নারিকেল চাষাবাদ | ই-কৃষক

নারিকেল চাষাবাদ

নারিকেল একটি অর্থকারী ফল ও তৈল জাতীয় ফসল। ইহা Palmaceae পরিবার ভূক্ত একটি উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম Cocos nucifera. বিশ্বের ৮০টিরও অধিক দেশে নারিকেলের চাষ হয়ে থাকে। নারিকেল গাছ নানা কাজে লাগে। গাছ থেকে ঘর তৈরীর কাঠ/ খুটি পাওয়া যায়। কঁচি ডাবের পানি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর পানীয়। পুস্পমঞ্জুরী কাটলে যে রস পাওয়া যায় তা হতে গুড় ও তাড়ি তৈরী হয়। নারিকেল ছোবড়া দিয়ে দড়ি, মাদুর তৈরী হয়।

নারিকেলের মালা দিয়ে একটিভেটেড কাঠ কয়লা, বাটি, বাক্স, ঘর সাজাবার দ্রব্যদি তৈরী হয়। পাতা দিয়ে মাদুর, ঘর আচ্ছাদন এবং শলা দিয়ে ঝাড়ু তৈরী হয়। নারিকেলের কোপ্রা হতে বিভিন্ন উপদেয় খাবার, কেশ তৈল তৈরী হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে নারিকেলের তেল খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর প্রধান নারিকেলের উৎপাদনকারী দেশ হলো ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ইত্যাদি । বাংলাদেশে মাথাপিছু নারিকেল আহরনের পরিমান একটিরও কম পক্ষান্তরে শ্রীলংকায় এর পরিমান ১৪০ টি।

জাত

নারিকেল সাধারণত দুই প্রকার
(১) লম্বা জাত ও (২) খাটো জাত।
লম্বা জাতঃ গাছ দীর্ঘাকার, ৮/৯ বছরে ফলবান হয় এবং ৬০/৭০ বছর পর্যন্ত ফল ধরে থাকে।
খাটো জাতঃ গাছ খাটো। গাছ ৩/৪ বছরে ফলবান হয় এবং ৩০-৪০ বৎসর ফল ধরে।বারি কর্তৃক অবমুক্তায়িত জাত
বারি নারিকেল -১
গাছ মধ্যম আকৃতির । সারা বছর ফল ধরে। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছে বছরে ৬৫-৭৫ টি নারিকেল ধরে। ফল ডিম্বাকর । ফলের গড় ওজন ১২০০ – ১৪০০ গ্রাম। শাঁসের ওজন ৩৭০-৩৯০ গ্রাম। শাঁসের পুরুত্ব ৯.৯ -১১ মি.মি । তেলের পরিমান ৫৫-৬০% এবং জাতটি ফল ঝরা রোগ সহনশীল।

বারি নারিকেল -২
বড় আকৃতির জাত । একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছে ৬৫-৭৫ টি নারিকেল ধরে। ফলের গড় ওজন ১.৫-১.৭ কেজি। শাঁসের পুরুত্ব ১০-১২ মি.মি। তেলের পরিমান ৫০-৫৫ % । এটি পাতার দাগ রোগ সহনশীল একটি জাত। দেশে সর্বত্রই চাষ উপযোগী জাত।

বীজতলা ব্যবস্থাপনা

বীজমাতা নির্বাচনঃ
একইরূপ যত্ন নেয়া সত্বেও দেখা যায় কোন কোন গাছ দেরীতে বড় হয় এবং ফল প্রদান করে। আবার কোন কোন গাছ তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং ফল ধরে। কোন গাছ বৎসরে ৩০/ ৪০ টি আবার কোন গাছ ১০০ টির বেশী নারিকেল ধরে। নারিকেলের আকার ও শাঁসের মধ্যেও বেশ তারতম্য দেখা যায়। এসব কারণে বীজ সংগ্রহের সময় বীজমাতা ও বীজ নারিকেল বাছাই করে নেয়া উচিৎ।
১) এক সংগে অনেক গাছ আছে এমন যায়গা হতে বীজমাতা নির্বাচন করা উচিৎ।
২) প্রতিটি গাছে বৎসরে ১০০ টি নারিকেল এবং ৩০ কেজি শাঁস/কোপ্রা উৎপন্ন হয়।
৩) বীজমাতার বয়স ২০-৬০ বৎসর হতে হবে এবং প্রতিকুল অবস্থায় বেশী ফল ধারণক্ষম।
৪) গাছে পাতার সংখ্যা ৩৫-৪০ টি থাকবে।
৫) পাতা মুকুটে আট-সাট ও সুশৃঙ্খল বিন্যাস থাকবে।
৬) পাতার বোটা খাটো এবং প্রসস্থ ধরণের হবে।
৭) নারিকেল মাঝরি হতে বড় আকারের এবং
৮) আকৃতি গোলাকার হতে হবে।
৯) নির্বাচিত বীজমাতা গাছে আলকাতরা দিয়ে গোলাকার বা ক্রস চিহ্ন দিতে হবে। 

ভাল বীজের বৈশিষ্ট্যঃ
১) বীজের খোসা পাতলা, খো্‌ল বড় ও শাঁস পুরু হওয়া বাঞ্চনীয়।
২) বীজের মধ্যে প্রচুর পানি থাকতে হবে।
৩) বীজ রোগ ও পোকা-মাকড় মুক্ত হতে হবে।
৪) বীজ গোলাকার ও পরিধি ৪৫-৫৫ সে.মি হলে উত্তম।
৫) বীজের উপরিভাগ মসৃন এবং উজ্জ্বল হতে হবে।
৬) বীজ অবশ্যই পানিতে ৪৫ ডিগ্রী থেকে ডিগ্রী কৌনিক কোনে ভাসতে হবে।

বীজ সংগ্রহঃ
বীজমাতা গাছ হতে প্রতি মাসে নারিকেল পাওয়া গেলেও বেশীর ভাগ নারিকেল চৈত্র হতে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। পাকা নারিকেলের রং তামাটে বা খয়েরী রংয়ের হয়। পাকা নারিকেল গাছ হতে সরাসরি নীচে না ফেলে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে নামানো উত্তম। গাছ হতে বীজ সরাসরি নিচে ফেলে দিলে বীজের ভ্রুন আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং গজানোর হার কমে যায়।

বীজতলা তৈরীঃ
সংগৃহীত বীজ সাথে সাথে বীজতলায় না বসিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে ২/৩ সপ্তাহ সাজিয়ে রেখে হালকা পানি ছিটালে বীজের অংকুরোধগম দ্রুততম হয়। আগে গজানো চারা তাড়াতাড়ি ফল দেয় এবং বেশী ফল ধরে। বেলে ও দোঁ -আশ মাটি বীচতলার জন্য উত্তম। জায়গাটা যেন বেশী ছায়াময় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাটি ৯ -১২ ইঞ্চি গভীর করে কুপিয়ে মিহি করে জমি তৈরী করতে হবে। বীজতলাটি ১.২০ মিটার চওড়া এবং ১৭ মিটার লম্বা করে তৈরী করতে হবে। ২টি বীজ তলার মাঝে নালা হিসাবে ৫০ সেঃমিঃ জায়গা খালি রাখতে হবে। এই মাপে বীজ তলা তৈরী করলে প্রতি বিঘায় ৫১ টি বেড/বীজতলা তৈরী করা যাবে। বেড সমূহ উত্তর দক্ষিণ মুখী হতে হবে। এতে প্রতিটি চারা সমানভাবে সুর্যের আলো পাবে। বীজতলায় গোবর না প্রয়োগ না করাই উত্তম কারণ এতে উইপোকার আক্রমন বাড়ে। নারিকেল চারা পুষ্টি ও সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রতি শতক বীজতলাতে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০০ গ্রাম এমওপি সার শেষ চাষে জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। সার মিশানোর ৭-১০ দিন পর বীজতলায় বীজ রোপন করতে হবে। বীজতলায় উইপোকার আক্রমণ রোধ করার জন্য বীজতলা তৈরীর শেষ চাষের সময় সেভিন পাউডার / রিজেন্ট প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বেডের ৫টি সারির প্রতিটিতে ৫০ টি করে ১ টি বেডে মোট ২৫০ টি বীজ রোপন করা যাবে। এতে ১ বিঘায় ৫১টি বেডে মোট ১৩ হাজার বীজ নারিকেল রোপন করা যাবে। রোপনের সময় বীজে প্রশস্ত অংশ মাটির নীচের দিকে দিতে হবে এবং বীজের পিঠ মাটির ১ ইঞ্চি উপরে থাকবে।

বীজ তলার পরিচর্যাঃ
বীজ রোপনের পর প্রতিসপ্তাহে ২ বার সেচ দিতে হবে। আগাছ, পোকা-মাকড় ও রোগবালাই দমন করতে হবে। প্রখর রৌদ্র থেকে বীজতলাকে বাঁচাতে মালচিং/ ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। চারা গাজানোর পর থেকে মাসে প্রতি শতক বীজতলায় ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০০ গ্রাম এবং পটাশ সার ৫০০ গ্রাম উপরি প্রয়োগ করতে হবে। মাঝে মধ্যে নালা থেকে কোদাল দিয়ে মাটি তুলে বেডের উপর চারার গোরায় ছড়িয়ে দিতে হবে।

বীজতলায় তরল সার প্রয়োগঃ
বীজতলায় তরল সার প্রয়োগে চারা তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠে । তরল সার তৈরীর ফর্মূলা নিম্নরুপঃ ২০ লিটার পানিতে-গোবর ৫০০ গ্রাম, খৈল (সরিষা / নিম) ৫০০ গ্রাম, ইউরিয়া ১০ গ্রাম, টিএসপি ৩০ গ্রাম, এমওপি ২০ গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ১০ গ্রাম মিশিয়ে হাফ ড্রামে ১০ – ১৫ দিন পঁচাতে হবে। অতঃপর ছেকে প্রতি ১ লিটার মিশ্রণ ৪ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে বেডে প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি বেডে ৮-১০ লিটার মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে। মিশ্রণটি বেডে প্রয়োগের আগে পানি দিয়ে বেড ভিজিয়ে নিতে হবে। সেচ প্রদানের ৪- ৫ ঘন্টা পর তরল সার বেডে প্রয়োগ করতে হবে।

চারা নির্বাচনঃ
বীজ সংগ্রহের ৪ মাসের মধ্যে যে সকল বীজ হতে চারা গজায় সেগুলো উত্তম চারা। যে সব চারায় পাতার সংখ্যা বেশী, পাতা চওড়া ও ঘন সবুজ বর্ণের, বোটা খাট ও চওড়া, শিকর বেশী এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায় সে সকল চারাই উৎকৃষ্টতম চারা। সাধারাণত : ৮/১০ মাস বয়সের চারা রোপনের জন্য উত্তম। চারার বয়স বেশী হলে চারার পাতায় লিপ স্পট রোগের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। বোদ্দ মিক্সার / কপার জাতীয় ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যায়।

কান্ডের গোড়া পচা রোগঃ
ছত্রাক ঘটিত রোগ। Ghanoderma spp. নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয় । প্রধানতঃ বয়স্ক ও দূর্বল গাছ গুলোই এ রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। শিকড়ের মধ্যেমেই এ রোগের বিস্তার লাভ করে।লক্ষণঃ
আক্রান্ত শিকড় গুলো লম্বা হয়ে যায়। পত্রক শুকিয়ে যাওয়া, হলদে থেতে বাদামী বর্ণ ধারণ করা পরিশেষে পাতা গুলো শুকিয়ে গাছকে বেষ্টন করে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। কান্ডের গোড়ায় বৈশিষ্টমূলক বাদামী রংগের দাগ হয় এবং বাদামী রংয়ের রস / তরল নির্গত হয়। গাছের ফল ঝরে পড়ে এবং ফলের সংখ্যা কমে যায়। মুকুট ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসে পরিশেষে গাছ মারা যায়। ঝড়ে মুকুট খসে পড়ে এবং গাছ মুকুটবিহীন অবস্থায় দাড়িয়ে থাকে।

দমণঃ
এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না গেলে এ রোগ দমন করা দুঃসাধ্য।
১) আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্থ গাছ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২) আক্রামনের প্রাথমিক আবস্থায় আক্রান্ত সকল পোষ্য-কলা অপসারণ করে বোর্দো পেষ্ট লাগাতে হবে। গাছের মাথা থেকে নতুন পাতা না গজানো পর্যন্ত ঔষধ ব্যবহৃত জায়গাটি ঢেকে রাখতে হবে।
৩) আশে পাশে সকল সুস্থ গাছে বোর্দো মিক্সার স্প্রে করতে হবে।
৪) পানি নিকাশ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।

পাতার ব্লাইট রোগঃ
ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সংগঠিত হয়। সাধারণতঃ আঘাত প্রাপ্ত পাতা ও দুর্বল গাছে এ রোগের লক্ষণ বেশী দেখা যায়্‌

লক্ষণঃ
পাতার উপরে ধুসর রংয়ের কিণারা সহ হলুদ বাদামী রংয়ের দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে সম্পুর্ণ দাগটি ধুসর বর্ণ ধারণ করে। দাগ গুলো শিরার সমান্তরাল ভাবে বাড়তে থাকে। সর্বশেষে দাগগুলো একত্রিত হয়ে পত্রকে চেহারা বিবর্ণ করে দেয়। পটাশ সারের ঘাটতি বা নাইট্রোজেন সারের আধিক্য এ রোগ বিস্তারে সহায়তা করে।

দমনঃ
আক্রান্ত গাছে বোর্দ মিক্সার / তামাঘটিত ছত্রাক নাশক / জিং‌ক ও ম্যাগনেশিয়াম সম্বলিত সর্বোমোট ১৫ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়্‌ ।

ফল পঁচা রোগঃ
ছত্রাক জনিত রোগ। Phytophthora omnitora নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয়।

লক্ষণঃ
অপক্ক ফল পঁচে যাওয়া এবং ঝড়ে পড়া এ রোগের লক্ষণ প্রথমে ফলের গোড়ার দিকে বিবর্ণ হয় যা গাড় সবুজ ও পানি ভেজা মনে হয়। পরবর্তীতে তা বাদামী রং ধারণ করে । কলা গুলো শুকিয়ে গর্তের সৃষ্টি করে। ফলের গায়ে সাদা জটাকার সংক্রামক জীবানু দেখা যায়। নারিকেলের খোল শক্ত না হলে পচন ক্রিয়া শাসেও শুরু হয় বর্ষা কালে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা দেয়।

দমনঃ
বোর্দ মিক্সার / ডায়থেন এম ৪৫, প্রতি ১৫ দিন পর পর স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায় এবং আক্রান্ত গাছের পাতা সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।

প্রধানতঃ ২টি পোকা নারিকেলের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। একটি গোবরে পোকা অপরটি লাল পাম উইভিল।গোবরে পোকাঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা ১ ইঞ্চি লম্বা এবং ১ ইঞ্চি চওড়া। গায়ের উপর কালো শক্ত ঢাকনা থাকে। মাথার উপর গন্ডারের মত ১টি শিং থাকে। সাধারাণতঃ গোবরের গাদা ও ময়লা আবর্জনায় এ পোকা জন্মায়।

ক্ষতির ধরণঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা নারিকেল গাছের কচি অগ্রভাগে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং কচি অংশগুলোর রস গ্রহণ করে। এ পোকা গাছের যে সমস্ত কচি অংশগুলো কেটে ফেলে সে গুলো পঁচে যায়। গাছের ফুল ও ফল ধারণ এবং বৃদ্ধি ব্যহত হয়। অনেক সময় সদ্য গজানো কচি পাতায় কাচি দিয়ে কাটার মতো দেখা যায়। আক্রমণ ব্যাপক হলে পাতাগুলো নিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং গাছটি মারা যায়।

দমনঃ
১) নারিকেল বাগানের ভিতর বা আশেপাশে গোবরের গাদা বা ময়লা আবর্জনা রাখা যাবে না।
২) যে সকল গাছ মারা গেছে বা মরার উপক্রম হয়েছে সেগুলোকে বাগান হতে অপসারণ পূর্বক ধ্বংস করতে হবে।
৩) গাদার অগ্রভাগে বা ডগায় পোকার ছিদ্র দেখা গেলে তার মধ্যে লোহার শিক ঢুকিয়ে পোকাকে মেরে ফেলতে হবে।
৪) সিরিন্স দ্বারা যে কোন কীটনাশক পানিতে মিশিয়ে দিয়ে ছিদ্রের মধ্যে প্রয়োগ করো ছিদ্রের মুখটি বন্ধ করে দিতে হবে।
৫) গাছের পাতা কাচি দিয়ে কাটার মত করে কাটা রয়েছে দেখলেই পোকা দমনে তৎপর হতে হবে।
৬) পঁচা খৈল দ্বারা ফাদ তৈরী করে গোবরে পোকাকে মারার চেষ্টা করতে হবে।
৭) গাছের ৫/৬ পাতার পত্র কক্ষে করাতের গুড়া এবং ডায়াজিন ৯.১ হারে মিশেয়ে প্রয়োগ করলে পোকা দমন করা যায়।

লাল পাম উইভিলঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা খয়েরী রং হতে তামাটে রংয়ের হয়। পোকার দেহ সরু এবং লম্বায় ১-১.৫০ ইঞ্চি হয়ে থাকে। দুপাশে লম্বা ২টি শূং আছে যা পোকার দেহ হতে লম্বা হয়।

ক্ষতির ধরণঃ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা ও এর কিড়া গাছের কান্ডের ভিতরের নরম শাঁস কুড়ে কুড়ে খায়। কান্ডের চারদিকে ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যায়। অনেক সময় ছিদ্র দিয়ে পোকার বিষ্টা ও কাঠের গুড়া বাহির হয়ে আসে। গাছের ডগার নিচ হতে পাতাগুলো নিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং আস্তে আস্তে গাছ মারা যায়।

দমন পদ্ধতিঃ
যে কোন কীটনাশক পানির সাথে মিশিয়ে ইনজেকশনের সিরিন্স দিয়ে ছিদ্রপথে গাছের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে মূখ গুলো কাদা মাটি দিয়ে লেপে দিতে হবে। এভাবে প্রয়োজনে ২/৩ বার ব্যবস্থা নিলে পোকার দমন নিশ্চিত হবে।

উই পোকাঃ
উই পোকা নারিকেল বীজতলা এবং বয়স্ক গাছের জন্য ক্ষতিকর।

ক্ষতির ধরণঃ
পোকা অনেক সময় গাছের শিকড় খেয়ে ফেলে, গাছের গুড়ির উপর দিয়ে মাটিসহ গাছের মাথা পর্যন্ত চলে যায়। এ সময় পোকা গাছের বাকল খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। গাছের ডগার স্পেদ আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ ক্রাউনটি নষ্ট করে ফেলতে পারে। এমনকি গাছটি মারাও যেতে পারে।

দমনঃ
বৎসরে ২ বার সার প্রয়োগের সময় উই পোকার আক্রমন প্রবন এলাকায় গাছের গোড়ায় সেডিন পাউডার/ রিজেন্ট প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যায়।

Source: www.krishibangla.com

Leave a Reply