কুমড়া গাছের ফলন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম পরাগায়ন | ই-কৃষক

কুমড়া গাছের ফলন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম পরাগায়ন

Image may contain: one or more people, outdoor and nature

লাউ আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। ভাল ভাবে লাউ ধরাতে হলে কৃত্রিমভাবে পরাগায়ন করতেই হবে। লাউ গাছের ফুল একলিঙ্গ এবং গাছটি ভিন্নবাসী উদ্ভিদ । অর্থাৎ এসব গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল পৃথক পৃথক হয়। একই বয়সের পুরুষ ও স্ত্রী ফুল কাছাকাছি থাকলে এবং বাতাসের বেগ প্রবল হলে কিছু পরাগায়নের সম্ভাবনা থাকে তবে তা একেবারেই নগন্য। তাই পোকা-মাকড় বা মৌমাছি বেশি না থাকলে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল পরাগায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরাগায়ন সমভব হয় না।লাউয়ের ফুল সাদা বলে মৌমাছি বা পোকামাকড় থাকলেও লাউ ফুলে পরিভ্রমণ কম করে। এ জন্য লাউ ধরে না। লাউয়ের পুরুষ ও স্ত্রী ফুল পৃথক হওয়ায় কৃত্রিমভাবে পুরুষ ফুল এনে স্ত্রী ফুলের পরাগায়ন ঘটাতে হয়। এ জন্য পুরুষ ও স্ত্রী ফুল চেনা প্রয়োজন। পুরুষ ফুল ফুলের বোঁটার অগ্রভাগে ফুটে। পাপড়ির গোড়ায় গর্ভাশয় থাকে না। পাপড়ির মাঝখান দিয়ে বেড়ে যাওয়া পুংদণ্ডে পাউডারের গুঁড়ার মত পুংরেণু থাকে। পুংদণ্ডের শীর্ষভাগে গর্ভমুণ্ড থাকে না। শুধু বোঁটার অগ্রভাগে ফুটে থাকা ফুলগুলো পুরুষ ফুল। আর ক্ষুদ্রাকৃতি লাউয়ের মত গর্ভাশয়ধারী ফুলগুলো স্ত্রী ফুল। গর্ভাশয়ের ওপর থেকে পাপড়ি থাকবে। পুংদণ্ড থাকবে না। গর্ভদণ্ড ছোট ও মোটা। গর্ভদণ্ডে আঠালো পদার্থ থাকবে। পুংরেণু এখানে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আঠায় আটকে যায়। অনেকেরই ধারণা, শুধু স্ত্রী ফুলের এই গর্ভাশয় থাকলেই লাউ ধরবে। এ ধারনাটা ভুল। গর্ভমুণ্ডে পুরুষ ফুলের পুংরেণু না লাগা পর্যন্ত লাউ ধরবে না। পুরুষ ফুল থেকে ফল হয় না ফল হয় স্ত্রী ফুল থেকে , তাই মনে রাখবেন পুরুষ ফুল ছিড়ে এনে স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন করতে হবে। স্ত্রী ফুল ছেড়া যাবেনা। তাহলেত ফলই হবে না।

কুমড়া জাতীয় ফুলের মধ্যে একমাত্র লাউয়ের ফুলই হলো সাদা , অন্য সব ফুল হলুদ রঙের। মোটামুটি সব সাদা ফুল সন্ধার আগে ফুটে। আগের দিনের সন্ধা হওয়ার ১ ঘন্টা পূর্ব থেকে পরের দিনের সকাল ৮টা পর্যন্ত লাউ ফুলের পরাগ রেনু জীবিত থাকে। এই সময়ের ভিতরে আপনাকে পরাগায়ন করতে হবে। আবহাওয়া ও তাপের বিভিন্নতার কারণে ফুলের পরাগ রেনুর জীবন কালের সময়ে কম বেশি হতে পারে। মনে রাখা দরকার যে পরাগায়নের জন্য একই দিনে ফোটা পুরুষ ও স্ত্রী ফুল নির্বাচন করতে হবে।প্রতিদিন উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সদ্যফোটা পুরুষ ফুল রেণুসমৃদ্ধ পুংকেশর রেখে পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলতে হয়। এরপর সদ্যফোটা স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে পুরুষ ফুলের পুংরেণু হালকাভাবে সামান্য একটু ঘষে দিতে হয়। এতে স্ত্রী ফুল নিষিক্ত হয়ে ফল ধরবে । একটি পুরুষ ফুলের পুংকেশর দিয়ে ৬ থেকে ৭টি স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে পরাগায়ন করা যায়। আপনি একটি পুরুষ ফুল দিয়ে একটি স্ত্রী ফুল নিষিক্ত করুন। এতে শতকরা ৯৯টি স্ত্রী ফুলে ফল ধরবে।

source: Modern Agriculture Facebook Page

Leave a Reply