অন্যান্য তথ্য | ই-কৃষক

Category Archives: অন্যান্য তথ্য

লেবুর উপকারিতা ও ব্যবহার

লেবু, সকলেই কম বেশি খেয়ে থাকি। খিচুরি অথবা যেকোন খাবারের সাথে এটি অনেকের অনেক প্রিয়। আবার আচার তৈরী করেও অনেকে খেয়ে থাকে। ছোট একটা ফল কিন্তু এর উপকারিতা প্রচুর আর পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এতে রয়েছে ৬ ভাগ সাইট্রিক অ্যাসিড, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৫, বি৩, বি১, বি২, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, জিঙ্ক, কার্বহাইড্রেট ফ্যাট এবং প্রোটিন।

স্বাস্থ্যগত ব্যবহার
লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। আর ভিটামিন সি ঠাণ্ডা কাশি প্রতিরোধে খুব কাজ দেয়।

লেবুতে রয়েছে ফ্ল্যাবোনয়েড যা শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধ করে এবং শরীরকে ফিট রাখে।

শরীরের পিএইচ ঠিক রাখে।

লেবুর রস ও গরম পানি একসাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করলে অন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখে এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ফেলে।

এর ভিটামিন সি শরীরের রিঙ্কেল কমাতে সাহায্য করবে।

এটি রুটিন অনুযায়ী খেলে চোখের অসুখের দূর হয়।

লেবুতে ২২ প্রকার ক্যান্সার বিরোধী যৌগ আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

এটি অন্ত্রের কৃমি ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

এটি রক্তনালীসমূহকে শক্তিশালী করে।

এটি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।

ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে।

ত্বকের যত্নে লেবুঃ
এটি ত্বকের সংকোচন সৃষ্টিকারী পদার্থকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

স্কিনের অতিরিক্ত তেল অপসারন করে।

লেবুর রস রস একটি প্রাকৃতিক অ্যানটিসেপ্টিক, যদি এটি মুখে মাস্ক হিসেবে নেয়া হয় তবে এটি স্কিনের অতিরিক্ত তেল ময়লা দূর করবে এবং ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ হতে দূরে রাখবে।

যাদের মুখে ব্রণ আছে তারা একটি ছোট তুলার বলে লেবুর রস নিয়ে স্কিন পরিষ্কার করলে ব্রণ কমে যায়। এটি রাতে মুখ ধোয়ার পর ব্রণের দাগে লাগিয়ে রাখলে দাগ তাড়াতাড়ি সেরে যায়।

এটি ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
বয়সের কারণে মুখে দাগ পড়লে তাতে লেবুর রস ব্যবহার করলে দাগ হালকা হয়ে যায়।

শক্ত ও স্বাস্থ্যবান নখ পেতে একটি বাটিতে লেবুর রস নিয়ে তাতে ১০ মিনিট নখ ভিজিয়ে রাখুন, এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।

চুলের যত্নে লেবুঃ
শুষ্ক চুলের কন্ডিশনারঃ
লেবুর রস, ৩/৪ কাপ অলিভ অয়েল, ১/২ কাপ মধু, দিয়ে একটি প্যাক তৈরী করে চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করুন। এটি চুলকে ড্যামেজ ফ্রি করবে।

চুল পড়া বন্ধেঃ
৩-৪ টেবিল চামচ নারিকেল তেল নিয়ে তাতে অর্ধেক পরিমাণ লেবুর রস মিক্স করে সপ্তাহে একদিন চুলে লাগান। ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল দেখুন।

নতুন চুল গজাতেঃ
কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং আমলকীর রস মিক্স করে প্রতিদিন রাতে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন।

অন্যান্য ব্যবহারঃ
মাইক্রোওভেন পরিষ্কার করতে লেবুর খোসা ব্যবহার করা হয়।

রান্নাঘর, খাবার টেবিল, ষ্টোভ, এর তেলের দাগ পরিষ্কার করতে অর্ধেক পরিমাণ লেবু এবং লবণ নিয়ে তৈলাক্ত স্থানে কিছুক্ষণ ঘষে নিন এরপর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।

চপিং বোর্ড পরিষ্কার করতে লেবু ব্যবহার করতে পারেন।

ঘরে যদি চিনি কাঁকুড়ে হয়ে যায় তবে লেবুর খোসা ব্যবহার করে দেখুন।

৪/১ লেবুর রস, কিছু লবণ এবং লেবুর রসের অর্ধেক পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে দাঁতে ঘষুন। এটি আপনার দাঁত আরও সাদা করবে।

সূত্র:  Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

থানকুনি পাতার ভেষজ গুণ

10409012_975818102485602_4725127234041565807_n

১. পেটের রোগ নির্মূল করতে থানকুনির বিকল্প নেই। নিয়মিত খেলে যে কোনও পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পেট নিয়ে কোনও দিনও সমস্যায় ভুগতে হয় না।

২. শুধু পেটই নয়, আলসার, এগজিমা, হাঁপানি-সহ নানা চর্মরোগ সেরে যায় থানকুনি পাতা খেলে। ত্বকেও জেল্লা বাড়ে।

৩. থানকুনি পাতায় থাকে Bacoside A ও B। Bacoside B মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে ও রক্ত চলাচল বাড়ায়। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

৪. থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।

৫. মৃতকোষের ফলে চামড়ায় অনেক সময়ই শুষ্ক ছাল ওঠে। রুক্ষ হয়ে যায়। থানকুনি পাতার রস মৃতকোষগুলিকে পুনর্গঠন করে ত্বক মসৃণ করে দেয়।

৬. পুরনো ক্ষত কোনও ওষুধেই না সারলে, থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে তার জল লাগালে সেরে যায়। সদ্য ক্ষতে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে, ক্ষত নিরাময় হয়ে যায়।

৭. থানকুনি পাতা চুল পড়া আটকে দেয়। এমনকি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।

৮. বয়স বাড়লেও, যৌবন ধরে রেখে দেয় থানকুনি পাতার রস। প্রতিদিন একগ্লাস দুধে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে, চেহারায় লাবণ্য চলে আসে।
আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়।

৯. দাঁতের রোগ সারাতেও থানকুনির জুড়ি মেলা ভার। মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে বা দাঁতে ব্যথা করলে একটা বড় বাটিতে থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে, তারপর ছেঁকে নিয়ে সেই জল দিয়ে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায় চটজলদি।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

পুদিনা পাতার অসাধারণ গুণাবলি

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে পুদিনা। ঔষধের পাশাপাশি খাদ্য ও রূপচর্চার উপাদান হিসাবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে পুদিনা পাতা। আর যত দিন যাচ্ছে তত গবেষণা হচ্ছে পুদিনা ও পুদিনার মতো ভেষজ উদ্ভিদ নিয়ে, আর ততই মানুষ জানছে এর গুণাগুণ সম্পর্কে।

*রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

*আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। পুদিনা পাতার পেরিলেল অ্যালকোহল যা ফাইটোনিউরিয়েন্টসের একটি উপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে।

*ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে তাজা পুদিনাপাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস আক্রান্ত স্থানে লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। নতুন কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা। তারপর ধুয়ে ফেলুন। মাস খানেকের মাঝেই দাগ দূর হবে।

*পুদিনার শেকড়ের রস উকুননাশক হিসেবে খুবই কার্যকরী, এমনকি পাতাও। পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য চুল হবে উকুনমুক্ত।

*পুদিনা পাতার রস শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় পড়েন তাদের সমস্যা তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিন এবং তা দিয়ে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন।

*গোলাপ, পুদিনা, আমলা, বাঁধাকপি ও শশার নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে টোনার তৈরি করে মুখে লাগালে তা ত্বককে মসৃণ করে তোলে।

*পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসের চমৎকারী গুনাগুণ যা পেটের যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে খুব দ্রুত। যারা হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথা কিংবা পেটের অন্যান্য সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা খাবার পর এককাপ পুদিনা পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ৬/৭টি তাজা পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খুব সহজে পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে পারেন ঘরে।

*শরীর ঠাণ্ডা রাখার একটি বিশেষ গুণ পুদিনার মধ্যে আছে। গোসলের কিছুক্ষণ আগে পানির মধ্যে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখুন। সেই পানিতে গোসল করলে শরীর ও মন চাঙ্গা থাকে। এ ছাড়া কয়েক ফোটা পুদিনার তেল পানির মধ্যে মিশিয়েও গোসল করতে পারেন।

*পুদিনা ত্বকের যে কোনো সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। শুকনো পুদিনা পাতা ফুটিয়ে পুদিনার পানি তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি পানিতে দশ থেকে পনেরো চামচ পুদিনার পানি মিশিয়ে গোসল করুন। এর ফলে গরমকালে শরীরে ব্যাকটেরিয়া জনিত বিশ্রী দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাবেন, কেননা পুদিনার অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট গুণ অতুলনীয়। ঘামাচি, অ্যালার্জিও হবে না।

*পুদিনা পাতার রস তাৎক্ষণিক ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে কাজ করে। পুদিনা পাতার রস চামড়ার ভেতর দিয়ে নার্ভে পৌঁছে নার্ভ শান্ত করতে সহায়তা করে। তাই মাথা ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা উপশমে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা যায়। মাথা ব্যথা হলে পুদিনা পাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথায় পুদিনা পাতা বেটে প্রলেপ দিতে পারেন।

পুদিনা পাতাকে সাধারণত আমরা শুধুমাত্র রান্নার স্বাদ বাড়ানোর কাজেই ব্যবহার করে থাকি, অন্য কোনো কাজে আমরা পুদিনা পাতা ব্যবহার করি না। কিন্তু এই পুদিনা পাতা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি উপাদান।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

তুলসী গাছ ও পাতার গুণাগুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

পরিবেশগত গুনাগুণ:
পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তুলসীগাছ একমাত্র উদ্ভিদ যা দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহ করে বায়ু বিশুদ্ধ রাখে যেখানে অন্য যেকোন গাছ রাত্রিতে কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে তাই রাতের বেলাতে তুলসীতলায় শয়ন করাও ব্যক্তির জন্য উপকারী। এছাড়া তুলসীগাছ ভুমি ক্ষয়রোধক এবং তুলসী গাছ লাগালে তা মশা কীটপতঙ্গ ও সাপ থেকে দূরে রাখে।

তুলসীর স্বাস্থ্যগুণ:
» চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সংগে বেটে মাখলে ভালো হয়ে যায়।

» উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমিয়ে হূৎপিণ্ডের রক্ত সরবরাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

» হাড়ের গাঁথুনিতে ব্যথা দূর করে এবং শরীরের কাটাছেঁড়া দ্রুত শুকাতে অবদান রাখে।

» ঠাণ্ডা মরসুমে ছোট বাচ্চাদের তুলসির পাতা খাওয়ালে কৃমি দূর হবে এবং মাংসপেশি ও হাড় হবে শক্তিশালী।

» জ্বর হলে পানির মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করে নিন ৷ অথবা উপরিউক্ত তিনটে দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা পানি দিয়ে সেবন করুণ । জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।

» কাশি হলে তুলসী পাতা এবং আদা একসাথে পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷

» ডাইরিয়া হলে ১০ থেকে বারোটি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন।

» মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ।

» আপনার শরীরে যদি কোনরকম ঘা যদি থাকে তাহলে তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান।

» শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ ওঠে যাবে।

» ত্বকের রোশনি বাড়ানোর জন্য, ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান।

» প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করতে হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন । তুলসি গাছের বীজও যথেষ্ট উপকারী। এর বীজ শুকিয়ে মিহি করে খেলে প্রস্রাবের ইনফেকশনজনিত সমস্যা ভালো হয়।

» যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।

» সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবার রুচী বাড়ে।
» নিয়মিত তুলসীর রস পানে হৃদরোগেও উপকার পাওয়া যায়।

» চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।

» তুলসীতে Eugenol অধিক পরিমাণে থাকায় তা Cox-2 Inhibitor রূপে কাজ করে বলে তা ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

» Hypoglycemic drugs এর সাথে তুলসী খেলে তা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

» তেজস্ক্রিয়তার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কোষসমুহকে মেরামত করে।

» চর্বিজনিত হৃদরোগে এন্টি অক্সিডেন্টের ভুমিকা পালন করে।

» তুলসী একশেরও বেশি Phytochemicals (যেমন oleanolic acid, beta caryophyllene ইত্যাদি) বহন করে বলে ক্যান্সার চিকিত্সারয় ব্যবহৃত হয়।

» তুলসীর অ্যালকোহলিক নির্যাস Immune system এর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।

» তুলসী স্নায়ুটনিক ও স্মৃতিবর্ধক।
» শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্নরোগ যেমন ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানি প্রভৃতি রোগের নিরাময়ক।

» সর্দি, কাশি, জ্বর, বমি, ডায়ারিয়া, কলেরা, কিডনির পাথর, মুখের আলসারসহ চোখের বিভিন্ন রোগে ইহা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

» দাঁতের রোগে উপশমকারী বলে টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

ভয়ানক ক্ষতিকর সাধের ধনেপাতা:

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

নিত্যদিনের বিভিন্ন খাবারে আমরা ধনেপাতা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কখনও কি কল্পনা করেছেন যে এই সুস্বাদু খাবারটির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এই সুপরিচিত খাবারটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান যা আমাদের শরীরকে দিনদিন অসুস্থ করে তুলছে।

১. লিভারের ক্ষতিসাধন: অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

২. নিম্ন রক্তচাপ: অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।

৩. পেট খারাপ: স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া এমনকি পাতলা পায়খানা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।

৪. ডায়রিয়া: ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।

৫. নিঃশ্বাসের সমস্যা: আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

৬. বুকে ব্যথা: অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।

৭. ত্বকের সংবেদনশীলতা: সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।

৮. অ্যালার্জির সমস্যা: ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যাশ ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।

৯. প্রদাহ: অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।

১০. ভ্রূণের ক্ষতি: গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায়। বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

নানা গুণে পরিপূর্ণ নারকেল:

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

ডাব না পাড়লে কী হয়? উত্তরটা সহজ ‘নারকেল’। যা দিয়ে পিঠাপুলি তৈরি তো হয়ই। আরও আছে এর নানা কাজ। নারকেল তেলের কদর তো সবখানে। ফেলনা নয় এর পানি বা শাঁসও। রূপচর্চায় এর বিশেষ সমাদর আছে।
আয়ুর্বেদা রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের অন্যতম স্বত্বাধিকারী সারওয়াত আবেদ বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে নারকেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। এ ছাড়া ডাবের পানি শরীরের পানিশূন্যতা রোধ করে, বাড়তি উদ্দীপনা জোগায়। ত্বকের লাবণ্য বাড়াতে ফেসিয়ালের সময় নারকেল তেলের ব্যবহার করা যায়। রূপ রুটিনে তো নারকেলের ব্যবহার আছেই, সঙ্গে খাবার হিসেবেও জনপ্রিয় এটি। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো বলেন, নারকেল আসলে অনেক কাজের কাজি। নারকেল তেলের রান্না করা খাবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এ ছাড়া নারকেল তেল মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তবে যাদের কোলেস্টেরল বেশি, তাদের নারকেল খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।

নারকেলের দুধ
নারকেলের দুধ দিয়ে পোলাও, পিঠা, ইলিশ মাছ, মাংস রান্নার প্রচলন তো বহু পুরোনো। রূপচর্চার জন্যও নারকেলের দুধ দারুণ এক উপকরণ। এক কাপ গোলাপের পাপড়ি, আধা কাপ গোলাপ জল ও এক কাপ নারকেলের দুধ হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। গোসলের আগে এতে ১৫ মিনিট শরীর ভিজিয়ে রাখলে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে। এ ছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ঘরে তৈরি নারকেলের দুধ সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে বয়সের ছাপ দেখা দিলেও নারকেলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের সেই অংশে নারকেলের দুধের প্রলেপ দিয়ে রাখুন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে নিলেই পোড়া দাগ থেকে মুক্তি মিলবে।

নারকেল তেল
নারকেল তেল রান্নায় আলাদা একটা ঘ্রাণ আনে। তবে বাজারে বোতলজাত করা নারকেল তেলে আরও নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে, ফলে এই নারকেল তেল রান্নার জন্য উপযোগী নয়। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান আলাদা করে রান্নার উপযোগী নারকেল তেল বাজারজাত করে থাকে। এ ছাড়া সরাসরি নারকেল শুকিয়ে তেল করে নিয়েও রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে। নারকেল তেল চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়। মাথায় ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বক ঠান্ডা থাকে। শীতের সময়ে অল্প একটু নারকেল তেল ঠোঁটে ঘষে নিলে ঠোঁট ফাটবে না। চুল রুক্ষ হয়ে গেলে নারকেল তেল ব্যবহার করে ঘণ্টা খানেক পর শ্যাম্পু করে নিলে চুল ঝলমলে হয়ে যাবে।

নারকেলের পানি
ত্বক ভালো রাখতে নারকেলের পানি ভালো। ডাবের পানিতে পটাশিয়াম বেশি থাকায় তা শরীর ঠান্ডা রাখে। ডাবের পানিতে অল্প পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। আখতারুন্নাহার আলো জানান, বাজারের একটা কোমল পানীয় অপেক্ষা এক গ্লাস ডাবের পানি অনেক ভালো। কারও মুখে যদি দাগ দেখা যায়, তাহলে প্রতিদিন ডাব বা নারকেলের পানি দিয়ে মুখ ধুলে প্রাকৃতিকভাবেই দাগ চলে যাবে।
ঘরে নারকেলের দুধ তৈরি করবেন যেভাবে
নারকেল ভেঙে কুরিয়ে নিন। এবার ২৫০ গ্রাম কোরানো নারকেলের সঙ্গে দেড় কাপ হালকা গরম পানি মিশিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মিশ্রণটি দিয়ে পরিষ্কার কাপড়ে ছেঁকে নিন। পেয়ে যাবেন নারকেলের দুধ। একটা বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারেন এটি।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

কাঁচাকলার পাকা গুণাগুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

কাঁচকলা এমন একটি সবজি যা সারাবছরই পাওয়া যায়। এ সবজিটি আমাদের দেশে যথেষ্ঠ সমাদৃত কারণ এটি পুষ্টিগুণে এবং ভেষজগুণে সমৃদ্ধ।
এটি সহজপ্রাচ্য ও পুষ্টিকর বলে রোগীর পথ্য হিসাবে কাঁচকলার ভর্তা ও তরকারি রান্না করে খাওয়ানো হয়। এটি বহু আগে থেকেই ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। রোগীর রুচি বাড়াতে কাঁচকলার জুড়ি নেই।

প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী কাঁচকলায় যে সমস্ত পুষ্টিগুণ রয়েছে তা হলো জলীয় অংশ- ৭৮%, শর্করা- ১৭-৩৪ গ্রাম, প্রোটিন- ২/৬০ গ্রাম, স্নেহ- ০.০৩ গ্রাম, খনিজ লবণ- ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ১১-৩০ মিঃ গ্রাম, আয়রন- ০.৪ গ্রাম, ভিটামিন বি- ০.০৯ মিঃ গ্রাম, বি¬২- ০.০৬ মিঃ গ্রাম, ভিটামিন সি- ৪.০৩ মিঃ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৮৩ কিঃ ক্যালরি।

শিশুদের পাতলা পায়খানা কাঁচকলার খিচুরী রান্না করে খাওয়ালে আরোগ্য হয়।

জন্ডিস, আমাশয় ও ডায়রিয়ার রোগীকে কাঁচকলা সিদ্ধ ভর্তা খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।

আযুর্বেদিক মতে কলার থোর ও বীজে রয়েছে প্রচুর ওষুধিগুণ। কচি কলাগাছের শিকরের রস কৃমিনাশক এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

কাঁচকলার ভর্তা ও তরকারি যেমন সমাদৃত তেমনি কাঁচকলা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মজাদার নাস্তাও মুখরোচক হয় যেমন: কাঁচকলা টিকিয়া, কাটলেট, চপ, কাবাব ইত্যাদি। এ সবজিটি যেহেতু সারাবছর হাতের কাছেই পাওয়া যায় কাজেই নিয়মিত খেলে দৈহিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ হওয়া সম্ভব।

—কাঁচকলায় থাকা খাদ্যশক্তি দেহের দূর্বলতা কাটিয়ে সবল করে তোলে। রোগীদের জন্য দারুণ পথ্য হিসেবে কাঁচকলার সুনাম রয়েছে।

—কাঁচকলায় থাকা খাদ্যাআঁশ খাবার হজমে সহায়তা করে। পেটের নানা ধরনের অসুখ যেমন- গ্যস, পেটব্যথা, বদহজম ইদ্যাতি দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কাঁচকলা উপযোগী।

—কাঁচকলায় থাকা ভিটামিন সি শরীরের যেকোনো সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়।

—এতে থাকা ভিটামিন-এ উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। দেহের নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধসহ ক্যানসারের জীবানু রোধেও ভূমিকা রাখে। ত্বকের যত্নেও এর ভূমিকা অসাধারণ।

—কাঁচকলায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস দেহের হাড় মজবুত এবং হাড় ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।

—কাঁচকলা থেকে পাওয়া পটাসিয়াম হৃদস্পন্দনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। রক্তচাপের মাত্রাও ঠিক রাখে।

—দেহের কোষ গঠনেও কাঁচকলা ভূমিকা রাখে।
—অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতেও কাঁচকলা দারুণ ভূমিকা রাখে।

—কাঁচকলায় থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড পরিপাক নালী থেকে লবণ ও পানিকে শোষণ করে ডায়রিয়া রোধ করে।

সূত্র: Modern Agriculture  ফেইজবুক পেইজ

বরবটির উপকারিতা

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

শুধু পুষ্টিমানেই ভরপুর নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। বরবটিতে রয়েছে প্রচুর উপকারী খাদ্য আঁশ।

পুষ্টিমান:
প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ বা বেগুনি রঙের বরবটি থেকে পাওয়া যায় ৪৮ ক্যালরি শক্তি। যাতে নেই কোন ফ্যাট এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল। শর্করার পরিমান ১০ গ্রাম এবং প্রোটিন ২.৬ গ্রাম। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস সহ নানারকম ভিটামিন ও মিনারেল।

স্বাস্থ্য উপকারিতা:
প্রচুর পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বরবটির রয়েছে দারুণ স্বাস্থ্য উপকারিতা। এর পুষ্টিমান সুস্বাস্থ্যের জন্য চমৎকার কাজ করে।

১। ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়:
বরবটিতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড নামে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এর দুটি উপাদান kaempferol এবং quercetin। অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায় এই দুই উপাদান ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিরোধ করতে চমৎকার কাজ করে।

২। অস্থিসন্ধির ব্যথা কমায়:
আপনার সালাদের বাটিতে প্রতিদিন ২৫০ মিলিগ্রাম কাঁচা বরবটি মিশিয়ে নেন। এতে আপনি আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন ‘কে’-এর ১৯ শতাংশ মেটাতে পারেন। ভিটামিন কে আপনার অস্টিওআর্থারাইটিস সমস্যা থেকে অস্থিসন্ধির যত্ন দেবে। আর রক্ত জমাট বাঁধতে ভিটামিন কে- এর ভূমিকার কথাতো আপনি জানেনই।

৩। হার্টের সুরক্ষায়:
বরবটিতে রয়েছে প্রচুর উপকারি আঁশ যা শরীরের এলডিএল (ক্ষতিকর) কলেস্টেরলের পরিমান কমিয়ে দেয়। ফলে হার্টের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। এছাড়াও এটি উচ্চ রক্তচাপ, বুক জ্বালাপোড়া প্রভৃতি সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে।

৪। হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে:
বরবটিতে রয়েছে সিলিকন। যা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। হাড় শক্ত করতে প্রয়োজনীয় ক্যালিসিয়ামও পাওয়া যায় বরবটির বীজে। আর রজস্বলা নারীদের স্বাস্থ্য উপকারে সিলিকন ও ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৫। আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে:
ভিটামিন সি খুব গুরুত্বপূর্ণ এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন পরিশোষণে ভূমিকা রাখে। সালাদে কাঁচা বরবটি খেলে তা থেকে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আর বরবটিতেও রয়েছে যথেষ্ট পরিমান আয়রন। যা আপনার শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে।

৬। শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে:
বরবটিতে রয়েছে প্রচুর এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ্যন্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে দূষিত যৌগগুলোকে বের করে দেয়। ফলে সহজে চর্বি জমতে দেয় না। এ ছাড়া কম ক্যালরি যুক্ত খাদ্য ও ফ্যাট-কলেস্টেরল না থাকায় এটি পেট ভরে খাওয়া যায়। এতে ক্ষুধাভাব কম হয়। ওজন কমাতে সহায়তা করে।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

তিতা করলা দূর করবে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস!

খেতে ভীষণ তিতা,কিন্তু গুণে ভরপুর।ইংরেজীতে বিটার মেলন বাংলা নাম করলা- এমন একটি সবজি যা দূর করতে পারে কান্সার, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্ররোগ। এছাড়াও করলা দূর করে অন্যান্য অনেক মারাত্মক সব শারীরিক সমস্যা। যদিও এর তেতো স্বাদের কারণে কারো মুখে রোচে না, কিন্তু শুধুমাত্র স্বাদের কথা ভেবে স্বাস্থ্যেউপকারিতা ও মিঠাগুণের কথা একেবারে ভুলে বসলেও হবে না।

দ্য নেভাডা সেন্টার অফ আল্টারনেটিভ অ্যান্ড অ্যান্টি এইজিং মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ, ডঃ ফ্রাংক শ্যালেনবার্গার এম.ডি দেখতে পান এই করলার রয়েছে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধির প্রতিরোধ ক্ষমতা। এবং তিনি তার রোগীদের এই প্রাকৃতিক ক্যান্সার নিরাময়ের সবজিটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধের জন্য। তিনি তার নতুন গবেষণায় দেখতে পান করলার রস পানিতে মাত্র ৫% মিশ্রিত হয় যা প্রমাণ করে এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। করলার প্রায় ৯০%- ৯৮% পর্যন্ত ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসের ক্ষমতা রয়েছে। দ্য ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর একটি গবেষণায় দেখা যায় করলা অগ্ন্যাশয়ের টিউমার প্রায় ৬৪% কমিয়ে আনতে সক্ষম।

এছাড়াও ডঃ শ্যালেনবার্গার তার গবেষণায় দেখতে পান, উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা, অ্যাজমা, ত্বকের ইনফেকশন, ডায়বেটিস এবং পাকস্থলীর নানা সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে শুধুমাত্র এই একটি সবজি ‘করলা’। খুব কম ক্যালরি সমৃদ্ধ করলায় রয়েছে পটাশিয়াম, বেটাক্যারোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ, হাই ডায়াটেরি ফাইবার, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ ও সি, ফোলায়েট, জিংক এবং ফসফরাস।

করলা দূর করে আরও ৭ টি শারীরিক সমস্যা:
১) পরীক্ষিত ভাবে প্রমাণিত যে করলা স্ট্যামিনা ও এনার্জি লেভেল বাড়ায়।

২) গর্ভধারণের প্রাথমিক সময়ে নারীরা করলা নিয়মিত খেলে শিশুদের নিউট্রাল টিউব ডিফেক্ট হতে রক্ষা করে।

৩) করলার নানা পুষ্টি উপাদান রক্তের সুগারের মাত্রা কমায় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

৪) করলার রস নিয়মিত পান করার ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং নানা ধরণের ইনফেকশনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

৫) হজমে সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতেও করলার জুড়ি নেই।

৬) করলার রস লিভার পরিস্কারে সহায়ক এবং লিভারকে টক্সিনমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা উন্নত করে।

৭) নিয়মিত করলার রস পানের অভ্যাস সোরাইসিসের অবস্থা উন্নত করে এবং ফাঙ্গাস জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

যেভাবে খেতে পারেন করলা

বাজার থেকে ভালো করলা কেনার পর ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে নরম ব্রাশ দিয়ে আলতো ঘষে পরিষ্কার করে নিন।

১) যে কোনো আমিষ খাবারের সাথে বা অন্যান্য সবজির সাথে ভাজি করে খেতে পারেন।

২) করলার শুকনো গুঁড়ো তৈরি করে রেখে আইসড ও দুধ চায়ে মিশিয়েও পান করতে পারেন।

৩) আচার তৈরি করে খেতে পারেন।

৪) শুধু করলার রস দিয়ে জুস তৈরি করে পান করতে পারেন।

সূত্র: dailynews.com.bd, ২৪ জুলাই ২০১৬ ইং

ফল-সবজি ফরমালিন ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করার টেকনিক

যেকোনো ফল খাওয়ার আগে বা সবজি কাটার আগে আমরা ধুয়ে নিই। ফল-সবজিতে ব্যবহৃত ফরমালিন ও ব্যাকটেরিয়া দূর করার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ফল ও সবজিকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করতে এবং এতে ব্যবহৃত পেস্টিসাইড দূর করতে কিছু টিপস-

সংরক্ষণের আগে ভেজানো যাবে না
ফল ও সবজি ফ্রিজে বা ঝুড়িতে সংরক্ষণ করার আগে ধোয়া যাবে না। এতে এসব খাবার দ্রুত পঁচে ও ব্যকটেরিয়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধুমাত্র ব্যবহারের আগে ধুয়ে নিন।

বহিরাবরণ ফেলে দিন
বাঁধাকপি, সেলারি, লেটুস, গাজর, নাশপাতি, আপেল ইত্যাদি ফল ও সবজির বাইরের আবরণ ও খোসা ফেলে দিন। কারণ, বাইরের স্তরেই বেশি ব্যকটেরিয়া থাকে।

আলাদা করে নিন
স্তরীভূত সবজি যেমন বাঁধাকপি, লেটুস ইত্যাদির ভাঁজ খুলে নিন। বড় পাতা বা ছোট পাতা হিসেবে আলাদা করতে পারেন। কয়েক মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পেপার টাওয়েল দিয়ে অতিরিক্ত পানি মুছে নিন।

ভিনেগার
ফল ও সবজি ধোয়ার সময় পানিতে ভিনেগার ব্যবহার করুন। ভিনেগার মেশানো পানিতে সাত থেকে আট মিনিট ফল ও সবজি ভিজিয়ে রাখুন। ভিনেগার ৯৫ শতাংশ ভাইরাস ও ৯০ শতাংশ ব্যকটেরিয়া মেরে ফেলে। বিশেষ করে আপেল খাওয়ার আগে এভাবে ধুয়ে নিতে পারেন। ফলমূলে চকচকে ভাব আনতে অনেক সময় ওয়াক্স লাগানো হয়। ভিনেগার ব্যবহারের ফলে ওয়াক্স গলে যায়। একই উপায়ে লবণ ব্যবহার করতে পারেন।

ব্রাশিং
আলু, আপেল, গাজর, শসা ধোয়ার সময় নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন। এতে খাবারের গায়ে লাগানো ওয়াক্স ও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর হবে।

টিপস
• আঙুর ধোয়ার সময় পানি ও ভিনেগার ১:১/২ অনুপাতে নিন। এক চা-চামচ বেকিং সোডা ও দুই চা চামচ লেবুর রস ব্যবহার করুন। এতে ভাইরাস মরে যায়।

• অথবা এই উপকরণগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে রাখতে পারেন। ফল বা সবজি ধোয়ার সময় স্প্রে করে ব্রাশ করে নিন।

সূত্র: Modern Agriculture Facebook Page