Author Archives: asma parvin

তিতা করলা দূর করবে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস!

খেতে ভীষণ তিতা,কিন্তু গুণে ভরপুর।ইংরেজীতে বিটার মেলন বাংলা নাম করলা- এমন একটি সবজি যা দূর করতে পারে কান্সার, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্ররোগ। এছাড়াও করলা দূর করে অন্যান্য অনেক মারাত্মক সব শারীরিক সমস্যা। যদিও এর তেতো স্বাদের কারণে কারো মুখে রোচে না, কিন্তু শুধুমাত্র স্বাদের কথা ভেবে স্বাস্থ্যেউপকারিতা ও মিঠাগুণের কথা একেবারে ভুলে বসলেও হবে না।

দ্য নেভাডা সেন্টার অফ আল্টারনেটিভ অ্যান্ড অ্যান্টি এইজিং মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ, ডঃ ফ্রাংক শ্যালেনবার্গার এম.ডি দেখতে পান এই করলার রয়েছে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধির প্রতিরোধ ক্ষমতা। এবং তিনি তার রোগীদের এই প্রাকৃতিক ক্যান্সার নিরাময়ের সবজিটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধের জন্য। তিনি তার নতুন গবেষণায় দেখতে পান করলার রস পানিতে মাত্র ৫% মিশ্রিত হয় যা প্রমাণ করে এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। করলার প্রায় ৯০%- ৯৮% পর্যন্ত ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসের ক্ষমতা রয়েছে। দ্য ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর একটি গবেষণায় দেখা যায় করলা অগ্ন্যাশয়ের টিউমার প্রায় ৬৪% কমিয়ে আনতে সক্ষম।

এছাড়াও ডঃ শ্যালেনবার্গার তার গবেষণায় দেখতে পান, উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা, অ্যাজমা, ত্বকের ইনফেকশন, ডায়বেটিস এবং পাকস্থলীর নানা সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে শুধুমাত্র এই একটি সবজি ‘করলা’। খুব কম ক্যালরি সমৃদ্ধ করলায় রয়েছে পটাশিয়াম, বেটাক্যারোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ, হাই ডায়াটেরি ফাইবার, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ ও সি, ফোলায়েট, জিংক এবং ফসফরাস।

করলা দূর করে আরও ৭ টি শারীরিক সমস্যা:
১) পরীক্ষিত ভাবে প্রমাণিত যে করলা স্ট্যামিনা ও এনার্জি লেভেল বাড়ায়।

২) গর্ভধারণের প্রাথমিক সময়ে নারীরা করলা নিয়মিত খেলে শিশুদের নিউট্রাল টিউব ডিফেক্ট হতে রক্ষা করে।

৩) করলার নানা পুষ্টি উপাদান রক্তের সুগারের মাত্রা কমায় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

৪) করলার রস নিয়মিত পান করার ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং নানা ধরণের ইনফেকশনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

৫) হজমে সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতেও করলার জুড়ি নেই।

৬) করলার রস লিভার পরিস্কারে সহায়ক এবং লিভারকে টক্সিনমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এটি রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা উন্নত করে।

৭) নিয়মিত করলার রস পানের অভ্যাস সোরাইসিসের অবস্থা উন্নত করে এবং ফাঙ্গাস জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

যেভাবে খেতে পারেন করলা

বাজার থেকে ভালো করলা কেনার পর ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে নরম ব্রাশ দিয়ে আলতো ঘষে পরিষ্কার করে নিন।

১) যে কোনো আমিষ খাবারের সাথে বা অন্যান্য সবজির সাথে ভাজি করে খেতে পারেন।

২) করলার শুকনো গুঁড়ো তৈরি করে রেখে আইসড ও দুধ চায়ে মিশিয়েও পান করতে পারেন।

৩) আচার তৈরি করে খেতে পারেন।

৪) শুধু করলার রস দিয়ে জুস তৈরি করে পান করতে পারেন।

সূত্র: dailynews.com.bd, ২৪ জুলাই ২০১৬ ইং

পেঁপে চাষাবাদ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

পুষ্টি মূল্য:
পাকা পেঁপে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ একটি ফল। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমানে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে।

ভেষজ গুণ:
অজীর্ণ,কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, একজিমা, কিডনি ও পাকস্থলীর ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে।

ব্যবহার:
পাকা পেঁপে ফল হিসেবে এবং কাঁচা পেপে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।

ঔষধি গুণাগুণ:

১। রক্ত আমাশয়:
প্রত্যেহ সকালে কাঁচা পেঁপের আঠা ৫/৭ ফোঁটা ৫/৬ টি বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। ২/৩ দিন খাওয়ার পর রক্তপড়া কমতে থাকবে।

২। ক্রিমি:
যে কোনো প্রকারের ক্রিমি হলে, পেঁপের আঠা ১৫ ফোঁটা ও মধু ১চা চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এরপর আধা ঘন্টা পরে উঞ্চ পানি আধ কাপ খেয়ে তারপরে ১ চামচ বাখারি (শসা-ক্ষীরার মতো এর স্বাদ) চুনের পানি খেতে হয়। এভাবে ২ দিন খেলে ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।

৩। আমাশয়:
আমাশয় ও পেটে যন্ত্রনা থাকলে কাঁচা পেঁপের আঠা ৩০ ফোঁটা ও ১ চামচ চুনের পানি মিশিয়ে তাতে একটু দুধ দিয়ে খেতে হবে। একবার খেলেই পেটের যন্ত্রনা কমে যাবে এবং আমাশয় কমে যাবে

৪। যকৃত বৃদ্ধিতে:
এই অবস্থা হলে ৩০ ফোঁটা পেঁপের আঠাতে এক চামচ চিনি মিশিয়ে এক কাপ পানিতে ভালো করে নেড়ে মিশ্রণটি সারাদিনে ৩ বার খেতে হবে। ৪/৫ দিনের পর থেকে যকৃতের বৃদ্ধিটা কমতে থাকবে, তবে ৫/৬ দিন খাওয়ার পর সপ্তাহে ২ দিন খাওয়াই ভালো। এভাবে ১ মাস খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

৫। ক্ষুধা ও হজম শক্তিতে:
প্রত্যেক দিন সকালে ২/৩ ফোঁটা পেঁপের আঠা পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ক্ষুধাও বেড়ে যাবে এবং হজমও ঠিকভাবে হবে।

৬। পেট ফাঁপায়:
কয়েক টুকরো পাকা পেঁপের শাঁষ, আর সামান্য লবন এবং একটু গোলমরিচের গুড়ো একসংগে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা পেট ফাঁপার উপশম হয।

৭। প্রবল জ্বরে:
দেড় চামচ পেঁপে পাতার রস এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা জ্বরের বেগ, বমি, মাথার যন্ত্রনা, শরীরে দাহ কমে যাবে। জ্বর কমে গেলে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

৮। মাসিক ঋতু বন্ধে:
যাদের মাসিক ঋতু বন্ধ হওয়ার সময় হয়নি অথচ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অথবা যেটুকু হয় তা না হওয়ারই মত, সেক্ষেত্রে ৫/৬ টি পাকা পেঁপের বিচি গুড়া করে রোজ সকালে ও বিকালে দু’বার পানিসহ খেতে হবে। এর ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই মাসিক স্রাব ঠিক হয়ে যাবে, তবে অন্য কোন কারনে এটা বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

৯। দাদে:
সে যে কোনো প্রকারের হোক না কেন, কাঁচা পেঁপের/গাছের আঠা ঐ দাদে লাগিয়ে দিতে হবে, একদিন লাগিয়ে পরের দিন লাগাতে হবে না, এরপরের দিন আবার লাগাতে হবে, এইভাবে ৩/৪ দিন লাগালে দাদ মিলিয়ে যাবে।

১০। একজিমায়:
যে একজিমা শুকনা অথবা রস গড়ায় না, সেখানে ১ দিন অথবা ২ দিন অন্তর পেঁপের আঠা লাগালে ওটার চামড়া উঠতে উঠতে পাতলা হয়ে যায়।

১১। উকুন হলে:
১ চামচ পেঁপের আঠা, তার সঙ্গে ৭/৮ চামচ পানি মিশিয়ে ফেটিয়ে নিতে হয়। তারপর ওই পানি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর মাথা ধুয়ে ফেলতে হয়। এইভাবে একদিন অন্তর আর একদিন বা ২ দিন লাগালে উকুন মরে যায়।

উপযুক্ত জমি ও মাটি:
উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি ভাল।

জাত পরিচিতি:
বারি পেঁপে-১ (শাহী পেঁপে):
স্ত্রী ও পুরুষ ফুল আলাদা গাছে ধরে। চারা লাগানোর ৩-৪ মাস পর ফুল আসে। কান্ডের খুব নিচ থেকেই ফল ধরা শুরু হয়। প্রতিটি ফলের ওজন ৮৫০-৯৫০ গ্রাম। চারা লাগানোর ৩-৪ মাস পর ফুল আসে, ফুল আসার ৩-৪ মাস পর পাকা পেঁপে সংগ্রহ করা যায়। এ জাতটি প্রায় সার বছরই ফল দিয়ে থাকে।

চারা তৈরি:
বীজ থেকে চারা তৈরি করা যায়। পলিথিন ব্যাগে চার তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

চারা রোপণ:
দেড় থেকে দুই মাস বয়সের চারা রোপণ করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে চারিদিকে ২ ফুট পরিমান গর্ত তৈরি করে রোপণের ১৫ দিন আগে গর্তের মাটিতে সার মিশাতে হবে। পানি নিকাশের জন্য দুই সারির মাঝখানে ৫০ সে.মি নালা রাখা দরকার। বানিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষের জন্য বর্গাকার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রতি গর্তে ৩ টি করে চার রোপণ করতে হয়। ফুল আসলে ১ টি স্ত্রী গাছ রেখে বাকি গাছ তুলে ফেলা দরকার। পরাগায়ণের সুবিধার জন্য বাগানে ১০% পুরুষ গাছ রাখা দরকার।

সার ব্যবস্থাপনা:
প্রতি গাছে ১৫ কেজি জৈব সার, ৫৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ৫৫০ গ্রাম টিএসপি সার, ৫৫০ গ্রাম এমওপি সার, ২৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২৫ গ্রাম বোরাক্স সার এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট সার একত্রে ভালভাবে প্রয়োগ করতে হয়। ইউরিয়া ও এমওপি সার ছাড়া সব সার গর্ত তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর পর গাচে নতুন পাতা আসলে ইউরিয়া ও এমওপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস পর পর প্রয়োগ করতে হয়। গাছে ফুল আসলে এ মাত্রা দ্বিগুণ করা হয়।

অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা:
ফুল হতে ফল ধরা নিশ্চিত মনে হলে একটি বোঁটায় একটি ফল রেখে বাকিগুলো ছিড়ে ফেলতে হবে। গাছ যাতে ঝড়ে না ভেঙ্গে যায় তার জন্য বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাছ বেঁধে দিতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:
চারা রোপণ এবং সার প্রয়োগের পর প্রয়োজনমতো পানি দিতে হবে। খরা মৌসুমে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর হালকা সেচ দিতে হবে।

রোগ ব্যবস্থাপনা:

রোগের নাম:
পেঁপের ড্যাম্পিং অফ রোগ দমন।
ভূমিকা: মাটিতে যে ছত্রাক থাকে তার দ্বারা এ রোগ হতে পারে। এ রোগটি সাধারণত: চারা অবস্থায় অথবা বীজ গজানোর সময় হয়ে থাকে। বীজের অংকুর গজানোর সময় এ রোগের জীবাণু অতি সহজেই বীজ অথবা অংকুরকে আক্রমণ করে।

ক্ষতির নমুনা:
এ অবস্থায় বীজ পচে যায় এবং চারা মাটির উপর বের হয়ে আসতে পারেনা। এভাবে অংকুর গজানোর আগেই পচন হতে পারে। চারা গজানোর পরেও জীবাণুর আক্রমণ ঘটে। এ পর্যায়ে চারার গোড়া বা শিকড় পচে গিয়ে আক্রান্ত চারা মাটিতে পড়ে যায় এবং মারা যায়। চারার বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ রোগের প্রকোপ কমে যায়।

অনুকূল পরিবেশ:
বর্সা মৌসুমে ঢলে পড়া রোগের প্রকোপ খুব বেশি।
বিস্তার: বৃষ্টির পানিতে অথবা সেচের পানিতে এ রোগের জীবাণু ছড়ায়।

ব্যবস্থাপনা:
গাছের গোড়ার পানি নিকাশের ভাল ব্যবস্থা রাখা দরকার। রোগাক্রান্ত চারা গাছ মাটি থেকে উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রমন বেশি হলে রিডোমিল এমজেড-৭২ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর গাছের গোড়ার চারিদিকের মাটিতে প্রয়োগ করা দরকার। জিংকের ঘাটতির জন্য মোজাইক লক্ষণ দেখা দিলে গাছের গোড়ায় গাছপ্রতি ৫-১০ গ্রাম জিংক প্রয়োগ করলে এবং ০.২% জিংক গাছের পাতায় স্প্রে করলে এ সমস্যা কমে যায়।

ফসল তোলা:
সবজি হিসেবে কচি ফল সংগ্রহ করা হয়। পাকানোর জন্য ফলের ত্বক হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে সংগ্রহ করতে হয়।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

স্ট্রবেরি চাষ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

চাষ এলাকা:
শীতের দেশে স্ট্রবেরি ভালো হয়। গরমের দেশে গাছ হয় কিন্তু সহজে ফল হতে চায় না। কিন’ গবেষকদের প্রচেষ্টায় এদেশে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু জাতের চাষ হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু জেলায় স্ট্রবেরি ফলানো সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে যেসব জেলায় শীত বেশি পড়ে ও বেশিদিন থাকে সেসব এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ করা যেতে পারে। পঞ্চগড়, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এমনকি পাবনা, নাটোরেও চাষ করা যায়।

উপযুক্ত মাটি:
বেলে দোঁআশ ও মাটিতে প্রচুর জৈব সার প্রয়োগ করে স্ট্রবেরি ফলানো যায়। যেসব জমিতে পানি জমে সেখানে স্ট্রবেরি ফলানো যাবে না।

চারা তৈরি:
স্ট্রবেরির চারা এখনও তেমন সহজে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে কাঙ্ক্ষিত চারা অবশ্যই বিশ্বস- কোনো নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা দরকার। স্ট্রবেরি গাছগুলো গুল্ম ও লতা জাতীয় গাছ বলে গাছের গোড়া থেকে বেশ কিছু লম্বা লম্বা লতা মাটির উপর দিয়ে লতিয়ে যায়। মাটির সংস্পর্শে লতার গিট থেকে শিকড় গজায়। শিকড়যুক্ত গিট কেটে নিয়ে মাটিতে পুতে দিলে নতুন চারা তৈরি হবে। অর্ধেক মাটি অর্ধেক গোবর সার মিশিয়ে পলিব্যাগে ভরে একটি করে শিকড়যুক্ত গিটসহ লতা পুঁতে দিতে হয়। এক্ষেত্রে একটি গাছ থেকে ১৮-২০ টি চারা তৈরি করা সম্ভব।

জমি তৈরি:
জমি ভালভাবে চাষ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে অন-ত ৩০ সেন্টিমিটার গভীর করে জমি চাষ দিতে হবে। যেহেতু স্ট্রবেরি গাছের শিকড় মাটির উপর দিকে থাকে সেজন্য মাটি ঝুরঝুরা করে নির্ধারিত মাত্রায় সার মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দতিে হবে।

চারা রোপণ:
স্ট্রবেরির চারা মধ্যঅক্টোবর থেকে মধ্যডিসেম্বর পর্যন- রোপণ করা যায়। তবে নভেম্বর মাস স্ট্রবেরি চারা রোপণের জন্য সবচে ভাল। জমি তৈরির পর লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে ৫০ সেন্টিমিটার ও প্রতি সারিতে ৩০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে স্ট্রবেরির চারা লাগাতে হয়। বৃষ্টি হলে ক্ষেত থেকে অতিরিক্ত পানি সরিয়ে দিতে হবে না হলে গাছ পঁচে যাবে।

সার প্রয়োগ ও সেচ:
স্ট্রবেরির জন্য দরকার প্রচুর জৈব সার। এজন্য প্রতি একরে ৫০-৬০ কেজি ইউরিয়া সার, ৭০ কেজি টিএসপি সার এবং ৮০ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। এসব সারকে সমান দুভাগে ভাগ করে একভাগ দিতে হয় ফুল আসার একমাস আগে এবং অন্য ভাগ দিতে হবে ফুল ফোটার সময়। ফল ধরা শুরু হলে ২-৩ দিন পর পরই সেচ দিতে হবে।

অন্যান্য যত্ন:
স্ট্রবেরি গাছে ফুল ধরাতে চাইলে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। গাছ লাগানোর পর তার গোড়া থেকে প্রচুর রানার বা কচুর লতির মতো লতা বের হতে থাকে। এগুলো জমি ঢেকে ফেলে। এতে ফলন ভাল হয় না। এসব লতা যাতে কম বের হয় সেজন্য গাছের গোড়ায় খড় বা পলিথিন বিছিয়ে দিতে হয়। পলিথিন সিট ৩০ সেন্টিমিটার পর গোলাকার ছিদ্র করে স্ট্রবেরি গাছের ঝোপকে মুঠো করে ঢুকিয়ে দিতে হয়। বেশি ফলন ও তাড়াতাড়ি ফল পেতে হরমোন গাছ পাতায় সেপ্র করা যেতে পারে।

ফল সংগ্রহ ও বিক্রি:
কাঁচা ফল যখন হলদে বা লালচে রঙের হতে শুরু করে তখন বুঝা যাবে ফল পাকা শুরু হয়েছে। ফল পুরো পাকলে লাল হয়ে যায়। তবে বিক্রির জন্য ফল পুরো লাল হওয়ার দরকার নেই। সেক্ষেত্রে ফলগুলো শক্ত থাকা অবস’ায় তুলতে হবে। আর ফল তুলতে হবে বোটা সমেত। পরে কাগজের প্যাকেটে করে বাজারজাত করতে হবে। ফল তোলার পর ১০-১২ দিন পর্যন- ভালো থাকে। গড়ে প্রতি গাছে ১৫০-২০০ গ্রাম ফল ধরে। ফলটি এদেশে নতুন তাই ঝুঁকিও বেশি। তবুও মেধা ও বুদ্ধি প্রয়োগ করে স্ট্রবেরি চাষ একদিন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হবে সে কথা বলা যায়।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

ফল-সবজি ফরমালিন ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করার টেকনিক

যেকোনো ফল খাওয়ার আগে বা সবজি কাটার আগে আমরা ধুয়ে নিই। ফল-সবজিতে ব্যবহৃত ফরমালিন ও ব্যাকটেরিয়া দূর করার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ফল ও সবজিকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করতে এবং এতে ব্যবহৃত পেস্টিসাইড দূর করতে কিছু টিপস-

সংরক্ষণের আগে ভেজানো যাবে না
ফল ও সবজি ফ্রিজে বা ঝুড়িতে সংরক্ষণ করার আগে ধোয়া যাবে না। এতে এসব খাবার দ্রুত পঁচে ও ব্যকটেরিয়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধুমাত্র ব্যবহারের আগে ধুয়ে নিন।

বহিরাবরণ ফেলে দিন
বাঁধাকপি, সেলারি, লেটুস, গাজর, নাশপাতি, আপেল ইত্যাদি ফল ও সবজির বাইরের আবরণ ও খোসা ফেলে দিন। কারণ, বাইরের স্তরেই বেশি ব্যকটেরিয়া থাকে।

আলাদা করে নিন
স্তরীভূত সবজি যেমন বাঁধাকপি, লেটুস ইত্যাদির ভাঁজ খুলে নিন। বড় পাতা বা ছোট পাতা হিসেবে আলাদা করতে পারেন। কয়েক মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পেপার টাওয়েল দিয়ে অতিরিক্ত পানি মুছে নিন।

ভিনেগার
ফল ও সবজি ধোয়ার সময় পানিতে ভিনেগার ব্যবহার করুন। ভিনেগার মেশানো পানিতে সাত থেকে আট মিনিট ফল ও সবজি ভিজিয়ে রাখুন। ভিনেগার ৯৫ শতাংশ ভাইরাস ও ৯০ শতাংশ ব্যকটেরিয়া মেরে ফেলে। বিশেষ করে আপেল খাওয়ার আগে এভাবে ধুয়ে নিতে পারেন। ফলমূলে চকচকে ভাব আনতে অনেক সময় ওয়াক্স লাগানো হয়। ভিনেগার ব্যবহারের ফলে ওয়াক্স গলে যায়। একই উপায়ে লবণ ব্যবহার করতে পারেন।

ব্রাশিং
আলু, আপেল, গাজর, শসা ধোয়ার সময় নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন। এতে খাবারের গায়ে লাগানো ওয়াক্স ও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর হবে।

টিপস
• আঙুর ধোয়ার সময় পানি ও ভিনেগার ১:১/২ অনুপাতে নিন। এক চা-চামচ বেকিং সোডা ও দুই চা চামচ লেবুর রস ব্যবহার করুন। এতে ভাইরাস মরে যায়।

• অথবা এই উপকরণগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে রাখতে পারেন। ফল বা সবজি ধোয়ার সময় স্প্রে করে ব্রাশ করে নিন।

সূত্র: Modern Agriculture Facebook Page

ভাতের মাড়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগুণ

ভাতের মাড় সম্পর্কে আমারা সবাই জানি। মাড় ফেলে দেয়ার সাথে সাথে ভাতের পুষ্টিগুণ অনেকটা কমে যায়। শরীরে দেবে বল-শক্তি, ত্বক হবে আরও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, কেশ হবে উজ্জ্বল-এত গুণ এই ভাতের মাড়ে। শুধু চীন দেশের আদি রেসিপি নয় এ দেশেও অনেকে একে ব্যবহার করেন খাদ্য হিসেবে। যদিও গোখাদ্য হিসেবেই এর খ্যাতি। পশ্চিমা বিশ্বেও এর খ্যাতি বাড়ছে। দুটি সস্তা ও সহজ উপকরণ চাল ও জল ব্যবহার করে সুস্থ শরীর ও সুন্দর ত্বক পেতে কে না চায়। চাল ধোয়া জল কিন্তু ব্যবহার করতে পারেন, তবে এতে সুফল পাবেন না। ভাতের মাড় হল বেশি হিতকর।
রান্নার সময় যতটুকু জল দেন, এর চেয়ে বেশি জল দেবেন। ভাত হয়ে গেলে মাড়টা ঢেলে ফেলবেন পাত্রে। মাড়ে আছে চাল থেকে আসা হিতকারী উপকরণ। গরম মাড়ও খেতে পারেন, খেতে পারেন ঠাণ্ডা করেও। জেনে নিন ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ ও সৌন্দর্যচর্চা সম্পর্কে।

সৌন্দর্যচর্চা

১। নিখুঁত চেহারা
আপনার মুখ ধুয়ে একটি সুতি কাপড়ের টুকরা মাড়ে ভিজিয়ে সারা মুখে লাগান। ভাতের মাড় চমৎকার স্কিন টোনার হিসেবে কাজ করে। মাড়ে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যাকে ‘ইনসিটল’ বলে প্রচুর পরিমাণে থাকে যা কোষের বৃদ্ধিকে প্রমোট করে, এজিং প্রসেসকে ধীর করে এবং রক্ত প্রবাহকে উদ্দীপিত করে যার ফলে ত্বক মসৃণ ও দীপ্তিময় হয়। এছাড়াও ভাতের মাড়ে ময়েশ্চারাইজিং, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও আলট্রা ভায়োলেটরে শোষণকারী উপাদান আছে। মাড় স্কিনে উৎপন্ন কপারকে আবদ্ধ করে যার ফলে মেলানিনের গঠন এবং এইজ স্পট বাঁধা প্রাপ্ত হয়।

২। হেয়ার মাস্ক হিসেবে
লম্বা, সিল্কি ও চকচকে উজ্জ্বল চুলের জন্য ভাতের মাড় চমৎকার ভাবে কাজ করে।আপনার চুলে ও মাথার তালুতে ভালো করে মাড় লাগান, ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
এছাড়া শ্যাম্পু করার পরে মাড় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। মাড়ের প্রোটিন চুলকে শক্তিশালী করে ও মসৃণ করে।

সতর্কতা: গরম মাড় ব্যবহার করবেন না, এতে ত্বকে র্যাশ হতে পারে এবং পুরে যেতে পারে।

স্বাস্থ্য উপকারিতা

১। এনার্জি বৃদ্ধি করে
ভাতের মাড় এনার্জি লেভেল বাড়ায়। এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট আছে যা শক্তির চমৎকার উৎস। আমাদের শরীর কার্বোহাইড্রেট ভেঙ্গে এনার্জি উৎপন্ন করতে পারে। সকালে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেলে আপনি এনার্জি কমের কারণে দুর্বলতা বা মাথা ঘুরানো ভাব অনুভব করবেন না। ঠিক যেমন আমাদের দেশের কৃষক সারাদিন হার ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও ক্লান্ত হন না কারণ তাঁরা সকালে ভাতের মার খেয়ে থাকেন।

২। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
ভাতের মাড় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রীষ্মের তাপদাহ প্রতিরোধ করার জন্য ভাতের মাড় পান করার পরামর্শ দেয়া হয়।

৩। ভাইরাস ইনফেকশন প্রতিকারে
জ্বরে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে এবং বমি বন্ধ করতে ভাতের মাড় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পুষ্টির ঘাটতি পূরণে এবং নিরাময় প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে ভাতের মাড়।

৪। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে
ভাতের মাড়ে প্রচুর ফাইবার থাকে। এছাড়াও স্টার্চ পাকস্থলির উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে পেটের বর্জ্য নিষ্কাশনকে সহজতর করে।

এছাড়াও ডায়রিয়া ও পানি শূন্যতা দূর করে, এক্সিমা ভালো করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, আলঝেইমার্স প্রতিরোধ করে।

ভাতের মাড়ে ‘অরিজানল’ থাকে যা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

ভাতের মাড় পান করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে ৮টি গুরুত্ব পূর্ণ অ্যামাইনো এসিড আছে যা পেশীর পুনর্গঠনে সহায়তা করে।

সুত্র: Modern Agriculture Facebook Page

তিনটি আপেলের পুষ্টি একটি আমড়াতে

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

আমড়া একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় দেশীয় ফল। আমড়াতে রয়েছে অনেক পুষ্টি যা প্রায় তিনটি আপেলের পুষ্টির সমান। আপেলের চেয়ে আমড়ায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের পরিমাণ বেশি রয়েছে।পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী আমড়াতে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হল-শর্করা ১৫ গ্রাম, আমিষ ১.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫৫ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮০০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি১০.২৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৯২ মিলিগ্রাম, অন্য খনিজ পদার্থ ০.৬ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি। আমড়া ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। ভিটামিন সি দেহের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়। এ রোগে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, দাঁতের গোড়া থেকে পুঁজ ও রক্ত পড়ে, মাড়িতে প্রচ- ব্যথা হয়, খাবার খেতে অসুবিধা হয়, অকালে দাঁত ঝরে যায়। বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস ইনফেকশন, সর্দি কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভিটামন সি অত্যন্ত উপকারী। ক্যালসিয়ামের অভাবে মাংসপেশিতে খিঁচুনি হয়, শিশুদের দৈহিক গঠন দুর্বল হয়। আমড়ায় প্রচুর আয়রন থাকায় রক্তস্বল্পতার অভাব পূরণ হয়। আমড়ায় থাকা ভিটামিন সি রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং খাদ্যে উপস্থিত ভিটামিন এ এবং ই-এর সঙ্গে একত্র হয়ে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা ক্যানসারসহ নানা ঘাত-প্রতিঘাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।

Source: Modern Agriculture Facebook Page

বেগুনের পাঁচ গুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.
                                                       (ছবি: বাউ বেগুন 1)

একটুকরো বেগুন ভাজা কিংবা পোড়া বেগুনের ভর্তা অনেকেরই পছন্দের খাবার। এবার জেনে নিন বেগুনের পাঁচ অজানা গুন। ডায়াবেটিস কিংবা হূদরোগের জন্য বেগুন যেমন উপকারী তেমনি এটি বাড়াতে পারে ত্বকের উজ্জ্বলতাও! জি নিউজ ব্যুরোর এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এক: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে
উচ্চমাত্রার আঁঁশযুক্ত সবজি হওয়ায় রক্তে সুগার ও গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে বেগুন। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেগুনের জুড়ি নেই।

দুই: হূদরোগের ঝুঁকি কমায়
বেগুন কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। শরীরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। যেসব কারণে বেগুন হূদরোগের ঝুঁকিও কমায়। বেগুনে থাকা প্রচুর পরিমাণের পটাশিয়াম শরীরে পানি শূন্যতা দূর করে যা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।

তিন: মস্তিষ্কের জন্য উপকারী বেগুন
বেগুনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে। এই উপদানটি মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। মস্তিষ্কের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বার্তা প্রেরণেও পাইটোনিউট্রিয়েন্ট সাহায্য করে। যেটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।

চার: হজমে সাহায্য করে
আঁঁশযুক্ত খাবার হওয়ায় এটি পাকস্থলীর হজমি শক্তি বাড়ায়। পুরো হজম প্রক্রিয়াকেই এটি স্বাভাবিক রাখে। কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমাতে সহায়তা করে বেগুন।

পাঁচ: ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
প্রচুর জলীয় পদার্থ থাকাতে বেগুন স্বাস্থ্যের জন্য তো ভালোই শরীরের ত্বকের জন্যও এটি বেশ উপকারী। বেগুনে এমন সব ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে যা ত্বকের মসৃণতা এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

Source: Modern Agriculture Facebook Page

কলার মোচার উপকারিতা

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

সুস্বাস্থ্যের জন্য কাঁচাকলা যেমন উপকারী সবজী তেমনি উপকারী কলার মোচা। গ্রামে গঞ্জে অনেকের কাছে কলার মোচা ফেলনা হিসেবে পরিচিত। প্রচুর আয়রনসমৃদ্ধ কলার মোচা মাঝে-মধ্যে সুলভ মূল্যে বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।

* রক্তের মূল উপাদান হিমোগ্লোবিনকে শক্তিশালী করতে কলার মোচার তুলনা হয় না। দেহে রক্তের পরিমান ঠিক রাখতে বা রক্তশূণ্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কলার মোচা খুব উপকারী।

* কলার মোচায় আয়রনের সঙ্গে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়োডিন ইত্যাদি। গলগণ্ড বা গয়টার রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আয়োডিন।

* কলার মোচায় থাকা ভিটামিন এ রাতকানা রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। অকালে দৃষ্টিশক্তি হারানো থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারেন।

* গর্ভস্থ শিশুর প্রায় ৭০ ভাগ মস্তিষ্কের গঠন মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় হয়ে থাকে। গর্ভবতী নারীদের এবং শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে কলার মোচা খাওয়া উচিৎ।

* ত্বক, চুল ভালো রাখতে এই সবজির আয়রন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, ম্যাগনেশিয়াম দাঁতের গঠনেও রাখে অগ্রণী ভূমিকা।

* বয়স্ক নারী-পুরুষ ও বাড়ন্ত শিশু, খোলায়াড় বা যারা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন তাদের জন্য এই সবজি আশীর্বাদস্বরূপ।

সাবধানতা
অতিরিক্ত আয়রণ থাকায় কলার মোচা বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে কলার মোচা খেয়ে গ্রহণ করুন প্রয়োজনীয় উপকার।

সূত্র: Modern Agriculture  ফেইজবুক পেইজ

ধনিয়া পাতার স্বাস্থ্যগুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

ধনিয়া পাতাকে আমরা সালাদ এবং রান্নার স্বাদ বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করে থাকি। ধনিয়া পাতা রান্নার স্বাদ এবং ঘ্রাণ আরও বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু শুধু স্বাদ এবং ঘ্রাণ বাড়ানোর কাজেই ধনিয়া পাতার গুণাগুণ শেষ হয়ে যায় না। ধনিয়া পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো একটি তৃণ জাতীয় খাবার। সালাদে এবং রান্নায় ব্যবহার করুন ধনিয়া পাতা। এছাড়াও ধনিয়া পাতার জুস তৈরি করে খেতে পারেন।
ধনিয়া পাতায় রয়েছে ফাইবার, ম্যাংগানিজ, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং প্রোটিন।

১. ধনিয়া পাতা দেহের খারাপ কোলেস্টোরল (এলডিএল) এর মাত্রা কমায় এবং দেহের জন্য উপকারী ভালো কলেস্টোরল (এইচডিএল) এর মাত্রা বাড়ায়।

২. ধনিয়া পাতা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে এবং আমাদের পাকস্থলী পরিষ্কার রাখে।

৩. ডায়বেটিসের রোগীদের জন্য ধনিয়া পাতা অনেক বেশি কার্যকরী। এটি ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তের সুগারের মাত্রা কমায়।

৪. ধনিয়া পাতার ফ্যাট স্যলুবল ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এ ফুসফুস এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।

৫. ধনিয়া পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা বাতের ব্যথাসহ হাড় এবং জয়েন্টের ব্যথা উপশমে কাজ করে।

৬. স্মৃতিশক্তি প্রখর এবং মস্তিস্কের নার্ভ সচল রাখতে সাহায্য করে ধনিয়া পাতা।

৭. ধনিয়া পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা রক্তস্বল্পতা রোগ দূর করতে সহায়তা করে।

৮. ধনিয়া পাতার ভিটামিন কে অ্যালঝেইমার রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ