ভাতের মাড়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগুণ | ই-কৃষক

ভাতের মাড়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগুণ

ভাতের মাড় সম্পর্কে আমারা সবাই জানি। মাড় ফেলে দেয়ার সাথে সাথে ভাতের পুষ্টিগুণ অনেকটা কমে যায়। শরীরে দেবে বল-শক্তি, ত্বক হবে আরও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, কেশ হবে উজ্জ্বল-এত গুণ এই ভাতের মাড়ে। শুধু চীন দেশের আদি রেসিপি নয় এ দেশেও অনেকে একে ব্যবহার করেন খাদ্য হিসেবে। যদিও গোখাদ্য হিসেবেই এর খ্যাতি। পশ্চিমা বিশ্বেও এর খ্যাতি বাড়ছে। দুটি সস্তা ও সহজ উপকরণ চাল ও জল ব্যবহার করে সুস্থ শরীর ও সুন্দর ত্বক পেতে কে না চায়। চাল ধোয়া জল কিন্তু ব্যবহার করতে পারেন, তবে এতে সুফল পাবেন না। ভাতের মাড় হল বেশি হিতকর।
রান্নার সময় যতটুকু জল দেন, এর চেয়ে বেশি জল দেবেন। ভাত হয়ে গেলে মাড়টা ঢেলে ফেলবেন পাত্রে। মাড়ে আছে চাল থেকে আসা হিতকারী উপকরণ। গরম মাড়ও খেতে পারেন, খেতে পারেন ঠাণ্ডা করেও। জেনে নিন ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ ও সৌন্দর্যচর্চা সম্পর্কে।

সৌন্দর্যচর্চা

১। নিখুঁত চেহারা
আপনার মুখ ধুয়ে একটি সুতি কাপড়ের টুকরা মাড়ে ভিজিয়ে সারা মুখে লাগান। ভাতের মাড় চমৎকার স্কিন টোনার হিসেবে কাজ করে। মাড়ে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যাকে ‘ইনসিটল’ বলে প্রচুর পরিমাণে থাকে যা কোষের বৃদ্ধিকে প্রমোট করে, এজিং প্রসেসকে ধীর করে এবং রক্ত প্রবাহকে উদ্দীপিত করে যার ফলে ত্বক মসৃণ ও দীপ্তিময় হয়। এছাড়াও ভাতের মাড়ে ময়েশ্চারাইজিং, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও আলট্রা ভায়োলেটরে শোষণকারী উপাদান আছে। মাড় স্কিনে উৎপন্ন কপারকে আবদ্ধ করে যার ফলে মেলানিনের গঠন এবং এইজ স্পট বাঁধা প্রাপ্ত হয়।

২। হেয়ার মাস্ক হিসেবে
লম্বা, সিল্কি ও চকচকে উজ্জ্বল চুলের জন্য ভাতের মাড় চমৎকার ভাবে কাজ করে।আপনার চুলে ও মাথার তালুতে ভালো করে মাড় লাগান, ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
এছাড়া শ্যাম্পু করার পরে মাড় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। মাড়ের প্রোটিন চুলকে শক্তিশালী করে ও মসৃণ করে।

সতর্কতা: গরম মাড় ব্যবহার করবেন না, এতে ত্বকে র্যাশ হতে পারে এবং পুরে যেতে পারে।

স্বাস্থ্য উপকারিতা

১। এনার্জি বৃদ্ধি করে
ভাতের মাড় এনার্জি লেভেল বাড়ায়। এতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট আছে যা শক্তির চমৎকার উৎস। আমাদের শরীর কার্বোহাইড্রেট ভেঙ্গে এনার্জি উৎপন্ন করতে পারে। সকালে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেলে আপনি এনার্জি কমের কারণে দুর্বলতা বা মাথা ঘুরানো ভাব অনুভব করবেন না। ঠিক যেমন আমাদের দেশের কৃষক সারাদিন হার ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও ক্লান্ত হন না কারণ তাঁরা সকালে ভাতের মার খেয়ে থাকেন।

২। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
ভাতের মাড় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রীষ্মের তাপদাহ প্রতিরোধ করার জন্য ভাতের মাড় পান করার পরামর্শ দেয়া হয়।

৩। ভাইরাস ইনফেকশন প্রতিকারে
জ্বরে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে এবং বমি বন্ধ করতে ভাতের মাড় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। পুষ্টির ঘাটতি পূরণে এবং নিরাময় প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে ভাতের মাড়।

৪। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে
ভাতের মাড়ে প্রচুর ফাইবার থাকে। এছাড়াও স্টার্চ পাকস্থলির উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে পেটের বর্জ্য নিষ্কাশনকে সহজতর করে।

এছাড়াও ডায়রিয়া ও পানি শূন্যতা দূর করে, এক্সিমা ভালো করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, আলঝেইমার্স প্রতিরোধ করে।

ভাতের মাড়ে ‘অরিজানল’ থাকে যা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

ভাতের মাড় পান করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে ৮টি গুরুত্ব পূর্ণ অ্যামাইনো এসিড আছে যা পেশীর পুনর্গঠনে সহায়তা করে।

সুত্র: Modern Agriculture Facebook Page

Leave a Reply