অন্যান্য তথ্য | ই-কৃষক | Page 3

Category Archives: অন্যান্য তথ্য

যে পাঁচ কারণে চিনাবাদাম খাবেন

.

পার্কে বা এদিক–সেদিক বেড়াতে বের হলে এক ঠোঙা চিনাবাদাম হাতে উঠবেই সবার। কিন্তু বাড়িতেও নিয়মিত চিনাবাদাম কি চলে? অনেকেরই উত্তর হবে, না। অথচ অন্য অনেক খাবারের চেয়ে চিনাবাদামের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা বেশি। দৈনিক একমুঠো বা ৩০ গ্রাম বাদাম ওজন কমায়, হৃদ্রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় ও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে।
চিনাবাদামে মনো আনস্যাচুরেটেড এবং পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট নামের দুই ধরনের চর্বি বা স্নেহ জাতীয় পদার্থ রয়েছে, যা কোলেস্টেরল কমায়। এ ছাড়া এতে বিভিন্ন ভিটামিনজাতীয় পদার্থ যেমন থায়ামিন, রিবোফ্লোবিন, নিয়াসিন, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-৬ ও ফোলেট রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। পাশাপাশি এতে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ক্যালসিয়াম, লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও দস্তা রয়েছে।
কোলেস্টেরল কমায়: কোলেস্টরেলের সমস্যা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। হৃদ্রোগসহ নানা শারীরিক সমস্যার মূলে রয়েছে এই বাড়তি কোলেস্টেরল। চিনাবাদাম দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী। বাদামের ভালো ফ্যাট কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে ফেলে কোনো ধরনের ওজন বাড়ানো ছাড়াই।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে: চিনাবাদাম রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সকালের নাশতায় চিনাবাদাম বা চিনাবাদামের মাখন খেলে প্রায় পুরো দিনই রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওজন কমায়: ওজন কমানোর জন্য কিছুটা ভালো চর্বির প্রয়োজন রয়েছে। আর চিনাবাদামে রয়েছে ভালো ফ্যাটি অ্যাসিড। এ ছাড়া ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন অল্প হলেও চিনাবাদাম খাওয়া উচিত ।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: বয়স হতে না হতেই স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া শুরু করে অনেকেরই। এর কারণ হচ্ছে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজন হয় সঠিক খাদ্যের। চিনাবাদামকে বলা হয় মস্তিষ্কের খাবার।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়: খুব হুটহাট নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার সমস্যাকে মূলত রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার মূল লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। চিনাবাদাম এই রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকেই উন্নত করতে কাজ করে। চিনাবাদামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা উন্নত করে।
নিয়মিত চিনাবাদাম খেলে ক্যানসার ও হৃদ্রোগে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি কমে। নেদারল্যান্ডসের মাসট্রিখট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই দাবি করেছেন। চিনাবাদাম ও নানা জাতের গাছবাদামে এমন পুষ্টি উপাদান আছে, যা অনেক রোগ থেকেই আমাদের বাঁচাতে পারে।
‘নাট বাটার’ বা বাদামের মাখন না খেয়ে সরাসরি চিনাবাদাম খাওয়াটাই উপকারী। যে নারী-পুরুষেরা প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১০ গ্রাম চিনাবাদাম বা কোনো বাদাম খান তাঁদের ক্যানসার ও হৃদ্রোগসহ নানা রকম মরণব্যাধি থেকে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বাকিদের তুলনায় কম।
লেখক, প্রধান পুষ্টিবিদ
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সূত্র: ’প্রথম আলো’১৩ মার্চ ২০১৬, ০০:৩৯

অ্যালোভেরা/ঘৃতকুমারীর রসের কয়েকটি ঔষধি গুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

এলোভেরা যার বাংলা নাম ঘৃতকুমারী ,দারুণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ভেষজ উদ্ভিদ, যার শরবত আমরা অনেকেই রাস্তার পাশে বিক্রি হতে দেখি।

হজমি সহায়ক:
নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পানে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। । ফলে দেহের পরিপাকতন্ত্র সতেজ থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

শক্তিবর্ধক:
নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস সেবন শরীরের শক্তি যোগান সহ ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
যারা দীর্ঘকাল ফিব্রোমিয়ালজিয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর রস দারুণ কাজ করে। এটি দেহে সাদা ব্লাড সেল গঠন করে যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে।

ক্ষতিকর পদার্থের অপসারণ:
দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ অপসারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ঔষধির কাজ করে। আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চাপে থাকি। এছাড়া চারপাশের দূষিত পরিবেশ এবং বিভিন্ন ফাস্টফুড গ্রহণের কারণে নিয়মিত পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করা দরকার। ঘৃতকুমারীর রস সেবনের ফলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের মিশ্রণ ও খনিজ পদার্থ তৈরি হয় যা আমাদেরকে চাপমুক্ত রাখতে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমায়:
ঘৃতকুমারীর রস হাড়ের সন্ধিকে সহজ করে এবং দেহে নতুন কোষ তৈরি করে। এছাড়া হাড় ও মাংশপেশির জোড়া গুলোকে শক্তিশালী করে। সেইসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ প্রশমনেও কাজ করে।

মেছতা নিরাময়ে:
আপনার যদি মেছতার সমস্যা থাকে তবে ঘৃতকুমারী পাতার রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খান, প্রতিদিন দু’বার ,প্রত্যেকবার ১০ মিলিলিটার। ঘৃতকুমারীর একটি পাতা, মধু ও একটি ছোট শসা মাস্ক করে মেছতার ওপর লাগিয়ে রাখুন-উপকার পাবেন, এটি চামড়ার ফুস্কুড়িও প্রতিরোধ করতে পারে ।নারীদের মুখে যদি মেছতা থাকে, তাহলে মেক-আপ না করা ভালো । কারণ মেক-আপ ক্রিম ত্বকের সূক্ষ্মরন্ধ্রের স্বাভাবিক রূপান্তর বাধা দেবে এবং মুখের মেছতা গুরুতর হবে ।

স্পার্ম বৃদ্ধিকারক:
যাদের শুক্রাণু পাতলা তাদের জন্য দুই চামচ চটকানো ঘৃতকুমারী পাতার শাষ এবং দুই চামচ চিনি মিশিয়ে শরবত করে ১৫-২০ দিন খেলে পাতলা শুক্রাণু অকারণে স্খলন বন্ধ হবে।

অর্শরোগে:
এ রোগের স্বভাবধর্ম কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া। সেটা থাকুক আর নাই থাকুক, এ ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫/৭ গ্রাম মাত্রায় একটু ঘি দিয়ে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে দুই বার খেতে হবে। এর দ্বারা দাস্ত পরিষ্কার হবে এবং অর্শেরও উপকার হবে।

চুলের যত্নে:
ঘৃতকুমারী চুলের উজ্জলতা বাড়াতে কন্ডিশনারের কাজ করে। এছাড়া চুল পড়া এবং খুশকি প্রতিরোধ করে অ্যালোভেরা। খুশকি দূর করতে মেহেদি পাতার সঙ্গে অ্যালোভেরা মিশিয়ে লাগাতে পারেন চুলে। মাথা যদি সব সময় গরম থাকে তাহলে পাতার শাঁস প্রতিদিন একবার তালুতে নিয়ম করে লাগালে মাথা ঠাণ্ডা হয়৷ অ্যালোভেরার রস মাথার তালুতে ঘষে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে। শ্যাম্পু করার আগে আধা ঘণ্টা অ্যালোভেরার রস পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এতে চুল ঝরঝরে ও উজ্জ্বল হবে।

কন্ডিশনার হিসাবে ব্যবহার করার নিয়ম:
একটি ধারালো ছুরি দিয়ে গাছের পাতা থেকে পুরু সবুজ চামড়া সরিয়ে পাতার ভেতরের পরিষ্কার জেলি যতটা সম্ভব বের করে নিতে হবে।ব্লেন্ডারে এই জেলি নিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করুন, পানি দেবার দরকার নেই। বের করার আগে দেখুন যেন সবটুকু জেলি খুব ভাল ভাবে ব্লেন্ড হয়। এবার এই মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে নিন। জেলি ছেঁকে নেবার পর যেন তা এর মধ্যের সাদা অংশ থেকে আলাদা হয়ে আসে। এবার চুলে শ্যাম্পুর পরে চুলের আগা থেকে গোঁড়া পর্যন্ত এই জেলি ভাল করে ম্যাসাজ করে মেখে নিন। চাইলে অন্য কোন কন্ডিশনারের সঙ্গে মিশিয়েও এটি ব্যবহার করতে পারেন।

সূত্র: modern agriculture ফেইজবুক পেইজ

একটি আমলকীতে প্রায় ২০টি কমলার সমান ভিটামিন সি থাকে! ! !

আমলকী ফল হিসেবে একটি অনন্য ফল। এছাড়া এটি ভেষজ চিকিৎসায় একটি বিখ্যাত উদ্ভিদ। আমাদের দেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ৫০০০ হাজার বছরের বেশি সময় ধরে দেহের প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং দেহের পুনর্যৌবন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হলদে সবুজ রঙের এই ফলটির রয়েছে আশ্চর্য ক্ষমতা। সারা বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন ঋতুতে, বিভিন্ন আবহাওয়ায় মানুষ এই ফলটি খেয়ে থাকেন এবং ব্যবহার করে বিশেষ করে এর টক, ঝাল, মিষ্টি ও তেঁতো স্বাদের জন্য।
জেনে অবাক হবেন যে একটি আমলকীতে প্রায় ২০টি কমলার সমান ভিটামিন সি থাকে। ১০০ গ্রাম তাজা আমলকীতে থাকে প্রায় ৪৭০-৬৮০ মিলিগ্রাম খাঁটি ভিটামিন সি। বিজ্ঞানে এই ফলকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে দেখানো হয়েছে। ভিটামিন সি দেহকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে, হাড়কে মজবুত করে, প্রতিরোধক ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং leukocytes বা শ্বেত কনিকা উৎপাদন করে। আমলকীতে শুধু যে ভিটামিন সি-ই থাকে তা নয়। এতে আরো থাকে ফ্লেভোনয়েড, ট্যানিন এবং খনিজ পদার্থ। আমলকী খেলে সর্দি, কাশি থেকে শুরু করে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিসের মত শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত রোগগুলো থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

আমলকীর কিছু উপকারিতা
যকৃতের বিষাক্ততা দূর করে
গবেষণায় দেখা যায় যে আমলকী যকৃতে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বিশেষ করে যক্ষ্মা রোগের ঔষধের নেতিবাচক প্রভাব পরার ফলে যেসব বিষাক্ততার সৃষ্টি হয় তা দূর করতে সাহায্য করে।

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে
যখন দেহ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে তখন দেহের জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি অনেক সময় ক্যান্সার প্রতিরোধও করতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের প্রদাহ এবং নষ্ট হওয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী
যকৃতের এবং অগ্নাশয়ের প্রদাহ, ফোলা, ব্যাথা দূর করতে এবং সঠিকভাবে অগ্নাশয়ের কাজে সাহায্য করে। নিয়মিত আমলকী খেলে তা ইন্সুলিনের নির্গমনকে নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে। গবেষণায় দেখা যায় যে মাত্র ৩ গ্রাম আমলকীর গুঁড়ো অন্য যেকোনো ডায়াবেটিসের ঔষধের চেয়ে বেশি কার্যকরী।

পেটের ব্যাথা দূর করতে
পেটের ব্যাথা, ডায়রিয়া, বমি, পেট মোচড়ানো, প্রদাহ সহ বিভিন্ন ধরনের হজমজনিত পেটের সমস্যা আমলকীর দ্বারা দূর করা সম্ভব।

সুন্দর ত্বক, চুল এবং নখের জন্য
আমলকী দেহ কোষের পুনর্গঠনে যার ফলে দেহে পুনর্যৌবন লাভ করে। নিয়মিত আমলকী খেলে এবং ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয়, বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়, অকালে চুল পেকে যাওয়া প্রতিরোধ করে এবং চুলের খুশকি দূর করার প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপায় হচ্ছে এই আমলকী। শ্যাম্পু, ফেসিয়াল ক্রিম, চুলের মাস্ক এবং অন্যান্য আরো অনেক কিছুতেই আমলকী ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ত্বকের সমস্যা দূর করতে
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আমলকীর ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্রণ, ফুসকুড়ি, রুক্ষ ত্বক, ইত্যাদি ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যাসহ ত্বকের অনেক ধরনের প্রদাহ দূর করতে পারে এই আমলকী।

চুলের সুরক্ষায়
শুকনো আমলকীর গুঁড়ো সামান্য কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে ১ ঘন্টা রেখে দিয়ে তারপর সেই মিশ্রণটি পুরো চুলে ম্যাসেজ করে লাগিয়ে আধা থেকে ১ ঘণ্টা রাখতে হবে। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে দ্রুত চুলের বৃদ্ধি হবে, আর্দ্রতা বজায় থাকবে, চুল হবে মসৃন এবং উজ্জ্বল।

সুত্র: modern agriculture ফেইসবুক পেজ

সজিনার বহুমুখী ব্যবহার ও ঔষধি গুনাগুন

সজিনার বহুমুখী ব্যবহার

ফুলঃ সজনার ফুল বসন্তকালে খাওয়া ভাল কারন এটি বসন্ত প্রতিষেধক। এটি সর্দি কাশিতে, যকৃতের কার্যকারীতায়, কৃমি প্রতিরোধে, শক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকারীতা রয়েছে।
ডাটাঃ এর ডাটা বা ফলে প্রচুর এমাইনো এসিড আছে। এটি বাতের রুগীদের জন্য ভাল।

বীজঃ এর বীজ থেকে তেল ও পাওয়া যায় যা বাতের ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে এবং ঘড়ি ঠিক করার জন্য যে বেল ওয়েল (Ben oil) ব্যবহার হয় তা এর বীজ হতে পাওয়া যায়।

ছাল: সজিনার ছাল থেকে তৈরি হয় দড়ি।

ঔষধি গুনাগুনঃ

হাই ব্লাড প্রেসারেঃ সজনার পাকা পাতার টাটকা রস পানির মধ্যে নিয়ে নিংরে নিতে হবে এবং দুইবেলা আহারের পূর্বে ২ বা ৩ চামচ খেলে সপ্তাহের মধ্যে প্রেসার কমে যাবে । তবে যাদের প্রস্রাবে বা রক্তে গ্লুকোজ আছে তাদের খাওয়া যাবে না।

টিউমার ও ফোড়ার ক্ষেত্রেঃ পাতা বেটে ফোঁড়া বা টিউমারে লাগালে বহু ক্ষেত্রে মিলিয়ে যায় এবং ফোলা ও ব্যাথার উপশম হয়।

জ্বর জ্বর ভাবেঃ এক্ষেত্রে পাতার ঝোল বা শাক রান্না করে খেলে উপশম পাওয়া যায়।
হিক্কায়ঃ পাতার রস ২-৫ ফোটার সাথে দুধ মিশ্রিত করে ২-৩ বার খেলে উপকার পাওয়া যায়।

অর্শে ( Piles): অর্শে যন্ত্রনা আছে অথচ রক্ত পড়ে না , এক্ষেত্রে নিন্মাঙ্গে তিল তৈল লাগিয়ে পাতা সিদ্ধ ক্বাথ দ্বারা সিক্ত করলে ব্যাথা কমে যায়।
চোখে ব্যথা বা পিটুনি পড়াঃ এক্ষত্রে পাতা সিদ্ধ করে পানি সেচন দেয়া।
দাঁদেঃ এর মূলের ছালের প্রলেপ দিলে এর উপকার পাওয়া যায়। তবে এটি প্রত্যহ ব্যবহার করা ঠিক নয়। এছাড়াও এর বহু বিধ ব্যবহার রয়েছে।
তাছাড়া সজনাতে প্রতি ১০০ গ্রামে খাদ্যপোযোগী পুষ্টি উপাদান হচ্ছে -
জ্বলীয় অংশ = ৮৩.৩ গ্রাম
খনিজ = ১.৯ গ্রাম
আঁশ = ৪.৮ গ্রাম
খাদ্যশক্তি = ৬০ কিলোক্যালোরি
প্রোটিন = ৩.২ গ্রাম
চর্বি = ০.১ গ্রাম
শর্করা = ১১.৪ গ্রাম
ক্যলশিয়াম = ২১.০ মিলিগ্রাম
লোহা = ৫.৩ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন = ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন=বি=১ = ০.০৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন=বি=১ = ০.০২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন=সি = ৪৫.০ মিলিগ্রাম

Source: প্রকৃতি Facebook page

বহুগুণে গুণান্বিত ফসল মেথি

মেথি ৫ ফোড়নের এক অন্যতম উপাদান। এটি ইউনানি, কবিরাজি ও লোকজ চিকিৎসায় বহুবিদ ব্যবহার হয়। অনাদিকাল থেকে আমাদের দেশে মেথির প্রচলন আছে কিন্তু ব্যাপকতা বা বিস্তৃতি জনপ্রিয়তা তেমন ঘটেনি এ সাধারণ ফসলটির অসাধারণ গুণ। মেথি লেগুমিনোসি পরিবারের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূণ ফসল।

একাধারে মসলা, পাতাজাতীয় সবজি এবং ভেষজ উদ্ভিদ। ইংরেজিতে একে Fenugreek বলা হয়। এ ফসলটির সাধারণ পরিচিতি কম হলেও এর অসাধারণ ভেষজ গুন, চাহিদা, ফলন এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এটি অত্যন্ত গুররুত্বপূর্ণ।

মেথির রোগবালাই কম এবং অল্প যত্নে কম বিনিয়োগে ভালো লাভ পাওয়া যায়। শিম জাতীয় ফসল হওয়ায় মেথি মাটিতে জৈব পদার্থ ও নাইট্রোজেন যোগ করে জমির উর্বরতা বাড়ায়। বাংলাদেশে প্রধানত মেথির বীজ মসলা এবং ওষুধি ভেষজ হিসেবে চাষ করা হয়। মেথির বীজ মসলা হিসেবে রান্নার কাজে, আচার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এর অবশ্য উচ্চ ওষুধি গুণাগুণ ও শিল্পে ব্যবহার রয়েছে। মেথি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমে সহায়তা করে ক্ষুধা বাড়ায়, বহুমুত্র রোগে বেশ ফলদায়ক, মায়েরা নিয়মিত আর পরিমিত খেলে বাচ্চারা বেশি দুধ পায়। গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে পরিমিত এবং নিয়মমতো মেথি খেলে মায়েদের দুধ ৯০% পর্যন্ত বেড়ে যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মেথির ক্যাপসুল পাওয়া যায়। শিশুর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং যকৃত ও প্লীহার কার্যকারিতা বাড়ায়। ক্ষুধা বাড়ায় ও ডাই-ইউরেটিক হিসেবেও কাজ করে।

এখানো আমাদের গ্রামাঞ্চলে মেথি বেটে দু’ফালি মোটা কাপড়ের মধ্যে রেখে ভালোভাবে আটকিয়ে কয়েকদিন শুকানো হয়। মচমচে হলে ঘরে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। বাতের ব্যাথা বা যেকোন ব্যাথায় সামান্য গরম করে সেক দিলে আশ্চার্যজনকভাবে উপশম হয়। মেথির গ্রামীণ ব্যবহার গুরুত্ব এখনো অনেক।

শিল্পক্ষেত্রে মেথি রঙ তৈরিতে ব্যহৃত হয় এবং মেথি থেকে এ্যালকালয়েড ও মুল্যবান স্টেরয়েড নিষ্কাশন করা হয়। এর কাচাপাতা শাক হিসেবে অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু। গ্রামবাংলায় মেথিশাক তাদের প্রিয়খাদ্য। আর শুকনোপাতা যাকে কাশুরি মেথি বলে এদের পাতা তিতা কিন্তু ঘ্রাণ আর বৈশিষ্ট্যের জন্য বিভিন্ন তরিতরকারি ও ব্যাঞ্জরিত রান্নায় ব্যবহৃত হয়। এর গাছ গোখাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়। এশিয়ার মধ্যে ভারতে মেথির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। আরব তথা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলেও মেথির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। এশিয়ায় চুলের যত্নে, ত্বকের যত্নে, রূপলাবণ্য বাড়াতে এবং দই তৈরিতেও মেথি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ রুটি তৈরিতেও মেথির প্রচলন আছে কোথাও কোথাও। মিশরে মেথির চা বেশ জনপ্রিয়।

উন্নত দেশের কফিহাইজে মেথি বেশ আহলাদি উপকরণ। ইহুদি সম্প্রদায় নতুন বছরের প্রথম বা দ্বিতীয় দিন মেথিকে বিশেষ উপকরণ হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে খায় ও ব্যবহার করে। পুষ্টিগুণেও মেথি বেশ উল্লেখযোগ্য। প্রতি ১০০ গ্রাম মেথি বীজে ৬.৩ গ্রাম পানি, ৯.৫ গ্রাম আমিষ, ১০ গ্রাম ফ্যাট, ১৮.৫ গ্রাম আঁশ, ৪২.৩ গ্রাম শ্বেতসার, ১৩.৪ গ্রাম খনিজ, ১.৩ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৪৮ গ্রাম ফসফরাস, ০.০৯ গ্রাম লৌহ, ০.০৯ গ্রাম সোডিয়াম, ১.৭ গ্রাম পটাশিয়াম, ভিটামিন বি১ ৯.৪১ মিলিগ্রাম, বি২ ০.৩৬ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ৬.০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১২.০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১০৪০ আইইউ এবং খাদ্যমান ৩৭০ কিলোক্যালরি থাকে। তাহলে পুষ্টি বিচারেও মেথি অনন্য ভুমিকার অধিকারি।

মেথির উৎপত্তি ও বিস্তার সম্পর্কে যদি বলা হয় তাহলে বলতে হয় দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়া মেথির উৎপত্তিস্থল বলে ধরা হয়। মেথি পাতাজাতীয় সবজি, মসলা অথবা ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। এ উপমহাদেশের সবকটি দেশ ছাড়াও আর্জেন্টিনা, মিশর, ফ্রান্স, স্পেন, তুরস্ক, মরক্কো, লেবানন, চীন প্রভৃতি দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মেথির চাষ হয়ে থাকে। ভারতের রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, পাঞ্জাব মেথি উৎপাদনের বিশ্বসেরা। ভারতের রাজস্থান ভারতের মোট মেথির ৮০% উৎপাদিত হয়। আর বাংলাদেশী ও ভারতীয়দের বিশ্ব বিস্তৃতির কারণে ইদানিং খাদ্যের রসনা বৃদ্ধিতে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশেও মেথি ছড়িয়ে পড়ছে। মেথি মৌসুমি গাছ। জীবনকালে একবার মাত্র ফুলফোটে ও ফল ধরে। মেথিগাছ দ্রুত বর্ধনশীল, খাড়া, শাখান্বিত কান্ড বিশিষ্ট, ৪০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

গোলাপী বা সবুজ কিনারাসহ এর গাঢ় সবুজ যৌগিক পাতা খুবই আকর্ষনীয়। ৩টি করে পাতা একসাথে জন্মায়। ফুলেও ৩টা করে পাপড়ি থাকে। কক্ষমুকুলের প্রতি থোকায় ২/৩ টি করে উজ্জলসাদা ও হলুদরঙের ফুল ফোটে। স্ত্রী ও পুরুষফুল আলাদাভাবে ফোটে। কাচির মতো বাঁকানো সরুফল বা পড ৮ থেকে ১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। প্রথম দিকে ফলের রঙ হালকা সবুজ থাকলেও পাকলে তা খড়ের বর্ণ ধারণ করে। প্রতিফলে ৮ থেকে ১০টি উজ্জল কমলা বা হলুদ রঙের মসৃন ৪ কোণাআকৃতির বীজ থাকে। জাতভেদে প্রতিটি বীজ ৩ থেকে ৫ মিলিমিটার লম্বা ও ২ থেকে ৩ মিলিমিটার চওড়া এবং ১.৫ থেকে ২ মিলিমিটার পুরু হয়ে থাকে। ভালোভাবে শুকিয়ে মেথি বীজ দীর্ঘদিন রাখা যায়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানীয় জাতের মেথির আবাদ হয়ে থাকে। এমনিতে মেথির কোন সুনিদিষ্ট জাত নেই। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্র বারিমেথি-১ ও বারিমেথি-২ নামে দুটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। সাধারনভাবে দু’ধরণের মেথির চাষাবাদ হয়। দ্রুতবর্ধনশীল সাধারণ মেথি হলুদবীজ সাদাফুল এবং ধীর বর্ধনশীল কেশুরি জাতের মেথি যা উজ্জ্বল কমলা বা হলুদ বর্ণের ফুল উৎপাদন করে। তবে ধীর বর্ধনশীল কেশুরী মেথির জীবনকাল কিছুটা বেশি হলেও এটি ফলন বেশি দেয়। কেশুরি মেথি জনপ্রিয়তার দিক থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য।

আমাদের দেশে প্রথমোক্ত জাতের মেথির বেশি চাষ হয়ে থাকে। মেথি আমাদের দেশের শীত মৌসুমের ফসল। কম বৃষ্টিপাত ও কম তাপমাত্রা মানে ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এটি ভালো জন্মে। সাধারণ মেথির চেয়ে কেশুরি মেথি বেশি ঠান্ডায় ভালো হয়। যদিও সব ধরণের মাটিতেই মেথি জন্মানো যায়, দোআঁশ মাটিতে মেথি বেষি ভালো হয়। তদুপরি জৈবপদার্থ সমৃদ্ধ এঁটেল দোআঁশ জমি মেথি চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। জমির অম্লমান ৬ থেকে ৭ এর মধ্য হলে মেথি ভালো হয়।

আমাদের দেশে মেথি রবি ফসল। বাংলাদেশের শীতের শুরুতে মেথি বীজ বোনা হয়ে থাকে। সাধারণ মেথি প্রতিহেক্টর জমির জন্য ২৫ কেজি এবং কেশুরী জাতের ২০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর অর্থ্যাৎ মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ পর্যন্ত মেথি বোনার সবচেয়ে ভালো সময়। সাধারণত মেথি বীজ বপণ থেকে ৫/৬ দিনে গজায়। তবে বেশি শীত পড়লে সময় একটু বেশি লাগতে পারে। মেথির বীজ আকারে ছোট হওয়ার জমি খুব ভালো ভাবে প্রস্তত করা দরকার।

সাধারণত মেথি বীজ ছিটিয়ে বপণ করা হয় । তবে ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে লাইন করে বপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সাধারণত মেথি চাষের জন্য পূর্ববর্তী ফসলের অবশিষ্ট সারের ওপর নির্ভর করা হয়ে থাকে। তবে পাতা বা শাক উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে নাইট্রোজেন এবং পটাশ সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয়। বীজ উৎপাদনের জন্য প্রতিশতকে যে পরিমাণ সার দেওয়া যেতে পারে তাহলো কম্পোস্ট বা জৈবসার ৬০ কেজি, ইউরিয়া ৭০০ গ্রাম, টিএসপি ৭০০ গ্রাম, এমওপি ৫৫০ গ্রাম, জিপসপম ৪৫০ গ্রাম। সব জৈবসার, টিএসপি, এমওপি ও ৩ ভাগের ১ ভাগ ইউরিয়া শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হয়। বাকী ইউরিয়া বপনের ৩০ ও ৪৫ দিন পর আগাছা দমনের পর উপরি প্রয়োগ করতে হয়। জীবাণু সার বীজ এর সাথে মিশিয়ে বপন করলে ইউরিয়া কম লাগে, গাছ বড় ও ফলন বেশি হয় তবে জীবনকাল কিছুটা দীর্ঘায়িত হয়। যদিও আমাদের দেশে প্রচলিতভাবে তেমন কেউ মেথি আবাদ করে না কিন্তু যথাযথভাবে আবাদ কৌশল অনুসরণ কররে উৎপাদন ফলন বেশ ভালো হয়।

সেচ দিলে অধিক ফলন মিলে একথা মেথির ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। সেচ দিলে মেথির ফলন বাড়ে। বপনের পর একবার এবং মাটি শুকনা হলে ৭ থেকে ১০ দিন পরপর মেথিতে সেচ দেওয়া ভালো। তবে অন্য ফসলের সাথে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করলে আলাদা করে মেথিতে সেচ দেওয়া দরকার হয় না। কমপানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মাটিতে মেথিতে ঘন ঘন হালকা সেচ দেয়া ফলদায়ক। মেথিগাছ প্রাথমিক পর্যায়ে আস্তে আস্তে বাড়ে ফলে আগাছার প্রকোপ বেশি হতে পারে। এ জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়মিত আগাছা দমন জরুরি। দ্রুতবর্ধনশীল আগাছা যেমন বথূয়া, মুথা, দুর্বা এসব না কেটে শিকড়সহ তুলে ফেলা ভালো। পাতা বা শাক উৎপাদনের ক্ষেত্রে পাতলাকরণ দরকার হয়না। তবে বীজ উৎপাদনের জন্য ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার দূরত্বে গাছ রেখে বাকী চারা তুলে ফেলা ভাল। বাড়ন্ত গাছে ১০ থেকে ১০০ পিপি এম জিএ৩ স্প্রে করলে দ্রুতফুল আসে এবং ফলন ও বাড়ে। যদি এ ব্যবস্থা না থাকে তাহলে এমনিতেও ভালো ফলন হয়। মেথিতে রোগবালাই তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম হয়। পাউডারি মিলডিউ রোগের জন্য থিয়োভিট ০.২% স্প্রে এবং ডাউনি মিলডিউ এবং পাতারদাগ রোগের ক্ষেত্রে বোর্দো মিশ্রণ যার অনুপাত হবে ১:১:১০০= তুঁতে:চুন:পানি প্রয়োগে সুফল পাওয়া যায়।

মেথি বীজ বপনের ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পরে শাক সংগ্রহ করা যায়। ১/২ বার শাক সংগ্রহের পর বীজ উৎপাদনের জন্য রেখে দেওয়া যায়। বীজ এর জন্য মেথির ফলগুলি হালকা হলুদ বা গোড়ার গুলি খড়ের মত রঙ ধারণ করলে গাছের গোড়া কেটে সংগ্রহ করা ভালো। সকালে বা বিকেরে মেথি তুলতে হয়। ভর দুপুরে মেথি না তোলা ভালো। সম্পূর্ন গাছ উপড়িয়ে সংগ্রহ করলে শিকড়ে লেগে থাকা মাটি বীজ এর গুণগত মান কমিয়ে দেয় এবং জমিতে জৈবপদার্থ কমযোগ হয়। সংগৃহীত গাছগুলি ২/৩ দিন গাদা করে রেখে রোদে ভালো ভাবে শুকিয়ে সাবধানতার সাথে মাড়াই করে বীজ সংগ্রহ করা যাবে। বারি মেথি-১ ও বারি মেথি-২ ভালোভাবে আবাদ করে যথাক্রমে হেক্টর প্রতি ১.২ থেকে ১.৫ ও ১ থেকে ১.৫ মেট্রিকটন বীজ পাওয়া যেতে পারে। শাক হিসেবে চাষ করলে সাধারণ জাতে ৫ থেকে ৭ মেট্রিকটন এবং কেশুরি জাতের থেকে থেকে ১০ মেট্রিকটন শাক পাওয়া যেতে পারে।

যদিও আমাদের দেশে মেথির উৎপাদন, ব্যবহার ও আমদানির সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই তবুও ধারণা করা যায় যে এক্ষেত্রে আমরা স্ব^নির্ভর নই। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন নেহায়েত কম না। আমাদের নিজস্ব প্রয়োজন মেটানো ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য মেথির চাষ বাড়ানো দরকার বিশেষভাবে। এককভাবে বা সাথীফসল হিসেবে আখ, ভূট্টা, রসুন বা পিঁয়াজের সাথে বা পিঁয়াজের চারা উৎপাদনের সময় রিলে ফসল হিসেবে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। অন্য ফসলের সাথে বা পারিবারিক বাগানে মেথির আবাদ করে নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করে অর্থোপার্জনও করা যায়। এ ব্যাপারে উন্নত জাতের মানসম্মত বীজ এর প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ আর উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতির ওপর কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। কম ঝুকিপূর্ণ, বহুগুণেগুণান্বিত ফসল মেথি নিয়ে আমরা আরো একটু বিশেষ চিন্তা করতে পারি। কমজনপ্রিয় এফসলটি কোন এক সময় আমাদের কৃষি ভান্ডার আর কৃষি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে। দরকার শুধু পরিকল্পিত কার্যক্রমের।

কচুর লতির গুণাগুণ

বাংলাদেশের কৃষি সাহিত্যে কচুকে একটি নিম্ন মানের অবহেলিত সবজি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

কেউ কেউ এটিকে গরীবের খাদ্য বলে উল্লেখ করেছেন। কচুর কতিপয় জাত বসত বাড়ীর আশেপাশে, রাস্তার ধারে, বনে-জঙ্গলে আপনা আপনি জন্মে থাকে। অন্যান্য সবজি না পাওয়া গেলে মানুষ এগুলো সংগ্রহ করে খায়।

অতি দরিদ্র লোক সব সময়ই জংলী কচু খেয়ে থাকে। কচু যে একটি উৎকৃষ্ট মানের সবজি সেকথা অনেকেরই জানা নেই।

কচুর লতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, যা সংক্রামক রোগ থেকে মানব শরীরকে রক্ষা করে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ মতাকে করে দ্বিগুণ শক্তিশালী। ভিটামিন ‘সি’ চর্মরোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। ওজন কমানোর জন্য কচুর লতি খাওয়া ভালো।

খাবার হজমের পর বর্জ্য দেহ থেকে সঠিকভাবে বের হতে সাহায্য করে কচুর লতি।

এই সবজিতে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ খুব বেশি। এই আঁশ খাবার হজমে সাহায্য করে, দীর্ঘ বছরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, যেকোনো বড় অপারেশনের পর খাবার হজমে উপকারী পথ্য হিসেবে কাজ করে এটি।
ডায়াবেটিসের রোগীরা তাই নিঃসংকোচে খেতে পারেন এ সবজিটি। কচুর লতিতে রয়েছে প্রচুর আয়রন।

এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রয়েছে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, যা হাড় শক্ত করে ও চুলের ভঙ্গুরতা রোধ করে।

মোটকথা, কচুর লতি ও কচুর পাতা সুস্থ-অসুস্থ সব মানুষের শরীরের জন্যই খুব উপকারী।

Source: প্রকৃতি Facebook page

আম পরিপক্কতা পুঞ্জিকা

ফরমালিন মুক্ত আম কেনার ক্ষেত্রে নিম্নের আম পরিপক্কতা পুঞ্জিকা অনুসরণ করা বুদ্ধিমানের কাজ।

Source: নগর কৃষি Facebook pageMango_Maturity Calender