কৃষি সম্প্রসারন সংক্রান্ত ফ্যাক্টসীট | ই-কৃষক | Page 3

Category Archives: কৃষি সম্প্রসারন সংক্রান্ত ফ্যাক্টসীট

নিরাপদ বালাইনাশক প্রয়োগের নিয়মাবলি

বালাইনাশক ব্যবহারের মূলনীতি হলো সঠিক বালাইনাশক, সঠিক সময়ে, সঠিক মাত্রায় ও সঠিক নিয়মে প্রয়োগ করা (ওসমানি)। বালাইনাশক ব্যবহারের সময় অবশ্যই নিম্নবর্ণিত বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

1. সঠিকভাবে রোগবালাই, পোকামাকড় ও আগাছা শনাক্তকরণের মাধ্যমে উপযুক্ত বালাইনাশক নির্বাচন করতে হবে।

2. অনুমোদিত বালাইনাশক ডিলারের নিকট হতে নির্দিষ্ট দানাদার, তরল অথবা পাউডার বালাইনাশক সংগ্রহ করে ব্যবহার বিধি মেনে চলতে হবে।

3. বালাইনাশক মানুষ ও পশুখাদ্য হতে আলাদাভাবে পরিবহন ও সংরক্ষণ করতে হবে।

4. বালাইনাশক সংগ্রহ করে এর ব্যবহার বিধি ভালভাবে পড়তে হবে; না বুঝলে অভিজ্ঞ কারো মাধ্যমে বুঝে নিতে হবে।

5. বালাইনাশকের বিষক্রিয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সুরক্ষামূলক পোশাক যেমন- এপ্রোন, গামবুট, মুখোশ, হ্যান্ডগ্লাভস, ক্যাপ ইত্যাদি অবশ্যই পরিধান করতে হবে। এ সমস্ত সামগ্রী পাওয়া না গেলে স্থানীয় সহজলভ্য সামগ্রী যেমন- গামছা, ফুলহাতা শার্ট, প্যান্ট বা পায়জামা ব্যবহার করা যেতে পারে।

6. বালাইনাশকের ধরনের (তরল বা পাউডার) উপর ভিত্তি করে সঠিক মিশ্রণ তৈরী করতে হবে এবং মিশ্রণ তৈরীতে সবসময় পরিস্কার পানি ব্যবহার করতে হবে।

7. মিশ্রণ তৈরীতে কাদা পানি ব্যবহার করা যাবে না কারণ নজলে তা আটকে যেতে পারে এবং মিশ্রণ ট্যাঙ্কে ঢালার সময় অবশ্যই ছাকনি ব্যবহার করতে হবে।

8. ফসলভেদে প্রত্যেক বালাইনাশকের নির্দিষ্ট প্রি হারভেষ্ট ইন্টারভাল (PHI) রয়েছে যা মেনে চলতে হবে অর্থাৎ শেষ স্প্রে এবং ফসল উঠানোর নিরাপদ সময় মেনে চলতে হবে অন্যথায় ফসলের ভিতরে বালাইনাশকের বিষাক্ততার অবশিষ্টাংশ থেকে যেতে পারে যা ভোক্তা সাধারণের স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে।

9. স্প্রে করার পর জমিতে লাল নিশান বা পতাকা দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে মানুষ, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী ইত্যাদি ক্ষেতে ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত না হয়।

10. সকাল ও বিকেলে বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে এবং বাতাসের বিপরীতে স্প্রে করা যাবে না কারণ এতে চোখে মুখে লেগে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

11. ত্রুটিপূর্ণ স্প্রে মেশিন বা নজল ব্যবহার করা যাবে না এবং স্প্রে মেশিন পিঠে রেখে কখনও বালাইনাশক ট্যাঙ্কে ঢালা, বালাইনাশকের গন্ধ নেয়া বা ছিটানোর পর নজলে মুখ দিয়ে ফু দেয়া যাবে না।

12. বালাইনাশক ছিটানোর পর স্প্রে মেশিন পুকুর, ডোবা, নালায় ধোয়া যাবে না, এতে পরিবেশ দূষণসহ মৎস্যসম্পদ, পশুপাখি এবং মানুষের ক্ষতি হতে পারে।

13. বালাইনাশকের মূল বোতল বা প্যাকেট ছাড়া কখনও কোনরূপ পানীয় বোতল বা পাত্রে রাখা যাবে না এবং স্প্রে করার পর খালি বোতল ক্ষেতের আইলে রাখা যাবে না। খালি প্যাকেট বা বোতল তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

14. বালাইনাশকের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীকে বমি করাতে হবে, অচেতন অবস্থায় কখনও বমি করানো যাবে না। ডাক্তারকে বালাইনাশকের খালি বোতল বা প্যাকেট দেখাতে হবে এবং পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে (সংগৃহিত)।

অধিকারী চ. মিঠু's photo.
সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

কাঁচা মরিচের পাঁচ গুণ

কাঁচা মরিচ

রান্নাবান্নায় দেদার ব্যবহৃত হয় কাঁচা মরিচ। এটি খাবারের স্বাদ বাড়ায় এবং সুগন্ধ যোগ করে। কাঁচা মরিচ পাকলে তা শুকিয়ে গুঁড়া করে মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে ঝাল খেতে যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে এই মসলার বিশেষ কদর রয়েছে। তবে শুকনো মরিচ বা মসলার চেয়ে কাঁচা মরিচই বেশি গুণের। কাঁচা মরিচের বিশেষ পাঁচ গুণ নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জিনিউজ।
১. কাঁচা মরিচে প্রচুর ডায়াটারি ফাইবার রয়েছে, যা সুস্থ পরিপাকতন্ত্রের জন্য খুব দরকারি।
২. প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এটি চোখ ও ত্বকের জন্য ভালো।
৩. কাঁচা মরিচে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা শরীরে মুক্ত মৌলগুলোর বিরুদ্ধে লড়তে পারে। ফলে শরীরে সহজে রোগব্যাধি হয় না।
৪. কাঁচা মরিচে ভরপুর ভিটামিন সি থাকে। শরীরে অন্যান্য ভিটামিন শোষণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণের কারণে শরীরে এটি ব্যাকটেরিয়া ঘেঁষতে দেয় না এবং শরীরকে জীবাণুমুক্ত রাখে।

সূত্র: “প্রথম আলো” ১৪ মার্চ ২০১৬, ১২:৪০

ফসলের পোকা ও রোগ দমনে প্রযুক্তির ব্যবহার

ফসলের পোকা ও রোগ দমনে প্রযুক্তির ব্যবহার

পোকা ও রোগ ফসলের প্রধান শত্রূ। সারাদেশে পোকা ১৩ ভাগ এবং রোগ ১২ ভাগ ফসলের ক্ষতি করে। তাই পোকা ও রোগ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলে অধিক ফসল ফলানো সম্ভব। পোকা ও রোগ দমনে নিম্নরূপ ধারাবাহিক ভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করলে খুব সহজেই পোকা ও রোগ জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।
ফসলের পোকা ও রোগ দমনের ধারাবাহিক পদ্ধতি সমূহ নিম্নরূপঃ
১)ফসলের জাত নির্বাচনঃ ফসলের জাত অবশ্যই উচ্চ ফলনশীল হতে হবে। তার সাথে রোগ-পোকা সহনশীল। অনেক সময় দেখা যায়, রোগ-পোকা সহনশীল জাতগুলো ফলন কম দেয়। তাই এসব জাত কৃষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না। তাই, যতদুর সম্ভব উচ্চ ফলন শীল জাত নির্বাচন করে কিভাবে রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উত্তম।

২) বীজ শোধনঃ
ফসলের অধিকাংশ রোগ বংশগত জীবাণুর মাধ্যমে ছড়ায়। এর থেকে পরিত্রানের কার্যকর উপায় হলো বীজ শোধন করা । তাছাড়া, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ দমনে তেমন কোন কার্যকর ঔষধ না থাকায় বীজ শোধনই একমাত্র উপায়। এটি দুই উপায়ে করা যায়ঃ টাকা দিয়ে এবং টাকা ছাড়া।
টাকা দিয়েঃ ভিটাভেক্স/প্রোভেক্স/নোয়িন/ব্যভিষ্টিন ইত্যাদির যেকোন একটির ৩ গ্রাম প্রতি কেজি ধান/গম বীজের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে সরাসরি বীজ বপন বা বীজ অঙ্কুরিত করে বপন করতে হবে।
টাকা ছাড়াঃ ২০০টি বড় জামপাতা ভালোভাবে মসলার মত পাটা-পুতায় পিষতে হবে। একটি বালতিতে ১০ লিটার পানি নিয়ে এর মধ্যে জামপাতার রস ছেঁকে মিশাতে হবে। এই রস+পানিতে ৮ কেজি পরিমাণ পুষ্ট ধান/গম বীজ ঢেলে ৩০ মিনিট সময় পর্যšত রাখতে হবে। এরপর ফ্রেশ পানিতে বীজগুলো ১/২ বার ধুয়ে নিতে হবে।

১ লিটার পানিতে ৩০ গ্রাম বোরিক এসিড মিশিয়ে তাতে আলু বীজ ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখলে শোধন হয় । অথবা, টেক্টো ২ গ্রাম হারে প্রতি কেজি আলুর সাথে মিশাতে হবে।
দমনযোগ্য রোগ: পাতা কুকঁড়ানো রোগ, হলদে মোজাইক রোগ, পাউডারী মিলডিউ, ধানের-ব্লাষ্ট, বাদামী দাগ রোগ, খোল পোড়া, বাকানী, পাতা লালচে রেখা রোগ ইত্যাদি।

৩) মাটি শোধনঃ
যদিও মাটি শোধন করা একটি দুরূহ কাজ ,তবে এটি করতে পারলে ভাল ফলদায়ক। ষ্টেবল ব্লিচিং পাউডার @ ২০-২৫ কেজি/হেক্টরে বীজ রোপনের ১৫ দিন আগে জমিতে প্রয়োগ করলে মাটি শোধন হয়।
সোলারাইজেশন পদ্ধতিতে মাটি শোধন করা যায় । বীজতলার মাটি কাদাময় করে তার ওপর স্বচ্ছ ১০ মিমি পলিথিন দিয়ে ৪ সপ্তাহ ঢেকে রাখতে হবে । এতে মাটির তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ৫০ ডিগ্রী সে. পর্যন্ত পৌছায় । ফলে মাটিসহ রোগজীবাণু, কৃমি, ছত্রাক সহজেই মারা যায় । তবে পলিথিনে যেন কোন ফুটো না থাকে ,নতুবা মাটি পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত হবেনা। বছরে দুবার এটি করা যায়। একবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এবং আরেকবার এপ্রিল-মে মাসে। তবে, এপ্রিল-মে মাসে অধিক কার্যকরী ।
তাছাড়া, মাটির ওপর খড় কাঠের গুড়া ৩-৪ ইঞ্চি পুরু করে ছিটিয়ে তারপর পুড়িয়ে মাটি শোধন করা যায়।
দমনযোগ্য রোগ: ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জনিত ঢলে পড়া রোগ, গোড়া পঁচা, উফরা ইত্যাদি ।

৪)বীজতলায় স্প্রেঃ অনেক রোগ এবং পোকার প্রাথমিক আক্রমন বীজতলায় হয়। তাই বীজতলায় স্বল্প পরিমানে রোগ/পোকা দমন করতে পারলে তা আর মূল জমিতে বড় আকারে ছড়ায় না। বীজতলায় ডাইথেন এম-৪৫@ ২.৫ গ্রাম/১ লিটার পানিতে এবং সুমিথিয়ন ১মিঃলি/ ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। তাছাড়া বীজতলাটি আদর্শ ভাবে করতে হবে যাতে পানি জমে রোগ সৃষ্টি না হয়।
দমনযোগ্য রোগ: ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জনিত ঢলে পড়া রোগ, গোড়া পঁচা, ব্লাষ্ট, বাদামী দাগ রোগ ইত্যাদি ।
দমনযোগ্য পোকা: থ্রিপস, মাজরা, পাতা মোড়ানো পোকা, ঘাস ফড়িং, উড়চুঙ্গা, সবুজ পাতা ফড়িং ইত্যাদি ।

৫)সারিতে চারা রোপনঃ
সারিতে চারা রোপন করলে জমিতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করতে পারে। তাই, বাতাসের প্রবাহের জন্য জমিতে পোকার উপদ্রব কম হয়। রোগের উপদ্রবও কম হয় কারণ রোগ সৃষ্টিকারী অনেক ভেকটর পোকা কমে যায়। তাছাড়া, কারেন্ট পোকা/বাদামীগাছ ফড়িং এর মত বিধ্বংসী পোকা নিয়ন্ত্রন করতে সারিতে চারা রোপন অন্যতম প্রধান উপায়। পূর্ববর্তী বছরে এই পোকা আক্রমনের রেকর্ড থাকলে ৮/১০ টি সারির পরে ১টি সারি ফাঁকা রাখতে হবে যাতে আলো বাতাস আরো ভালভাবে চলাচল করতে পারে।

৬) পার্চিং/ডালপোতা: ধানের ফুল অবস্থা পর্যন্ত পার্চিং প্রকৃতপক্ষেই কার্যকর । এক্ষেত্রেও প্রতি ৩৩ শতক জমিতে ৮/১০ টি ডাল জমির পুরো অংশ জুড়ে দিতে হবে । তবে ধান হওয়ার পর পার্চিং এর ডাল অবশ্যই তুলে ফেলতে হবে । নতুবা, সেই ডালে পাখি বসে ধান খাবে ।
দমনযোগ্য পোকা: মাজরা, পামরী, ঘাসফড়িং, উড়চুঙ্গা, চুঙ্গীপোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, লেদা পোকা, সেমি লুপার ইত্যাদি ।

৭) হাতজাল ব্যবহার: ধানের কুশি পর্যায় পর্যন্ত হাতজাল খুবই কার্যকর । কেননা , ১টি মাজরা পোকা কমপক্ষে ২৫০ হতে ৪০০ টি পর্যন্ত ডিম দেয় এবং ডিম পারার সাথে সাথে স্ত্রী পোকা মারা যায় । তাই, ২টি স্ত্রী মাজরা পোকা ধরা মানে কমপক্ষে ৫০০টি মাজরা পোকা নষ্ট করা । ফসল দেখার জন্য কৃষকরা এমনিতেই জমিতে যান । কাজেই, সেই সময় যদি হাতজাল সাথে নিয়ে পোকা ধরা যায়, তাহলে খুব অনায়াসেই পোকা দমন হয় ।
দমনযোগ্য পোকা: মাজরা, পাতা মোড়ানো পোকা, সবুজ পাতা ফড়িং, থ্রিপস, পামরী, ঘাসফড়িং, পাতা মাছি, নলি মাছি, চুঙ্গী পোকা, লম্বাশুড় উড়চুঙ্গা, গান্ধী পোকা, লেদা পোকা, স্কীপার ইত্যাদি ।

৮)আলোক ফাঁদ:
আলোক ফাঁদ পোকার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও পোকা দমন উভয়েই কার্যকর । ধানের কুশি অবস্থা হতে দুধ অব¯হা পর্যন্ত আলোক ফাঁদ দেয়া যেতে পারে । এক্ষেত্রে সন্ধ্যার সময় একটি ব্লকে জমির সকল কৃষককে একত্রে আলোক ফাঁদ দিতে হবে। জমি থেকে ৫০ মিটার দূরে কমপক্ষে পরপর ৩ দিন আলোক ফাঁদ দিতে হবে। পরপর তিন দিন না দিলে পোকার উপস্থিতি বেড়ে যাবে।
দমন যোগ্য পোকাঃ মাজরা, পাতা মোড়ানো পোকা, সবুজ পাতা ফড়িং, চুঙ্গী পোকা, স্কীপার, গান্ধী পোকা, পাতা ফড়িং, যেকোন মথ পোকা ইত্যাদি ।

৯)সার ব্যবস্থাপনা:
ইউরিয়া সার বেশি দিলে গাছ সবুজ ও লিকলিকে হয় । ফলে একসময় হেলে পড়ে এবং রোগ পোকার আক্রমণ দেখা যায়। তাই, ইউরিযা সার কমও নয়, বেশিও নয় পরিমিত মাত্রায় দিতে হবে । এক্ষেত্রে, গুটি ইউরিয়া সবচেয়ে উত্তম । তাছাড়া গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করলে ফলনও বৃদ্ধি পায়।
গাছ একটু শক্ত হলে রোগ-পোকা কম ক্ষতি করতে পারে। তাই পটাশ সার ৩৩ শতকে ৫ কেজি পরিমাণে প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

১০) পানি ব্যবস্থাপনা: এর মাধ্যমে সহজেই রোগ ও পোকা দমন করা যায়। শুধু পোকা বা রোগটি ভালভাবে সনাক্ত করে সেচ/নিষ্কাশন করতে হবে।
পানি নিষ্কাষণের মাধ্যমে পোকা দমন: পাতা মাছি, চুংগী পোকা, বাদামী গাছ ফড়িং, সাদা পিঠ গাছ ফড়িং
পানি সেচের মাধ্যমে পোকা দমন: লেদাপোকা, শীষকাটা লেদা পোকা, থ্রিপস, ছাতরা পোকা, কাটুই পোকা, উড়চুঙ্গা, ইঁদুর
পানি নিষ্কাষণের মাধ্যমে রোগ দমন: খোলপোড়া, খোলপঁচা, বাঁকানি, উফড়া, ব্যাকটেরিয়া জনিত পাতা ঝলসানো রোগ
পানি সেচের মাধ্যমে রোগ দমন: ব্লাষ্ট, বাদামী দাগ রোগ

১১)বন্ধু পোকা সংরক্ষণ ও পালনঃ
যেসব পোকা সরাসরি অন্য পোকা ধরে খায় বা অন্য পোকার উপর আশ্রয় নেয় ও খাদ্য গ্রহণ করে এবং শেষে মেরে ফেলে তাদের বন্ধু পোকা বলে। বন্ধু পোকা সংরক্ষণের জন্য নির্বিচারে জমিতে বিষ স্প্রে করা যাবেনা । সংরক্ষণ পদ্ধতিগুলো হচ্ছে –নিম্নরূপ:
ক) আইলে ফসল চাষাবাদ
খ) আইলে খড় বিছানো, পুরো লাঠিতে বা শুধু লাঠির মাথায় খড় পেচানো।
গ) ফসল কর্তনের ২৪ ঘন্টা পর জমিতে চাষ দেওয়া
ঘ) জমিতে পানি ধরে রাখা
ঙ) জমিতে চিটা গুড় স্প্রে : ২৫০ গ্রাম চিটা গুড় ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে।
বন্ধু পোকা মূলত: দুই প্রকার।
১) পরভোজী পোকা: যেসব পোকা সরাসরি অন্য পোকা ধরে খায়। যেমন: লেডি বার্ড বিটল।
২) পরজীবি পোকা: যেসব পোকা অন্য পোকার উপর আশ্রয় নেয় ও খাদ্য গ্রহণ করে এবং শেষে মেরে ফেলে । যেমন: ব্র্াকন হেবিটর ।

নিম্নে কিছু পরভোজী এবং পরজীবি পেকা এবং তাদের দ্বারা দমন/ শিকার যোগ্য পোকার বর্ণনা দেয়া হলো ।

Smiley face

১২) কতিপয় বিশেষ ব্যবস্থা:
ক) পাতা মাছি দমনে: পানি ঘোলা করে দেয়া
খ) পামরি দমনে: মান্দার বা বাবলা গাছের কাটা যুক্ত ডাল দিয়ে ধান গাছ পিটানো, পাতা গোড়া থেকে কেটে দেয়া
গ) কারেন্ট বা বাদামী গাছ ফড়িং দমনে: দুহাত দিয়ে বিলিকেটে জমি ফাকা করে দেয়া
ঘ) জাবপোকা ও অন্যান্য শোষক পোকা দমনে: ছাই ছিটানো, সজোরে পানি স্প্রে, শুকনা মরিচ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে, হলুদ ফাঁদ।
ঙ) উই পোকা দমনেঃ আঁখ ক্ষেতে বীজতলায় উই পোকা দমন করতে খড় বিছাতে হবে
চ) থ্রিপস্: সাদা ফাঁদ।
ছ) ইঁদুর: গর্তে শুকনা মরিচের ধোঁয়া দেয়া, ধুতুরা গাছের ফল খায়িয়ে পাগল করে দেয়া।
জ) ফলের মাছি পোকা দমনে বিষ প্রয়োগঃ পাকা কুমড়া/কাঁঠাল ১০০ গ্রাম+১০০ মিলি পানি+ ০.৫ গ্রাম সেভিন পাউডার একসাথে মিশিয়ে ৪-৫ দিন পরপর নতুন করে জমিতে দিতে হবে।
ঝ) মথ দমনেঃ চিটা গুড় অর্ধেক কাটা পানির বোতলে মিশিয়ে ফাঁদ আকারে জমিতে ১০ দিন পরপর নতুন করে দিতে হবে
ঞ) বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা এবং কুমড়া জাতীয় ফসলে মাছি পোকা দমনেঃ সেক্স ফেরোমন ফাঁদ- ২.৫০ শতকে একটি ফাঁদ চার মাস পর্যšত ব্যবহার করা যায়।
ট) সাদা মাছি (হোয়াইট ফ্লাই)ঃ নীল ফাঁদ
ঠ) উড়চুঙ্গা দমনেঃ জমির মধ্যে কনডেন্সড্ মিল্ক এর কৌটা দিয়ে ফাঁদ তৈরী করে তাতে সাবান পানি দেয়া।
ড) গান্ধী পোকা দমনে: সাইকেলের টায়ার পোড়ানো

১৩) শস্য বিন্যাস পরিবর্তনঃ একই জমিতে একটি বছরে বার বার একই ফসল উৎপাদন করায় নির্দিষ্ট ক্ষতিকর পোকা ও রোগের পরিমান অনেক বেড়ে যায় তাই শস্য বিন্যাস পরিবর্তন করলে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয়। যেমন- বোরো ধান- আমন ধান- আলু এরূপ শস্য বিন্যাস কয়েক বছর পরে পরিবর্তন করে গম- শাক-সব্জী- সরিষা এরূপ করা যেতে পারে।
উপর্যুক্ত ১ম হতে ১৩ তম প্রযুক্তি ধারাবাহিকভাবে প্রতিপালন করলে রোগ-পোকা প্রায়ই দমন করা সম্ভব । তারপরও, প্রয়োজন পড়লে জৈব কীটনাশক এবং সবশেষে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে ।

১৪) জৈব কীটনাশক প্রয়োগ:
উদ্ভিজ্জ্য অর্থাৎ রসুন, মেহগণি বীজ, নিম, নিশিন্দা, বিষকাটালী ইত্যাদি হতে তৈরী কীটনাশককে জৈব কীটনাশক বলে।
তাছাড়া বাজারে প্রাপ্য নিমবিসিডিন , বাইকাও নামক জৈব কীটনাশক ।
Smiley face

১৫) রাসায়নিক কীটনাশক স্প্রে: সর্বশেষ উপায় হিসেবে রাসায়নিক কীটনাশক স্প্রে করতে হবে ।তবে, এর আগে অবশ্যই উপর্যুক্ত ১৪ টি কৈৗশল অবলম্বন করতে হবে ।মনে রাখতে হবে, রাসায়নিক স্প্রে পরিবেশ, মানুষ এবং ফসলের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। রাসায়নিক কীটনাশক ঔসমানি পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে হবে ।অর্থাৎ সঠিক ঔষধ, সঠিক সময়, সঠিক মাত্রা, সঠিক নিয়মে ।

সূত্র: ।। কৃষিবিদ রাজেন্দ্র নাথ রায় ।। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ।। সৈয়দপুর, নীলফামারী ।।

AgriNewsBD - Agricultural News, Bangladesh

সবুজ সারের সারাংশ

সবুজ সারের আদ্যোপান্ত

সবুজ সার কি?
কোন উদ্ভিদকে সবুজ অবস্থায় চাষ দিয়ে মাটির সাথে মেশানোর ফলে পঁচে যে সার উৎপন্ন হয় তাকে সবুজ সার বলে এবং এ পদ্ধতিকে সবুজ সারকরণ বলে। অন্য কথায়, মাটির জৈব পদার্থের ক্ষয়পূরণ বা উহা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে কোন ফসল জন্মিয়ে একই স্থানে সবুজ গাছ গুলোকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়াকে সবুজ সার বলে। জমিতে সবুজ সার ব্যবহার করা আজকের নতুন কোন বিষয় নয় বরং স্মরণাতীতকাল থেকেই মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য এর চর্চা চলে আসছে। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে রোমানগণ সর্বপ্রথম সীম জাতীয় শস্য সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করে। খ্রিস্টীয় যুগের আগ থেকেই রোমান বা চীনারা সবুজ সার তৈরী করতো। প্রায় দু’হাজার বছর আগে মটর, মসুর এ কাজে ব্যবহার করা হতো (মার্টিন ইট অ্যাল, ১৯৬৭)।

সবুজ সার জাতীয় গাছের পরিচিতি:
শুঁটি (শিম্বি) জাতীয় ও অশুঁটি (অশিম্বি) জাতীয় উভয় প্রকার ফসল দ্বারাই সবুজ সার করা যায়। প্রায় ৩০ টির মত শুঁটি জাতীয় এবং ১০ টির মত অশুঁটি জাতীয় শস্য রয়েছে। তবে আমাদের দেশে সচরাচর শুঁটি জাতীয় গাছই সবুজ সার হিসেবে চাষ করা হয়। এগুলোর মধ্যে ধৈঞ্চা, শন, বরবটি, প্রভৃতি প্রধান। এছাড়া সীম, খেসারী, মুগ, মাসকলাই, সয়াবিন, মসুর, ছোলা, মটর, চীনাবাদাম, অড়হর ঝাড়সীম, প্রভৃতিও শুঁটি জাতীয় শস্য। অশুঁটি জাতীয় গাছের মধ্যে মধ্যে ভুট্রা, জোয়ার, আখ, এসব রয়েছে। তবে এগুলো দিয়ে সাধারণত সবুজ সার তৈরি করা হয় না।

সবুজ সার জাতীয় গাছের গুণাবলি:
সবুজ সার জাতীয় গাছের সেগুলো তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন -
১. গাছ দ্রুত বর্ধনশীল হতে হবে যাতে অল্প সময়ের মধ্যে সবুজ সার করা যেতে পারে।

২. গাছের পাতা, কান্ড ও অন্যান্য অংশ অধিক নরম ও রসালো হতে হবে।

৩. অনুর্বর মাটিতে ও গাছের শাখপ্রশাখা উৎপাদনের গুণ থাকতে হবে।

১৯৭৪ সালে বিজ্ঞানী বাকম্যান ও ব্রাডী উপযুক্ত তিনটি গুণের আবশ্যকতার কথা পুনরোল্লেখ করেছেন।

এ তিনটি মৌলিক গুণ ছাড়াও সবুজ সার ফসলের আরো বেশ কিছু গুণ থাকা আরও ভাল। যেমন:

১. সবুজ সার জাতীয় গাছের শিকড়ে গুঁটি বা অর্বুদ তৈরির স্বভাবধর্মী হওয়া একটি বিশেষ গুণ। মাটির অভ্যন্তরে রাইজোবিয়াম নামক এক প্রকার জীবাণু যাহা শূঁটি জাতীয় গাছের শিকড়ে বাসা বাধেঁ ও বায়ুম-লের নাইট্রোজেনের সাহায্যে গুটি তৈরি করে। পরে শুঁটি জাতীয় গাছ মাটিতে মিশিয়ে দিলে নাইট্রোজেন সার ও জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ে।

২. সবুজ সার জাতীয় গাছ স্বল্প মেয়াদী এবং প্রচুর বীজ উৎপাদনক্ষম হওয়া উচিত।

৩. চাষাবাদ পদ্ধতি সহজতর হতে হবে। এসব ফসলে চাষের খরচ কম ও পরিচর্যার তেমন দরকার না হওয়াও আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

৪. গাছ খরা সহনশীল হলে ভাল হয়।

৫. গাছ দ্রুত বেড়ে উঠে প্রথম থেকেই আগাছা দমনের ক্ষমতা থাকতে হয়।

৬. রোগবালাই ও পোকামাকড়ের প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হতে হবে।

৭. অম্ল, ক্ষার বা লবণাক্ত মাটিতেও জন্মাবার যোগ্য হতে হবে।

৮. ইহা গভীর শিকড় বিশিষ্ট হওয়া উচিত।

সবুজ সারের উপকারিতা:
১. আমাদের মাটিতে জৈর পদার্থের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। সবুজ সার ব্যবহারের ফলে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ে এবং নাইট্রোজেনের পরিমাণও বাড়ে ফলে অনুর্বর মাটি অপেক্ষাকৃত উর্বর হয়।

২. সবুজ পদার্থ মাটিতে মিশিয়ে দিলে নাইট্রোজেন ছাড়াও জৈব পদার্থের সংগে ফসফেট, চুন,ম্যাগনেসিয়াম সবগুলো প্রধান খাদ্য উপাদান ও অনু খাদ্য উপাদানগুলোও সরবরাহ করে, যা গাছের জন্য প্রয়োজনীয়।

৩. মাটির গঠন ও গুণাগুণ উন্নত করে। এতে বেলে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ে ও মাটির অভ্যন্তরে বাতাস চলাচলেও সুবিধে হয়।

৪. সবুজ গাছ পচার সময় জীবাণুর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় ও গাছের খাদ্যবেশি করে সহজলভ্য হয়।

৫. মাটির নীচে থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং মাটিতে মিশিয়ে দেবার পর মাটির উপরের স্তরে থেকে যায় ও পরবর্তী ফসল সহজেই গ্রহণ করতে পারে।

৬. চোঁয়ানির ফলে খাদ্য উপদানের অপচয় এর দ্বারা কমে যায়।

৭. সবুজ সার প্রয়েগের ফলে ফসলের অন্যতম শত্রু আগাছার উপদ্রব কম হয়।

৮. কোন কোন সবুজ সার জাতীয় গাছ মাটিতে আচ্ছাদন সৃষ্টি করে রাখে ও ভূমিক্ষয় রোধ হয়।

৯. সবুজ সার জমির আর্দ্রতা ও জোঁ বজায় রাখতে সাহায্য করে।

১০. শস্যের চারা গাছের সাথে জন্মানো হলে গরমকালে প্রখর রোদ তাপ হতে ঐ ফসলকে ছায়া দিয়ে রক্ষা করে।

সবুজ সার ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা:
১. সবুজ সারের চাষ করাকালীন একটি স্বল্প মেয়াদী ফসল জন্মানো যায়। তাই সবুজ সার চাষ করতে যে ক্ষতি হয় পরবর্তী ফসল দিয়ে তা পূরণ করতে হয়।

২. সবুজ সার পচবার জন্য বৃষ্টির পানির দরকার অথবা সেচের ব্যবস্থা থাকা দরকার।

৩. কোন কোন এলাকায় বীজের অভাব দেখা দেয়।

সবুজ সার প্রস্তুত প্রণালী:
কয়েকটি আদর্শ সবুজ সার জাতীয় ফসলের চাষ ও সবুজ সার প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

ধৈঞ্চা:
নাইট্রোজেন উৎপাদনকারী সবুজ সার জাতীয় গাছ বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ও মাটিতে ভাল জন্মে। সারা বছরই ধৈঞ্চার চাষ করা যায়, তবে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাস বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। দু’একটি চাষ ও মই দিয়ে ধৈঞ্চার বীজ ঘন করে বুনতে হয়। কোন সার ছাড়াই প্রতিকূল আবহাওয়ায় ও যে কোন ধরনের মাটিতে ভাল জন্মে। তবে শিকড়ে শুঁটির সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য হেক্টর প্রতি ১৭.০ কেজি টিএসপি ব্যবহার করা দরকার। প্রতি হেক্টরে ৪০/৫০ কেজি বীজ ঘন করে ছিটিয়ে বুনতে হয়। কোন যত্ন বা নিড়ানি ছাড়াই গাছ দ্রুত বড় হয়ে উঠে। বীজ বপনের ৬-৮ সপ্তাহ পরে গাছগুলো ১-১.৫ মিটার উঁচু হলে বা ফুল ফুটলে সবুজ সার তৈরীর উপযুক্ত সময়।
প্রথমে মই বা তক্তা দিয়ে ধৈঞ্চা গাছ মাটিতে শুইয়ে দিতে হয়। গাছ বেশি লম্বা হলে কাঁচি দিয়ে ২ থেকে ৩ টুকরো করে নিলে চাষ দিতে সুবিধে হয়।
ধৈঞ্চা গাছ শোয়ানোর পর একই দিক থেকে চাষ দিয়ে মাটির সাথে মিশাতে হবে। সে সময় ক্ষেতে পানি থাকলে মাটির সাথে সহজে মিশে যায়।
ক্ষেতে পানি জমা করে রাখলে গাছ দ্রুত পচে।
প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন পর পুনঃ চাষ বা মই দিলে তাড়াতাড়ি পচে যায়। ধৈঞ্চা গাছ পচতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগতে পারে। সবুজ সারের চাষ করার পর রোপা আমন ধান ভাল জন্মে।

ধৈঞ্চা সার:
এক হেক্টরে প্রায় ৮ টন কাঁচা সবুজ পদার্থ এবং আনুমানিক ৪০ কেজি নাইট্রোজেন পাওয়া যায় (টেমহেন ইট অ্যাল, ১৯৭০)। গাছের বয়স ৩-৫ মাস হলে ১০-১৫ টন জৈব পদার্থ এবং প্রায় ৮০ কেজি পর্যন্ত নাইট্রোজেন পাওয়া যেতে পারে। এতে শতকরা ০.৬২ ভাগ বা এর কিছু কম বেশি নাইট্রোজেন থাকতে পারে।

শন:
এটি একটি উৎকৃষ্ট সবুজ সার জাতীয় গাছ। ধৈঞ্চার অনুরূপ পদ্ধতিতে হেক্টর প্রতি প্রায় ৪০-৫০ কেজি বীজ ঘন করে বৈশাখ বা জ্যৈষ্ঠ মাসে বুনতে হয়। উঁচু জমিতে এবং দো-আঁশ মাটিতে এটি ভাল জন্মে। তবে অনাবৃষ্টি ও দাঁড়ানো পানি সহ্য করতে পারে না। ক্ষেতে নালা রাখা দরকার। গাছ ১.২-১.৫ মিটার উঁচু হলে ৭ থেকে ৮ সপ্তাহ পর বা ফুল দেখা দিলেই ধৈঞ্চার মত মাটিতে মিশিয়ে দেয়া উচিত।
শন পচবার জন্য জমিতে পানি রাখা ভাল এবং মাটিতে মেশানোর প্রায় ১৫ দিন পর চাষ ও মই দিয়ে দিলে দ্রুত পচে। গাছ পচতে মাস খানেক সময় লাগে।

শন সার:
গাছের বৃদ্ধি অনুযায়ী প্রতি হেক্টরে প্রায় ৮ টন (১০-১৫ টনও হতে পারে) কাঁচা সবুজ পদার্থ এবং ৪০ কেজি কোন কোন ক্ষেত্রে দ্বিগুণ নাইট্রোজেন পাওয়া যেতে পারে এবং উহার বেশির ভাগ আসে বায়ু মন্ডল থেকে। শন গাছের পাতায় শতকরা ০.৭৫ ভাগ নাইট্রোজেন, ০.১২ ভাগ ফসফরাস ও ০.৫১ ভাগ পটাসিয়াম থাকে।

বরবটি:
বরবটি সবুজ সার হিসেবে চাষ করা যায় যদিও মানুষ ও পশু খাদ্যরুপেও এর চাষ হয়। ক্স বৈশাখ/জ্যৈষ্ঠ মাসে হেক্টর প্রতি ৪০-৫০ কেজি বীজ বনতে হয়। সাধারণত উঁচু জমিতে এগুলো জন্মানো হয় কারণ পানি দাঁড়ালে ভাল হয় না। লাল মাটিতে সবুজ সার হিসেবে এটি খুবই উপযুক্ত। এটি বেশ তাড়াতাড়ি বাড়ে এবং মাত্র ছয় সপ্তাহে ফুল ফুটে এবং সবুজ সার প্রস্তুতের উপযুক্ত হয়। ঐ সময় চাষ দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়।

বরবটি সার:
প্রতি হেক্টরে ৬-১০ টন সবুজ পদার্থ মাটিতে যুক্ত হয়। এতে শতকরা ০.৭১ ভাগ নাইট্রোজেন, ০.১৫ ভাগ ফসফরাস ও ০.৫৮ ভাগ পটাসিয়াম থাকে।
ইপিল ইপিল: এ গাছের শিকড় বছরে প্রতি হেক্টরে জমিতে ৫৫৬ কেজি নাইট্রোজেন সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে পারে। অনুরূপভাবে কলাই, মুগ, অড়হড়, সীম, খেসারী, সয়াবিন প্রভৃতি সবুজ সারের জন্য খুবই উপযুক্ত।

অধিকারী চ. মিঠু's photo.
সূত্র: Modern Agriculture Facebook Page

চাষের আগে জরুরি অম্ল মাটির শোধন

chart

অম্ল মাটি চাষের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। অথচ, সরকারি হিসাব মতে পশ্চিমবঙ্গে অম্ল মাটির আয়তন কম-বেশি প্রায় ২০ লক্ষ হেক্টরের কাছাকাছি। এই মাটিতে কাঙ্খিত ফলন পেতে গেলে প্রাক বর্ষায় আমন ধান চাষের আগে অম্ল মাটির শোধন বিশেষ প্রয়োজন। এতে ধানের উৎপাদনশীলতা বাড়ার পাশাপাশি পরবর্তী রবি খন্দে গম, তৈলবীজ, ডালশস্য চাষের ফলন ভাল হবে।

মাটি কেন অম্ল হয়

• আর্দ্র অঞ্চলে বা হালকা মাটিতে সেচের জল বা নিকাশি জলের সাথে অথবা বৃষ্টির জলে মাটির ক্ষার বা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ধুয়ে, চুঁইয়ে বেরিয়ে যায়।

• ঠান্ডা আবহাওয়ায় মাটিতে মাত্রাতিরিক্ত জৈব পদার্থ থাকলে তা অসম্পূর্ণ ভাবে পচে অম্লত্ব বাড়ায়।

•মাটিতে জৈব সারের প্রয়োগ কম করলে ও মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে সারের দ্রবণীয় লবণগুলো মাটিকে অম্ল করে।

অম্লত্বের পরিমাপ

মাটির উর্বরতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল মাটির অম্লত্ব-ক্ষারত্ব আঙ্গিক যার পরিমাপ পিএইচ স্কেলের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। পিএইচ-এর মান অনুযায়ী মাটির অম্লত্ব/ ক্ষারত্বের পরিমাপ এই রকম—

৫.৫ এর কম— অম্ল মাটি

৫.৫ – ৬.৫—  মৃদু অম্ল মাটি

৬.৫ – ৭.৫— স্বাভাবিক মাটি

৭.৫ – ৮.৫— মৃদু ক্ষারীয়

৮.৫ এর বেশি— ক্ষারীয় মাটি

 ফলন কেন কম হয়

• অম্লত্বের তীব্রতা বেশি হলে সংবেদনশীল মূল রোমের ঝিল্লিতে বিষক্রিয়া হয়। ফলে শিকড় স্থাপনা ও ফসলের বৃদ্ধি ব্যহত হয়।

• জৈব পদার্থের পচন অসম্পূর্ণ হওয়ায় মাটির উর্বরতা কমে।

• উপকারী জীবাণু তথা অণুজীব সমূহের সক্রিয়তা ব্যাহত হওয়ায় মাটিতে পুষ্টিমৌলের রূপান্তর, চলাচল ও ফসলে প্রাপ্যতা কমে। সারের ব্যবহারিক উৎকর্ষতা কমে।

• মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি পেলে অ্যালুমিনিয়ামের বিষক্রিয়া বাড়তে পারে। ফলে একদিকে ফসফেট ঘটিত সারের গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। শিকড়ের শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত হওয়ায় জল ও কিছু পুষ্টিকণা টানার ক্ষমতা কমে যায়।

• মাটিতে  অণুখাদ্যর ঘাটতি হয়।

• ডাল জাতীয় ফসলের বৃদ্ধি ও ফলন ব্যাহত হয়।

অম্ল মাটির পরিচর্যা

• ধানের জমিতে জল ধরে রাখলে তিন সপ্তাহের মধ্যে অম্লত্ব অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

• কাঠের ছাই বা তুষের টাটকা ছাই জমিতে দিলে অ্যালুমিনিয়াম জনিত বিষক্রিয়ার প্রভাব কমে।

• উন্নত মানের পর্যাপ্ত জৈব সার প্রয়োগ করে উপকার পাওয়া যায়।

• মাটির পিএইচ ৫.৫ এর কম হলে চুন জাতীয় পদার্থ সহযোগে মাটির শোধন একান্ত প্রয়োজন। এর উপযুক্ত সময় মে মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ।

 চুন দিয়ে শোধন

• মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট মোতাবেক  চুন গুঁড়ো হলে (৮০ মেস সাইজ) এবং ২৫% এর বেশি ক্যালসিয়াম অক্সাইড থাকলে ভাল কাজ হয়।

•   চুন জাতীয় দ্রব্য একেবারে না দিয়ে ধারাবাহিক ভাবে খেপে খেপে ২-৩ বছর ধরে প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

• ভারত সরকারের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের সুপারিশ মোতাবেক মাটি পরীক্ষা করা না থাকলে ফসল বোনার ২৫-৩০ দিন আগে বিঘা প্রতি ৩০-৫০ কেজি চুন জাতীয় পদার্থ ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর মাটির সাথে সেই চুন ভাল ভাবে মিশিয়ে দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে।

• চুন প্রয়োগের তিন সপ্তাহ পর জমিতে পর্যাপ্ত জৈব সার ও সাথে পরিমাণ মতো জীবাণু সার বিশেষ করে পিএসবি বা ফসফেটের দ্রবণীয়তা বৃদ্ধিকারী জীবাণু প্রয়োগ করে কাদা করলে মাটির অম্লত্ব কমার পাশাপাশি উর্বরতা ও বাস্ততন্ত্রর আধার সমৃদ্ধ হবে।

সূত্র:  

২৮ আষাঢ় ১৪২৩ বুধবার ১৩ জুলাই ২০১৬

 

 

 

আষাঢ় মাসে কৃষক ভাইদের করণীয়

আষাঢ় মাসে কৃষক ভাইদের করণীয়

আউশ ধান
আউশ ধানের ক্ষেতের আগাছা পরিস্কার করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য যত্ন নিতে হবে; সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রোগ ও পোকামাকড় দমন করতে হবে; বন্যার আশঙ্কা হলে আগাম রোপন করা আউশ ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে মাড়াই-ঝাড়াই করে শুকিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

আমন ধান
আমন ধানের বীজতলা তৈরির সময় এখন। পানিতে ডুবে না এমন উঁচু খোলা জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হবে। বন্যার কারণে রোপা আমনের বীজতলা করার মতো জায়গা না থাকলে ভাসমান বীজতলা বা দাপোগ পদ্ধতিতে বীজতলা করে চারা উৎপাদন করতে হবে; বীজতলায় বীজ বপন করার আগে ভাল জাতের সুস্থ সবল বীজ নির্বাচন করতে হবে। রোপা আমনের উন্নত জাত যেমন বিআর১০, বিআর২৫, ব্রি ধান৩০, ব্রি ধান৩১, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১। এছাড়া লবণাক্ত জমিতে ব্রি ধান৪৪ চাষ করতে পারেন; খরা প্রবণ এলাকাতে নাবি রোপার পরিবর্তে যথাসম্ভব আগাম রোপা আমনের (ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান ৩৯ এসব) চাষ করতে হবে; ভাল চারা পেতে প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ২ কেজি গোবর, ১০গ্রাম ইউরিয়া এবং ১০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে; আষাঢ় মাসে রোপা আমন ধানের চারা রোপন শুরু করা যায়; মূল জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টর প্রতি ৯০ কেজি টিএসপি, ৭০ কেজি এমওপি, ৭ কেজি দস্তা এবং ৬০ কেজি জিপসাম দিতে হবে; জমিতে চারা সারি করে রোপন করতে হবে। এতে পরবর্তী পরিচর্যা বিশেষ করে আগাছা দমন সহজ হবে; জমির এক কোণে মিনি পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন, যেন পরবর্তীতে সম্পূরক সেচ নিশ্চিত করা যায়।

পাট
পাট গাছের বয়স চারমাস হলে ক্ষেতের পাট গাছ কেটে নিতে হবে। পাট গাছ কাটার পর চিকন ও মোটা পাট গাছ আলাদা করে আঁটি বেঁধে দুই/তিন দিন দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে। পাতা ঝরে গেলে ৩/৪ দিন পাটগাছগুলোর গোড়া একফুট পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর পরিষ্কার পানিতে জাগ দিতে হবে। পাট পচে গেলে পানিতে আঁটি ভাসিয়ে আঁশ ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে পাটের আঁশের গুণাগুণ ভালো থাকবে। ছাড়ানো আঁশ পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে বাঁশের আড়ে শুকাতে হবে। যে সমস্ত জায়গায় জাগ দেয়ার পানির অভাব সেখানে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পঁচাতে পারেন। এতে আঁশের মান ভাল হয় এবং পঁচন সময় কমে যায়। পাটের বীজ উৎপাদনের জন্য ১০০ দিন বয়সের পাট গাছের এক থেকে দেড় ফুট ডগা কেটে নিয়ে দুইটি গিটসহ ৩/৪ টুকরা করে ভেজা জমিতে দক্ষিণমুখী কাত করে রোপণ করতে হবে। রোপণ করা টুকরোগুলো থেকে ডালপালা বের হয়ে নতুন চারা হবে। পরবর্তীতে এসব চারায় প্রচুর ফল ধরবে এবং তা থেকে বীজ পাওয়া যাবে।

ভুট্টা
পরিপক্ক হওয়ার পর বৃষ্টিতে নষ্ট হবার আগে মোচা সংগ্রহ করে ঘরের বারান্দায় সংগ্রহ করতে পারেন। রোদ হলে শুকিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মোচা পাকতে দেরি হলে মোচার আগা চাপ দিয়ে নিম্নমুখী করে দিতে হবে, এতে বৃষ্টিতে মোচা নষ্ট হবে না।

শাক-সবজি
এ সময়ে উৎপাদিত শাকসবজির মধ্যে আছে ডাঁটা, গিমা কলমি, পুঁইশাক, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঝিঙা, শসা, ঢেঁড়স, বেগুন ইত্যাদি। এসব সবজির গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রয়োজনে মাটি তুলে দিতে হবে। এছাড়া বন্যার পানি সহনশীল লতিরাজ কঁচুর আবাদ করতে পারেন; উপকূলীয় অঞ্চলে ঘেরের পাড়ে গিমা কলমি ও অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারেন; সবজি ক্ষেতে পানি জমতে দেয়া যাবে না। পানি জমে গেলে সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে; তাড়াতাড়ি ফুল ও ফল ধরার জন্য বেশি বৃদ্ধি সমৃদ্ধ লতা জাতীয় গাছের ১৫-২০ শতাংশের লতা পাতা কেটে দিতে হবে; কুমড়া জাতীয় সব সবজিতে হাত পরাগায়ন বা কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হবে। গাছে ফুল ধরা শুরু হলে প্রতিদিন ভোরবেলা হাত পরাগায়ন নিশ্চিত করলে ফলন অনেক বেড়ে যাবে; আগাম জাতের শিম এবং লাউয়ের জন্য প্রায় ৩ ফুট দূরে দূরে ১ ফুট চওড়া ও ১ ফুট গভীর করে মাদা তৈরি করতে হবে। মাদা তৈরির সময় গর্তপ্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম সরিষার খৈল, ২ কেজি ছাই, ১০০ গ্রাম টিএসপি ভালভাবে মাদার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর প্রতি গাদায় ৩/৪টি ভাল সবল বীজ রোপন করতে হবে।

গাছপালা
এ সময়টা গাছের চারা রোপনের জন্য খুবই উপযুক্ত। বসতবাড়ির আশেপাশে, খোলা জায়গায়, চাষাবাদের অনুপযোগী পতিত জমিতে, রাস্তা ঘাটের পাশে, পুকুর পাড়ে, নদীর তীরে গাছের চারা বা কলম রোপনের উদ্যোগ নিতে হবে; এ সময় বনজ গাছের চারা ছাড়াও ফল ও ঔষুধি গাছের চারা রোপন করতে পারেন; ফলের চারা রোপনের আগে গর্ত তৈরি করতে হবে; সাধারণ হিসাব অনুযায়ী এক ফুট চওড়া ও এক ফুট গভীর গর্ত করে গর্তের মাটির সাথে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ও এমওপি সার মিশিয়ে, দিন দশের পরে চারা বা কলম লাগাতে হবে; বৃক্ষ রোপনের ক্ষেত্রে উন্নত জাতের রোগমুক্ত সুস্থ সবল চারা বা কলম রোপন করতে হবে; চারা শুধু রোপন করলেই হবে না। এগুলোকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। চারা রোপনের পর শক্ত খুঁটির দিয়ে চারা বেঁধে দিতে হবে। এরপর বেড়া বা খাঁচা দিয়ে চারা রক্ষা করা, গোড়ায় মাটি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, সেচনিকাশ নিশ্চিত করতে হবে; নার্সারি মালিক যারা তাদের মাতৃগাছ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি খুব জরুরি। সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, দূর্বল রোগাক্রান্ত ডালপালা কাটা বা ছেটে দেয়ার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

সূত্র: Modern Agriculture Facebook Page