অ্যালোভেরা/ঘৃতকুমারীর রসের কয়েকটি ঔষধি গুণ | ই-কৃষক

অ্যালোভেরা/ঘৃতকুমারীর রসের কয়েকটি ঔষধি গুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

এলোভেরা যার বাংলা নাম ঘৃতকুমারী ,দারুণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ভেষজ উদ্ভিদ, যার শরবত আমরা অনেকেই রাস্তার পাশে বিক্রি হতে দেখি।

হজমি সহায়ক:
নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পানে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। । ফলে দেহের পরিপাকতন্ত্র সতেজ থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

শক্তিবর্ধক:
নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস সেবন শরীরের শক্তি যোগান সহ ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
যারা দীর্ঘকাল ফিব্রোমিয়ালজিয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর রস দারুণ কাজ করে। এটি দেহে সাদা ব্লাড সেল গঠন করে যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে।

ক্ষতিকর পদার্থের অপসারণ:
দেহ থেকে ক্ষতিকর পদার্থ অপসারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ঔষধির কাজ করে। আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চাপে থাকি। এছাড়া চারপাশের দূষিত পরিবেশ এবং বিভিন্ন ফাস্টফুড গ্রহণের কারণে নিয়মিত পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করা দরকার। ঘৃতকুমারীর রস সেবনের ফলে শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের মিশ্রণ ও খনিজ পদার্থ তৈরি হয় যা আমাদেরকে চাপমুক্ত রাখতে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমায়:
ঘৃতকুমারীর রস হাড়ের সন্ধিকে সহজ করে এবং দেহে নতুন কোষ তৈরি করে। এছাড়া হাড় ও মাংশপেশির জোড়া গুলোকে শক্তিশালী করে। সেইসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ প্রশমনেও কাজ করে।

মেছতা নিরাময়ে:
আপনার যদি মেছতার সমস্যা থাকে তবে ঘৃতকুমারী পাতার রস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খান, প্রতিদিন দু’বার ,প্রত্যেকবার ১০ মিলিলিটার। ঘৃতকুমারীর একটি পাতা, মধু ও একটি ছোট শসা মাস্ক করে মেছতার ওপর লাগিয়ে রাখুন-উপকার পাবেন, এটি চামড়ার ফুস্কুড়িও প্রতিরোধ করতে পারে ।নারীদের মুখে যদি মেছতা থাকে, তাহলে মেক-আপ না করা ভালো । কারণ মেক-আপ ক্রিম ত্বকের সূক্ষ্মরন্ধ্রের স্বাভাবিক রূপান্তর বাধা দেবে এবং মুখের মেছতা গুরুতর হবে ।

স্পার্ম বৃদ্ধিকারক:
যাদের শুক্রাণু পাতলা তাদের জন্য দুই চামচ চটকানো ঘৃতকুমারী পাতার শাষ এবং দুই চামচ চিনি মিশিয়ে শরবত করে ১৫-২০ দিন খেলে পাতলা শুক্রাণু অকারণে স্খলন বন্ধ হবে।

অর্শরোগে:
এ রোগের স্বভাবধর্ম কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া। সেটা থাকুক আর নাই থাকুক, এ ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫/৭ গ্রাম মাত্রায় একটু ঘি দিয়ে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে দুই বার খেতে হবে। এর দ্বারা দাস্ত পরিষ্কার হবে এবং অর্শেরও উপকার হবে।

চুলের যত্নে:
ঘৃতকুমারী চুলের উজ্জলতা বাড়াতে কন্ডিশনারের কাজ করে। এছাড়া চুল পড়া এবং খুশকি প্রতিরোধ করে অ্যালোভেরা। খুশকি দূর করতে মেহেদি পাতার সঙ্গে অ্যালোভেরা মিশিয়ে লাগাতে পারেন চুলে। মাথা যদি সব সময় গরম থাকে তাহলে পাতার শাঁস প্রতিদিন একবার তালুতে নিয়ম করে লাগালে মাথা ঠাণ্ডা হয়৷ অ্যালোভেরার রস মাথার তালুতে ঘষে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে। শ্যাম্পু করার আগে আধা ঘণ্টা অ্যালোভেরার রস পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এতে চুল ঝরঝরে ও উজ্জ্বল হবে।

কন্ডিশনার হিসাবে ব্যবহার করার নিয়ম:
একটি ধারালো ছুরি দিয়ে গাছের পাতা থেকে পুরু সবুজ চামড়া সরিয়ে পাতার ভেতরের পরিষ্কার জেলি যতটা সম্ভব বের করে নিতে হবে।ব্লেন্ডারে এই জেলি নিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করুন, পানি দেবার দরকার নেই। বের করার আগে দেখুন যেন সবটুকু জেলি খুব ভাল ভাবে ব্লেন্ড হয়। এবার এই মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে নিন। জেলি ছেঁকে নেবার পর যেন তা এর মধ্যের সাদা অংশ থেকে আলাদা হয়ে আসে। এবার চুলে শ্যাম্পুর পরে চুলের আগা থেকে গোঁড়া পর্যন্ত এই জেলি ভাল করে ম্যাসাজ করে মেখে নিন। চাইলে অন্য কোন কন্ডিশনারের সঙ্গে মিশিয়েও এটি ব্যবহার করতে পারেন।

সূত্র: modern agriculture ফেইজবুক পেইজ

Leave a Reply