Author Archives: Hosna Jannat Tonny

জলপাই

জমি নির্বাচন ও তৈরিঃ

বন্যার পানি দাঁড়ায় না এমন উঁচু বা মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করে আগাছা পরিষ্কারপূর্বক ভালভাবে চাষ দিতে হবে।

রোপণের সময়ঃ

মে-অক্টোবর মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। তবে পানি সেরে সুব্যবস্থা থাকলে সারা বছরই চারা রোপণ করা যেতে পারে।

গর্ত তৈরিঃ

কলম রোপণের অন্তত ১৫-২০ দিন পূর্বে সোয়া ২৩ ফুট ×  সোয়া ২৩ ফুট দূরত্বে সোয়া তিন ফুট ×  সোয়া ৩ ফুট×  সোয়া ৩ ফুট আকারের গর্ত করে উন্মুক্ত অবস্থায় রাখতে হবে। কলম রোপণের ১০-১৫ দিন পূর্বে গর্ত প্রতি ১৫-২০ কেজি পচা গোবর, ৩০০-৪০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০-৩০০ গ্রাম পটাশ, ২০০ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ গ্রাম দস্তা সার গর্তের মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত বন্ধ করে রেখে দিতে হবে। মাটিতে রসের ঘাটতি থাকলে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।

চারা রোপণ ও পরিচর্যাঃ

গর্ত ভর্তির ১০-১৫ দিন পর নির্বাচিত চারাটি গর্তের ঠিক মাঝখানে এমনভাবে বসাতে হবে, যেন চারার গোড়া ঠিক খাড়া থাকে এবং কোনভাবে আঘাত পাবার সম্ভাবনা না থাকে। চারা রোপণের পরপর পানি দিতে হবে এবং খুটিঁ ও বেড়া ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর ১-২ দিন অন্তর পানি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

জলপাই চাষে সার ব্যবস্থাপনা

ভাল ফলন ও উন্নত মানের জলপাই পেতে নিয়মিতভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে। বারি জলপাই-১ এর ক্ষেত্রেঃ

গাছের বয়স সারের পরিমাণ

শতকের জন্য

মন্তব্য
গোবর সার ইউরিয়া টিএসপি এমওপি
এক তিন বছর ১০.০০-১৫.০০ কেজি ৩০০.০০-৪০০.০০ গ্রাম ৩০০.০০-৪০০.০০ গ্রাম ৩০০.০০-৪০০.০০ গ্রাম
চার ছয় বছর ১৫.০০-২০.০০ কেজি ৪০০.০০-৬০০.০০ গ্রাম ৪০০.০০-৬০০.০০ গ্রাম ৪০০.০০-৬০০.০০ গ্রাম
সাত দশ বছর ২০.০০-৩০.০০ কেজি ৬০০.০০-৮০০.০০ গ্রাম ৬০০.০০-৮০০.০০ গ্রাম ৬০০.০০-৮০০.০০ গ্রাম
দশ বছরের ঊর্ধ্বে ৩০.০০-৪০.০০ কেজি ১.০০ কেজি ১.০০ কেজি ১.০০ কেজি

 

প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

উল্লিখিত সার সমান তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি বর্ষার শুরুতে (বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য) মাসে, ২য় কিস্তি বর্ষার শেষে (ফল আহরণের পর) এবং শেষ কিস্তি শীতের শেষে (মাঘ-ফাল্গুন মাসে) প্রয়োগ করতে হবে। সারগুলো গাছের গোড়া থেকে প্রায় পৌণে দুইফুট থেকে সোয়া ৩ ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়ে শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত এলাকা পর্যন্ত মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।

সেচ প্রয়োগ ও পানি নিষ্কাশনঃ

শুকনো আবহাওয়া ও খরা সহ্য করতে পারে বিধায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, মাটি ও গাছের বয়সের উপর ভিত্তি করে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। শীতকালে ৪-৫ সপ্তাহ ও গরমকালে ২-৩ সপ্তাহ পর পর সেচ দিলে ভাল হয়। ফল ধরার পর কমপক্ষে দুবার সেচ দিতে হবে। বর্ষা মৌসুমে গাছের গোড়ায় যাতে জলাবদ্ধতা না হয় সে জন্য দ্রুত পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।

জলপাইয়ের পাতা পোড়া রোগ

রোগের লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত হলে পাতায় প্রথমে হলুদ দাগ পড়ে পরে তা বাদামী হয় । পাতা শুকিয়ে যায়।

 

রোগের সমন্বিত ব্যবস্থাপনাঃ

রোগ দেখা দেয়ার পূর্বে করণীয়ঃ 

১.ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন
২. পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন
৩. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

রোগ দেখা দেয়ার পর করণীয়ঃ

১. আক্রান্ত ডাল বা পাতা অপসারণ করা ২. ডাইথেন এম ৪৫ বা রিদোমিল গোল্ড ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

জলপাইয়ের স্ক্যাব বা দাদ রোগ

রোগের লক্ষণঃ

এ রোগের আক্রমনে ফলে ছোট বা মাঝারি আকারের কাল দাগ পড়ে।

রোগ দেখা দেয়ার পূর্বে করণীয়ঃ 

১. গাছের পাতা শুকনো থাকা আবস্থায় বাগানের পরিচর্যা করা ও বাগান পরিচ্ছন্ন রাখা।

রোগ দেখা দেয়ার পর করণীয়ঃ

# টিল্ট ২৫০ ইসি ১০ লি. পানিতে ৫ মি.লি. মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করা

 

ফল সংগ্রহঃ

বর্ষার প্রারম্ভে এপ্রিল-মে মাসে গাছে ফুল আসে এবং শীতের পূর্বে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ফল পাকে। পাকার পরও ফল সবুজ থাকে। তাই ফলের আকার বৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে ফল সংগ্রহ করতে হবে।

সতর্কতাঃ

ডালপালায় ঝাকুনি দিয়ে ফল মাটিতে ফেললে ফল আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তবে গাছের নিচে জাল ধরে শাখায় ঝাকুনি দিয়েও ফল সংগ্রহ করা যায়।

ফলনঃ

ভাল যত্ন নিলে পূর্ণ বয়স্ক গাছ থেকে প্রতি বছর ২০০-২৫০ কেজি ফল পাওয়া যায়।

বন্যা কবলিত এলাকার জন্য আপদকালীন রোপা আমন ধানের চারা উৎপাদন পদ্ধতি

 

ভাসমান বীজতলাঃ বন্যাকবলিত এলাকায় যদি বীজতলা করার মত জায়গা না থাকে এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চারা তৈরীর প্রয়োজনীয় সময় না থাকে তবে বন্যার পানি, পুকুর, ডোবা বা খালের পানির উপর বাঁশ এবং বাঁশের চাটাই-এর মাচা অথবা কলাগাছের ভেলা তৈরী করে তার উপর ২-৩ সে.মি. পরিমাণ পুকুরের তলার মাটির পাতলা কাদার প্রলেপ দিয়ে ভেজা বীজতলার মত বীজতলা তৈরী করা যায়। বন্যার পানিতে যেন ভেসে না যায় তার জন্যে এ বীজতলাকে দড়ির সাহায্যে খুটির সাথে বেঁধে রাখা দরকার।

এরপর মাটির আস্তরণের উপর অংকুরিত বীজ ছিটিয়ে দিতে হবে। ভাসমান বীজতলার ক্ষেত্রে অন্য স¦াভাবিক বীজতলার মতই বীজহার (প্রতি বর্গমিটারে ৮০-১০০ গ্রাম) হবে। এক্ষেত্রে একবিঘা জমি রোপনের জন্য ৩৫ বর্গমিটার ভাসমান বীজতলা ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রায় ২৫-৩০ দিনের চারা উঠিয়ে মাঠে রোপন করা যেতে পারে। এভাবে তৈরী চারা অন্যসব স¦াভাবিক চারার মতই রোপন করতে হবে এবং সমস্ত কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা অন্য স¦াভাবিক বীজতলার চারার মতই হবে। গবেষণায় দেখা গেছে এভাবে উৎপাদিত চারা অন্যসব চারার মতই ফলন দেয়। পানিতে ভাসমান থাকার জন্য এ বীজতলায় সাধারণত সেচের দরকার হয় না, তবে প্রয়োজনে ছিটিয়ে পানি দেওয়া যেতে পারে।

সূত্রঃ এগ্রিনিউজবিডি

মলা, ঢেলা ও পুঁটি মাছ চাষ

মাছ চাষের বৈশিষ্ট্য
•    একক ও মিশ্র উভয় পদ্ধতিতে চাষ করা হয়।
•    প্রাকৃতিকভাবে বছরে ২-৩ বার প্রজনন করে থাকে।
•    সহজ ব্যবস্থাপনায় চাষ করা যায়।
•    যে কোন ছোট জলাশয়ে চাষ করা যায়।

পুকুর নির্বাচন
•    জলাশয়টি বন্যামুক্ত হতে হবে।
•    পানির গভীরতা ১-১.৫ মিটার হলে ভালো হয়।
•    জলাশয়ে আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

প্রস্তুতি, পোনা মজুদ, খাদ্য ও সার প্রয়োগ
•    পুকুরের পাড় মেরামত করে শতাংশ প্রতি ১ কেজি চুন ও ৪-৫ কেজি গোবর প্রয়োগ করতে হবে।
•    সার প্রয়োগের ৩-৪ দিন পর প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মালে ছোট মাছ ছাড়তে হবে।
•    একক চাষের ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ৪০০-৫০০ টি মলা/ঢেলা/পুটির চাষ করা যায়।
•    মাছ ছাড়ার পর দিন হতে মাছের দেহ ওজনের শতকরা ৫-১০% ভাগ হিসাবে চালের কুড়া, গমের ভূষি ও সরিষার খৈল সম্পুরক খাবার হিসেবে দেয়া যেতে পারে।

•   প্রাকৃতিক খাবার তৈরীর জন্য ৭ দিন অন্তর অন্তর শতাংশ প্রতি ৫-৬ কেজি গোবর অথবা ২-৩ কেজি হাঁস- মুরগীর বিষ্টা দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

ছোট মাছ সংরক্ষণ কৌশল
পুকুরে ছোট মাছকে অবাঞ্ছিত মাছ হিসেবে গণ্য না করে সেগুলোকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও চাষের আওতায় আনতে হবে। জলজ পরিবেশের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ছোট মাছের বংশ বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি করে এর উৎপাদন বাড়াতে হবে।

•    স্থানীয়ভাবে প্রাপ্য দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ পুকুরে মজুদ ও সংরক্ষণ করা।
•    ছোট মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য পুকুরে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় কিছু জলজ আগাছা রাখা।
•    জলাশয় বা পুকুর সম্পূর্ণ সেচে সকল মাছ আহরণ না করা ।
•    ছোট মাছের প্রজনন মৌসুম (জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়) সম্পর্কে সংশিৱষ্ট জনগণকে সচেতন করা এবং সে সময় পুকুরে ছোট ফাঁসের জাল টানা থেকে বিরত থাকা।
•    ধানক্ষেতে ছোট প্রজাতির মাছ চাষের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

প্রাকৃতিক জলাশয়ে
•    বিল, হাওর ও বাওরে অভয়াশ্রম স্থাপন করা।
•    ছোট মাছের প্রধান প্রজনন মৌসুম বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস, এ সময় প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখা।
•    জলাশয়ের পানি সেচে মাছ না ধরা।
•    ছোট মাছের গুরুত্ব ও এর সংরক্ষণ সম্পর্কে জলাশয়ের আশেপাশের জনগণকে সচেতন করা এবং সংরক্ষণ কাজে সম্পৃক্ত করা।
•    মৌসুমী জলাভূমিগুলোর কিছু অংশ খনন করে প্রজননৰম মাছ সংরক্ষণ করা, যাতে তারা বর্ষা মৌসুমে ডিম পাড়তে পারে।

সূত্রঃ http://www.ais.gov.bd

মিশ্র মাছ চাষ

রুইজাতীয় মাছের সাথে মলা-পুঁটির মিশ্র চাষ

পুকুর/মৌসুমী জলাশয় নির্বাচন

দো-আঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটির পুকুর ভালো।
•    পুকুর/জলাশয় বন্যামুক্ত এবং মাঝারী আকারের হলে ভালো হয়।
•    পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে এমন পুকুর নির্বাচন করা উচিত।
•    পানির গভরীতা ১-১.৫ মিটার হলে ভালো হয়।

পুকুর প্রস্তুতি
•    পাড় মেরামত ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
•    রাক্ষুসে ও ক্ষতিকর প্রাণী অপসারণ করতে হবে।
•    শতাংশে ১ কেজি করে চুন প্রয়োগ করতে হবে।
•    চুন প্রয়োগের ৭-৮ দিন পর শতাংশ প্রতি ৫-৭ কেজি গোবর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম টিএসপি সার দিতে হবে।

পোনা মজুদ, খাদ্য ও সার প্রয়োগ
•    শতাংশ প্রতি ১০-১৫ সে. মি. আকারের ৩০-৩২ টি র্বই জাতীয পোনা এবং ৫-৬ সে. মি. আকারের ৬০ টি মলা ও ৬০ টি পুটি
মাছ মজুদ করা যায়।
•    মাছের পোনা মজুদের পরদিন থেকে পোনার দেহের ওজনের শতকরা ৫-১০ ভাগ হারে সম্পুরক খাবার হিসেবে খৈল, কুড়া, ভূষি দেয়া যেতে পারে।
•    গ্রাস কার্পের জন্য কলাপাতা, বাধা কপির পাতা, নেপিয়ার বা অন্যান্য নরম ঘাস দেয়া যেতে পারে।
•    মলা-পুঁটি মাছের জন্য বাড়তি খাবার দরকার নাই।
•    প্রাকৃতিক খাবার জন্মানোর জন্য পোনা ছাড়ার ১০ দিন পর শতাংশ প্রতি ৪-৬ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।

মাছ আহরণ
•    পোনা মজুদের ২ মাস পর হতে ১৫ দিন পর পর বেড় জাল দিয়ে মলা-পুঁটি মাছ আংশিক আহরণ করতে হবে।
•    ৭৫০-৮০০ গ্রাম থেকে বেশী ওজনের কাতল ও সিলভার কার্প মাছ আহরণ করে সমসংখ্যক ১০-১২ সে. মি. আকারের পোনা পুনরায় মজুদ করতে হবে।

•    বছর শেষে চূড়ান্ত আহরণ করা যেতে পারে।

সুত্রঃ http://www.ais.gov.bd

পাম চাষ : বহুমুখি লাভের কৃষি

bottle_palm

আদিবাস ও বিস্তারঅয়েল পামের আদিবাস পশ্চিম আফ্রিকা (নাইজেরিয়া, মালে, সেনেগাল, গাম্বিয়া, গিনি, সিয়েরা লিওন) ইত্যাদি যেখানে ৫ হাজার বছর আগে থেকে অয়েল পাম চাষ হচ্ছে। পরবর্তীতে উপজাতীদের Shifting চাষের মাধ্যমে সব ট্রপিক্যাল অফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। ১৪০০ সনের দেশে এবং দাস বাণিজ্যের সময় ইউরোপিয়ানদের মাধ্যমে ইকোয়েড়র, বাজ্যিল, কোস্টারিকা, হন্ডুরাস, পেরু, পানামা, ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম প্রভূতি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯১১ সনে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় এবং ১৯১৭ সনে মালয়েশিয়ার অয়েল পাম চাষের মধ্য দিয়ে এশিয়ায় এর চাষের বিস্তার লাভ করে তবে ১৯৬০ সনের আগ পর্যন্ত এ শিল্প ততটা বিস্তার লাভ করতে পারেনি। ২০০৩ সনে পৃথিবীর মোট পাম অয়েলেরর উৎপাদন পৃথিবীর মোট সয়াবিন তেলের উৎপাদনকে ছাড়িয়ে যায়।
বৈশিষ্ট্য

  • অয়েল পাম গাছ ৬০-৮০ ফুট লম্বাহয় কিন্তু ৩০ ফুট লম্বা পর্যন্ত চাষযোগ্য।
  • ২৫ ফুট লম্বা প্রতি পাতায় ২০০-৩০০ লিফলেট থাকে। পাতার গোড়ার দিকে কাঁটা থাকে।
  • একই গাছে পুরুষ এবং স্ত্রী ফুল ফোটে এবং বায়ু পোকামাকড় দ্বারা পরাগায়ন ঘটে।
  • ফলকে ড্রুপ বলে এবং ইহা দুই রকমের হয়। ধূসর বা কালো বর্ণের। নাইগ্রিসেন্স যা পরিপক্ক হলে কালো বর্ণের চিকসহ কমলা বর্ণ ধারণ করে।
  • ফলের মেসোকার্প থেকে পামঅয়েল পাওয়া যায়।
  • প্রতিটি মঞ্জুরিতে ১ হাজার থেকে ৩ হাজারটি ফল থাকে যেগুলো পরাগায়নের ৫-৬ মাসের মধ্যে পরিপক্কতালাভ করে।
পামঅয়েল ব্যবহাররেড় পাম অয়েল পুষ্টিকর ভোজ্যতেল। পাম অয়েলের তেল ছাড়াও ভিটামিন-এ, আয়রন ও ক্যালসিয়ামবিদ্যমান। এতে ৪৯ শতাংশ সেচুরেটেড, ৪০ শতাংশ মনোআনসেচুরেটেড এবং ১১ শতাংশ পলিআনসেচুরেটেডফ্যাটি এসিড রয়েছে বিধায় এটি একটি কোলেস্টেরলমুক্ত ভোজ্যতেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ৯০ শতাংশ পাম অয়েলবিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার হয়। রান্নার তেল হিসেবে এবং মার্গারিন, বাটার, আইসক্রিম, মেয়নেচতৈরিতে পাম অয়েল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কার্নেল অয়েল সাবান ও গোখাদ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।এছাড়াও কসমেটিক, গ্রিজ, গ্লু, লেখার কালি, মিল্প পাউডার ইত্যাদি তৈরিতে এবং স্টিল মিল, টেক্সটাইল শিল্প,পাইপ ড্রিপিং ইত্যাদি শিল্পকারখানায় লুব্রিক্যান্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পাম অয়েলে carotenoides, tocopherols, tocotrienols ইত্যাদি থাকায় এটি ক্যান্সার প্রতিরোধক ও হৃদরোগে উপকারী।
চাষপদ্ধতি
চাষের সুবিধাঅয়েল পাম যেহেতু একটি পামজাতীয় গাছ। তাই অয়েল পাম চাষ অন্য ফসলের সঙ্গে জায়গা, বাতাস, খাদ্য উপাদান, সূর্যালোক ইত্যাদির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে না। উঁচু জমির আইল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পতিত জমি,ক্যান্টনমেন্ট, রাস্তার দুপাশ, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পতিত ভূমি, পাহাড়ি অঞ্চলের পাদভূমির বিশাল এলাকা,উপকূলীয় বিশাল এলাকা অয়েল পাম চাষের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা যায়।
জলবায়ু ও আবহাওয়া

  • ২৫ থেকে ৩৩ ডিগ্রী সে: তাপমাত্রা এবং ৮০-৯০ শতাংশ আর্দ্রতা অয়েল পাম চাষের জন্য উপযুক্ত যা এ দেশে বিরাজমান। যেখানে কমপক্ষে ৫-৭ ঘন্টা সারাসরিক সূর্যালোক পড়ে সেখানে অয়েল পাম ভালো হয়, এ দিক থেকে আমাদের দেশের সূর্যালোক ঘন্টায় অয়েল পাম চাষের জন্য বেশি ভালো।
  • বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিষুব রেখা থেকে ২০ ডিগ্রী ৩৪ মিনিট উত্তর থেকে ২৬ ডিগ্রী ৩৮ মিনিটউত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। আমরা জানি যে ডিগ্রী হতে ২৫ ডিগ্রী উত্তরে অক্ষাংশ বা কর্কটক্রান্তি রেখাসীমানা হচ্ছে ট্রপিক্যাল জলবায়ু। সে হিসেবে বাংলাদেশের জলবায়ু ট্রপিক্যাল এবং সাবট্রপিক্যাল।
  • মাটিসুনিষ্কাশিত প্রায় সব ধরনের মাটিতে অয়েল পাম চাষ করা সম্ভব যাদের পিএইচমান ৪ থেকে ৭। বাংলাদেশেময়মনসিংহ, গাজীপুর, টাংগাইল, সিলেট, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, পার্বত্য এলাকাসহ ৩০টি কৃষি জলবায়ু অঞ্চলের(Agro-Ecological Zone) মধ্যে ২৭টি কৃষি জলবায়ু অঞ্চলেই অয়েল পাম চাষ সম্ভব। উঁচু ও মধ্য সবজমিতেই অয়েল পাম করা যায়। বন্যার পানি আসে কিন্তু বেশি দিন থাকে না এমন জমিতেও অয়েল পাম চাষহয়।
    বাংলাদেশের যেসব জায়গায় চাষ করা সম্ভবঅয়েল পাম একটি ট্রপিকাল ফসল এবং এ দেশের সাজেক (রাংগামাটি), দুদুকছড়ি (খাগড়াছড়ি), ঝিনাইদহ,কমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাগুরা এবং চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা পার হয়েছে বিধায় এসব জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলায় অয়েল পাম সন্দেহাতীতভাবে চাষ করা সম্ভব। বাংলাদেশের সর্বত্রই অয়েল পাম চাষ করা সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে দিনাজপুর হাজী দানেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি অয়েল পামগাছ আছে এবং ওই গাছেও ফল আছে, ঘাটাইলের রাম জীবনপুরের ওসমান গণির বাসায় ২টি ছোট গাছের ১টিতে ফল ধরছে,বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩টি গাছে প্রায় গাছেই ফল আছে, বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত তেলমাছড়া বিট,মাধবপুর, হবিগঞ্জে ৩ হাজারটি গাছের অধিকাংশ গাছ ফলন্ত এবং কক্সবাজারে হোটেল শৈবালের ৩টি গাছের সবকটি গাছেই ফল আছে। এখানে বলা যায় এই সব গাছে অযত্নে ফলবান। যত্ন নিলে প্রতিটি গাছে আরো ভালো ফল হবে।

    জমি তৈরি

    • মোটামুটি যে জায়গায় জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই সে জায়গায় চারা রোপণ করা ভালো।
    • যদি বেশি দিনের অর্থাৎ ২০ থেকে ২৫ দিন জলাবদ্ধতা থাকে তবে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
    চারা উৎপাদন/নার্সারি বেডপ্রথমে ফল থেকে মেসোকার্প সরিয়ে বীজ আলাদা করা হয়। বীজ ৩৯ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় ২৪ ঘন্টা গরমপানিতে শোধন করা হয়। তাপ শোধিত বীজ ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজানোর পর ১ ঘন্টা রোধে শুকানো হয়।পরে বেডে ১ ইঞ্চি মাটির নীচে রেখে দিলে ৬০ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশ বীজ অঙ্কুরিত হয়। অঙ্কুরিত বীজপলিথিন ব্যাগে (৫০ সেমি: × ১৫ সেমি:) ২.৫ সেমি: গভীরে স্থাপন করা হয়। N,P,K এবং ইংরেজী সংবলিতslow release fertilizer যেমন সিলভা জেন ট্যাবলেট ১টি করে ব্যবহার করা ভালো। কচি পাতায় ব্লাস্ট বালিফ স্পট দেখা দিলে যেকোনো ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলেই রোগ নিয়ন্ত্রণে আসবে।
    চারা রোপণ /রোপণ পদ্ধতিবীজ থেকে চারা রোপণ করা ভালো। তবে উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বীজও রোপণ করা যেতে পারে।১২-১৮ মাসের চারা ত্রিভুজ অথবা চতুর্ভূজাকারে বর্ষাকালে ৩০ ফুট পর পর রোপণ করতে হয় (৫৮ চারা/একর)।
    জাতdura, tenera, Ges, pisifera তবে tenera জাতে বেশি তেল থাকায় এটিই বেশি চাষ হয়। সাধারণত: F1 (dura × pisifera) হাইব্রিড বীজ থেকে বংশবিস্তার করানো হয় এবং বিশেষায়িত অয়েল পাম ব্রিড়িং কোম্পানী বীজ উৎপাদন করেথাকে।

    পরিচর্যা
    সারপ্রচুর পরিমাণে জৈব সারের পাশাপাশি পূর্ণ বয়ষ্ক গাছপ্রতি বছরে ৮০০ গ্রাম নাইট্রোজেন, ৪০০ গ্রাম ফসফরাস এবং ১ হাজার ৮০০ গ্রাম পটাশিয়াম ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়াও প্রতিটি গাছের ৬ ইঞ্চি দুরে ৫টি সিলভা জেন ট্যাবলেট চারদিকে ৪ ইঞ্চি মাটির নীচে স্থাপন করলে গাছের বাড়-বাড়তি ভালো হবে। নাইট্রোজেন সারসরাসরি শিকড়ে যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
    পানি ব্যবস্থাপনাঅয়েল পামের সঠিক বাড়-বাড়তিতে পরিমিত মৃত্তিকা রসের প্রয়োজন। বেশি পরিমাণে জৈব সার ব্যবহার করলে সাধারণত: সেচের প্রয়োজন হয় না। লম্বা খরা মৌসুমে ব্যবস্থা থাকলে ভালো। আন্ত:ফসল হিসেবে লিগুমাস,আদা-হলুদ, আনারস ইত্যাদি কভার ক্রপ হিসেবে চাষ করলে ভালো হয়।
    পোকামাকড় ও রোগবালাইপোকামাকড়

    রাইনোসরাস বিটেল, রেড পাম উইভিল, অয়েল পাম বাঞ্চ মথ, কেটারপিলার, অয়েল পাম রুট মাইনার ইত্যাদিইহলো অয়েল পামের প্রধান পোকামাকড়। আইপিএম পদ্ধতিতে এসব পোকামাকড় সহজে দমন করা যায়।

    রোগবালাই

    পাতার এ্যানথ্রাকনোজ, লেপটোসফেরিয়া, গেলামেরেলা, সারকোসপরা লিফ স্পট, সিডলিং ব্লাইট ইত্যাদি রোগ দেখা যায়। সেগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ এবং সাধারণ ফাংগিসাইট ব্যবহার করলে সহজেই দমন করা যায়।

     

    ফল সংগ্রহভালো জাতের অয়েল পামগাছ ও পরিমিত ব্যবস্থাপনা থাকলে রোপণের তৃতীয় বছর ফল সংগ্রহ করা যায়। কমলা বর্ণ ধারণ করলেই ফল সংগ্রহ করতে হবে। ২-১টি পাকা ফল গাছের নীচে পাওয়া গেলে বা পাখিতে ফেললে ফলের পরিপক্বতা নির্দেশ করে। অপরিপক্ব ফলে তেলের পরিমাণ খুবই কম। ফল সংগ্রহের সময় খেয়াল রাখতে যাতে মাটিতে পড়ে ফল পেটে না যায়। ফল সংগ্রহের সময় আঘাপ্রাপ্ত হলে অথবা ফেটে গেলে free fatty acid এর পরিমাণ বেড়ে যায়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু কৃষিকথা/অগ্রহায়ণ, ১৪১৫ করা ভালো নতুবা তেলের গুণাগুণ নষ্ট হতে পারে।
    ফলনঅয়েল পামগাছ রোপণের তৃতীয় বছর থেকে ফল দেয়া শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত লাভজনক ফলন দেয়। প্রতি হেক্টর জমিতে বছরে ৪ টন পাম অয়েল উৎপাদিত হয় কিন্তু বর্তমানে মালয়েশিয়ায় ও অষ্টেলিয়াতে হেক্টরপ্রতি ৭ টন পাম অয়েল উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে।
    ‌পাম অয়েল নিষ্কাশনঅয়েল পাম ফল থেকে পাম অয়েল নিষ্কাশন একটি জটিল প্রক্রিয়া। গ্রাম্য এলাকার ছোট মিলে দিনে ১টন তেলে উৎপন্ন হয় আবার বড় মিলে ঘন্টায় ৬০ মন ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ করা যায়।

    তেল নিষ্কাশন নিম্নলিখিত ধাপে সম্পন্ন করা হয়:

    ১. ছড়ার বাষ্পীয় জীবাণুমুক্তকরণ (লাইপেজ এনজাইমকে অকার্যকর করা এবং ক্ষুদ্র জীবাণু মারা যারা মুক্ত ফ্যাটি এসিড তৈরির মাধ্যমে তেলের গুণাগুণ নষ্ট করে)।

    ২. ছড়া থেকে ফল খসানো।

    ৩. ক্রাশিং, ডাইজেশন এবং ফলের হিটিং।

    ৪. হাইড্রোলিক চাপের মাধ্যমে তেল নিষ্কাশন।

    ৫. পাম অয়েল বিশুদ্ধকরণ।

    ৬. বীজ থেকে ফাইবার সরানো।

    ৭. বীজ শুকানো, গেডিং এবং ক্রাকিং।

    ৮. কার্নেল থেকে এন্ডোকার্প সরানো।

    ৯. কার্নেল শুকানো এবং প্যাকিং।

    সংরক্ষণপামঅয়েল ৮৮-১০৫°F তাপমাত্রায় ব্যারেলে তরল অবস্থায় ৬ মাস সংরক্ষণ করা যায়। ভালো পাম অয়েলে ৩.৫ শতাংশ মুক্ত ফ্যাট এসিড থাকে।

সুত্রঃ Science Articles

http://biocsaurazon.blogspot.com/

পোকা দমনে পার্চিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতি

sirajganj-Krishi20170312132142

শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলসহ সিরাজগঞ্জে কৃষকদের মাঝে দিন দিন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কীটনাশক ছাড়াই ক্ষতিকারক পোকা দমনের পার্চিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতির ব্যবহার।

জমিতে সার দেয়ার পর থেকেই রোপা-আমন, ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ফসলের খেতে বাদামী ঘাসফড়িং বা কারেন্ট পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও চুঙ্গি-মাজরাসহ নানা ধরনের ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। এসব পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকরা কীটনাশকসহ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন।

বর্তমানে কৃষকরা খেতে কীটনাশক ওষুধ পরিহার করে পোকা দমনে সহজ ও পরিবেশবান্ধব পার্চিং এবং আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানা যায়, ইতোমধ্যে প্রতি বিঘা জমিতে ডেড পার্চিং ও জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য জেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে নিয়োজিত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের মাঝে কাজ করছেন।

জেলার মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৬ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমি পার্চিং পদ্ধতির আওতায় এবং ৪২৫টি আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে। এতে পরিবেশ বাঁচিয়ে কৃষকরা স্থানীয় পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে পোকা ও পোকার ডিম বিনষ্ট করছে।

সদর উপজেলার পাঁচঠাকুরীর বর্গাচাষী আমজাদ হোসেন, রহিম, বক্কারসহ অনেকেই বলেন, কৃষি অফিস আমাদেরকে পার্চিং পদ্ধতি বা খেতের ভিতর ডাল-পালা, বাঁশের কুঞ্চি পুতে রাখা এবং সন্ধ্যার দিকে জমিতে আলোক ফাদ সম্পর্কে মাঝেমধ্যে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতন করেন। সেই অনুযায়ী আমরা উক্ত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে জমিকে রক্ষা করে অনেক লাভবান হয়েছি।

বহুলীর প্রান্তিক কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, ক্ষেতের ভিতর ডাল-পালা পুতে রাখলে সেই ডাল-পালায় পাখি বসে এবং ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। এতে কীটনাশক ছাড়াই আমরা ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে অতি সহজেই ফসলকে রক্ষা করতে পারছি।

তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের মানিকচার গ্রামের কৃষক আলহাজ্ব আলী পার্চিং সম্পর্কে বলেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে জমিতে ক্ষতিকারক পোকার হাত থেকে কীটনাশক ছাড়াই ফসলকে রক্ষা করা যায়। এ পদ্ধতি আমি গতবারও ব্যবহার করেছিলাম উপকার পেয়ে এবারও ব্যবহার করছি।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি অফিসার হুমায়ন কবির জানান, এই ফসলি জমিতে পোতা ডালগুলোর উপরে পাখি বসে ফসলি জমির ক্ষতিকারক পোকা ও পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। যার ফলে আর কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে না। ফলে কম খরচে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, ক্ষেতের ভিতর ডালপালা পুতে রেখে পাখিদেরকে মথ খাওয়ার সুযোগ করে দেয়াকেই পার্চিং পদ্ধতি বলে। আর সন্ধ্যার দিকে জমিতে ইলেকট্রিক বা ব্যাটারি চালিত বাল্ব একটি খুটির সঙ্গে লাগিয়ে জ্বালিয়ে রাখতে হয়।

সেই বাল্বের নিচে সাবান মিশ্রিত পানি ভর্তি একটি গামলা রাখতে হয়। আলো পেয়ে ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় সেখানে জড়ো হয় এবং গামলার ভিতর পড়ে মারা যায়। এতে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমন সহজেই করা যায়। এ পদ্ধতিগুলো পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।

সূত্রঃ www.jagonews24.com

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০১৭

আমের ক্ষতিকর পোকামাকড় ও রোগবালাই

417

আম ফলের রাজা। সারা বিশ্বে ১৫০টির অধিক জাতের আম পাওয়া যায়। স্বাদে, গন্ধে, রঙে, রসনা তৃপ্তিতে আম সত্যিই অতুলনীয়। কাঁচা অবস্থায় ভর্তা, আচার, জ্যাম, জেলি, আমচুর, আমসত্ত্ব, আমদুধ, আমজুসসহ নানাভাবে আম খাওয়া যায়। এ ছাড়া আমের কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র ও আমপাতা দিয়ে দাঁতের মাজন তৈরি, রাতকানা/অন্ধত্বরোধে পাকা আম, রক্ত পড়া বন্ধ করতে কচি পাতার রস, প্রস্রাবের জ্বালা, পাতলা পায়খানা ও পুরাতন আমাশয় রোধে আমের মুকুল, চর্ম রোগে আম গাছের আঠা, জ্বর, বহুমূত্র ও বুকের ব্যথায় আমপাতার রস দারম্নণ উপকারী। আমাদের দেশের প্রায় সব এলাকায় কম-বেশি আম গাছ জন্মে। তবে বৃহত্তর রাজশাহী এলাকা আম চাষের জন্য বিখ্যাত।

পুষ্টিগুণ বিবেচনায় খাদ্য উপযোগী ১০০ গ্রাম আমের মধ্যে রয়েছে-৮ হাজার ৩০০ মাইক্রোগ্রাম কেরোটিন, ৯০ কিলোক্যালরি শক্তি, ২০ গ্রাম শর্করা, ১৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৪১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। আম চাষের প্রধান শত্রম্ন হলো এর ড়্গতিকর পোকামাকড় ও রোগবালাই। এখানে আমের কয়েকটি পোকামাকড় ও রোগ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।

আমের ক্ষতিকর পোকামাকড়

আমের ক্ষতিকর পোকামাকড়ের মধ্যে রয়েছে- হপার পোকা, মাছি পোকা, গল এবং উইভিল।

১। হপার পোকা : আম গাছে মুকুল আসার সময় এদের আক্রমণ দেখা যায় । পূর্ণবয়স্ক এবং বাচ্চা (নিম্ফ) অবস্থায় এ পোকা মুকুলের রস চুষে খায় এবং মুকুল শুকিয়ে ঝরে পড়ে।

দমন : আমের হপার দমনের জন্য বুস্টার ১০ ইসি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি কিংবা স্টার্টার ৪০ ইসি ১০ লিটার পানির সাথে ২০ মিলি পরিমাণ তরল কীটনাশক ফুট পাম্পের সাহায্যে অন্তত দু’বার সম্পূর্ণ গাছে ছিটিয়ে দিতে হবে।

২। মাছি পোকা: আমের মুকুল ফোটার ১৫-২০ দিন পর মার্বেল আকার ধারণ করার সময় থেকেই মাছি আসা শুরম্ন করে। এরপর এক মাস বয়সে আমের গায়ে মাছি বসা শুরু করে। আরো ১০-১২ দিন পর আমের নিচে ছিদ্র করে মাছি ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার পর আঠালো পদার্থ নিঃসরণের মাধ্যমে ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এবং আমের ভেতরে কীড়া বড় হতে থাকে। এক সময় আম ফেটে পচে যায়। এ অবস্থায় কোনো কীটনাশক ব্যবহার করে লাভ নেই।

দমন: মুকুল ফোটার ১৫-২০ দিনে প্রথম বার আক্রমণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে মর্টার ৪৮ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি ভালোভাবে মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে। এভাবে প্রথমবার সেপ্র করার এক মাস পর দ্বিতীয় বার এবং আরো ১৫ দিন পর তৃতীয় বার একই মাত্রায় মর্টার ৪৮ ইসি সেপ্র করতে হবে।

৩। ডগার গল সৃষ্টিকারী ‘সাইলিড’: এ পোকার আক্রমণে আম গাছে নতুন পাতা ও ফুলের কুঁড়ি বদলে সবুজ রঙের শক্ত এবং সূঁচালো মুখ গলের সৃষ্টি হয়। এসব গল থেকে কোনো পাতা বা ফুল বের হয় না।

দমন: ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহে যখন আক্রানত্ম গাছের পাতায় পোকার ডিম পাড়ার গর্ত থেকে মোমের গুঁড়োর মতো মল বের হতে দেখা যায় তখন থেকে শুরম্ন করে ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্টার্টার ৪০ ইসি প্রতি ২ লিটার পানিতে ৫ মিলি কীটনাশক মিশিয়ে গাছে সেপ্র করে ভিজিয়ে দিতে হবে।

৪। উইভিল বা ভোমরা পোকা: উইভিল বা ভোমরার স্ত্রী পোকা কাঁচা আমের গায়ে ডিম পাড়ে। আমের মধ্যে ডিম ফুটে কীড়া বের হয় এবং ফলের শাঁস খায়। ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে বাইরে থেকে আমটি ভালো দেখালেও ভেতরে কীড়া পাওয়া যায়।

দমন: প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে মরা ও অপ্রয়োজনীয় শাখা ছেঁটে ফেলা এবং পোকাক্রানত্ম ফল মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এ ছাড়া আমের আঁটি শক্ত হওয়ার সময় মর্টার ৪৮ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি কীটনাশক গাছে সেপ্র করে ভিজিয়ে দিতে হবে।

আমের রোগবালাই

আমের ক্ষতিকর রোগবালাইয়ের মধ্যে ফোস্কা বা অ্যানথ্রাকনোজ, শুঁটিমোল্ড বা মহালাগা এবং পাউডারি মিলডিউ অন্যতম।

১। ফোস্কা বা অ্যানথ্রাকনোজ: ফোস্কা বা অ্যানথাকনোজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কাণ্ড, মুকুল ও ফলে ধূসর বাদামি রঙের দাগ পড়ে। মুকুলগুলো ঝরে যায়। এ ছাড়া আমের গায়ে কালো দাগ পড়ে, আম পচে যায়। কুয়াশাচ্ছন্ন ও ভেজা আবহাওয়ায় এ রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিকার: এ রোগ দমনের জন্য আক্রানত্ম পাতা, ডাল, পুষ্প মঞ্জরি সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। আম বাগান সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে, গাছের নিচের মরা পাতা পুড়িয়ে ফেলতে হবে, গাছে মুকুল আসার পর ফুল ফোটার আগে বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। এ ছাড়া এন্টিসিকা ২৫০ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি ব্যবহার করা যেতে পারে। আমের আকার মটর দানার মতো হলে দ্বিতীয় বার বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে।

২। শুঁটি মোল্ড বা মহালাগা: এ রোগের আক্রমণে আম পাতা ও ফলের ওপর কালো আবরণ পড়ে। আম গাছে মিলিবাগ অথবা হপার পোকায় আক্রমণ করলে এরা হানিডিউ বা মধু নিঃসরণ করে, ফলে হানিডিউতে শুঁটি মোল্ড সৃষ্টিকারী ছত্রাক জন্মায় এবং পাতা, মুকুল এবং ফলে তা বিসত্মার লাভ করে।

প্রতিকার: এ রোগে আক্রানত্ম গাছে বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। গাছে হপার পোকার আক্রমণ হলে সাথে সাথে তা দমন করতে হবে।

৩। পাউডারি মিলডিউ: এ রোগের আক্রমণে আমের মুকুলে সাদা পাউডারের মতো আবরণ দেখা যায়। এ রোগের ফলে মুকুল ঝরে যায়। আক্রানত্ম আমের চামড়া খসখসে হয় এবং কুঁচকে যায়।

প্রতিকার: গাছের মুকুল আসার পর একবার এবং ফল মটর দানা আকারের হলে আরো একবার বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম এবং হেমেঙিল ৭২ এম জেড ডবিস্নউপি ১০ লিটার পানিতে ২৫ গ্রাম একত্রে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।

আমের গুণগত মান ও ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়

* আমের মুকুল আসার আগে এবং আম মটর দানার মতো হলে প্রতি লিটার পানিতে ১০ গ্রাম লিবরেল জিঙ্ক ও ২০ গ্রাম লিবরেল বোরণ সার উত্তমরূপে মিশ্রিত করে সেপ্র করতে হবে। এ দুটি সার আমসহ অন্যান্য ফলের গুণগতমান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে।

* আমের মুকুল আসার সময় মুকুল শুকিয়ে ঝরে পড়লে ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি বুস্টার ১০ ইসি এবং বেনডাজিম ৫০ ডবিস্নউপি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম হারে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।

* আমের মুকুল ফোটার ১৫-২০ দিন পর মটর দানার সময় মাছি পোকার আক্রমণ হলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি, মর্টার ৪৮ ইসি সেপ্র করতে হবে।

লেখক: কৃষিবিদ মো. কামরুল আহসান ভূঁইয়া

পরিবেশবান্ধব পেস্টিসাইডে বাড়ছে কৃষি বিজ্ঞানীদের মনোযোগ

natural-pesticides

বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন কৃষি ও কৃষি বাস্তুতন্ত্র। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর খাদ্য জোগান দিতে হলে ২০২০ সনের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন ৫৮০ মিলিয়ন টন হতে বৃদ্ধি করে ৮৬০ মিলিয়ন টন করতে হবে অর্থাৎ অতিরিক্ত ২৮০ মিলিয়ন টন খাদ্য দ্রুত উৎপাদন করতে হবে। প্রতিবছর সারা বিশ্বে গড়ে ৩০ ভাগ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয় রোগজীবাণু ও পোকামাকড়ের আক্রমণে। যদিও উন্নত বিশ্বের তুলনায় উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোয় এ হার অনেক বেশি। আর খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবেলায় ফসলের ফলন বৃদ্ধির বিকল্প নেই। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো উৎপাদন বৃদ্ধির সহায়ক নানা অনুষংগ কৃষিতে বয়ে আনছে নানা বিপর্যয়। কৃষকরা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অতিমাত্রায় রাসায়নিকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এতে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে অন্যদিকে বাস্তুতন্ত্রের নানা উপাদানের মধ্যে সুস্পষ্ট বিশৃংখলা দৃশ্যমান হচ্ছে।

অতিমাত্রায় রাসায়নিকের ব্যবহার পরিবেশের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যকে ঠেলে দিচ্ছে নানা ঝুঁকির মুখে। তাই বর্তমান বিশ্বে ফসল উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে প্রতিনিয়তই। এতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমছে বহুগুণ। এসব পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে ইদানিং অণুজীবের ব্যবহার হচ্ছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। অনুজীবজগৎ হচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ অজানা জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডার। পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বর্তমান সিনথেটিক রাসায়নিক নির্ভর কৃষির অন্যতম বিকল্প হিসেবে প্রকৃতিতে বিদ্যমান উপকারি অনুজীবকে বিবেচনা করা হচ্ছে। উপকারি অনুজীবসমূহ ফসলের জন্য ক্ষতিকর অনুজীবকে দমন করে কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদন নিশ্চিত করে।

১৯৫৬ সনে ৩৫০ কেজি কীটনাশক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কৃষিতে কীটনাশকের ব্যবহার প্রথম শুরু হয়। বর্তমান হিসেব অনুযায়ী ১৫ হাজার মেট্রিক টন কীটনাশক ব্যবহার হয়েছে এদেশের মাটিতে। এছাড়া চোরাই পথে আসা শত শত মেট্রিক টন কীটনাশক আসছে বিভিন্ন দেশ থেকে। যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়াও কৃষকদের ক্রমাগত নির্বিচারে রাসায়নিক ইনসেক্টিসাইড ব্যবহারের ফলে পোকামাকড়গুলো ধীরে ধীরে কীটনাশক প্রতিরোধী হয়ে পড়ে। আবার রাসায়নিক ছত্রাকনাশক ব্যবহারের ফলে জীবাণুগুলো নতুন রেস তৈরি করছে। ফলে এসব রাসায়নিক পেস্টিসাইড পোকমাকড় ও রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে আর কার্যকর থাকছে না। তাই বিশ্বের সচেতন মানুষেরা এখন জৈব কৃষির দিকে ঝুঁকে পড়েছেন, যেখানে  কোনো প্রকার রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা হয়না। কৃষি বিজ্ঞানীদের সর্বোচ্চ মনোযোগ এখন পরিবেশবান্ধব পেস্টিসাইড উদ্ভাবনের দিকে।

লেখক: মো. জিয়াউর রহমান ভূঁঞা (পিন্টু), সহকারী অধ্যাপক, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১২০৭

সূত্রঃ AgriNews24.com

Capture2

eKrishok Has Been Selected as the WSIS Prizes 2017 Champion

International Telecommunication Union (ITU) announced eKrishok, an initiative of Bangladesh Institute of ICT in Development (BIID) as the Champion and finalists of the WSIS Prizes 2017 with over 1.1 million votes cast by WSIS stakeholder’s community. eKrishokis among those first five most voted in the category ICT Applications: E-Agriculture. ITU congratulated BIID on this amazing achievement and to share the excitement of promoting the recognition. BIID will be awarded with a Champion certificate from the ITU Secretary-General during the special event dedicated to the achievement, the WSIS Prizes 2017 Champion Ceremony, on Tuesday 13 June 2017 at Geneva, Switzerland. BIID has been facilitating eKrishok services to foster ICT enabled solutions for farmers and agro-businesses in Bangladesh since 2009. More details on the award is available at http://www.itu.int/net4/wsis/prizes/2017/

BIID will also organize a workshop on eKrishok at the WSIS Forum 2017 and showcase its services in the exhibition area at ITU Tower.