বাঁধাকপি | ই-কৃষক

বাঁধাকপি

১. ফসলঃ বাঁধাকপি
cabbage_1
২. জাতঃ

উচ্চ ফলনশীল জাতঃ উচ্চ ফলনশীল জাত গুলো হলো-

জাত

কোম্পানীর নাম

বীজ বোপনের সময়

বারি বাঁধাকপি ২ (অগ্রদূত)

BARI

হাইব্রীড বাধাকপি ঈশা খাঁ

আফতাব বহুমুখী ফার্মস লি: (AMFL)

জুলাই থেকে জানুয়ারী মাস

হাইব্রীড বাধাকপি ব্রোনকো

বেজো শীতল সীডস (বাংলাদেশ) লি: (BCSBL)

সারা বছর

হাইব্রীড বাধাকপি সুপার আরলী, আরলী স্পেশাল, মুন স্টোন

নামধারী মালিক সীডস (NMS)

হাইব্রীড বাধাকপি একসপ্রেসো এফ-১, লাল বাধাকিপ

পাশাপাশি সীড কো:

মধ্য শ্রাবণ-মধ্য কার্তিক

হাইব্রীড বাধাকপি সামার ওয়ারিয়র, গ্রীন-৬২১,৬৬২, লরেলস, গ্রীন ষ্টার

ইউনাইটেড সীড ষ্টোর (USS)

জৈষ্ঠ থেকে আশ্বিনের মধ্যে ফলন ভালো হয় (সামার ওয়ারিয়র)

হাইব্রীড বাধাকপি জি এক্সপ্রেস

এনার্জি প্যাক এগ্রো লি:

বপনের সময় আগষ্ট থেকে সেপ্টেম্বর

হাইব্রীড বাধাকপি কে.ই-৭৩৯, কে.এ-৭৮০

ব্র্যাক সীড

 

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ অত্যধিক বেলে মাটি ছাড়া যে কোন ধরনের মাটিতে এটি জন্মে। বেলে দোঁআশ থেকে পলি দোঁআশ মাটি এ ফসলের জন্য উপযোগী।
৪. বীজঃ

ভালো বীজ নির্বাচনঃ  ভালো বীজের বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নোরুপ-

  • রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও চিটামুক্ত হতে হবে।
  • সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

বীজের হারঃ রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব ২৫ ইঞ্চি  এবং প্রতি সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব ১৮ -২০ ইঞ্চি দিলে ভাল হয়। এ হিসেবে প্রতি শতকে ১৫০টির মত চারার প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ জাত ভেদে প্রতি শতকে ২-৩ গ্রাম বীজের দরকার হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

বীজ শোধনঃ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম ভিটাভেক্স-২ নামক ছত্রাকনাশক ও বীজ পাত্রে ঢেলে এমনভাবে ঝাকাতে হবে যেন বীজের গায়ে ছত্রাক নাশক ভালভাবে লেগে যায়। শোধনকৃত বীজ পাত্র থেকে বের করার পর ছায়াতে শুকিয়ে নিতে হবে। বীজ বপনের ছয় ঘন্টা আগে বীজ শোধন করা ভাল।

৫. জমি তৈরীঃ

জমি চাষঃ গভীর ভাবে ৪-৫টি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হবে।

বীজ তলা তৈরীঃ বাঁধা কপির চারা বীজতলায় উৎপাদন করে জমিতে লাগানো হয়। বীজতলার আকার ১ মিটার পাশে ও লম্বায় ৩ মিটার হওয়া উচিত। সমপরিমাণ বালি, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে বীজতলা তৈরি করতে হয়। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের আগে ৭/৮ দিন পূর্বে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। পরে চারা ঠিকমত না বাড়লে প্রতি বীজতলায় প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দেয়া ভাল।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

বপন ও রোপন এর সময়ঃ

সময়

বীজ বপনের সময় চারা  রোপণের সময়

আগাম

শ্রাবণ-ভাদ্র        ভাদ্র-আশ্বিন

মধ্যম

আশ্বিন-কার্তিক

          কার্তিক-আগ্রহায়ণ

নাবি অগ্রহায়ণ-মধ্য পৌষ

      পৌষ-মধ্য মাঘ

তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

রোপনঃ বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিন পর বা ৫/৬টি পাতা বিশিষ্ট ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা  চারা সাধারণতঃ বিকেল বেলা জমিতে রোপণ করতে হয়। তবে সুস’ ও সবল হলে চারা এক-দেড় মাস বয়সের চারা রোপণ করা যায়।

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের পরিমাণঃ প্রতি শতকে গোবর ১২৫ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৮০০ গ্রাম, এমওপি ৬৫০ গ্রাম সার দিতে হবে।

সার প্রয়োগের সময়ঃ সম্পূর্ণ গোবর ও টিএসপি সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া  ও এমওপি সার ২ কিসি-তে চারা রোপণের ২০-২৫ দিন পর একবার এবং ৩০-৪০ দিন পর আর একবার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

৮. আগাছা দমনঃ

সময়ঃ জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

দমন পদ্ধতিঃ সার দেয়ার আগে মাটির আস্তর ভেঙ্গে দিয়ে নিড়ানী দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে।

 

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ
1306439207432

সেচের পরিমাণঃ  চারা রোপনের পর জমির আস্তরণ ভেঙ্গে মাটি ঝুরঝুরে রাখতে হবে ও প্রয়োজন অনুসারে সেচ দিতে হবে।

নিষ্কাশনঃ নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা।

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ
chincf1_zoom

রোগের নাম

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

পাতার দাগ পড়া রোগ

সূষম সার ও সেচের ব্যবস্থা, শস্য পর্যায় অবলম্বন ও সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে চারা রোপণ করা। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় স্কোর ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ৫ এমএল হারে ২ সপ্তাহ পর পর সেপ্র করা। স্কোর ২৫০ ইসি

কালো পচা

বীজ বপনের পূর্বে ৫০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার গরম পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে বীজ শোধন করে নেয়া। সকালে সেচ দিন তবে ঝরণা দিয়ে সেচ দেয়া যাবে না।  আগাছা পরিস্কার রাখুন এবং অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা।

চারা ধ্বসা রোগ

আক্রান্ত জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে। ১০০-১২৫ কেজি/একর হারে সরিষা খৈল প্রয়োগ করেও সুফল পাওয়া যায়। ঢলে পড়া চারা দেখা মাত্রই তুলে তা ধ্বংস করতে হবে।পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার ও পরিমিত ইউরিয়া ব্যবহার করা। জমি সব সময় আর্দ্র বা ভিজা না রাখা এবং পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখা। শোধনকৃত বীজ বপন করা এবং রিডোমিল গোল্ড ডব্লিউজি (প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে) ব্যবহার করে বীজতলার মাটি শোধন করা যায়। রিডোমিল গোল্ড ডব্লিউজি

পোকামাকড়ের নাম

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

বাঁধাকপির মাথা খেকো লেদা পোকা সম্ভব হলে হাত দ্বারা কীড়া ও ডিম সংগ্রহ করে ধ্বংস করা। ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি- প্রতি লিটার পানিতে ৫ এমএল হারে মিশিয়ে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে সেপ্র করুন। ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি
বাঁধাকপরি সরুই পোকা ফসল সংগ্রহের পর ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলা এবং পরে জমি ভাল করে চাষ করা। কীড়া এবং ডিম সম্ভব হলে হাত দিয়ে পিষে মারা।প্রোক্লেম ৫ এসজি-১ গ্রাম/লিটার পানি, প্রয়োজনীয় পানির সাথে আনুপাতিক হারে প্রোক্লেম মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করুন এবং প্রয়োজনে ৫-৭ দিন অন্তর পুনরায় সেপ্র করতে হবে। প্রোক্লেম ৫ এসজি-১
কাটুই পোকা ক্যারাটে, মাত্রাঃ একর প্রতি ৩০০ এমএল,প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল ক্যারাটে মিশিয়ে সারির উপর দিয়ে গাছের গোড়া বরাবর ভালভাবে মাটি ভিজিয়ে দিন। সেপ্র শেষে গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিন। ক্যারাটে
ফুরাডান ৫ জি, ৮ কেজি / একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। ফুরাডান ৫ জি

 

১২. পরিবহণ ব্যবস্থাঃসময়ঃ বাঁধাকপির মাথা শক্ত হয়ে উঠলেই সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। সাধারণত: চারা রোপণের ৬০-৯০ দিন পর বাঁধাকপি সংগ্রহ করা যায়।

পরিবহণ পদ্ধতিঃ বাধা কপি পাতাসহ সংগ্রহের পর পাটের ছালা বা ঝুড়ির মাধ্যমে পরিবহন করা যেতে পারে।

পরিবহণের মাধ্যমঃ সাধারনত ঝুড়ি / ডালিতে করে পরিবহন করা হয় তবে বেশি আকারে হলে পিক-আপ / ট্রাকের মাধমেও পরিবহন করে হয়।

১৩. প্যাকেজিং:

প্যাকেজিং পদ্ধতিঃ পাতা সহ চটের ছালা বা বড় ঝুড়ির সাহায্যে প্যাকেজিং করা যেতে পারে।

১৪. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
1306438628229

স্বল্প পরিসরেঃ ৪-৬ দিন সংরক্ষণ করা যায়।

১৫. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

বাজার ব্যবস্থাঃ পার্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন।

১৬. তথ্যের উৎসঃ  AIS, BARI, ekrishok.com, krishitey.com, ruralinfobd.com

১৭. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

Leave a Reply