ভুট্টা একটি অধিক ফলনশীল দানা শস্য। ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমান বেশী। এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। চুয়াডাংগা, দিনাজপুর, লালমনির হাট, বগুড়া, চর অঞ্চলসহ বাংলাদেশের প্রায় বেশ কিছু যায়গায় ভুট্টার চাষ ব্যাপক ভাবে হচ্ছে। নিচে ভুট্টার জাত, ব্যাবস্থাপনা ও উৎপাদন প্রযুক্তি আলোচনা করা হলো-
২. জাতঃ বর্তমানে দেশে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে, নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
জাত |
বীজ বপনের সময় |
কোম্পানীর নাম |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৪, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫, |
রবি মৌসুমে,নভেম্বরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। খরিফে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চ পর্যন্ত |
BARI |
হাইব্রিড ভূট্টা এম এস-৮৮৮, হাইব্রিড ভূট্টা এ এস-৯৯৯ |
খরিপ-রবি মৌসুম (রবি,অক্টোবর-নভেম্বর, খরিপ-মধ্য ফেব্রু-এপ্রিল |
এ সি আই |
হাইব্রিড –এসগ্রো ৯০০ এম., ৭১৭ K, ৯৮৭ K, মিরাকল, |
রবি মৌসুম |
কৃষি বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান |
ডিকাল্ব ৯০০ এম গোল্ড, ৮২৭K |
রবি ও খরিপ মৌসুম |
|
ডি কে সি -৭০৭৪, ৭০০১ কে |
খরিপ মৌসুম |
|
এগ্রজি ডিএম এইচ-৭৩১৪, ৮৮৮, এগ্রজি সুপার এইচ পি ১০০, |
সারা বছর (অক্টবর-নভেম্বর, খরিপ-মধ্য ফেব্রু-এপ্রিল) |
এনার্জি প্যাক এগ্রো লি: |
জেকে এম এইচ-৫০২, জেকে সুরভি |
সারা বছর |
মেটাল সীড |
৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ বেলে দোআশ ও দোআশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জমিতে পানি জমে না থাকে। বাংলাদেশের বেশ কিছু জায়গায় ভূট্টার চাষ ভালো হয়ে থাকে যেমন রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, চুয়াডাংগা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ইত্যাদি।
৪. বীজঃ
- ভালো বীজ নির্বাচনঃ সাধারনত নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ভালো বীজ নির্বাচনে সহায়ক-
- বীজ গজানোর হার ৮০% এর বেশী হবে। বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে এবং ভালো সুষ্ঠ বীজ নির্বাচনের জন্য কৃষক, নমুনা বীজ মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা করতে পারেন, এ ক্ষেত্রে বীজ গজানোর হার ৮০% এর বেশী হবে।
- বীজ রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও পোকা খাওয়া মুক্ত হতে হবে।
- সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।
- বীজের হারঃ একরে ৬-৭ কেজি। উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
- বীজ শোধনঃ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ নামক ছত্রাকনাশক ও বীজ পাত্রে ঢেলে এমনভাবে ঝাকাতে হবে যেন বীজের গায়ে ছত্রাক নাশক ভালভাবে লেগে যায়। শোধনকৃত বীজ পাত্র থেকে বের করার পর ছায়াতে শুকিয়ে নিতে হবে। বীজ বপনের ছয় ঘন্টা আগে বীজশোধন করা ভাল।
৫. জমি তৈরীঃ
- জমি চাষঃ ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে ২-৩ টা বা লাঙ্গল দিয়ে ৪-৫ টা আড়াআড়ি চাষ দিয়ে ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে সমতল করতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে জমি তৈরি করতে হবে।
৬. বপন এর পদ্ধতিঃ
- বপন এর সময়ঃ বাংলাদেশে রবি মৌসুমে মধ্য-আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ (অক্টোবর-নভেম্বর) এবং খরিফ মৌসুমে ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মধ্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ) পর্যন্ত সময় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। আর উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।
- লাইনে বপনঃ
- সাধারনত সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ ইঞ্চি, গাছ হতে গাছের দূরত্ব ১০ ইঞ্চি, বপনের গভীরতা ১ ইঞ্চি এবং বপনের সময় প্রতি গর্তে ১ টি বীজ দিতে হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।
৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম |
সারের পরিমান/একর |
||
কম্পোজিট |
হাইব্রিড |
||
রবি |
খরিফ |
রবি |
|
ইউরিয়া |
৬০-১২০ কেজি |
৮৫-১০৫ কেজি |
২০০-২২০ কেজি |
টিএসপি |
৬৫-৮৫ কেজি |
৫০-৮৫ কেজি |
৯৫-১০৫ কেজি |
এমপি |
৩৮-৫৮ কেজি |
৩০-৪৮ কেজি |
৭২-৮৮ কেজি |
জিপসাম |
৫৮-৬৮ কেজি |
৩৮-৫৮ কেজি |
৯৫-১০৫ কেজি |
জিংক সালফেট |
৪-৬ কেজি |
২.৮-৪.৫ কেজি |
৪-৬ কেজি |
বোরিক এসিড |
২-২.৮ কেজি |
২-২.৮ কেজি |
২-২.৮ কেজি |
গোবর |
১.৬-২.৪ টন |
১.৬-২.৪ টন |
১.৬-২.৪ টন |
- প্রয়োগ পদ্ধতিঃ জমি তৈরীর শেষ পর্যায়ে অনুমোদিত ইউরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এবং অন্যান্য সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া সমান ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি বীজ গজানোর ২৫-৩০ দিন পর এবং দ্বিতীয় কিস্তি বীজ গজানোর ৪০-৫০ দিন পর ছিটায়ে প্রয়োগ করতে হবে। চারা গজানোর ৩০ দিনের মধ্যে জমি থেকে অতিরিক্ত চারা তুলে ফেলতে হবে।
৮. আগাছা দমনঃ
- সময়ঃ চারার বয়স এক মাস হওয়া পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
- দমন পদ্ধতিঃ নিড়ানী ও ছোট কোদাল দিয়ে কুপিয়ে আগাছা দমন (সার ও পানি সেচ দেয়ার সময় ও কুপিয়ে দিতে হবে) করা যেতে পারে। অথবা ডুয়েল গোল্ড ৯৬০ ইসি, ৪০০ এম এল / একর হারে জমিতে প্রয়োগ করে আগাছা দমন কতা যেতে পারে।
o সেচের সময়ঃ উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টার আশানুরূপ ফলন পেতে হলে রবি মৌসুমে সেচ প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। উদ্ভাবিত জাতে নিম্নরূপ ৩-৪টি সেচ দেওয়া যায়।
- প্রথম সেচ : বীজ বপনের ১৫-২০ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)
- দ্বিতীয় সেচ : বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)
- তৃতীয় সেচ : বীজ বপনের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)
- চতুর্থ সেচ : বীজ বপনের ৮৫-৯৫ দিনের মধ্যে (দানা বাঁধার পূর্ব পর্যায়)
o সেচের পরিমাণঃ এমন ভাবে সেচ দিতে হবে যাতে জমিতে পানি জমে না থাকে।
নিষ্কাশনঃ ভুট্টাজলাবদ্ধতাসহ্যকরতেপারেনা। তাই নালা কেটে পানি সুনিষ্কাশনের ব্যাবস্থা থাকতে হ
রোগের নাম |
লক্ষণ |
প্রতিকার |
কীটনাশকের নাম |
পাতা ঝলসানো রোগ |
আক্রান্ত গাছের নীচের দিকের পাতায় লম্বাটে ধূসর বর্নের দানা দেখা যায় এবং পরবর্তিতে গাচের উপরের অংশে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের প্রকোপ বেশী হলে পাতা আগাম শুকিয়ে যায় ও মরে যায়। | টিল্ট ২৫০ ইসি- রোগের লক্ষন দেখা মাত্রই প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল টিল্ট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে। রোগের প্রকোপ বেশী হলে একই মাত্রায় ৭ দিন পর পর সেপ্র করুন। | টিল্ট ২৫০ ইসি |
কান্ড পচা |
রোগের আক্রমনে প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে গাছের কাণ্ড পচে যায় এবং গাছ মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে। খরিপ মৌসুমে এই রোগ বেশী হয়। এছাড়া জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমান বেশী হলে ও পটাশের পরিমান কম হলে এই রোগ হয়। | স্কোর ২৫০ ইসি, ০.৫ এম এল / লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। | স্কোর ২৫০ ইসি |
মোচা ও দানা পচা রোগ | আক্রান্ত মোচার খোসা ও দানা বিবর্ন হয়ে সমস্ত মোচা পচে যায়। দানা পুষ্ট হয় না, কুচকে অথবা ফেটে যায়। মোচাতে দানার উপর বা মাঝে খালি চোখে ছত্রাক দেখা যায়। গাছে মোচা আসা থেকে পাকা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশী হলে এ রোগের আক্রমন বেশী হয়। | টিল্ট ২৫০ ইসি, ০.৫ এম এল / লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। | টিল্ট ২৫০ ইসি |
প্রাউড ২০ এস পি, ১ এম এল/লিটার পানিতেমিশিয়ে স্প্রে করতে হবে, | প্রাউড ২০ এস পি | ||
পোকা মাকড়ের নাম |
লক্ষণ |
প্রতিকার |
কীটনাশকের নাম |
কাটুই পোকা |
কীড়া অবস্থায় এই পোকা দিনের বেলা মাটির ফাটলে বা গর্তে লুকিয়ে থাকে। রাতের বেলা বের হয়ে চারা গাছের গোড়ায় মাটি বরাবর কেটে দেয়। বেচে থাকার জন্য যা খায় তার চেয়ে বেশি কেটে নষ্ট করে। তীব্র আক্রমণে ক্ষেত প্রায় চারা শূন্য হয়ে পড়ে। | সকাল বেলায় কেটে দেয়া চারার আশেপাশের মাটি খুড়ে কীড়া সংগ্রহ করে মেরে ফেলা। ক্যারটে ২.৫ ইসি- বীজ বপোনের আগে প্রতি শতাংশ জমিতে ৩ এমএল ক্যারাটে প্রয়োজনীয় পানির সাথে মিশিয়ে সারি ভিজিয়ে সেপ্র করুন। গাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলে এই মাত্রায় ক্যারাটে দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি ভিজিয়ে সেপ্র করুন। | ক্যারটে ২.৫ ইসি |
গোলা ৪৮ ইসি- ১০ লি. পানি/৬৯ এম এল মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। | গোলা ৪৮ ইসি | ||
মোচার কীড়া |
কীড়া ভূট্টার কচি মোচা আক্রমন করে এবং সিল্ক নষ্ট করে। আক্রান্ত মোচা পচে যায়।
|
সবিক্রন ৪২৫ ইসি (৪০০ এমএল/একর)- প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ এমএল সবিক্রন মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে। পোকার আক্রমনের প্রকোপ বেশী হলে একই মাত্রায় ১৫ দিন পর পর সেপ্র করুন। |
সবিক্রন ৪২৫ ইসি |
উইপোকা |
সাধারণত গাছে মোচা আসার পর উইপোকার আক্রমন হয়। উইপোকা গাছের গোড়ার দিকের মাটি উপরে তুলে ফলে, এর ফলে গাছ শুকিয়ে মারা যায়। | একতারা ২৫ ডব্লিউজি- ২.৫ গ্রাম একতারা ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করুন। |
একতারা ২৫ ডব্লিউজি |
টিডো ২০ এস এল; ১০ এম এল/১০ লি. পানি | টিডো ২০ এস এল |
- সময়ঃ দানার জন্য ভুট্টা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মোচা চক্চক্ খড়ের রং ধারণ করলে এবং পাতা কিছুটা হলদে হলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। এ অবস্থায় মোচা থেকে ছড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যাবে। ভুট্টা গাছের ৭৫-৮০% মোচা পরিপক্ক হলে ভুট্টা সংগ্রহ করা যাবে।
- পদ্ধতিঃ এ কাজের জন্য একটি বাঁশের সূঁচালো কাঠি দিয়ে মোচার আগার দিকের খোসাগুলিকে তিন ভাগ করে নিতে হয়। তারপর হাত দিয়ে টেনে সম্পূর্ণ খোসাগুলিকে মোচার গোড়া পর্যন্ত ভাগ করে এবং মোচাটি গোড়া থেকে ভেঙ্গে খুব সহজেই সংগ্রহ করা হয়। এর পর মোচাগুলো রোদে শুকানো হয়।
১২. পরিবহণ ব্যবস্থাঃ
- পরিবহণ পদ্ধতিঃ পাটের তৈরী চটের বস্তা / পারফরেটেড প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পরিবহন করা হয়।
- পরিবহণের মাধ্যমঃ চটের বস্তায় ভরে ভ্যান / গরুগাড়ী / পিক-আপ / ট্রাকের মাধমে পরিবহন করে হয়।
- মাড়াই পদ্ধতিঃ সংগৃহীত মোচা পরপর ৩-৪ দিন খুব ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। মাটি বা পাকা মেঝের উপর বাঁশের চাটাই, ত্রিপল বা চাঁদর বিছিয়ে তার উপর মোচাগুলি রোদে দিতে হয়। মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে মোচা থেকে দানা ছাড়ানো যায়। মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে অনেক সহজেই এবং তাড়াতাড়ি ভুট্টার দানা ছাড়ানো যায়।
১৪. প্যাকেজিং:
- প্যাকেজিংপদ্ধতিঃ পাটের তৈরী চটের বস্তা / পারফরটেড প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে প্যাকেজিং করা যেতে পারে। এর পর তা সংরক্ষণ বা পরিবহন কাতা হয়। ভুট্টা প্যাকেজিং এর জন্য ৬০ কেজি চটের বস্তা ব্যবহার করা ভালো।
১৫. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
- স্বল্প পরিসরেঃ ভুট্টা ভাল করে শুকানোর পর বস্তায় ভরে রাখতে হবে। এর পর ঠান্ড, শুষ্ক জায়গায় মাচার উপরে চটের বস্তার ভিতরে ০.০৫ মিমি পুরু পলিথিন দ্বারা ভুট্টার দানা সংরক্ষণ করা হয়।
- বৃহৎ পরিসরে(উৎস): ভুট্টার দানা বা বীজ মোচা থেকে ছাড়ানোর পর রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। সাধারণত: ভুট্টার বীজ শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ কমিয়ে ১০-১২% (অর্থাৎ দাঁত দিয়ে কামর দিলে যদি কট শব্দ হয়) এর মধ্যে আনতে হয়। অনেক সময় গুদামে চটের বস্তার ভিতরে ০.০৫ মিমি পুরু পলিথিন দ্বারা ভুট্টার দানা সংরক্ষণ করা হয়।
১৬. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ
- বাজার ব্যবস্থাঃ পআর্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন। অথবা কোনো আড়তদার / বড় পাইকার / এর কাছে ভিট্টা বিক্রয় করতে পারেন।
১৭. ভুট্টা বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ পদ্ধতিঃ মাঠ থেকে শস্য নিয়ে আসার পর বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ। বাল্ক বায়ার বা বৃহৎ ক্রেতার চাহিদা অনুসারে কৃষিজাত শস্য/পণ্য বিক্রয় করতে হলে মান নিয়ন্ত্রনের স্বার্থে বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ করতে হবে। ভুট্টা শ্রেনীকরণের ক্ষেত্রে নিম্নে দেয়া নির্দেশকগুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে।
নূন্যতম নির্দেশকঃ
|
||
গ্রেড “এ”১। আর্দ্রতাঃ সর্বোচ্চ ১২-১৩%২। রং: জাত অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যগত রং
৩। আকার- আকৃতিঃ একই ধরনের পুষ্ট বা মোটা দানা ৪। রোগবালাই এবং কীটপতঙ্গঃ পোকা ও রোগ মুক্ত ( ছত্রাক মুক্ত ) ৫। ত্রুটির ধরণঃ ভাঙ্গা , টুকরা এবং অন্য কোন জাতের বা ধরনের দানার মিশ্রণ মুক্ত ৬। বিষাক্ততাঃ আফ্লোটক্সিন মুক্ত ৭। অপ্রয়োজনীয় উপাদানঃ অপ্রয়োজনীয় উপাদান মুক্ত
|
গ্রেড “বি”১। আর্দ্রতাঃ সর্বোচ্চ ১৩-১৪%২। রং: জাত অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যগত রং
৩। আকার- আকৃতিঃ একই ধরনের পুষ্ট বা মোটা দানা ৪। রোগবালাই এবং কীটপতঙ্গঃ পোকা ও রোগ মুক্ত ( ছত্রাক মুক্ত ) ৫। ত্রুটির ধরণঃ ০.৫% এর কম ভাঙ্গা , টুকরা এবং অন্য কোন জাতের বা ধরনের দানার মিশ্রণ যুক্ত ৬। বিষাক্ততাঃ আফ্লোটক্সিন মুক্ত ৭। অপ্রয়োজনীয় উপাদানঃ সর্বোচ্চ ০.৫%-১%
|
গ্রেড “সি”১। আর্দ্রতাঃ সর্বোচ্চ ১৫%২। রং: জাত অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যগত রং
৩। আকার- আকৃতিঃ একই ধরনের নয় , মাঝারি আকারের দানা ৪। রোগবালাই এবং কীটপতঙ্গঃ পোকা ও রোগ মুক্ত ( ছত্রাক সর্বোচ্চ ২%) ৫। ত্রুটির ধরণঃ ১% এর কম ভাঙ্গা , টুকরা এবং অন্য কোন জাতের বা ধরনের দানার মিশ্রণ যুক্ত ৬। বিষাক্ততাঃ আফ্লোটক্সিন মুক্ত ৭। অপ্রয়োজনীয় উপাদানঃ সর্বোচ্চ ১% |
১৮. তথ্যের উৎসঃ AIS (www.ais.gov.bd), কৃষি প্রযুক্তি হাত বই, খন্ড-১, BARI, Edt. April, 2000 pp: 30-70, infokosh.bangladesh.gov.bd, কৃষি পণ্যের গ্রেডিং নির্দেশিকা,
২০. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪
আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com