। জায়গাটা যেন বেশী ছায়াময় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাটি ৯ -১২ ইঞ্চি গভীর করে কুপিয়ে মিহি করে জমি তৈরী করতে হবে। বীজতলাটি ১.২০ মিটার চওড়া এবং ১৭ মিটার লম্বা করে তৈরী করতে হবে। ২টি বীজ তলার মাঝে নালা হিসাবে ৫০ সেঃমিঃ জায়গা খালি রাখতে হবে। এই মাপে বীজ তলা তৈরী করলে প্রতি বিঘায় ৫১ টি বেড/বীজতলা তৈরী করা যাবে। বেড সমূহ উত্তর দক্ষিণ মুখী হতে হবে। এতে প্রতিটি চারা সমানভাবে সুর্যের আলো পাবে। বীজতলায় গোবর না প্রয়োগ না করাই উত্তম কারণ এতে উইপোকার আক্রমন বাড়ে। নারিকেল চারা পুষ্টি ও সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রতি শতক বীজতলাতে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০০ গ্রাম এমওপি সার শেষ চাষে জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। সার মিশানোর ৭-১০ দিন পর বীজতলায় বীজ রোপন করতে হবে। বীজতলায় উইপোকার আক্রমণ রোধ করার জন্য বীজতলা তৈরীর শেষ চাষের সময় সেভিন পাউডার / রিজেন্ট প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বেডের ৫টি সারির প্রতিটিতে ৫০ টি করে ১ টি বেডে মোট ২৫০ টি বীজ রোপন করা যাবে। এতে ১ বিঘায় ৫১টি বেডে মোট ১৩ হাজার বীজ নারিকেল রোপন করা যাবে। রোপনের সময় বীজে প্রশস্ত অংশ মাটির নীচের দিকে দিতে হবে এবং বীজের পিঠ মাটির ১ ইঞ্চি উপরে থাকবে।

বীজ তলার পরিচর্যাঃ
বীজ রোপনের পর প্রতিসপ্তাহে ২ বার সেচ দিতে হবে। আগাছ, পোকা-মাকড় ও রোগবালাই দমন করতে হবে। প্রখর রৌদ্র থেকে বীজতলাকে বাঁচাতে মালচিং/ ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। চারা গাজানোর পর থেকে মাসে প্রতি শতক বীজতলায় ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০০ গ্রাম এবং পটাশ সার ৫০০ গ্রাম উপরি প্রয়োগ করতে হবে। মাঝে মধ্যে নালা থেকে কোদাল দিয়ে মাটি তুলে বেডের উপর চারার গোরায় ছড়িয়ে দিতে হবে।

বীজতলায় তরল সার প্রয়োগঃ
বীজতলায় তরল সার প্রয়োগে চারা তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠে । তরল সার তৈরীর ফর্মূলা নিম্নরুপঃ ২০ লিটার পানিতে-গোবর ৫০০ গ্রাম, খৈল (সরিষা / নিম) ৫০০ গ্রাম, ইউরিয়া ১০ গ্রাম, টিএসপি ৩০ গ্রাম, এমওপি ২০ গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ১০ গ্রাম মিশিয়ে হাফ ড্রামে ১০ – ১৫ দিন পঁচাতে হবে। অতঃপর ছেকে প্রতি ১ লিটার মিশ্রণ ৪ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে বেডে প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বেডে ৮-১০ লিটার মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে। মিশ্রণটি বেডে প্রয়োগের আগে পানি দিয়ে বেড ভিজিয়ে নিতে হবে। সেচ প্রদানের ৪- ৫ ঘন্টা পর তরল সার বেডে প্রয়োগ করতে হবে।

চারা নির্বাচনঃ
বীজ সংগ্রহের ৪ মাসের মধ্যে যে সকল বীজ হতে চারা গজায় সেগুলো উত্তম চারা। যে সব চারায় পাতার সংখ্যা বেশী, পাতা চওড়া ও ঘন সবুজ বর্ণের, বোটা খাট ও চওড়া, শিকর বেশী এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায় সে সকল চারাই উৎকৃষ্টতম চারা। সাধারাণত : ৮/১০ মাস বয়সের চারা রোপনের জন্য উত্তম। চারার বয়স বেশী হলে চারার পাতায় লিপ স্পট রোগের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। বোদ্দ মিক্সার / কপার জাতীয় ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যায়।

কান্ডের গোড়া পচা রোগঃ
ছত্রাক ঘটিত রোগ। Ghanoderma spp. নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয় । প্রধানতঃ বয়স্ক ও দূর্বল গাছ গুলোই এ রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। শিকড়ের মধ্যেমেই এ রোগের বিস্তার লাভ করে।লক্ষণঃ
আক্রান্ত শিকড় গুলো লম্বা হয়ে যায়। পত্রক শুকিয়ে যাওয়া, হলদে থেতে বাদামী বর্ণ ধারণ করা পরিশেষে পাতা গুলো শুকিয়ে গাছকে বেষ্টন করে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। কান্ডের গোড়ায় বৈশিষ্টমূলক বাদামী রংগের দাগ হয় এবং বাদামী রংয়ের রস / তরল নির্গত হয়। গাছের ফল ঝরে পড়ে এবং ফলের সংখ্যা কমে যায়। মুকুট ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসে পরিশেষে গাছ মারা যায়। ঝড়ে মুকুট খসে পড়ে এবং গাছ মুকুটবিহীন অবস্থায় দাড়িয়ে থাকে।

দমণঃ
এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না গেলে এ রোগ দমন করা দুঃসাধ্য।
১) আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্থ গাছ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২) আক্রামনের প্রাথমিক আবস্থায় আক্রান্ত সকল পোষ্য-কলা অপসারণ করে বোর্দো পেষ্ট লাগাতে হবে। গাছের মাথা থেকে নতুন পাতা না গজানো পর্যন্ত ঔষধ ব্যবহৃত জায়গাটি ঢেকে রাখতে হবে।
৩) আশে পাশে সকল সুস্থ গাছে বোর্দো মিক্সার স্প্রে করতে হবে।
৪) পানি নিকাশ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।

পাতার ব্লাইট রোগঃ
ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সংগঠিত হয়। সাধারণতঃ আঘাত প্রাপ্ত পাতা ও দুর্বল গাছে এ রোগের লক্ষণ বেশী দেখা যায়্‌

লক্ষণঃ
পাতার উপরে ধুসর রংয়ের কিণারা সহ হলুদ বাদামী রংয়ের দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে সম্পুর্ণ দাগটি ধুসর বর্ণ ধারণ করে। দাগ গুলো শিরার সমান্তরাল ভাবে বাড়তে থাকে। সর্বশেষে দাগগুলো একত্রিত হয়ে পত্রকে চেহারা বিবর্ণ করে দেয়। পটাশ সারের ঘাটতি বা নাইট্রোজেন সারের আধিক্য এ রোগ বিস্তারে সহায়তা করে।

দমনঃ
আক্রান্ত গাছে বোর্দ মিক্সার / তামাঘটিত ছত্রাক নাশক / জিং‌ক ও ম্যাগনেশিয়াম সম্বলিত সর্বোমোট ১৫ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়্‌ ।

ফল পঁচা রোগঃ
ছত্রাক জনিত রোগ। Phytophthora omnitora নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয়।

লক্ষণঃ
অপক্ক ফল পঁচে যাওয়া এবং ঝড়ে পড়া এ রোগের লক্ষণ প্রথমে ফলের গোড়ার দিকে বিবর্ণ হয় যা গাড় সবুজ ও পানি ভেজা মনে হয়। পরবর্তীতে তা বাদামী রং ধারণ করে । কলা গুলো শুকিয়ে গর্তের সৃষ্টি করে। ফলের গায়ে সাদা জটাকার সংক্রামক জীবানু দেখা যায়। নারিকেলের খোল শক্ত না হলে পচন ক্রিয়া শাসেও শুরু হয় বর্ষা কালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা দেয়।

দমনঃ
বোর্দ মিক্সার / ডায়থেন এম ৪৫, প্রতি ১৫ দিন পর পর স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায় এবং আক্রান্ত গাছের পাতা সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।

প্রধানতঃ ২টি পোকা নারিকেলের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। একটি গোবরে পোকা অপরটি লাল পাম উইভিল।গোবরে পোকাঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা ১ ইঞ্চি লম্বা এবং ১ ইঞ্চি চওড়া। গায়ের উপর কালো শক্ত ঢাকনা থাকে। মাথার উপর গন্ডারের মত ১টি শিং থাকে। সাধারাণতঃ গোবরের গাদা ও ময়লা আবর্জনায় এ পোকা জন্মায়।

ক্ষতির ধরণঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা নারিকেল গাছের কচি অগ্রভাগে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং কচি অংশগুলোর রস গ্রহণ করে। এ পোকা গাছের যে সমস্ত কচি অংশগুলো কেটে ফেলে সে গুলো পঁচে যায়। গাছের ফুল ও ফল ধারণ এবং বৃদ্ধি ব্যহত হয়। অনেক সময় সদ্য গজানো কচি পাতায় কাচি দিয়ে কাটার মতো দেখা যায়। আক্রমণ ব্যাপক হলে পাতাগুলো নিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং গাছটি মারা যায়।

দমনঃ
১) নারিকেল বাগানের ভিতর বা আশেপাশে গোবরের গাদা বা ময়লা আবর্জনা রাখা যাবে না।
২) যে সকল গাছ মারা গেছে বা মরার উপক্রম হয়েছে সেগুলোকে বাগান হতে অপসারণ পূর্বক ধ্বংস করতে হবে।
৩) গাদার অগ্রভাগে বা ডগায় পোকার ছিদ্র দেখা গেলে তার মধ্যে লোহার শিক ঢুকিয়ে পোকাকে মেরে ফেলতে হবে।
৪) সিরিন্স দ্বারা যে কোন কীটনাশক পানিতে মিশিয়ে দিয়ে ছিদ্রের মধ্যে প্রয়োগ করো ছিদ্রের মুখটি বন্ধ করে দিতে হবে।
৫) গাছের পাতা কাচি দিয়ে কাটার মত করে কাটা রয়েছে দেখলেই পোকা দমনে তৎপর হতে হবে।
৬) পঁচা খৈল দ্বারা ফাদ তৈরী করে গোবরে পোকাকে মারার চেষ্টা করতে হবে।
৭) গাছের ৫/৬ পাতার পত্র কক্ষে করাতের গুড়া এবং ডায়াজিন ৯.১ হারে মিশেয়ে প্রয়োগ করলে পোকা দমন করা যায়।

লাল পাম উইভিলঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা খয়েরী রং হতে তামাটে রংয়ের হয়। পোকার দেহ সরু এবং লম্বায় ১-১.৫০ ইঞ্চি হয়ে থাকে। দুপাশে লম্বা ২টি শূং আছে যা পোকার দেহ হতে লম্বা হয়।

ক্ষতির ধরণঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা ও এর কিড়া গাছের কান্ডের ভিতরের নরম শাঁস কুড়ে কুড়ে খায়। কান্ডের চারদিকে ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যায়। অনেক সময় ছিদ্র দিয়ে পোকার বিষ্টা ও কাঠের গুড়া বাহির হয়ে আসে। গাছের ডগার নিচ হতে পাতাগুলো নিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং আস্তে আস্তে গাছ মারা যায়।

দমন পদ্ধতিঃ
যে কোন কীটনাশক পানির সাথে মিশিয়ে ইনজেকশনের সিরিন্স দিয়ে ছিদ্রপথে গাছের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে মূখ গুলো কাদা মাটি দিয়ে লেপে দিতে হবে। এভাবে প্রয়োজনে ২/৩ বার ব্যবস্থা নিলে পোকার দমন নিশ্চিত হবে।

উই পোকাঃ
উই পোকা নারিকেল বীজতলা এবং বয়স্ক গাছের জন্য ক্ষতিকর।

ক্ষতির ধরণঃ
পোকা অনেক সময় গাছের শিকড় খেয়ে ফেলে, গাছের গুড়ির উপর দিয়ে মাটিসহ গাছের মাথা পর্যন্ত চলে যায়। এ সময় পোকা গাছের বাকল খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। গাছের ডগার স্পেদ আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ ক্রাউনটি নষ্ট করে ফেলতে পারে। এমনকি গাছটি মারাও যেতে পারে।

দমনঃ
বৎসরে ২ বার সার প্রয়োগের সময় উই পোকার আক্রমন প্রবন এলাকায় গাছের গোড়ায় সেডিন পাউডার/ রিজেন্ট প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যায়।

Source: www.krishibangla.com

মাশরুম চাষ : ঘরে বসে আয়

mushroom-farming-in-nepal

যেকোনো সমান জায়গায় কম আলোয় মাশরুম চাষ করা যায়। বীজ বোনার পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই ফলন। আট থেকে দশ হাজার বীজ থেকে দৈনিক ১৫-১৮ কেজি মাশরুম পাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম কাঁচা মাশরুম ২০-২৬ টাকা, শুকনা ১৭০-১৮৫ টাকা এবং গুঁড়া ১৭০-১৮৫ টাকা বিক্রি করা যায়। তাই বাড়তি আয়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে পারেন মাশরুম চাষ।এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। সুস্বাদু এই খাবারের স্বাদ অনেকটা মাংসের মতো। মাশরুম দাঁত ও হাড়ের গঠনে বিশেষ উপযোগী। রক্তহীনতা, বেরিবেরি ও হূদরোগ প্রতিরোধে এবং বহুমূত্র রোগে বিশেষ কার্যকরী। প্রায় তিন লাখ ছত্রাকের মধ্য থেকে মাত্র ১০ প্রজাতির ছত্রাক খাওয়ার উপযোগী।

Pearl_Oyster_Kit_1_2000x

বাজার সম্ভাবনা

আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। মাশরুম শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিদেশে সবজি ও কাঁচামাল পাঠায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।

প্রয়োজনীয় মূলধন

মাশরুম চাষ করার জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পূঁজি না থাকে তাহলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকট আত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

আয়-ব্যয় ও লাভের হিসাব

অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাশরুমের দাম প্রায় ১২০ টাকা।

৪০ কেজির দাম ৪৮০০ টাকা।
কাঁচামাল ও অন্যান্য খরচ প্রায় ২৫০০ টাকা।
সুতরাং ৪০ কেজি মাশরুম বিক্রয় করে লাভ প্রায় ২৩০০ টাকা

প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান

স্থায়ী উপকরণ

উপকরণ পরিমাণ আনুমানিক মূল্য (টাকা প্রাপ্তিস্থান
গামলা ১টা ৬০-৮০ থালা-বাটির দোকান
ছোট চা-চামচ ১টা ১০-১৫ থালা-বাটির দোকান
ব্লেড ১টা ২-৫ মুদি দোকান
ছুরি ১টা ২০-৩০ থালা-বাটির দোকান
পলিপ্রোপাইল ব্যাগ ১০টা ২০-৩০ মুদি দোকান
মোট খরচ=১১২১৬০ টাকা

কাঁচামাল

উপকরণ পরিমাণ আনুমানিক মূল্য (টাকা প্রাপ্তিস্থান
মাশরুম বীজ বা স্পন ২০০ টা বা ১০০ কেজি ২০০০ ঢাকা জেলার সাভার
যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ ৫০০
মোট খরচ=২৫০০ টাকা

মাশরুমের উপকারিতা

মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর। এর উপকারিতাসমূহ হল-

  • রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
  • মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।
  • রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

খাবারের উপযোগী মাশরুম

আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় –

  • স্ট্র মাশরুম : ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।
  • ইয়ার মাশরুম: সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।
  • অয়েস্টার মাশরুম: আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।

মাশরুম উৎপাদন কৌশল

চাষের উপযোগী স্থান

মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।

অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি

অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।

১ম পদ্ধতি

  • মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
  • মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
  • অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
  • বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
  • একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।

২য় পদ্ধতি

  • মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
  • দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
  • পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
  • খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
  • পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
  • খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
  • পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
  • ১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
  • প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • ৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
  • এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।

সাবধানতা

  • বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
  • মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
  • কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।

Source: www.ajkerkrishi.com

গাঁদা ফুলের রোগ ও তার প্রতিকার

ফুল সৌন্দর্য্যরে প্রতীক। পৃথিবীর সব দেশেই বিভিন্ন জাতের, বিভিন্ন রংয়ের ফুলের চাষ হয়ে থাকে। আমাদের দেশেও তেমনি প্রায় সব ঋতুতেই ফুল পাওয়া যায়, তবে শীত মৌসুমেই সব চেয়ে বেশী ফুল পাওয়া যায়। অন্য ফসলের মত ফুলও যথেষ্ট অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করে। এদেশের মানুষ আজকাল ফুলের নানাবিধ ব্যবহার শিখেছে, তাই ফুল এদেশের বিভিন্ন জেলায় চাষ শুরু হয়েছে এবং এরই সাথে ফুলের বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সমস্যা গুলোর মধ্যে ফুলের রোগ বালাই একটি অন্যতম। নিন্মে গাঁদা ফুলের প্রধান প্রধান রোগ এবং উহার প্রতিকারের ব্যবস্থা বর্ননা করা হলো।

নেতিয়ে পড়া  (Damping off) রোগ

রোগের কারনঃ পিথিয়াম এ্যাফানিডারমেটাম (Pythium aphanidermatum) নামক ছত্রাক দ্বারা এরোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তারঃ

জীবানু মাটিতে বেঁচে থাকতে পারে। আক্রান্ত কাটিং, মাটি, পানি ও ব্যবহৃত কৃষি যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রোগের বিস্তার ঘটে।

রোগের লক্ষণঃ

  • এ রোগ যে কোন বয়সের গাছে হতে পারে।
  • তবে চারা গাছে অথবা বীজ তলায় এ রোগ বেশী হয়।
  • আক্রান্ত গাছের পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
  • গাছের গোড়া বাদামী বর্ণের হয় ও ফেটে যায়।
  • রোগাক্রান্ত গাছের গোড়া পঁচে গাছ মাটিতে শুয়ে পরে।

রোগের প্রতিকারঃ

  • বীজতলা শোধন করতে হবে।
  • অর্ধকাঁচা মুরগীর বিষ্ঠা (৪-৫ টন/হেঃ) আদা রোপনের ২১ দিন পূর্বে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
  • মেটালেক্সিল + মেনকোজেব (যেমন-রিডোমিল গোল্ড) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ছায়ায় শুকিয়ে নিয়ে জমিতে বপন করতে হবে।
  • মেটালেক্সিল + মেনকোজেব (যেমন-রিডোমিল গোল্ড) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় মাটিতে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

 

গোড়া পঁচা (Foot and root rot) রোগ

রোগের কারনঃ  স্ক্লেরোশিয়াম রফসি (Sclerotium rolfsii) নামক ছত্রাক দ্বারা এরোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তারঃ

মরা গাছের ডাঁটা ও মাটিতে গুটি অবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে। বেশী পরিমান নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করলে রোগটির প্রকোপ বাড়ে। সেচের পানির সাথে স্ক্লেরোশিয়া ভেসে যেয়ে অন্য গাছ বা মাঠে ছড়ায়।

রোগের লক্ষণঃ

  • এ রোগে আক্রান্ত হলে গাছ ঢলে পড়ে।
  • গাছের গোড়া পঁচে যায়।
  • পাতার রং বাদামী বা খড়ের মত হয়।
  • পঁচা স্থানে সাদা তুলার মত মাইসেলিয়া এবং সরিষার দানার মত স্কেøরোশিয়া লেগে থাকতে দেখা যায়।
  • সমস্ত গাছটা শেষে শুকিয়ে মারা যায়।

রোগের প্রতিকারঃ

  • রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে।
  • আক্রান্ত গাছের গোড়ায় পানি প্রয়োগ করা যাবে না ।
  • গাছের অঙ্গ ছাটাই করতে হবে, যাতে গোড়ায় সুর্যালোক প্রবেশ করে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে  ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়া কিছুক্ষন ভিজিয়ে রেখে ছায়ায় শুকিয়ে নিয়ে জমিতে রোপন করতে হবে।
  • জমিতে রোগ দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় মাটিতে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

 

পাতার দাগ (Leaf spot) রোগ

রোগের কারনঃ সারকোস্পোরা এসপি. (Cercospora sp.) নামক ছত্রাক দ্বারা রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তারঃ গাছের পরিত্যক্ত অংশে জীবানু বেঁচে থাকে।

রোগের লক্ষণঃ

  • যে কোন বয়সের গাছে এ রোগ হতে পারে।
  • সাধারনত: ফুল ও কলি অবস্থায় এর প্রকোপ বেশী হয়।
  • পাতার উপর হালকা সবুজ ধরণের দাগ পড়ে যা পরবর্তীতে ধূসর রং ধারণ করে।
  • পরবর্তীতে একাধিক দাগ একত্রিত হয়ে পাতা ঝলসে যায়।
  • ফুলের কলির ডাটা আক্রান্ত হলে কলি ভেঙ্গে যায়।
  • গাছ দূর্বল হয়ে পড়ে।
  • বেশী আক্রান্ত গাছের পাতা ঝরে পড়ে।

রোগের প্রতিকারঃ

  • গাছ অনুমোদিত রোপন দুরত্ব ব্যবহার করতে হবে।
  • সুষম সার ব্যবহার করতে হবে যাতে করে গাছের ডালপালা বেশী না হয়।
  • গাছে রোগ দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে অথবা প্রোপিকোনাজোল (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) ১ লিটার পানিতে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

 

বট্রাইটিস ব্লাইট (Botrytis blight) রোগ

রোগের কারনঃ বট্রাইটিস সিনেরিয়া (Botrytis cinerea) নামক ছত্রাক দ্বারা এরোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তারঃ ঠান্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়া রোগ বিস্তারের অনুকুল আবহাওয়া।

রোগের লক্ষণঃ

  • ফুলের উপর ধূসর বর্ণের অসম দাগ পড়ে।
  • তারপর ফুলগুলো পচে যায় ও কালো হয়ে যায়।
  • ফুলের ও কান্ডের পচা অংশের উপর ধূসর বর্ণে ছত্রাকের স্পোর দেখা যায়।
  • ১-২ সপ্তাহের মধ্যেই গাছ মারা যায়।

রোগের প্রতিকারঃ

  • গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়ে ফেলতে হবে।
  • রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে।
  • আক্রান্ত গাছ বা অংশবিশেষ দ্রুত কেটে সরিয়ে ফেলতে হবে।
  • জমিতে রোগ দেখা দিলে কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ১.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

 

Source:
বিজ্ঞানী ড. কে, এম, খালেকুজ্জামান
উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব)
মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই
শিবগঞ্জ, বগুড়া।

ছাঁদ কৃষি এবং কৃষি কাজে কোকো পিটের ব্যবহার

COCO-PEAT

কোকো পিট একটি জৈব উপাদান যা নারিকেলের আঁশ এর থেকে বাছাই করা এক প্রকার গুঁড়ো উপাদান। এই জৈব উপাদান সম্পূর্ন স্বয়ংক্রিয় আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে ইলেকট্রিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই কোকো পিটের ব্লক তৈরি করা হয়, যা আধুনিক কৃষি খামারীরা তাদের কৃষিজ খামারে ব্যবহার করে থাকেন।

কোকো পিট এর ব্যবহারঃ

কোকো পিট উন্নত বিশ্বে বীজ তলা তৈরি, হাইড্রপোনিক্স চাষাবাদ, বাড়ীর ছাদে বাগান করার পাশাপাশি অনেক দেশে মাটির বিকল্প মাটিতে তৈরিতে অন্যান্য জৈব উপাদানের সাথে সাথে এই কোকো পিট জৈব উপাদান মিশ্রণ করে থাকে। বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য মাটি অনেক ওজন ধারণ করে থাকে এবং আমাদের দেশের শহরে বাগান করার জন্য  ভালো মানের মাটি সংগ্রহ করা একটি দূর্লভ কাজের মধ্যেই পরে। তাই আমাদের দেশেও খুব ধীর গতিতে হলেও এখন কোকো পিটের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

বাসা বাড়ীর ছাঁদে বাগান করার জন্য এই কোকো পিটের ব্যবহার উন্নত বিশ্বে তেমন বেশী প্রচার করতে হয় না কিন্তু আমাদের দেশে এই কোকো পিটের ব্যবহারে এখনো মানুষের সচেতনা তেমন তৈরি হয়নি বিধায় মানুষ এখনো ছাঁদ বাগান করার জন্য এই কোকো পিট ব্যবহার শুরু করতে পারে নাই।

  • ছাঁদ বাগান করার জন্য এটি একটি খুবই ওজন কম এবং বেশী পরিমাণ জলীয় অংশ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ১০০% জৈব উপাদান।
  • কোকো পিটে প্রাকৃতিকভাবে অপকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস প্রতিরোধী উপাদান বিদ্যমান থাকে।
  • কোকো পিট হালকা এবং ঝুরঝুরে হবার কারনে এর ভিতরে খুব সহজে মাটিতে উদ্ভিদের জন্য খাদ্য তৈরিতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।
  • কোকো পিটে প্রাকৃতিক মিনারেল থাকে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরি এবং উপকারী অণুজীব সক্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • কোকো পিটের পি এইচ এর মাত্রা থাকে ৪.২ থেকে ৬.২ এবং এর ভেতরে ক্ষারত্ব সহনশীল পর্যায় থাকে বলে উন্নত বিশ্বে এই কোকো পিটের ব্যবহার সব চাইতে বেশী।
  • কর্পোরেট ফার্ম গুলো বীজ জার্মিনেশন থেকে শুরু করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ করার জন্য এই কোকো পিট বহুল আলোচিত।
  • ওজনে হালকা হওয়াতে পরিবহণে সহজ তাই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পরিবহণ এবং ছাঁদে বগান করার জন্য এই কোকো পিট অধিক ব্যবহার হয়।

বানিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে এখনো সেইভাবে কোকো পিট ব্যবহার শুরু হইনি তবে প্রাপ্তী এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা অনেক বেশী প্রয়োজন তবেই এর ব্যবহার দিন কে দিন বাড়বে। বাংলাদেশে খুব বেশী কোম্পানি এই কোকো পিট আমদানী করে না আর যারা করছে তারাও খুব বেশী মার্কেট না থাকার কারনে খুব বেশী পরিমাণ আমদানী করতে সাহস পায় না। আমাদের দেশে এর যপোযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত হলেই আমাদের দেশে এর ব্যপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং দাম ও তখন অনেক কমে যাবে।

বর্তমানে নার্সারী গুলো ৫০ কেজি থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে যা সম্পূর্ন পি এইচ নিয়ন্ত্রন করা থাকে না এবং এর ভেতরে অনেক জলীয় অংশ থাকে বিধায় পরিমানে বেশী ক্রয় করেও শুঁকানোর পরে তা পরিমানে কমে যায় বিধায় ক্রেতা সাধারণত খুশী হতে পাড়ে না। আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস এই প্রচারণায় যে এর ব্যবহার শুরু হলেই এর বাণিজ্যিক আরো প্রসার ঘটবে এবং দাম ও কমে যাবে।

Source: http://www.ajkerkrishi.com/কৃষি-তথ্য/কৃষি-কাজে-কোকো-পিটের-ব্যব/

New Picture

Big Data is new Focus for Agricultural Sector

Bangladesh Institute of ICT in Development (BIID) hosted the seminar session titled “Smart Agriculture, Smart Future” at Digital World 2017 with support from the Ministry of Agriculture (MoA). On the 2nd day of the mega event, speakers highlighted the importance of use of Big Data and other modern ICT solutions to foster agricultural sector in Bangladesh. International experts shared CGIAR initiatives on use of Big Data for better crop management, planning and ensuring farmer’s benefits. Dr. Tim Krupnik, Systems Agronomist, CIMMYT and Mr. Burra Dharani Dhar, Data Scientist from CIAT shared their working experiences about remote sensing, data management and tools about to make data more available in the agriculture sector. Md. Fazle Wahid Khondaker, Additional Secretary, Ministry of Agriculture, Mr. Anis Ud Dowla, President, Bangladesh Seed Association, Dr. Abul Kalam Azad, Director General, BARI spoke on the occasion and Md Shahid Uddin Akbar, CEO BIID moderated the session. Representatives of various government agencies, development partners, private sectors, research organizations and academician attended the session. The seminar concluded with the commitment to initiate a coordinated effort to foster use of Big Data and other ICT services in agricultural sector in Bangladesh.