Author Archives: asma parvin

তুলসী গাছ ও পাতার গুণাগুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

পরিবেশগত গুনাগুণ:
পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তুলসীগাছ একমাত্র উদ্ভিদ যা দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহ করে বায়ু বিশুদ্ধ রাখে যেখানে অন্য যেকোন গাছ রাত্রিতে কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে তাই রাতের বেলাতে তুলসীতলায় শয়ন করাও ব্যক্তির জন্য উপকারী। এছাড়া তুলসীগাছ ভুমি ক্ষয়রোধক এবং তুলসী গাছ লাগালে তা মশা কীটপতঙ্গ ও সাপ থেকে দূরে রাখে।

তুলসীর স্বাস্থ্যগুণ:
» চর্মরোগে তুলসী পাতা দূর্বাঘাসের ডগার সংগে বেটে মাখলে ভালো হয়ে যায়।

» উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমিয়ে হূৎপিণ্ডের রক্ত সরবরাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

» হাড়ের গাঁথুনিতে ব্যথা দূর করে এবং শরীরের কাটাছেঁড়া দ্রুত শুকাতে অবদান রাখে।

» ঠাণ্ডা মরসুমে ছোট বাচ্চাদের তুলসির পাতা খাওয়ালে কৃমি দূর হবে এবং মাংসপেশি ও হাড় হবে শক্তিশালী।

» জ্বর হলে পানির মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করে নিন ৷ অথবা উপরিউক্ত তিনটে দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা পানি দিয়ে সেবন করুণ । জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।

» কাশি হলে তুলসী পাতা এবং আদা একসাথে পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷

» ডাইরিয়া হলে ১০ থেকে বারোটি পাতা পিষে রস খেয়ে ফেলুন।

» মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ।

» আপনার শরীরে যদি কোনরকম ঘা যদি থাকে তাহলে তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান।

» শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগ ওঠে যাবে।

» ত্বকের রোশনি বাড়ানোর জন্য, ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান।

» প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করতে হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন । তুলসি গাছের বীজও যথেষ্ট উপকারী। এর বীজ শুকিয়ে মিহি করে খেলে প্রস্রাবের ইনফেকশনজনিত সমস্যা ভালো হয়।

» যদি কখনও বমি কিংবা মাথা ঘোরা শুরু করে, তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।

» সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবার রুচী বাড়ে।
» নিয়মিত তুলসীর রস পানে হৃদরোগেও উপকার পাওয়া যায়।

» চোখের সমস্যা দূর করতে রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেলুন।

» তুলসীতে Eugenol অধিক পরিমাণে থাকায় তা Cox-2 Inhibitor রূপে কাজ করে বলে তা ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

» Hypoglycemic drugs এর সাথে তুলসী খেলে তা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

» তেজস্ক্রিয়তার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কোষসমুহকে মেরামত করে।

» চর্বিজনিত হৃদরোগে এন্টি অক্সিডেন্টের ভুমিকা পালন করে।

» তুলসী একশেরও বেশি Phytochemicals (যেমন oleanolic acid, beta caryophyllene ইত্যাদি) বহন করে বলে ক্যান্সার চিকিত্সারয় ব্যবহৃত হয়।

» তুলসীর অ্যালকোহলিক নির্যাস Immune system এর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।

» তুলসী স্নায়ুটনিক ও স্মৃতিবর্ধক।
» শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্নরোগ যেমন ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানি প্রভৃতি রোগের নিরাময়ক।

» সর্দি, কাশি, জ্বর, বমি, ডায়ারিয়া, কলেরা, কিডনির পাথর, মুখের আলসারসহ চোখের বিভিন্ন রোগে ইহা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

» দাঁতের রোগে উপশমকারী বলে টুথপেস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

ভয়ানক ক্ষতিকর সাধের ধনেপাতা:

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

নিত্যদিনের বিভিন্ন খাবারে আমরা ধনেপাতা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কখনও কি কল্পনা করেছেন যে এই সুস্বাদু খাবারটির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে? অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এই সুপরিচিত খাবারটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান যা আমাদের শরীরকে দিনদিন অসুস্থ করে তুলছে।

১. লিভারের ক্ষতিসাধন: অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

২. নিম্ন রক্তচাপ: অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।

৩. পেট খারাপ: স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া এমনকি পাতলা পায়খানা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।

৪. ডায়রিয়া: ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।

৫. নিঃশ্বাসের সমস্যা: আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

৬. বুকে ব্যথা: অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।

৭. ত্বকের সংবেদনশীলতা: সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।

৮. অ্যালার্জির সমস্যা: ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যাশ ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।

৯. প্রদাহ: অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।

১০. ভ্রূণের ক্ষতি: গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায়। বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

কুমড়াজাতীয় সবজির হাত পরাগায়ন

স্ত্রী ফুলের গর্ভমুন্ডের উপর পুরুষ ফুলের পরাগরেণু পতিত হওয়ায় হচ্ছে পরাগায়ন। পরাগায়ন দুই প্রকার। যথা-

ক) প্রাকৃতিক পরাগায়ন: প্রাকৃতিক উপায়ে সাধারণত পোকার সাহায্যে।
খ) কৃত্রিম/হাত পরাগায়ন: হাত দিয়ে পরাগায়ন সম্পন্ন করা হয়। ১টি পুরুষ ফুল দিয়ে ১০-১২ টি স্ত্রী ফুল পরাগায়ন করানো যায়।

কুমড়াজাতীয় সবজির ক্ষেত্রে হাত পরাগায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কুমড়াজাতীয় সবজিতে দুই ধরণের গাছ দেখা যায়।
ক) ভিন্নবাসী-স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল আলাদা গাছে থাকে অর্থাৎ স্ত্রী ও পুরুষ গাছ ভিন্ন। যেমন-পটল, কাকরোল ইত্যাদি। ভাল ফলন পেতে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই হাত পরাগায়ন করতে হবে।
খ) সহবাসী-স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল একই গাছের ভিন্ন জায়গায় ধরে। যেমনঃ-অন্যান্য কুমড়াজাতীয় সবজি।

হাত পরাগায়নের সময়:
ফুল ফোটার সময় জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী হাত পরাগায়ন সম্পন্ন করতে হবে। যেমন- সাদা ফুল (লাউ, চিচিঙ্গা) সাধারণত: বিকালে ফুটে। রঙিন ফুল (চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, করল্লা, ধুন্দল) সাধারণত সকাল ফুটে।
পরিপূর্ণভাবে ফোটার আগে করতে হবে।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

কলম করার পদ্ধতি

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

জোড় কলম
সাধারণ ভাবে একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের জন্ম হওয়ার পদ্ধতিকে গাছের বংশ বিস্তার বলে। অন্য কথায়, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ যৌন কোষ বা তার অংগজ কোষ থেকে নুতন স্বতন্ত্র গাছ সৃষ্টি করে তাকে বংশ বিস্তার বলে। বংশ বিস্তার দুই প্রকার যথা:
১। যৌন বংশ বিস্তার ও ২। অযৌন বংশ বিস্তার।
ফল গাছ রোপনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভাল, উন্নতমান ও মাতৃগুন সম্পন্ন ফল পাওয়া। এ কারণে, ফল গাছ রোপনের ক্ষেত্রে যৌন পদ্ধতির তুলনায় অযৌন পদ্ধতির চারা/ কলম গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা/কলম রোপন করলে মাতৃ গুণাগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া যায়, গাছে তাড়াতাড়ি ফল ধরে এবং গাছ ছোট হয় বিধায় অল্প পরিসরে অনেক গাছ রোপন করা যায়। অযৌন বংশ বিস্তার পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ক্লেফ্ট গ্রাফটিং বা ফাটল জোড় কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি।এ পদ্ধতিতে একাধিক ফল গাছে কলম করা যায়। অন্যান্য জোড় কলম গুলোর তুলনায় ফাটল জোড় কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি কারণ এ পদ্ধতিতে কর্তিত স্থানের দুই পাশ দিয়ে জোড়া লাগে বিধায় জোড়াটি সবল হয় এবং সহজে জোড়া স্থানটি ভাংগার সম্বাবনা থাকে না। তুলনামুলক ভাবে এ পদ্ধতি অন্যান্য জোড় কলম পদ্ধতি গুলোর তুলনায় সহজ, সফলতার হার বেশী এবং খরচও কম পড়ে।

উপকরণ
এ কলম করতে গ্রাফটিং চাকু, ব্লেড, সিকেচার, পলিথিন ক্যাপ, পলিথিন ফিতা, সুতলী, পরিবেশ সহনশীল একটি ষ্টক গাছের চারা, কাংখিত গাছের ডগা বা সায়ন এবং দক্ষ মালি ইত্যাদি।

কলম করার উপযুক্ত সময়
মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কলম করার উপযুক্ত সময়। কারন এ সময় বাতাসে আদ্রতা ও গাছের কোষের কার্যকারিতা বেশী থাকে। ফলে তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশী পাওয়া যায়।

স্টক তৈরী
অনাকাংখিত কিন্তু পরিবেশ উপযোগী গাছের বা স্থানীয় জাতের বীজ হতে চারা তৈরী করতে হবে যাতে কাংখিত জোড়া লাগানো সম্ভব হয়।

স্টক চারা তৈরীর ধাপ সমুহঃ
১) পরিনত গাছ হতে সুস্থ ও সবল বীজ সংগ্রহকরা।
২) স্টক চারাটি সরাসরি মাটি বা পলিব্যাগে তৈরী করা।
৩) যদি চারাটি মাটিতে তৈরী করা হয় তবে মাটি ভাল ভাবে কুপিয়ে ঝুরঝুরা করে আগাছা পরিস্কার করে প্রয়োজনীয় জৈব সার মিশিয়ে বেড আকারে করতে হবে। বেডটির প্রস্থ্য যেন ১ মিটার এর বেশী না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর পর বেডে ২৫ সেমিঃ পর পর লাইন করে প্রতি লাইনে ২০ সেমিঃ পর পর চারা/ বীজ রোপন করতে হবে এবং কলম করার পূর্ব পর্যন্ত স্টক চারা গুলোর সকল প্রকার পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে।
৪) চারা পলিব্যাগে তৈরী করলে ২০ সেমিঃ x ১২ সেমিঃ পলিব্যাগ নিতে হবে। দোঁয়াশ মাটির সাথে অর্ধেক পচা গোবর ও কম্পোস্ট মিশিয়ে পলিব্যাগ ভরতে হবে।
৫) প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ বা চারা রোপন করতে হবে। চারা গজানোর পর পলিব্যাগ গুলো যেন কাত হয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অন্যথায় চারার গোড়া বাঁকা হয়ে যাবে।
৬) এবার ব্যাগটি বেডে ২৫ x ২০ সেমিঃ দুরত্বে রোপন করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে পলিব্যাগটি যেন মাটির সমান্তরালে থাকে। এতে খরা মৌসুমে পানি সেচ কম লাগে এবং চারাটি সুস্থ ও সবল হয়।
৭) সুস্থ, সবল এবং নিরোগ চারা পাওয়ার জন্য আগাছা, রোগ ও পোকা-মারড় দমন করতে হবে। প্রয়োজনে গাছে সার ও সেচ দিতে হবে।

স্টক চারার বয়স ও সায়ন নির্বাচন
১) আমঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ৯-১২ মাস হবে।
খ) উৎকৃষ্ট ও কাংখিত মাতৃগাছ থেকে সুস্থ ও সবল সায়ন নিতে হবে।
গ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হবে।
ঘ) সায়নটির ডগায় একটি সুপ্ত কুড়ি থাকতে হবে।
ঙ) সায়নটির রং গাঢ় সবুজ থেকে কালচে সবুজ হবে এবং
চ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
ছ) আমের সায়ন মাতৃগাছে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় পাতা কেটে ফেলাকে ডিফলিয়েশন বলে। ১০ দিন পূর্বের ডিফলিয়েশন করা সায়ন দিয়ে কলম করলে তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশী হয়।

২) কাঠালঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ২-৩ সপ্তাহ হতে হবে।
খ) সমব্যাস সম্পন্ন ১-২ মাস বয়সের কাংখিত গাছের ডগা সায়ন হিসেবে নিতে হবে।
গ) সায়নটির শীর্ষ কুঁড়ি কয়েক দিনের মধ্যে বিকশিত হবে এমনটি হতে হবে। যার রং গাঢ় সবুজ কিন্ত টিপ দিলে শক্ত মনে হবে।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
ঙ) সায়নটি দৈঘ্যে প্রায় ১০ সেমিঃ হবে।

৩) জলপাইঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে কচি ১০-১৫ সেমিঃ অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
গ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৪) পেয়ারাঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ৯-১২ মাস হতে হবে। স্টক হিসেবে পলি পেয়ারার চারা ব্যবহার করলে উইল্ট প্রতিরোধী গাছ তৈরী করা সম্ভব।
খ) পেয়ারা ডালের ডগার কচি অংশে ৪টি ধার/খাজ থাকে। এই ধার বা খাজের ঠিক নিচের গোলাকার অংশটিকে সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
গ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হওয়া ভাল।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৫) কামরাংগাঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে।
গ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) একটি ডগা হতে একাধিক সায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৬) আমলকিঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে ।
গ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) একটি ডগা হতে একাধিক সায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৭) লেবুঃ
ক) স্টক চারার বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাসার্ধ্য স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে।
গ) লেবু ডালের ডগার কচি অংশে ৪টি ধার/খাজ থাকে। এই ধার বা খাজের ঠিক নিচের গোলাকার অংশটিকে সায়ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ঘ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হওয়া ভাল।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

৮) কুল বা বরইঃ
ক) স্টক চারাটির বয়স ১.৫-২.০ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে ।
গ) সায়নের রং সবুজ বা সবুজাব হবে। ডগাটির আগাথেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ বাদ দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ অংশ সায়ন হিসেবে নিতে হবে।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।

পদ্ধতি
ক) সাধারনত স্টক গাছের গোড়া হতে ১৫-২০ সেমিঃ উপরে গ্রাফ্টিং করা হয়।
খ) খেয়াল রাখতে হবে যেন জোড়া স্থানটির নিচে অবশ্যই যেন কিচু পাতা থাকে।
গ) এবার সিকেচার দিয়ে নিদ্দিষ্ট উচ্চতায় স্টক গাছের মাথাটি সমভাবে কেটে অপসারন করতে হবে।
ঘ) এবার চাকু দিয়ে স্টক গাছের মাথাটি ২-৩ সেমিঃ লম্বালম্বি ভাবে চিরে দিতে হবে এবং সায়নের গোড়ার উভয় পাশ একই ভাবে ২-৩ সেমিঃ তেরছা কাট দিতে যেন গোঁজ বা তিলকের মত হয়।
ঙ) এবার স্টক গাছের কর্তিত অংশে সায়নের কর্তিত অংশ সমান ভাবে প্রবিস্ট করাতে হবে।
চ) অতপর জোড়া লাগানোর যায়গাটি পলিথিন ফিতা দিয়ে পেচিয়ে শক্ত ভাবে বেধে দিতে হবে।
ছ) এবার একটি পলিথিন ক্যাপ বা টুপি দিয়ে সায়নের মাথা হতে জোড়ার নিচ পর্যন্ত ঢেকে বেধে দিতে হবে।

ব্যতিক্রমঃ যেহেতু কাঠলের ২-৩ সপ্তাহের স্টক চারায় গ্রাফটিং করা হয় তাই স্টক চারায় কোন পাতা থাকেনা এবং কলমটি চাকুর পরিবর্তে ব্লেড দিয়ে করতে হয়।

পরবর্তী পরিচর্যা
ক) কলম করার সময় অতিরিক্ত রোদ থাকলে উপরে হালকা ছায়ার ব্যবস্থা করলে সফলতার হার বেড়ে যায়।
খ) স্টক গাছে অনাকাংথিত কুশি বের হওয়ার পর পরই ভেংগে দিতে হবে।
গ) কলমের বেড/ব্যাগে প্রয়োজনীয় রসের ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ঘ) সায়নের মাথায় কুঁড়ি গজানোর সাথে সাথেই পলিথিনের ক্যাপটি খুলে দিতে হবে।
ঙ) জোড়াটি স্থায়ী হয়ে গেলে অথাৎ কলম করার প্রায় তিন মাস পর পলিথিনের ফিতাটি খুলে দিতে হবে।
চ) বেডের/ ব্যাগের আগাছা, রোগ ও পোকা-মাকড় দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
ছ) চারার বাড়-বাড়তি কম হলে উপরি সার প্রয়োগ করতে হবে অথবা ফলিয়ার স্প্রে করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে ইউরিয়া মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

নানা গুণে পরিপূর্ণ নারকেল:

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

ডাব না পাড়লে কী হয়? উত্তরটা সহজ ‘নারকেল’। যা দিয়ে পিঠাপুলি তৈরি তো হয়ই। আরও আছে এর নানা কাজ। নারকেল তেলের কদর তো সবখানে। ফেলনা নয় এর পানি বা শাঁসও। রূপচর্চায় এর বিশেষ সমাদর আছে।
আয়ুর্বেদা রিসার্চ অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের অন্যতম স্বত্বাধিকারী সারওয়াত আবেদ বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে নারকেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। এ ছাড়া ডাবের পানি শরীরের পানিশূন্যতা রোধ করে, বাড়তি উদ্দীপনা জোগায়। ত্বকের লাবণ্য বাড়াতে ফেসিয়ালের সময় নারকেল তেলের ব্যবহার করা যায়। রূপ রুটিনে তো নারকেলের ব্যবহার আছেই, সঙ্গে খাবার হিসেবেও জনপ্রিয় এটি। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো বলেন, নারকেল আসলে অনেক কাজের কাজি। নারকেল তেলের রান্না করা খাবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এ ছাড়া নারকেল তেল মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তবে যাদের কোলেস্টেরল বেশি, তাদের নারকেল খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।

নারকেলের দুধ
নারকেলের দুধ দিয়ে পোলাও, পিঠা, ইলিশ মাছ, মাংস রান্নার প্রচলন তো বহু পুরোনো। রূপচর্চার জন্যও নারকেলের দুধ দারুণ এক উপকরণ। এক কাপ গোলাপের পাপড়ি, আধা কাপ গোলাপ জল ও এক কাপ নারকেলের দুধ হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। গোসলের আগে এতে ১৫ মিনিট শরীর ভিজিয়ে রাখলে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে। এ ছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ঘরে তৈরি নারকেলের দুধ সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে বয়সের ছাপ দেখা দিলেও নারকেলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের সেই অংশে নারকেলের দুধের প্রলেপ দিয়ে রাখুন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে নিলেই পোড়া দাগ থেকে মুক্তি মিলবে।

নারকেল তেল
নারকেল তেল রান্নায় আলাদা একটা ঘ্রাণ আনে। তবে বাজারে বোতলজাত করা নারকেল তেলে আরও নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে, ফলে এই নারকেল তেল রান্নার জন্য উপযোগী নয়। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান আলাদা করে রান্নার উপযোগী নারকেল তেল বাজারজাত করে থাকে। এ ছাড়া সরাসরি নারকেল শুকিয়ে তেল করে নিয়েও রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে। নারকেল তেল চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়। মাথায় ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বক ঠান্ডা থাকে। শীতের সময়ে অল্প একটু নারকেল তেল ঠোঁটে ঘষে নিলে ঠোঁট ফাটবে না। চুল রুক্ষ হয়ে গেলে নারকেল তেল ব্যবহার করে ঘণ্টা খানেক পর শ্যাম্পু করে নিলে চুল ঝলমলে হয়ে যাবে।

নারকেলের পানি
ত্বক ভালো রাখতে নারকেলের পানি ভালো। ডাবের পানিতে পটাশিয়াম বেশি থাকায় তা শরীর ঠান্ডা রাখে। ডাবের পানিতে অল্প পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। আখতারুন্নাহার আলো জানান, বাজারের একটা কোমল পানীয় অপেক্ষা এক গ্লাস ডাবের পানি অনেক ভালো। কারও মুখে যদি দাগ দেখা যায়, তাহলে প্রতিদিন ডাব বা নারকেলের পানি দিয়ে মুখ ধুলে প্রাকৃতিকভাবেই দাগ চলে যাবে।
ঘরে নারকেলের দুধ তৈরি করবেন যেভাবে
নারকেল ভেঙে কুরিয়ে নিন। এবার ২৫০ গ্রাম কোরানো নারকেলের সঙ্গে দেড় কাপ হালকা গরম পানি মিশিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মিশ্রণটি দিয়ে পরিষ্কার কাপড়ে ছেঁকে নিন। পেয়ে যাবেন নারকেলের দুধ। একটা বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারেন এটি।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

মসুর চাষ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

দামে সস্তা এবং প্রচুর পরিমাণে আমিষের উপস্থিতির কারণে ডালকে গরীবের মাংস বলা হয়। বাংলাদেশে ডালের মধ্যে মসুর সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। বিভিন্ন কারণে দেশে দিন দিন মসুরের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। উৎপাদন হ্রাসের অন্যতম কারণগুলো হলো-পাতা ঝলসানো রোগের আক্রমণ, সময় মতো বপন ও যতœ না নেয়া। বাংলাদেশ পরিসংখান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে ১৯৯৫ সালে যেখানে মসুরের উৎপাদন ছিল এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন , ২০০৯-১০ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার মেট্রিক টনে। ফলে দেশের চাহিদা মেটাতে ২০১১ সালে এক হাজার ২৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৫২ হাজার ২৩০ মেট্রিক টন মসুর ডাল আমদানি করতে হয়েছে। উন্নত পদ্ধতিতে মসুরের চাষ করে উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা পূরণ পূর্বক কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব।

মসুরের জাত:
মসুরের আধুনিক জাতগুলোর কোনোটিই পাতা ঝলসানো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন নয়। তবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বারিমসুর-৩, বারিমসুর-৪ বারিমসুর-৫, বারিমসুর-৬ ও বারি মসুর-৭ কৃষকের মাঠে ভাল ফলন দিতে সক্ষম।

জমি নির্বাচন:
দোআঁশ মাটি মসুর চাষের জন্য উত্তম, তবে এটেল দোআঁশ মাটিতেও মসুর ভাল জন্মে। মনে রাখতে হবে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি চাষ করার জন্য যে সব জমিতে উপযুক্ত জো আসে সে সমস্ত জমি মসুর চাষের জন্য নির্বাচন করা উচিত।

জমি তৈরি:
উপযুক্ত জো অবস্থায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি গভীরে ২ থেকে ৩টি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে মসুরের জন্য জমি তৈরি করতে হবে, যাতে মাটিতে অতিরিক্ত রস না থাকে।

সার প্রয়োগ:
বিঘা প্রতি ৪ কেজি ইউরিয়া, ৫ কেজি মিউরেট অব পটাশ, ১৩ কেজি টিএসপি ও ৭ কেজি জিপসাম শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে।

বপনের সময়:
কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মসুর বপন করার উপযুক্ত সময়। তবে অনেক এলাকায় আমন ধান কাটার পর কৃষক অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মসুর বপন করে থাকেন। বিলম্বে মসুর বপনের কারণে বিভিন্ন রোগের আক্রমণে মসুরের ফলন কম হয়।

বীজের পরিমাণ:
জমিতে উপযুক্ত জো থাকলে বিঘা প্রতি ৫ কেজি বীজ ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

বীজ শোধন:
চারার গোড়া পচা রোগের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষার করার জন্য বীজ বপনের পূর্বে প্রতি কেজি বীজ ২.৫ গ্রাম প্রোভেক্স ২০০ দ্বারা শোধন করতে হবে।

সেচ ব্যবস্থাপনা:
মসুর চাষে তেমন সেচের প্রয়োজন হয় না বললেই চলে।তবে বপনের সময় জমিতে পরিমিত রস না থাকলে জমিতে হালকা সেচ দিয়ে উপযুক্ত জো অবস্থায় এনে বীজ বপন করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। এ ছাড়াও আমন ধান কাটার পর এটেল দোআঁশ মাটিতে নাবিতে মসুর বপন করলে গাছ বৃদ্ধির সময় মাটিতে রসের আভাব ঘটে। সে সময় জমিতে একটি হালকা সেচ দিলে ফলন বৃদ্ধি পায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনো ক্রমেই জমিতে সেচের বা বৃষ্টির পানি জমে না থাকে। এতে গাছের শিকড় পচে গাছ হলুদ হয়ে যায় এবং পরে মারা যায়।

রোগ ব্যবস্থাপনা:
মসুরের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ হলো পাতা ঝলসানো রোগ। এরোগের আক্রমণে গাছের পাতা, ফুলও অপরিপক্ক ফল শুকিয়ে মরে যায়। এই রোগ দমনের জন্য প্রতিরোধক ব্যবস্থা হিসেবে বীজ বপনের ৬০ থেকে ৬৫ দিন বয়সে অর্থাৎ ফুল আসার সময়ে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রোভরাল মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে। এ ছাড়া মসুরের চারা অবস্থায় ক্ষুদ্র পরিসরে চারার মড়ক দেখা দিলে প্রোভেক্স -২০০ ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় ও মাটিতে ভালভাবে স্প্রে করলে এই রোগের প্রকোপ কমে যায়।

পোকামাকড় দমন:
মসুরে তেমন পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়না, তবে ফুল আসার সময় জাবপোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি. হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ: মসুর গাছ পেকে শুকিয়ে ভালভাবে মাড়াই, ঝাড়াই ও পরিস্কার করে শুকিয়ে বায়ুরোধক পাত্রে বা পলিথিনের বস্তায় সংরক্ষণ করতে হবে। মাঝে মধ্যে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে যেন মসুর বীজ ব্রুকিড পোকায় আক্রান্ত না হয়।

ফলন: ভালভাবে যত্ন নিলে বিঘা প্রতি ৩৬০ থেকে ৪০০ কেজি ফলন পাওয়া যায়।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

কাঁচাকলার পাকা গুণাগুণ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

কাঁচকলা এমন একটি সবজি যা সারাবছরই পাওয়া যায়। এ সবজিটি আমাদের দেশে যথেষ্ঠ সমাদৃত কারণ এটি পুষ্টিগুণে এবং ভেষজগুণে সমৃদ্ধ।
এটি সহজপ্রাচ্য ও পুষ্টিকর বলে রোগীর পথ্য হিসাবে কাঁচকলার ভর্তা ও তরকারি রান্না করে খাওয়ানো হয়। এটি বহু আগে থেকেই ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। রোগীর রুচি বাড়াতে কাঁচকলার জুড়ি নেই।

প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী কাঁচকলায় যে সমস্ত পুষ্টিগুণ রয়েছে তা হলো জলীয় অংশ- ৭৮%, শর্করা- ১৭-৩৪ গ্রাম, প্রোটিন- ২/৬০ গ্রাম, স্নেহ- ০.০৩ গ্রাম, খনিজ লবণ- ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ১১-৩০ মিঃ গ্রাম, আয়রন- ০.৪ গ্রাম, ভিটামিন বি- ০.০৯ মিঃ গ্রাম, বি¬২- ০.০৬ মিঃ গ্রাম, ভিটামিন সি- ৪.০৩ মিঃ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৮৩ কিঃ ক্যালরি।

শিশুদের পাতলা পায়খানা কাঁচকলার খিচুরী রান্না করে খাওয়ালে আরোগ্য হয়।

জন্ডিস, আমাশয় ও ডায়রিয়ার রোগীকে কাঁচকলা সিদ্ধ ভর্তা খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।

আযুর্বেদিক মতে কলার থোর ও বীজে রয়েছে প্রচুর ওষুধিগুণ। কচি কলাগাছের শিকরের রস কৃমিনাশক এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

কাঁচকলার ভর্তা ও তরকারি যেমন সমাদৃত তেমনি কাঁচকলা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মজাদার নাস্তাও মুখরোচক হয় যেমন: কাঁচকলা টিকিয়া, কাটলেট, চপ, কাবাব ইত্যাদি। এ সবজিটি যেহেতু সারাবছর হাতের কাছেই পাওয়া যায় কাজেই নিয়মিত খেলে দৈহিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ হওয়া সম্ভব।

—কাঁচকলায় থাকা খাদ্যশক্তি দেহের দূর্বলতা কাটিয়ে সবল করে তোলে। রোগীদের জন্য দারুণ পথ্য হিসেবে কাঁচকলার সুনাম রয়েছে।

—কাঁচকলায় থাকা খাদ্যাআঁশ খাবার হজমে সহায়তা করে। পেটের নানা ধরনের অসুখ যেমন- গ্যস, পেটব্যথা, বদহজম ইদ্যাতি দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কাঁচকলা উপযোগী।

—কাঁচকলায় থাকা ভিটামিন সি শরীরের যেকোনো সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়।

—এতে থাকা ভিটামিন-এ উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। দেহের নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধসহ ক্যানসারের জীবানু রোধেও ভূমিকা রাখে। ত্বকের যত্নেও এর ভূমিকা অসাধারণ।

—কাঁচকলায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস দেহের হাড় মজবুত এবং হাড় ক্ষয় থেকে রক্ষা করে।

—কাঁচকলা থেকে পাওয়া পটাসিয়াম হৃদস্পন্দনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। রক্তচাপের মাত্রাও ঠিক রাখে।

—দেহের কোষ গঠনেও কাঁচকলা ভূমিকা রাখে।
—অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতেও কাঁচকলা দারুণ ভূমিকা রাখে।

—কাঁচকলায় থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড পরিপাক নালী থেকে লবণ ও পানিকে শোষণ করে ডায়রিয়া রোধ করে।

সূত্র: Modern Agriculture  ফেইজবুক পেইজ

পেঁয়ারা চাষাবাদ

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

পেঁয়ারা গাছের পাতা, কান্ড, শাখা-প্রশাখা ও ফল এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমনে এমনটি হয়ে থাকে।

পুষ্টি মূল্য:
পেঁয়ারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল।

ভেষজ গুণ:
শিকড়, গাছের বাকল, পাতা এবং অপরিপক্ক ফল কলেরা, আমাশয় ও অন্যান্য পেটের পীড়া নিরাময়ে কাজ করে।

উপযুক্ত জমি ও মাটি:
সুনিষ্কাসিত উঁচু জমি ও মাঝারি উঁচু জমি পেয়ারা চাষের জন্য উপযোগি।

জাত পরিচিতি:
স্থানীয় জাতের মধ্যে-স্বরুপকাঠি, কাঞ্চননগর, মুকুন্দপুরী এবং উন্নত জাতের মধ্যে কাজী পেঁয়ারা, বারি পেঁয়ারা -২ অন্যতম।

কাজী পেঁয়ারা: ফল আকারে বেশ বড়। ওজন ৪০০-৫০০ গ্রাম। পরিপক্ক ফল হলুদাভ সবুজ এবং ভিতরের শাঁস সাদা। এ ফল ৭-১০ দিন ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষন করা যায়। কাজী পেঁয়ারা খেতে সামান্য টক।

বারি পেঁয়ারা-২: গাছ ছাতাকৃতি ও কাজী পেঁয়ারার চেয়ে খাটো হয়। পাতার অগ্রভাগ সুচালো। এ জাতটি বর্ষাকাল ও শীতকাল ২ বার ফল দেয়। পেঁয়ারা খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি।

চারা তৈরি:
গুটি কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করা হয়।চারা রোপণ: সমতল ভূমিতে বর্গাকার ও ষড়ভূজী এবং পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে করা হয়। পেঁয়ারার চারা মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য আশ্বিন মাসে রোপণ করা হয়। রোপণের আগে গর্ত তৈরি করে নিতে হয়। প্রতি চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪ মিটার রাখতে হয়।

সার ব্যবস্থাপনা:
প্রতি গর্তে গোবর ২০ কেজি, পচা খৈল ২ কেজি, টিএসপি সার ২০০ গ্রাম, এমওপি সার ২০০ গ্রাম প্রযোগ করতে হয়। তবে বয়সবৃদ্ধির সাথে সাখে সারের পরিমানও বৃদ্ধি করতে হয়।

অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা:
পেঁয়ারা সংগ্রহের পর ভাঙ্গা, রোগাক্রান্ত ও মরা শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করে ফেলতে হয়। তাতে গাছে আবার নতুন নতুন কুঁড়ি জন্মায়। পেঁয়ারা গাছে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ফল দিয়ে থাকে। তাই মার্বেল আকৃতি হলেই কিছু ফল ফেলে দেয়া দরকার।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:
খরার সময় ২-৩ বার পানি সেচ দিতে হয়। তাছাড়া গাছের গোড়া থেকে আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।

রোগব্যবস্থাপনা
রোগের নাম:
পেঁয়ারার এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমন
ক্ষতির নমুনা:
প্রথমে পেঁয়ারার গায়ে ছোট ছোট বাদামী রঙের দাগ দেখা যায়। দাগগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে পেঁয়ারার গায়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। আক্রান্ত ফল অনেক সময় ফেটে যায়। তাছাড়া এ রোগে আক্রান্ত ফলের শাঁস শক্ত হয়ে যায়।

অনুকূল পরিবেশ:
বাতাস ও বৃষ্টির মাধ্যমে রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।

বিস্তার:
গাছের পরিত্যক্ত শাখা প্রশাখা, ফল এবং পাতায় এ রোগের জীবাণু বেঁচে থাকে এবং পরে বিস-ার লাভ করে।

প্রতিকার:
গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হয়। গাছে ফুল ধরার পর টপসিন-এম প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩-৪ বার ভালভাবে সেপ্র করে এ রোগ দমন করা যায়।

ফসল তোলা:
সবুজ থেকে হলদে সবুজ রঙ ধারণ করলে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ

বরবটির উপকারিতা

অধিকারী চ. মিঠু's photo.

শুধু পুষ্টিমানেই ভরপুর নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। বরবটিতে রয়েছে প্রচুর উপকারী খাদ্য আঁশ।

পুষ্টিমান:
প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ বা বেগুনি রঙের বরবটি থেকে পাওয়া যায় ৪৮ ক্যালরি শক্তি। যাতে নেই কোন ফ্যাট এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল। শর্করার পরিমান ১০ গ্রাম এবং প্রোটিন ২.৬ গ্রাম। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস সহ নানারকম ভিটামিন ও মিনারেল।

স্বাস্থ্য উপকারিতা:
প্রচুর পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বরবটির রয়েছে দারুণ স্বাস্থ্য উপকারিতা। এর পুষ্টিমান সুস্বাস্থ্যের জন্য চমৎকার কাজ করে।

১। ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়:
বরবটিতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড নামে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এর দুটি উপাদান kaempferol এবং quercetin। অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায় এই দুই উপাদান ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিরোধ করতে চমৎকার কাজ করে।

২। অস্থিসন্ধির ব্যথা কমায়:
আপনার সালাদের বাটিতে প্রতিদিন ২৫০ মিলিগ্রাম কাঁচা বরবটি মিশিয়ে নেন। এতে আপনি আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন ‘কে’-এর ১৯ শতাংশ মেটাতে পারেন। ভিটামিন কে আপনার অস্টিওআর্থারাইটিস সমস্যা থেকে অস্থিসন্ধির যত্ন দেবে। আর রক্ত জমাট বাঁধতে ভিটামিন কে- এর ভূমিকার কথাতো আপনি জানেনই।

৩। হার্টের সুরক্ষায়:
বরবটিতে রয়েছে প্রচুর উপকারি আঁশ যা শরীরের এলডিএল (ক্ষতিকর) কলেস্টেরলের পরিমান কমিয়ে দেয়। ফলে হার্টের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। এছাড়াও এটি উচ্চ রক্তচাপ, বুক জ্বালাপোড়া প্রভৃতি সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে।

৪। হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে:
বরবটিতে রয়েছে সিলিকন। যা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। হাড় শক্ত করতে প্রয়োজনীয় ক্যালিসিয়ামও পাওয়া যায় বরবটির বীজে। আর রজস্বলা নারীদের স্বাস্থ্য উপকারে সিলিকন ও ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৫। আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে:
ভিটামিন সি খুব গুরুত্বপূর্ণ এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন পরিশোষণে ভূমিকা রাখে। সালাদে কাঁচা বরবটি খেলে তা থেকে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আর বরবটিতেও রয়েছে যথেষ্ট পরিমান আয়রন। যা আপনার শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে।

৬। শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে:
বরবটিতে রয়েছে প্রচুর এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ্যন্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে দূষিত যৌগগুলোকে বের করে দেয়। ফলে সহজে চর্বি জমতে দেয় না। এ ছাড়া কম ক্যালরি যুক্ত খাদ্য ও ফ্যাট-কলেস্টেরল না থাকায় এটি পেট ভরে খাওয়া যায়। এতে ক্ষুধাভাব কম হয়। ওজন কমাতে সহায়তা করে।

সূত্র: Modern Agriculture ফেইজবুক পেইজ