Author Archives: s.alam

শশা

Cucumber

১. ফসলঃ শশা

শশা বাংলাদেশে ব্যাপক ভাবে চাষ হচ্ছে এবং সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায়। রংপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও পাবনা, জেলায় শশার উৎপাদন সবচেয়ে বেশী।

২. জাতঃ

বর্তমানে দেশে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে বেশ কিছু উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে, নিচে তা উল্লেখ করা হলো-

জাত

বীজ বপনের সময়

কোম্পানী

হাইব্রীড শশা গ্রিন বয়

মার্চ থেকে অক্টোবর

আফতাব বহুমুখী ফার্মস লি: (AMFL)

হাইব্রীড শশা আলভী, (উফসী-গ্রীন কিং, শিলা, বারমসী)

ফেব্রুয়ারী থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত

লালতীর

হাইব্রীড শশা আদুরী, আদুরী এক্সট্রাগ্রীন, আদুরী গ্রীন লাইফ

সারা বছর

মল্লিকা সীড কো. (MSC)

হাইব্রীড শশা তিতুমির

ফাল্গুন থেকে আশ্বিন

মল্লিকা সীড কো. (MSC)

হাইব্রীড শশা বিএসএস-৬৪৭

সারা বছর

বেজো শীতল সীডস (বাংলাদেশ) লি: (BCSBL)

হাইব্রীড শশা হিমেল, কিরিণ, নন্দিনী, গ্রীন লাইন (তাকী জাপান)

শীত কাল সারা বছর

ইউনাইটেড সীড ষ্টোর (USS)

হাইব্রীড শশা জি-০০৩, জোতি (উফশী)

ফলন ভালো বপনের সময় ফেব্রুয়ারী-সেপ্টেম্বর

এনার্জি প্যাক এগ্রো লি:

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ বন্যামুক্ত দো-আঁশ ও এঁটেল দো-আঁশ মাটিতে শশা ভাল হয়। শশা পানিবদ্ধতা সহ্য করতে পারেনা।

৪. বীজঃ

ভালো বীজ নির্বাচনঃ ভালো বীজের বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নোরুপ-

রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও চিটামুক্ত হতে হবে।

সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

বীজের হারঃ সাধারণ ভাবে প্রতি শতকে ১.৫ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

বীজ শোধনঃ নার্সারিতে চারা তৈরির পূর্বে ভিটাভেক্স ২০০ / টিলথ অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করে বীজ শোধন করা ভাল।

৫. জমি তৈরীঃ

জমি চাষঃ প্রথমে জমি ভাল করে আড়াআড়িভাবে চাষ ও মই দিয়ে সমতল করে নিতে হয় এবং সেচ দেবার এবং অতিরিক্ত পানি সুনিষ্কাশনের সুবিধার্থে নির্দিষ্ট দূরত্বে নালা কেটে কয়েক ভাগ করে নিতে হবে।

বীজ তলা তৈরীঃ নার্সারী বা বীজ তলায় চার তৈরী করে জমিতে লাগানো উত্তম। এক্ষেত্রে ৫০:৫০ অনুপাতে পচা গোবর বা কম্পোষ্ট ও মাটি একত্রে মিশিয়ে ৬ x ৮ ইঞ্চি সাইজের পলিথিনের ব্যাগে ভরতে হবে। প্রতি ব্যাগে ২টি করে বীজ বপন করতে হবে।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

বীজ বপন এর সময়ঃ সাধারন ভাবে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শশার বীজ বপন করা ভাল। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

লাইনে রোপনঃ সাধারণত মাদা থেকে মাদার দূরত্ব ৫ ফুট আর লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৪-৬ ফুট হওয়া ভালো।

রোপনঃ চারার বয়স ১৬-২০ দিন হলে পলিব্যাগ সরিয়ে মাদায় চারা রোপণ করতে হবে। প্রতি ব্যাগে ২টি চারা থাকলে মাঠে লাগানোর ৬-৭ দিন পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল চারাটি তুলে প্রতি মাদায় ১ টি করে চারা রাখতে হবে।

মাদা তৈরীঃ ৬-৭ ফুট দূরত্বে ১ ফুট গভীর ও ১ ফুট ব্যাসের গর্ত / মাদা তৈরী করতে হবে এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ১.৫-২ মি.।

 

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

 

মোট পরিমাণ (শতাংশ প্রতি)

জমি তৈরির সময় (শতাংশ প্রতি)

চারা রোপণের ৫-৬
দিন পূর্বে (মাদা প্রতি)

চারা রোপণের ১০-১৫
দিন পর(মাদা প্রতি)

ফুল আসার পর (মাদা প্রতি)

চারা রোপনের ৫০-৫৫
দিন পর (মাদা প্রতি)

ফল ধরার সময় (২ বার ১৫ দিন অন্তর) (মাদা প্রতি)

পঁচাগোবর

৬০ কেজি

৩০ কেজি

২ কেজি

-

-

-

-

টিএসপি

৬০০ গ্রাম

২০০ গ্রাম

১২ গ্রাম

৫ গ্রাম

-

-

-

ইউরিয়া

৭০০ গ্রাম

১০০ গ্রাম

১০ গ্রাম

৫ গ্রাম

১৫ গ্রাম

১৫ গ্রাম

৫+৫ গ্রাম, ১০+১০ গ্রাম

এমপি

৭০০ গ্রাম

২০০ গ্রাম

২০ গ্রাম

-

-

-

-

জিপসাম

৪০০ গ্রাম

৪০০ গ্রাম

-

-

-

-

-

দস্তাসার

৫০ গ্রাম

৫০ গ্রাম

-

-

-

-

-

বোরাক্স

৪০ গ্রাম

৪০ গ্রাম

-

-

-

-

-

 

৮. আগাছা দমনঃ

সময়ঃ জমি সবসময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

দমন পদ্ধতিঃ শসার শিকড় মাটির গভীরে যায় না তাই হালকাভাবে নিড়ানির সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ

সেচের সময়ঃ গ্রীষ্মকালে ৪/৫ দিন অন্তর সেচ দেওয়া আবশ্যক। সেচের সুবিধার জন্য ২ টি বেডের মধ্যে ১২-১৫ ইঞ্চি নালা রাখা উচিৎ।

সেচের পরিমাণঃ কদাল দিয়ে মাটি আলগা করে পরিমিত পরিমাণে সেচ দিতে হবে।

নিষ্কাশনঃ শসার জমিতে পানি দাঁড়ালে, গাছ হলদে হয়ে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি বাঁধা প্রাপ্ত হয়ে মাদা ও মাদার চার পাশের মাটি শুকায়ে গেলে। তাই কোন অবস্তাতেই গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকতে দেয়া যাবেনা।

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ
cucumber disease

রোগের নাম

 

 

লক্ষন

প্রতিকার

বালাইনাশকের নাম

সাদা গুড়া রোগ বা পাউডারী মিল্ডিউ

পাতার উভয় পাশে প্রথমে সাদা সাদা পাউডারের মত দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে দাগগুলো বড় ও বাদামী হয়ে শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত লতা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়, ফল ঝরে পড়ে এমনকি সম্পূর্ন গাছ মরে যায়। ১. জমির আশে পাশে কুমড়া জাতীয় অন্য যে কোন রকমের সবজি চাষ থেকে বিরত থাকা। ২. আক্রান্ত পাতা ও গাছ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলা। ৩. থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি- প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম থিয়োভিট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ১৫ দিন পর পর সেপ্র করুন।

থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি

এমকোজিম ৫০ ডবলিউপি ৭০-৭৫ এম.এল / বিঘতে(৩৩ শতাংশ) ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

এমকোজিম ৫০ ডবলিউপি

হেকোনাজল ৫ ই সি ২০০ মি লি প্রতি একরে (১ মিলি/ ১ লিটার পানিতে) স্প্রে করতে হবে।

হেকোনাজল ৫ ই সি

ডাউনি মিল্ডিউ এর জন্য গাছের পাতা ধূসর হয়ে যায়। পাতায় সাদা পাউডার দেখা যায় ১. থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি- প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম থিয়োভিট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ১৫ দিন পর পর সেপ্র করুন।

থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি

মোজাইক ভাইরাস

কচি চারার বীজপত্র হলুদ হয় এবং চারা নেতিয়ে পড়ে। কচি ডগা জটলার মত দেখায়।  আক্রান্ত পাতা ছোট, বিবর্ণ, বিকৃত ও নীচের দিকে কুঁকড়ানো হয় এবং শিরা-উপশিরাও হলুদ হয়ে যায়। ১. আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংস করতে হবে।২. ক্ষেত আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।৩. বাহক পোকা সাদা মাছি দমন করতে হবে (একতরা ২৫ ডব্লিউজি- ২.৫ গ্রাম একতারা প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে)।

একতরা ২৫ ডব্লিউজি

গেমোসিস

গোড়ার কান্ডে পুঁজ বের হয়, কালো দাগ পড়ে এবং অবশেষে কান্ড পচে গাছ মারা যায়। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কুপ্রাভিট মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর গাছের গোড়ায় স্প্রে  করতে হবে।

কুপ্রাভিট

পোকামাকড়ের নাম

লক্ষন

প্রতিকার

কীটনাশকের নাম

মাছি পোকা

১. স্ত্রী মাছি কচি ফলে ডিম পাড়ে। ২. ডিম ফুটে কীড়াগুলো বরে হয়ে ফলের শাস খায় এবং ফল পচে যায় ও অকালে ঝরে পড়ে। ১. প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি- আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে প্লেনাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।২. সবিক্রন ৪২৫ ইসি- প্রতি লিটার পানিতে ২ এমএল হারে মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করুন।

প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি,

সবিক্রন ৪২৫ ইসি

পামকিন বিটল

র্পূণাঙ্গ পোকা চারা গাছের পাতা ছিদ্র করে খায়।  কীড়া গাছের গোড়ায় মাটিতে বাস করে এবং গাছের শিকড়ের ক্ষতি করে। ১. আক্রান্ত গাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ পোকা হাতে ধরে মেরে ফেলা।  ২০-২৫  দিন চারা মশারির জাল দিয়ে ঢেকে রাখা।২. কীড়া দমনের জন্য প্রতি গাছের গোড়ায় ২.৫ গ্রাম  ফুরাডান ৫ জি, মিশিয়ে দিয়ে তারপর সেচ দিতে হবে।৩. সবিক্রন ৪২৫ ইসি- প্রতি লিটার পানিতে ২ এমএল হারে মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করুন।

সবিক্রন ৪২৫ ইসি,

টিডো ২০ এস.এল-৫০-৫৫ এম এল / একর জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

টিডো ২০ এস.এল

জাব পোকা পূণবয়স্ক ও নিম্ফ উভয়েই পাতা, কচি কান্ড, ফুল ও ফলের কুঁড়ি, বোঁটা এবং ফলের কচি অংশের রস চুষে খায়। ফলে গাছ প্রথমে দুর্বল ও পরে হলুদ হয়ে যায়। গাছে ফুল ও ফল অবস্থায় আক্রমণ হলে ফুলের কুঁড়ি ও কচি ফল ঝরে পড়ে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে কচি ডগা মরে যায়। ১. আক্রান্ত পাতা, ডগা, ফুল পোকাসহ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।২. একতারা ২৫ ডব্লিউজি- আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে ২.৫ গ্রাম একতারা প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালভাব গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।৩. প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি- আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে প্লেনাম মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

একতারা ২৫ ডব্লিউজি,  প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি

টিডো ২০ এস.এল-১০০-১০৫ এম এল / একর জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

টিডো ২০ এস.এল

ফাস্টাক ২ ই সি, ২০২ মি লি ১ একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে(১ এম এল/১ লি. পানি)

ফাস্টাক ২ ই সি

১১. বিশেষ পরিচর্যাঃ

বাউনি দেওয়া
Cucumber_Khiaudon_B.86164456

তারের নেট অথবা সুতলী অথবা বাশের কঞ্চির সাহায্যে বাউনি দিতে হবে। বাউনি/মাচা নিকাশ নালার উভয় পাশের ২ বেড বরাবর ১টি দিলে চলবে এবং মাঝে মাঝে মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।

১২. ফসল কাটাঃ
130849753

সময়ঃ শসার জাত ভেদে বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল ফোটার ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফল সবজি হিসাবে আহরণের উপযুক্ত হয়। কচি ও পুষ্ট উভয় অবস্থায়ই শসা তোলা হয়। ফল ধরতে আরম্ভ করলে ৩/৪ দিন অন্তর শসা তোলা দরকার।

পদ্ধতিঃ সামান্য বোটা সহ কেটে বা ফলের সঙ্গে যুক্ত স্থানে বোটা ভেঙ্গে শসা তোলা হয়।

১৩. পরিবহণ ব্যবস্থাঃ

পরিবহনের সময়ঃ ফসল সংগ্রহের পর প্রথমে ডালিতে কলা পাতা বিছিয়ে তার উপর শশা সাজায়ে রাখতে হবে যাতে কোনো দাগ না পরে।

পরিবহণের মাধ্যমঃ সাধারনত ঝুড়ি / ডালিতে করে পরিবহন করা হয় তবে বেশি আকারে হলে পিক-আপ / ট্রাকের মাধমেও পরিবহন করে হয়।

১৪. প্যাকেজিং:

প্যাকেজিংপদ্ধতিঃ প্যাকেজিং এর জন্য ফুড রেপিং পেপার, পেরফোরেটেড পেপার, ঝুড়ি, খাঁচা, প্লাস্টিক কেস, ব্যবহার করা যেতে পারে। শশা প্যাকেজিং এর জন্য ২১ কেজি প্লাস্টিক ঝুড়ি ব্যবহার করা ভালো।

১৫. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ

স্বল্প পরিসরেঃ শীতল পরিবেশে ৩-৫ দিন সংরক্ষণ করা যায়।

১৬. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

বাজার ব্যবস্থাঃ পার্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন।

১৭. শশা বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ পদ্ধতিঃ মাঠ থেকে শস্য নিয়ে আসার পর বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ। বাল্ক বায়ার বা বৃহৎ ক্রেতার চাহিদা অনুসারে কৃষিজাত শস্য/পণ্য বিক্রয় করতে হলে মান নিয়ন্ত্রনের স্বার্থে বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ করতে হবে। শশা শ্রেনীকরণের ক্ষেত্রে নিম্নে দেয়া নির্দেশক গুলোর প্রতি জত্নবান হতে হবে।

১৮. তথ্যের উৎসঃ AIS (www.ais.gov.bd), সবজি উৎপাদন প্রশিক্ষন ম্যানুয়াল, BARI, krishitey.com, krishibangla.com, কৃষি পণ্যের গ্রেডিং নির্দেশিকা,

২০. সর্বশেষ সংযোজন (তারিখ): জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

 

বাঁধাকপি

১. ফসলঃ বাঁধাকপি
cabbage_1
২. জাতঃ

উচ্চ ফলনশীল জাতঃ উচ্চ ফলনশীল জাত গুলো হলো-

জাত

কোম্পানীর নাম

বীজ বোপনের সময়

বারি বাঁধাকপি ২ (অগ্রদূত)

BARI

হাইব্রীড বাধাকপি ঈশা খাঁ

আফতাব বহুমুখী ফার্মস লি: (AMFL)

জুলাই থেকে জানুয়ারী মাস

হাইব্রীড বাধাকপি ব্রোনকো

বেজো শীতল সীডস (বাংলাদেশ) লি: (BCSBL)

সারা বছর

হাইব্রীড বাধাকপি সুপার আরলী, আরলী স্পেশাল, মুন স্টোন

নামধারী মালিক সীডস (NMS)

হাইব্রীড বাধাকপি একসপ্রেসো এফ-১, লাল বাধাকিপ

পাশাপাশি সীড কো:

মধ্য শ্রাবণ-মধ্য কার্তিক

হাইব্রীড বাধাকপি সামার ওয়ারিয়র, গ্রীন-৬২১,৬৬২, লরেলস, গ্রীন ষ্টার

ইউনাইটেড সীড ষ্টোর (USS)

জৈষ্ঠ থেকে আশ্বিনের মধ্যে ফলন ভালো হয় (সামার ওয়ারিয়র)

হাইব্রীড বাধাকপি জি এক্সপ্রেস

এনার্জি প্যাক এগ্রো লি:

বপনের সময় আগষ্ট থেকে সেপ্টেম্বর

হাইব্রীড বাধাকপি কে.ই-৭৩৯, কে.এ-৭৮০

ব্র্যাক সীড

 

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ অত্যধিক বেলে মাটি ছাড়া যে কোন ধরনের মাটিতে এটি জন্মে। বেলে দোঁআশ থেকে পলি দোঁআশ মাটি এ ফসলের জন্য উপযোগী।
৪. বীজঃ

ভালো বীজ নির্বাচনঃ  ভালো বীজের বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নোরুপ-

  • রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও চিটামুক্ত হতে হবে।
  • সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

বীজের হারঃ রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব ২৫ ইঞ্চি  এবং প্রতি সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব ১৮ -২০ ইঞ্চি দিলে ভাল হয়। এ হিসেবে প্রতি শতকে ১৫০টির মত চারার প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ জাত ভেদে প্রতি শতকে ২-৩ গ্রাম বীজের দরকার হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

বীজ শোধনঃ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম ভিটাভেক্স-২ নামক ছত্রাকনাশক ও বীজ পাত্রে ঢেলে এমনভাবে ঝাকাতে হবে যেন বীজের গায়ে ছত্রাক নাশক ভালভাবে লেগে যায়। শোধনকৃত বীজ পাত্র থেকে বের করার পর ছায়াতে শুকিয়ে নিতে হবে। বীজ বপনের ছয় ঘন্টা আগে বীজ শোধন করা ভাল।

৫. জমি তৈরীঃ

জমি চাষঃ গভীর ভাবে ৪-৫টি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হবে।

বীজ তলা তৈরীঃ বাঁধা কপির চারা বীজতলায় উৎপাদন করে জমিতে লাগানো হয়। বীজতলার আকার ১ মিটার পাশে ও লম্বায় ৩ মিটার হওয়া উচিত। সমপরিমাণ বালি, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে বীজতলা তৈরি করতে হয়। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের আগে ৭/৮ দিন পূর্বে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। পরে চারা ঠিকমত না বাড়লে প্রতি বীজতলায় প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দেয়া ভাল।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

বপন ও রোপন এর সময়ঃ

সময়

বীজ বপনের সময় চারা  রোপণের সময়

আগাম

শ্রাবণ-ভাদ্র        ভাদ্র-আশ্বিন

মধ্যম

আশ্বিন-কার্তিক

          কার্তিক-আগ্রহায়ণ

নাবি অগ্রহায়ণ-মধ্য পৌষ

      পৌষ-মধ্য মাঘ

তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

রোপনঃ বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিন পর বা ৫/৬টি পাতা বিশিষ্ট ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা  চারা সাধারণতঃ বিকেল বেলা জমিতে রোপণ করতে হয়। তবে সুস’ ও সবল হলে চারা এক-দেড় মাস বয়সের চারা রোপণ করা যায়।

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের পরিমাণঃ প্রতি শতকে গোবর ১২৫ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৮০০ গ্রাম, এমওপি ৬৫০ গ্রাম সার দিতে হবে।

সার প্রয়োগের সময়ঃ সম্পূর্ণ গোবর ও টিএসপি সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া  ও এমওপি সার ২ কিসি-তে চারা রোপণের ২০-২৫ দিন পর একবার এবং ৩০-৪০ দিন পর আর একবার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

৮. আগাছা দমনঃ

সময়ঃ জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

দমন পদ্ধতিঃ সার দেয়ার আগে মাটির আস্তর ভেঙ্গে দিয়ে নিড়ানী দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে।

 

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ
1306439207432

সেচের পরিমাণঃ  চারা রোপনের পর জমির আস্তরণ ভেঙ্গে মাটি ঝুরঝুরে রাখতে হবে ও প্রয়োজন অনুসারে সেচ দিতে হবে।

নিষ্কাশনঃ নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা।

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ
chincf1_zoom

রোগের নাম

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

পাতার দাগ পড়া রোগ

সূষম সার ও সেচের ব্যবস্থা, শস্য পর্যায় অবলম্বন ও সঠিক দূরত্ব বজায় রেখে চারা রোপণ করা। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় স্কোর ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ৫ এমএল হারে ২ সপ্তাহ পর পর সেপ্র করা। স্কোর ২৫০ ইসি

কালো পচা

বীজ বপনের পূর্বে ৫০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার গরম পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে বীজ শোধন করে নেয়া। সকালে সেচ দিন তবে ঝরণা দিয়ে সেচ দেয়া যাবে না।  আগাছা পরিস্কার রাখুন এবং অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা।

চারা ধ্বসা রোগ

আক্রান্ত জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে। ১০০-১২৫ কেজি/একর হারে সরিষা খৈল প্রয়োগ করেও সুফল পাওয়া যায়। ঢলে পড়া চারা দেখা মাত্রই তুলে তা ধ্বংস করতে হবে।পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার ও পরিমিত ইউরিয়া ব্যবহার করা। জমি সব সময় আর্দ্র বা ভিজা না রাখা এবং পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখা। শোধনকৃত বীজ বপন করা এবং রিডোমিল গোল্ড ডব্লিউজি (প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে) ব্যবহার করে বীজতলার মাটি শোধন করা যায়। রিডোমিল গোল্ড ডব্লিউজি

পোকামাকড়ের নাম

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

বাঁধাকপির মাথা খেকো লেদা পোকা সম্ভব হলে হাত দ্বারা কীড়া ও ডিম সংগ্রহ করে ধ্বংস করা। ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি- প্রতি লিটার পানিতে ৫ এমএল হারে মিশিয়ে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে সেপ্র করুন। ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি
বাঁধাকপরি সরুই পোকা ফসল সংগ্রহের পর ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলা এবং পরে জমি ভাল করে চাষ করা। কীড়া এবং ডিম সম্ভব হলে হাত দিয়ে পিষে মারা।প্রোক্লেম ৫ এসজি-১ গ্রাম/লিটার পানি, প্রয়োজনীয় পানির সাথে আনুপাতিক হারে প্রোক্লেম মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করুন এবং প্রয়োজনে ৫-৭ দিন অন্তর পুনরায় সেপ্র করতে হবে। প্রোক্লেম ৫ এসজি-১
কাটুই পোকা ক্যারাটে, মাত্রাঃ একর প্রতি ৩০০ এমএল,প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল ক্যারাটে মিশিয়ে সারির উপর দিয়ে গাছের গোড়া বরাবর ভালভাবে মাটি ভিজিয়ে দিন। সেপ্র শেষে গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিন। ক্যারাটে
ফুরাডান ৫ জি, ৮ কেজি / একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। ফুরাডান ৫ জি

 

১২. পরিবহণ ব্যবস্থাঃসময়ঃ বাঁধাকপির মাথা শক্ত হয়ে উঠলেই সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। সাধারণত: চারা রোপণের ৬০-৯০ দিন পর বাঁধাকপি সংগ্রহ করা যায়।

পরিবহণ পদ্ধতিঃ বাধা কপি পাতাসহ সংগ্রহের পর পাটের ছালা বা ঝুড়ির মাধ্যমে পরিবহন করা যেতে পারে।

পরিবহণের মাধ্যমঃ সাধারনত ঝুড়ি / ডালিতে করে পরিবহন করা হয় তবে বেশি আকারে হলে পিক-আপ / ট্রাকের মাধমেও পরিবহন করে হয়।

১৩. প্যাকেজিং:

প্যাকেজিং পদ্ধতিঃ পাতা সহ চটের ছালা বা বড় ঝুড়ির সাহায্যে প্যাকেজিং করা যেতে পারে।

১৪. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
1306438628229

স্বল্প পরিসরেঃ ৪-৬ দিন সংরক্ষণ করা যায়।

১৫. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

বাজার ব্যবস্থাঃ পার্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন।

১৬. তথ্যের উৎসঃ  AIS, BARI, ekrishok.com, krishitey.com, ruralinfobd.com

১৭. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

পোল্ট্রি

পোল্ট্রি পালন

দেশের প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি পুরণ, আছাড়া বেকার সমস্যার সমাধান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি, সর্বোপরি দেশের দারিদ্র বিমোচনে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি পালন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। নিম্নে ব্রয়লার ও লেয়ার পালন ব্যবস্থা উল্লেখ করা হলো-

১. ব্রয়লার মুরগিঃ

ব্রয়লার হলো মাংস উৎপাদনকারী বিশেষ ধরনের মুরগি, যাদেরকে একদিন বয়স থেকে পালন করা হয়, এবং ৩০-৩৫ দিনে এরা মাংস খাওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়।

ব্রয়লার জাতের নামঃ

হাইব্রো পিএন, হাব্বার্ড ক্লাসিক, কব ৫০০, হাইব্রো পিজি + আরবার একর ও ষ্টারব্রো, ইত্যাদি।

ব্রয়লার মুরগি নির্বাচনঃ

গুণগতমানের ব্রয়লার বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে;

ব্রয়লারের জন্য খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে এমন মুরগির জাত সঠিক ভাবে নির্বাচন করতে হবে।  কারণ সব মুরগি সমান ভাবে ওজনে বাড়ে না।

২. লেয়ার মুরগিঃ

লেয়ার মুরগি হলো ডিম উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের মুরগি যাদেরকে একদিন বয়স থেকে পালন করা হয়, যারা ১৮ থেকে ১৯ সপ্তাহ বয়সে ডিম দিতে শুরু করে এবং উৎপাদনকাল ৭২ থেকে ৭৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ডিম উৎপাদনকালীন সময়ে এরা গড়ে প্রায় সোয়া দু’কেজি খাবার খেয়ে এক কেজি ডিম উৎপাদন করে।

লেয়ার জাতের নামঃ

ডিমের প্রকৃতি বা রং অনুসারে লেয়ার মুরগি দুই ধরনেরঃ

সাদা ডিম উৎপাদনকারীঃ এরা তুলনামূলক ভাবে আকারে ছোট তুলনামূলকভাবে কম খাদ্য খায়, ডিমের খোসার রং সাদা। যেমন: ইসা হোয়াইট, সিভার কার্প, লোহম্যান হোয়াইট, নিকচিক,ব্যবকক-বিভি-৩০০, হাবার্ড হোয়াইট, হাই সেক্স হোয়াইট, শেভার হোয়াইট, হাইলাইন হোয়াইট, বোভান্স হোয়াইট।

বাদামী ডিম উৎপাদনকারীঃ তুলনামূলকভাবে আকারে বড়, খাদ্য বেশি খায়, ডিমের আকার বড়, ডিমের খোসার রং বাদামী। যেমন: ইসা ব্রাউন, হাই সেক্স ব্রাউন, শেভার ৫৭৯, লোহম্যান ব্রাউন, হাই লাইন ব্রাউন, ব্যবকক-বিভি-৩৮০, গোল্ড লাইন, ইসা রোজ, ব্যবলোনা টেট্রা, ব্যবালোনা হারকো, হাবার্ড ব্রাউন।

লেয়ার মুরগি নির্বাচনঃ

লেয়ারের জন্য সঠিকভাবে ভাল উৎপাদনশীল স্ট্রেইন নির্বাচন করতে হবে। কারণ সব মুরগি সমান ডিম দেয় না;

  • গুণগতমানের লেয়ার বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে;
  • কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যের সুনাম রয়েছে এমন বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে;
  • সুনাম রয়েছে এমন হ্যাচারী থেকে বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে।

৩. মুরগীর বাসস্থান

মুরগরি ঘরের আবশ্যকতা-

  • প্রতিকুল আবহাওয়া, বন্যপ্রাণী ও দুস্কৃতিকারী হতে রক্ষা করতে হবে;
  • অনুকুল ও আরামদায়ক পরিবেশ রাখতে হবে;
  • বেশি উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে।
  • আদর্শ ঘরের গুণাগুণ
  • খোলা মেলা থাকতে হবে;
  • আলো ও বাতাস চলাচলের সুযোগ থাকতে হবে;
  • প্রয়োজনীয় আর্দ্রতাযুক্ত হতে হবে;
  • সহজে ঘরের গ্যাস বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে;
  • পরিচ্ছন্ন পরিবেশ হতে হবে।
  • ঘরের স্থান নির্বাচন
  • বন্যার পানি ওঠে না এমন উঁচু ভূমি;
  • জনবসতি হতে দূরে;
  • হাট-বাজার, কল-কারখানা হতে নিরাপদ দূরে;
  • যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল;
  • উন্নত বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা;
  • নিকটতম স্থানে বাজারজাতকরণের সুবিধা।

মুরগির ঘরের পরিবেশ

  • বিশুদ্ধ বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে;
  • গ্যাস বের করার সুবিধা রাখতে হবে;
  • দূর্গন্ধ মুক্ত রাখতে হবে;
  • আর্দ্রতা ও তাপ নিয়ন্ত্রণের সুবিধা থাকতে হবে।

৪. সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টির পদ্ধতি

  • তাপ নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে;
  • টিনের ঘর হলে সিলিং এর ব্যবস্থা রাখতে হবে;
  • ঘরের উপর ছায়া তৈরি করতে হবে;
  • ঘরে বৈদ্যুতিক পাখা ব্যবহার করতে হবে;
  • ঠান্ডা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাত্রে চটের পর্দা ব্যবহার করতে হবে;
  • লিটার পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. মুরগীর বাসস্থান নির্মাণ প্রস্তুতি এবং  ঘরের বৈশিষ্ট্য
মুরগীর ঘরের প্রকৃতি

  • উন্মুক্ত বা দো চালা ঘর
  • ঘরের অবস্থান: উত্তর-দক্ষিণমুখী;
  • ভিতরে: এক দেড় ফুট উঁচু, বেলে দো-আঁশ মাটি;
  • মেঝে: পাকা হতে হবে;

আয়তন: মুরগির জাত ও সংখ্যানুযায়ী;

প্রস্থঃ ৩০ ফুটের মধ্যে;

দৈর্ঘ্যঃ প্রয়োজন ও সুবিধানুযায়ী;

দূরত্বঃ একটি হতে অপরটির দূরত্ব ঘরের প্রস্থের কমপক্ষে দেড় গুণ;

উচ্চতাঃ পার্শ্ব উচ্চতা ৭ ফুট, মধ্য উচ্চতা ১২ থেকে ১৪ ফুট (দু’চালা ঘরের);

চালাঃ কাঁচা, পাকা, টিনের। টিনের হলে সিলিং থাকতে হবে। বৃষ্টির ছাট ঝাপ্টা রোধে ঘরের চালা নীচের দিকে বাড়িয়ে দিতে হয়;

বেড়া বা দেয়ালঃ ভিতর হতে উপরে এক ফুট বদ্ধ দেয়াল বা বেড়া, বাকি অংশ শক্ত তারের জাল দ্বারা করতে হবে;

খাঁচা পদ্ধতির ঘর হলে সম্পূর্ণ তারের নেট বা জাল দ্বারা করতে হবে;

ব্রুডার ঘর হলে ভিতরের উপর ৩ থেকে ৪ ফুট আবদ্ধ বেড়া এবং বাকি অংশে তারের  নেটের তৈরি;

ঘর তৈরির উপকরণঃ সামর্থ অনুযায়ী ইট, সিমেন্ট, রড, টিন, কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি।

৬. খামারে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ও উপকরণসমূহ

ব্রুডারঃ

বাচ্চা পালন করার জন্য ব্রুডার ব্যবহার করা হয়। ব্রুডারের তিনটি অংশ। যেমন:

ক) হোভার

ব্রুডারের ছাতার মতো অংশকে হোভার বলে। ব্রুডারে যে তাপ সৃষ্টি হয় তাকে বাচ্চার দিকে নিম্নমুখী করার জন্য হোভার ব্যবহার করা হয়। হোভার ৩ থেকে ৮ ফুট ব্যাসযুক্ত হতে পারে।

হোভার তৈরিতে সাধারণত: গ্যালভানাইজড টিন শিটের মাধ্যমে হোভার তৈরি করা হয়।

খ) ব্রুডার গার্ড

হোভারকে কেন্দ্র করে ব্রুডার গার্ড স্থাপন করা হয়। ব্রুডার গার্ড বাচ্চাদের তাপের উৎসের কাছাকাছি রাখতে সাহায্য করে। সাধারণত: হোভারের ২ থেকে ৩ ফুট দূরত্বে হোভারকে বেষ্টন করে ব্রুডার গার্ড দেয়া হয়। ব্রুডার গার্ড তৈরিতে হার্ড বোর্ড, বাঁশের তৈরি চাটাই বা গ্যালভানাইজড আয়রন (জিআই) শিটের সাহায্যে তৈরি করা হয়। এছাড়া তারজালও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে তারজাল নিরাপদ হতে হবে যাতে মুরগির বাচ্চা আঘাত না পায়।

ব্রুডার গার্ডের উচ্চতা: সাধারণত: ১৪ থেকে ২০ ইঞ্চি।

গ) ব্রুডার হিটার

বৈদ্যুতিক হিটার

তাপের উৎসঃ ১০০ থেকে ২০০ ওয়াটের ৩ থেকে ৪টি বৈদ্যুতিক বাল্ব হোভারের সাথে যুক্ত করা থাকে। আধুনিক ব্রুডারে বিশেষ ধরনের ফ্যান ব্যবহার করে গরম বাতাস সমান ভাবে বাচ্চাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তবে তাপমাত্রার প্রয়োজনীয়তা অনুসারে থার্মোমিটারের সাহায্যে পরীক্ষা করে বয়স অনুসারে বাল্‌বের সংখ্যা কমানো বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া থার্মোস্ট্যাট নিয়ন্ত্রণ যুক্ত বৈদ্যুতিক হিটারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

কেরোসিন হিটার

তাপের উৎসঃ বিশেষ ধরনের বার্ণার বা কেরোসিন স্টোভের উপর হোভার স্থাপন করা হয়।

গ্যাস হিটার

তাপের উৎসঃ গ্যাস বার্ণার হোভারের সাথে সংযুক্ত থাকে অথবা প্রাকৃতিক গ্যাসের সাহায্যে কেন্দ্রিয়ভাবে তাপ উৎপাদন করে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয়।

গরম পানির হিটার

গরম পানি পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করে ঘর গরম রাখা হয়। ঘরের মধ্য বরাবর মেঝের উপর ১২ ইঞ্চি উঁচুতে গরম পানির পাইপ স্থাপন করে তাপ উৎপাদন করা হয়। ঘরের এক প্রান্তে ব্রয়লারে পানি গরম করে লাইনে সরবরাহ করা হয়। গরম পানির পাইপের উপরিভাগে হোভার স্থাপন করা হয়।

ব্রুডারে তাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাঃ

হোভার উঁচু-নীচু করে প্রয়োজনীয় তাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

৭. ব্রুডিং ঘর

লেয়ার মুরগির ক্ষেত্রে তিন ধরনের ব্রুডিং ঘর ব্যবহার করা হয়

ব্রুডার হাউজঃ এই ঘরে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চা পালন করা হয়।

ব্রুডারড় কাম গ্রোয়ার হাইজঃ এই ঘরে ৪ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাচ্চা ব্রুডিং করা হয় এবং ১৫ থেকে ১৬ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাড়ন্ত বাচ্চা পালন করা হয়।

ব্রুডার-গ্রোয়ার-কাম-লেয়ার হাইজঃ এই ঘরে বাচ্চা ব্রুডিং থেকে শুরু করে ডিম পাড়া শেষ হওয়া পর্যন্ত (৭৬ থেকে ৮০ সপ্তাহ বয়স) মুরগি পালন করা হয়।

ব্রয়লারের ক্ষেত্রে

বাচ্চা ব্রুডিং ও গ্রোয়িং এর জন্য একই ঘর ব্যবহার করা হয়। ব্রুডার হাউজ বা তাপঘর আলাদা করা যেতে পারে। আলাদা ঘর তৈরি করলে ঘরের বেড়ার নীচের অংশ ৩ থেকে ৪ ফুট বদ্ধ এবং উপরের অংশ খুপরীযুক্ত বা তারের জাল দ্বারা ঘিরে দিতে হয়। ৪ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাচ্চার জন্য সাধারণত: ০.৫ বর্গফুট মেঝে প্রয়োজন হয়। বাণিজ্যিক খামারে সাধারণত: ব্রুডিং-কাম-গ্রোয়ার ঘর ব্যবহার করা হয়। ব্রুডার-কাম-গ্রোয়ার ঘরে বাচ্চা ব্রুডিং করার জন্য পর্দা দ্বারা ঘিরে ব্রুডার স্থান পৃথক করা হয়। এই ঘরে প্রতি গ্রোয়ার বা বাড়ন্ত মুরগীর জন্য ১ বর্গফুট বা ০.০৯২ বর্গমি. মেঝের প্রয়োজন হয়।

৮. খামারে বাচ্চা আসার পর করণীয়

বাচ্চা ছাড়ার পূর্বে ব্রুডারের তাপ পরীক্ষা করা;

জন্মের প্রথম সপ্তাহে পরিবহনজনিত কারণে বাচ্চা পানি শূন্যতায় ক্লান্ত হয়। তাই এদের জন্য ব্রুডার ঘরে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে এবং দ্রুত পানি পান করা শেখাতে হবে। পানির সাথে শতকরা ৫ ভাগ হারে গ্লুকোজ মিশিয়ে দিলে সহজে এরা সেখান থেকে শক্তি পেতে পারে। একইসাথে যে কোন উন্নত মানের মাল্টিভিটামিন ও ইলেক্ট্রোলাইট প্রস্তুতকারী কোম্পানীর নির্দেশ মতো পানিতে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

  • বাচ্চার বাক্সে মৃত বাচ্চা থাকলে সরিয়ে ফেলা;
  • বাচ্চার সংখ্যা বা গড় ওজন লিখে রাখা;
  • যত্নসহকারে ব্রুডার ঘরে বাচ্চা ছাড়া;
  • বাচ্চার আচরণ খেয়াল করা;
  • বাচ্চার আচরণ অনুযায়ী ব্রুডারের তাপ নিয়ন্ত্রণ করা;
  • বাচ্চার পানি পান শেষ হলে ৪ ঘন্টা পর খাদ্য (গম ও ভুট্টাভাঙ্গা, চালের ক্ষুদ) প্রদান করা।
  • বাচ্চার আচরণ পরীক্ষা
  • বাচ্চা চঞ্চল ও বড় হবে;
  • পানি, খাদ্য গ্রহণ প্রবণতা থাকবে;
  • বাচ্চার চোখ উজ্জ্বল হবে;
  • নাভি শুকনো হবে এবং দুই পায়ে সমান ভাবে দিয়ে দাঁড়াবে।
  • আর্দ্রতা বজায় রাখা

মুরগির ঘরের মেঝেতে যে লিটার বিছানো হয় তার আর্দ্রতা শতকরা ২০ ভাগ থাকা উচিত। লিটারের আর্দ্রতা কমে গেলে মুরগির দেহের জলীয় অংশ শুষে নেয়, ফলে ডিহাইড্রেশন হয়। লিটারের আর্দ্রতা বেশি হলে ঘরে এ্যামোনিয়ার উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং মুরগির শ্বাস-কষ্টজনিত সমস্যা হয়।

পানি প্রদানঃ

প্রাথমিভাবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা গ্লুকোজ বা চিনি মিশ্রিত পানি প্রদান;

পরবর্তিতে ৩ দিন ভিটামিন মিশ্রিত পানি প্রদান;

ব্রুডারের তাপে পানি গরম হতে দেওয়া (কখনও ঠান্ডা পানি প্রদান করা উচিত নয়)।

খাদ্য প্রদানঃ

  • প্রথম দুই দিন বিছানো কাগজের উপর গম বা ভূট্টা ভাঙ্গা বা চালের ক্ষুদ;
  • তৃতীয় দিন হতে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত সুষম বা সম্পূর্ণ ষ্টার্টার খাদ্য;
  • তৃতীয় দিন পাত্রে ষ্টার্টার রেশন দেয়া শুরু;
  • চতুর্থ দিন কাগজের উপর খাদ্য দেয়া বন্ধ করতে হবে।

লিটার ব্যবস্থাপনাঃ

  • শুকনো মেঝেতে ১ থেকে ২ ইঞ্চি পুরু করে লিটার সামগ্রী বিছানোর পর ব্রুডার গার্ড, হোভার এবং হিটিং সরঞ্জাম বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে;
  • খাঁচায় বাচ্চা ব্রুডিং করলে মেঝেতে লিটার বসানোর প্রয়োজন নেই। সরাসরি ব্রুডার খাঁচা স্থাপন করতে হয়;
  • ভিজা লিটার তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নেয়া;
  • লিটার জমাট বাঁধতে না দেয়া;
  • প্রতিদিন লিটার নাড়া চাড়া করা।
  • বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা
  • ঘরের দূষিত বাতাস বের হওয়া এবং বিশুদ্ধ বাতাস প্রবেশের জন্য বাতাস চলাচলের প্রয়োজন;
  • ছোট ঘরের উপরিভাগে দূষিত বাতাস বের হওয়ার জন্য ফাঁকা জায়গা রাখা হয়;
  • বাচ্চার যাতে ঠান্ডা না লাগে সে জন্য সীমিতভাবে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হয়;

শীতের সময় বিশেষ সতর্কতা করতে হয়। ব্রুডার ঘরের চতুর্পাশে পরিবেশের তাপমাত্রা অনুসারে চট লাগিয়ে দেয়া যেতে পারে। ঘরের ভিতরের তাপমাত্রার উপর এই চট উঠা-নামা করতে হবে। তবে কোন অবস্থাতেই পলিথিন সীট ব্যবহার করা যাবে না।

৯. আলোক ব্যবস্থাপনা

লেয়ার মুরগির ক্ষেত্রেঃ

লেয়ার বাচ্চার জন্য খোলা ঘরে দিনের আলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রথমে ২৩ ঘন্টা এবং ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পরে ১৮ থেকে ১৯ ঘন্টা এবং পরবর্তী সময়ে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ থেকে ১৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা আলো প্রদান করতে হয়। ডিম পাড়া শুরু হলে আলোক ঘন্টা বাড়িয়ে ১৫ থেকে ১৬ ঘন্টা করা উচিত।

১০. বাড়ন্ত লেয়ার বাচ্চা পালন পদ্ধতি

পুলেট বা বাড়ন্ত বাচ্চা

৪ থেকে ৫ সপ্তাহ বয়স থেকে ডিম পাড়া শুরু করা পূর্ব পর্যন্ত বাড়ন্ত বাচ্চা হিসেবে ব্যবস্থাপনা করতে হয়;

ব্রুডিংয়ের পর খামারে মজুদের জন্য ভাল গুণাগুন সম্পন্ন পুলেট করা হয় যাতে ভবিষ্যতে বেশি ডিম পাওয়া যায়;

ভাল ডিম উৎপাদনের জন্য পুলেট পালন ও নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১১. খামারের জীব নিরাপত্তা

বায়োসিকিউরিটি (জীব নিরাপত্তা)

মোরগ-মুরগিকে রোগ জীবাণুর হাত থেকে নিরাপদে রাখাই হচ্ছে বায়োসিকিউরিটি বা জীব নিরাপত্তার মূল কথা। যে ফার্মের বায়োসিউিরিটি যত ভাল সে ফার্মের সমস্যা তত কম হবে, আর যে ফার্মের বায়োসিকিউরিটি ভাল না সে ফার্মে সব সময় সমস্যা লেগেই থাকবে।

বায়োসিকিউরিটির ক্ষেত্রে প্রধান বিষয়গুলো হচ্ছে-

  • বাহির থেকে যাতে কোন জীবাণু শেডে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য খামারকে বহিরাগত মানুষ, কীটপতঙ্গ, বন্য পাখি, গাড়ি, ইদুঁর ইত্যাদি থেকে মুক্ত রাখতে হবে;
  • খামারের প্রবেশ পথে ও শেডের দরজার সম্মুখে সব সময় একটি বড় পাত্রে বা ফুটবাথে জীবাণুনাশক ঔষধের মিশ্রিত পানি রাখতে হবে যাতে খামারের কাজে নিয়োজিত সকলেই শেডে ঢুকার সময় পা ডুবিয়ে জুতা বা স্যান্ডেল জীবাণুমুক্ত করতে পারে;
  • শেডের ভিতর জীবাণু, জীবাণুনাশক দিয়ে ধ্বংস করতে হবে;
  • খামারে বিভিন্ন বয়সের মুরগি রাখা যাবে না। সব সময় “অল ইন অল আউট” পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। একটি ফার্মে একই বয়সের একই ষ্ট্রেইনের  বাচ্চা পালন সবচাইতে ভাল;
  • কার্যকরী টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে;
  • খামারের সব যন্ত্রপাতি জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে ধৌতকরণ এবং ফিউমিগেশনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে;
  • মৃত মুরগি এবং মুরগির বর্জ্য পদার্থ খামার থেকে দূরে মাটিতে গর্ত করে মাটির গভীরে পুঁতে ফেলতে হবে অথবা পৃথক চূল্লী করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে;
  • এক খামারের লোক অন্য খামারে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না;
  • খামার পরিচালনায় দক্ষ পরিচালক এবং দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে।

১২. জীবাণুমুক্তকরণঃ

জীবাণুমুক্তকরণের জন্য বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ও ফিউমিগেশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।
ক) রাসায়নিক দ্রব্যাদির জন্য ক্লোরিন, আয়োডিন,কষ্টিক সোডা,লাইম ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
খ)ফিউমিগেশনের জন্য ১ ভাগ পটাশিয়াম-পার-ম্যঙ্গানেটের সাথে ২ ভাগ ফরমালিন মিশালে ফলমালডিহাইড গ্যাস ও ধোঁয়ার সৃষ্টি হয় এবং রোগ-জীবাণু ধ্বংস হয়।

১৩. টিকাদান কর্মসূচি

টিকা প্রদান ও তার গুরুত্বঃ

টিকা প্রদান কর্মসূচি অনুসারে বিভিন্ন রোগের টিকা প্রদান করলে-

শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি সৃষ্টি হয় এবং

সংক্রামক রোগ হতে মুরগিকে রক্ষা করা যায়। টিকাদান ফলপ্রসূ হলে রোগের প্রাদুর্ভাব খুব কম হবে এবং মৃত্যুর হার সহনীয় পর্যায় রাখা যাবে।

টিকা প্রদানের পূর্বে সতর্কতাঃ

  • মুরগি ধরার সময় যত্ন সহকারে ধরতে হবে;
  • মুরগির যে কোন ধরনের ধকল মুক্ত অবস্থায় টিকা প্রয়োগ করতে হবে;
  • অসুস্থ মুরগিকে টিকা দেয়া যাবে না;
  • টিকা প্রদান উপকরণ ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে;
  • আবহাওয়া যখন ঠান্ডা সেসময়ে টিকা প্রদান করতে হবে।
  • টিকা ব্যবহারের সাধারণ নিয়মাবলীঃ
  • প্রতিষেধক টিকা সবসময়ই সুস্থ পাখিকে প্রয়োগ করতে হয়;
  • সংক্রামক রোগ বা কৃমিতে আক্রান্ত পশু-পাখিকে টিকা প্রয়োগ করা যাবে না। তাতে কাঙ্খিত মাত্রায় প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয় না বরং পাখির আরও ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে;
  • টিকা বীজ কোন অবস্থাতেই সূর্যালোকের সংস্পর্শে আনা যাবে না;
  • ব্যবহারের সময় মিশ্রণ এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাত্র, সিরিঞ্জ-নিড্‌ল, ব্যবহৃত তরল পদার্থ, টিকা ব্যবহারকারীর হাত ইত্যাদি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও বীজাণুমুক্ত হওয়া প্রয়োজন;
  • জীবাণুমুক্তকরণের জন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা যাবে না;
  • প্রতিষেধক টিকা সকালে বা সন্ধ্যার সময় ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রয়োগ করা ভাল;
  • ব্যবহারের জন্য গোলানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা ব্যবহার করে ফেলা উচিত। গোলানোর পর গরমের দিনে ১ ঘন্টা এবং শীতের দিনে ২ ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করে ফেলতে হবে;
  • মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা টিকার সাধারণ রং পরিবর্তিত হয়ে গেলে সে টিকা আর ব্যবহার করা যাবে না;
  • টিকা পরিবহনের ক্ষেত্রে ঠান্ডা অবস্থায় পরিবহন নিশ্চিত করা প্রয়োজন;
  • তাপ প্রতিরোধক পাত্রের মধ্যে বরফ দিয়ে টিকা বীজ পরিবহন করতে হয়। বরফ গলে গেলে পুনরায় বরফ দিতে হয়;
  • ব্যবহারের সময় টিকা মিশ্রণের পাত্র ছায়াযুক্ত স্থানে বরফ দেওয়া বড় পাত্রের মধ্যে রাখা যাবে না;
  • ভাইরাস জনিত রোগ প্রতিরোধক টিকা প্রয়োগকালে টিকা প্রয়োগ স্থান পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে নিতে হবে এবং এই জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না;
  • গোলানো অব্যবহৃত টিকা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য রাখা যাবে না।

টিকা প্রদান (লেয়ার মুরগির জন্য)

বয়স

রোগের নাম

ভ্যাকসিনের নাম

টিকা প্রদানের পদ্ধতি

১ দিন

মারেক্স রোগ

মারেক্স ভ্যাকসিন

চামড়ার নীচে ইজেকশন

২ দিন

গামবোরো রোগ

গামবোরো ভ্যাকসিন (লাইভ)

চোখে ফোঁটা (প্যারেন্ট মুরগির টিকা প্রদান করা না থাকলে)

৩ থেকে ৫ দিন

রানীক্ষেত রোগ

বি, সি, আর, ডি, ভি

দুই চোখে ফোঁটা (প্যারেন্ট মুরগির টিকা প্রদান করা থাকলে ৭ থেকে ১০ দিন বয়সে)

৭ দিন

ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস

আই, বি,

চোখে ফোঁটা

১০ থেকে ১৪ দিন

গামবোরো রোগ

গামবোরো ভ্যাকসিন

এক চোখে ফোঁটা

২৪ থেকে ২৮ দিন

গামবোরো রোগ

গামবোরো ভ্যাকসিন

এক চোখে ফোঁটা

২১ থেকে ২৪ দিন

রানীক্ষেত রোগ

বি, সি, আর, ডি, ভি

দুই চোখে ফোঁটা

৩০ দিন

ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস

আই, বি,

চোখে ফোঁটা

৩৫ দিন

মুরগি বসন্ত

ফাউল পক্স ভ্যাকসিন

চামড়ার নীচে সুঁই ফুঁটিয়ে

৫০ দিন

কৃমি

কৃমির ঔষধ

খাদ্য অথবা পানির সাথে

খাদ্য অথবা পানির সাথে

খাদ্য অথবা পানির সাথে

খাদ্য অথবা পানির সাথে

চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন

৭০ দিন

ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস

আই, বি,

চোখে ফোঁটা বা পানির সাথে

৮০ থেকে ৮৫ দিন

কলেরা

ফাউল কলেরা ভ্যাকসিন

চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন

৯০ থেকে ৯৫ দিন

ইনফেকসাস করাইজা

আই, করাইজা ভ্যাকসিন

চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন

১১০ থেকে ১১৫ দিন

কলেরা

ফাউল কলেরা ভ্যাকসিন

চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন

১৩০ থেকে ১৩৫ দিন

ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস, রানীক্ষেত,

এগড্রপসিনড্রম

টিকা   চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন

১৩০ থেকে ১৩৫ দিন

কৃমি

কৃমি ঔষধ

খাদ্য বা পানির সাথে

৫০ দিন বয়সে কৃমির ঔষধ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। ১৩০ থেকে ১৩৫ দিন বয়সে ঐ ঔষধ পুনরায় খাওয়াতে হবে।

বি: দ্র: প্রয়োজনবোধে খাদ্যের সাথে ৬ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ককসিডিওসিস রোগ প্রতিরোধের জন্য ককসিডিওস্ট্যাট ব্যবহার করতে হবে। এই তালিকা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রোগের প্রার্দুভাবের ইতিহাস, টিকার প্রাপ্যতা ও স্থানীয় পরিবেশ পরিস্থিতির উপর নিজ নিজ খামারের জন্য নিজস্ব তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। টিকা সবসময় প্রস্তুতকারীর নির্দেশমত ব্যবহার করতে হবে।

কয়েকটি ভ্যাকসিন বাজারজাতকারী কোম্পানীর তালিকাঃ

  • এ্যাডভান্স এনিমেল সায়েন্স কোং লিঃ
  • এসিআই লিঃ
  • বেঙ্গল ওভারসীজ লিঃ
  • এফএনএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ
  • জেসন এগ্রোভেট লিঃ
  • ফার্মা এন্ড ফার্ম
  • ইউনিভেট লিঃ
  • নোভারটিস

বি: দ্র: সকল প্রকার টিকা ও ঔষধ প্রয়োগের পূর্বে পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞের বা ই-কৃষকের পরামর্শ নিতে হবে।

১৪. ব্রয়লার বাজারজাতকরণ

ব্রয়লার বাজারজাতকরণের সময় লক্ষ্যনীয় বিষয়

ব্রয়লার উৎপাদনের সাথে সাথে বাজারজাত করতে না পারলে খামারের ক্ষতি হয়। কারণ নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত একদিনের জন্যও খামারে মুরগি থাকার অর্থ ঐ দিনের অতিরিক্ত খাদ্য ও শ্রম খরচ এবং পরবর্তী কর্মসূচীতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়;

এক ব্যাচে সমস্ত ব্রয়লার একইসাথে বিক্রি করতে হয়। পুরুষ ব্রয়লারের ওজন বৃদ্ধি শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বেশি হয় এবং এক সপ্তাহ পূর্বে নির্দিষ্ট ওজনের হয়;

১৫. তথ্যের উৎসঃ  AIS (http://ais.gov.bd/)

১৬. কন্টেন্ট তৈরিঃ ২৪/১০/২০১১

১৭. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

থাই কৈ মাছ

 

থাই কৈ মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা

বর্তমানে বাংলাদেশে থাই কৈ মাছের চাষ বাণিজ্যিকভাবে যথেষ্ট লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত কৈ মাছের পোনা পরীক্ষামূলক চাষাবাদের মাধ্যমে আমাদের চাষিরা আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছেন।

১. থাই কৈ চাষে সুবিধাদি-

বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাছ চাষের অনুকূল। দ্রুতবর্ধনশীল তাই ৪-৫ মাসেই ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ওজনে উন্নীত হয়ে থাকে।

থাই কৈ সম্পূরক খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত, তাই এ মাছের দৈহিক বৃদ্ধি ও ত্বরান্বিত হয়ে থাকে। বিদেশে রফতানির সুযোগ রয়েছে। চাষের জন্য সুস্থ ও সবল পোকা সর্বত্র পাওয়া যায়।

স্থানীয় প্রজাতির কৈ মাছের মতোই থাই কৈ এদেশের আপামর জনসাধারণের খাদ্য তালিকায় ইতোমধ্যেই রসনাতৃপ্তির মাছ হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে থাই কৈ এর বিপুল চাহিদা থাকায় এ মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব।

২. চাষ পদ্ধতিঃ

পুকুরের চারপাশের ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কার করতে হবে। পুরানো পুকুর সেচে শুকিয়ে ফেলাই উত্তম। সম্ভব না হলে নির্ধারিত মাত্রায় রোটেনন পাউডার ৩ ভাগের ২ ভাগ পানিতে গুলে অবশিষ্ট ১ ভাগ কাই করে ছোট বল আকারে পুকুরের সব জায়গায় ছিটিয়ে দিতে হবে। রোটেনন প্রয়োগের আধা ঘণ্টা পর জাল টেনে রাক্ষুসে মাছসহ সমস্ত অবাঞ্ছিত মাছ ও প্রাণী ধরে ফেলতে হবে।

৩. চুন প্রয়োগঃ

রোটেনন প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর পুকুরে ৩-৪ ফুট পানি থাকা অবস্থায় প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রযোগ করতে হবে।

৪. সার প্রয়োগঃ

চুন প্রয়োগের সপ্তাহ খানিক পর শতাংশ প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ইউরিয়া ৫০-৭৫ গ্রাম টিএসপি, ৫-৭ কেজি গোবর কিংবা ২-৩ কেজি মুরগির বিষ্ঠা পুকুরের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের ৬-৭ দিন পর পানির রঙ সবুজ বা হালকা বাদামি সবুজ হলেই মাছের পোনা ছাড়তে হবে।

৫. পোনা ছাড়াঃ

একক চাষে প্রতি শতাংশে ২৫০-৩০০টি সুস্থ সবল একই বয়সি পোনা ছাড়া যেতে পারে। মজুদ পুকুরে ১ মাস বয়সি পোনা ছাড়াই উত্তম।

৬. পরিচর্যাঃ

পোনা মজুদের পর থেকে নিয়মিত অধিক আমিষ যুক্ত মানসম্মত খাবার সরবরাহ করা অপরিহার্য। এ মাছের খাবারে সাধারণত আমিষের পরিমাণ ৩৫% থাকা অত্যাবশ্যক। ছোট অবস্থায় দৈনিক ৫-৬ বার এবং বড় অবস্থায় কমপক্ষে ২ বার থাই কৈ এর পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। পোনা অবস্থায় পুকুরে পানির গভীরতা ৩-৪ ফুট ও বড় অবস্থায় ৫-৬ ফুট থাকা বাঞ্ছনীয়। শীত মৌসুমে থাই কৈ ক্ষত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ অবস্থায় শীত আসার পূর্বেই পুকুরে যথাসময়ে চুন প্রয়োগের পাশাপাশি পুকুরের পানি ও মাছের স্বাস্থ্য সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

৭. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

পুষ্টিসম্মত খাবার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে মাত্র ৪-৫ মাসে ১০০-১৫০ গ্রাম ওজন বিশিষ্ট থাই কৈ বাজারজাত করা সম্ভব।

৮. চাষী ভাইদের জন্য কিছু গুরুত্তপূর্ণ পরামর্শঃ

  •  লাভজনক মাছ চাষে সঠিকভাবে পুকুর নির্বাচন ও পুকুর প্রস্তুত করতে হবে।
  •  প্রতি মাসে একবার প্রতি শতকে ২০০ গ্রাম জিওলাইট ব্যবহার করতে হবে।
  •  যে কোন রাক্ষুসে মাছ নিধন করতে হবে।
  •  মানসম্মত পোনা সংগ্রহ করতে হবে।
  •  নিয়মিত ফাইটো প্লাংকটনের ব্লুম হলে খাদ্য সরবরাহ কমিয়ে দিতে হবে।
  •  প্রতি ১০/১২ দিন পর পর মাছের গড় ওজন ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষন করতে হবে।
  • মাছকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবের দেয়া যাবেনা।
  • নিয়মিত পানির পি এইচ ও গ্যাস পরীক্ষা করতে হবে।

মাছের কোন সমস্যা বা রোগ দেখা দিলে মৎস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

৯. তথ্যের উৎসঃ  AIS (www.ais.gov.bd)

১০. কন্টেন্ট তৈরিঃ ২৭/০৬/২০১২

১১. সর্বশেষ সংযোজন :জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

গম

১. ফসলঃ গম
boss

২. জাতঃ

উচ্চ ফলনশীল জাতঃ বর্তমানে এদেশে অধিক আবাদকৃত গম জাতের মধ্যে কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী ও প্রতিভা রয়েছে। সৌরভ (বারি গম-১৯ )এবং গৌরব (বারি গম -২০)উন্নত জাত।

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ উঁচু ও মাঝারি দোআশ মাটি গম চাষের জন্য বেশী উপযোগী। লোনা মাটিতে গমের ফলন কম হয়।

৪. বীজঃ

ভালো বীজ নির্বাচনঃ সাধারনত নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ভালো বীজ নির্বাচনে সহায়ক

রোগমুক্ত,পরিষ্কার,পরিপুষ্ট ও চিটামুক্ত হতে হবে।

সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

বীজের হারঃ সাধারণ ভাবে একর প্রতি ৪৮ ৫০ কেজি বীজ দরকার হয়ে থাকে।

বীজ শোধনঃ ভিটাভেক্স-২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

৫. জমি তৈরীঃ

জমি চাষঃ  লাঙ্গল ও মই দিয়ে প্রায় ৫-৬ বার আড়াআড়ি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে সমতল করুন।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

বপন ও রোপন এর সময়ঃ গমের উচ্চ ফলনশীল জাতসমূহের বপনের উপযুক্ত সময় হল কার্তিক মাসের শেষ থেকে অগ্রহায়ণর তৃতীয় সপ্তাহ (নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত)। যে সব এলাকায় ধান কাটতে ও জমি তৈরী করতে বিলম্ব হয় সে ক্ষেত্রে কাঞ্চন,আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা ও গৌরব বপন করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

ছিটিয়ে বা লাইনে বপনঃ সারিতে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। সারিতে বপনের জন্য জমি তৈরীর পর লাঙ্গল দিয়ে সরু নালা তৈরী করে ৮ ইঞ্চি দূরত্বের সারিতে ১.৫- ২.০ ইঞ্চি গভীরে বীজ বুনতে হয়।

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

সারের পরিমান/শতকে

সেচসহ সেচছাড়া

ইউরিয়া

৭২৯-৮৯১ গ্রাম ৫৬৭-৭২৯ গ্রাম

টিএসপি

৫৬৭-৭২৯ গ্রাম ৫৬৭-৭২৯ গ্রাম

এমপি

১৬২-২০২ গ্রাম ১২১-১৬২ গ্রাম

জিপসাম

৪৪৫-৪৮৬ গ্রাম ২৮৩-৩৬৪ গ্রাম

গোবর/কম্পোষ্ট

২৮-৪০ কেজি ২৮-৪০ কেজি

 

সার প্রয়োগের সময়ঃ সেচসহ চাষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ইউরিয়া সারের দুই তৃতীয়াংশ এবং সম্পূর্ণ টিএসপি,এমওপি ও জিপসাম শেষ চাষের পূর্বে প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকী এক তৃতীয়াংশ ইউরিয়া প্রথম সেচের সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সেচছাড়া চাষের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সার অর্থাৎ ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ও জিপসাম শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

৮. আগাছা দমনঃ

সময়ঃ জমিতে আগাছা দেখা দিলে সাথে সাথে আগাছা দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ

সেচের সময়ঃ মাটির প্রকার ভেদে সাধারণত ২-৩টি সেচের প্রয়োজন হয়। প্রথম সেচ চারার তিন পাতার সময় (বপনের ১৭-২১ দিন পরে), দ্বিতীয় সেচ গমের শীষ বের হওয়ার সময়। (বপনের ৫৫-৬০ দিন পর) এবং তৃতীয় সেচ দানা গঠনের সময় (বপনের ৭৫-৮০ দিন পর) দিতে হবে।

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ
disease

রোগের নাম

লক্ষণ

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

গম বীজের কালো দাগ

ডেক্সলেরা প্রজাতির ও অলটারনারিয়া প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা গমের এ রোগ হয়। এ রোগের ফলে গমের খোসায় বিভিন্ন আকারের বাদামি অথবা কালো দাগ পড়ে। বীজের ভ্রুণে দাগ পড়ে এবং পরবর্তীতে দাগ সম্পূর্ণ বীজে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের জীবাণু বীজের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। বপন করার পূর্বে ভিটাভেক্স ২০০/টিলথ অনুমদিত মাত্রায় বীজ শোধন করতে  হবে। টিলথ

গমের পাতার দাগ রোগ

বাইপোলারিস সরোকিনিয়ানা নামক ছত্রাক এ রোগ ঘটায়। গাছ মাটির উপর আসলে প্রথমে নীচের পাতাতে ছোট ছোট বাদামি ডিম্বাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগ সমূহ আকারে বাড়তে থাকে এবং গমের পাতা ঝলস দেয়। রোগের জীবাণু বীজে কিংবা ফসলের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বাতাসের অধিক আদ্রতা এবং উচ্চ তাপমাত্রা (২৫ ডিগ্রী সে.) এ রোগ বিস্তারের জন্য সহায়ক। ১. রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।২. গাছের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

৩. প্রতি কেজি গম বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

৪. টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) এক মিলি প্রতি আড়াই লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

 

টিল্ট-২৫০ ইসি

গমের আলগা ঝুল রোগ

আসটিলেগো ট্রিটিসি নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। গমের শীষ বের হওয়ার সময় এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। উক্ত ছত্রাকের আক্রমণের ফলে গমের শীষ প্রথম দিকে পাতলা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে। পরে তা ফেটে যায় এবং দেখতে কালো ঝুলের মত দেখায়। ছত্রাকের বীজকণা সহজেয় বাতাসের মাধ্যমে অন্যান্য গাছে এবং অন্য জমির গম গাছে সংক্রমিত হয়। রোগের জীবাণু বীজের ভ্রুণে জীবিত থাকে। পরবর্তী বছর আক্রান্ত বীজ জমিতে বুনলে বীজের অংকুরোদগমের সময় জীবাণুও সক্রিয় হয়ে উঠে। ১. রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করতে হবে। ২. রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।৩. ভিটাভেক্স-২০০ ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

 

ভিটাভেক্স-২০০

গমের গোড়া পচা রোগ

স্কেলেরোশিয়াম রলফসি নামক ছত্রাক দ্বারা গমের এ রোগ হয়। এই রোগের ফলে মাটির সমতলে গাছের গোড়ায় হলদে দাগ দেখা যায়। পরে তা গাঢ় বাদামি বর্ণ ধারণ করে এবং আক্রান্ত স্থানের চারিদিক ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে পাতা শুকিয়ে গাছ মারা যায়। রোগের জীবাণু মাটিতে কিংবা ফসলের পরিত্যক্ত অংশে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকে। সাধারণত বৃষ্টির পানি, সেচের পানি দ্বারা এক জমি হতে অন্য জমিতে বিস্তার লাভ করে। ১. রোগ প্রতিরোধী কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরব জাতের চাষ করতে হবে। ২. মাটিতে সব সময় পরিমিত আর্দ্রতা থাকা প্রয়োজন। ৩. ভিটাভেক্স-২০০ নামক ঔষধ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।  ভিটাভেক্স-২০০

গমের পাতার মরিচা রোগ

পাক্‌সিনিয়া রিকন্ডিটা নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। প্রথমে পাতার উপর ছোট গোলাকার হলুদাভ দাগ পড়ে। শেষ পর্যায়ে এই দাগ মরিচার মত বাদামি বা কালচে রংয়ে পরিনত হয়। হাত দিয়ে আক্রান্ত পাতা ঘষা দিলে লালচে মরিচার মত গুড়া হাতে লাগে। এ রোগের লক্ষণ প্রথমে নিচের পাতায়, তারপর সব পাতায় ও কান্ডে দেখা যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলে এ রোগ বেশী হয়ে থাকে। ১. রোগ প্রতিরোধী গমের জাত কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী, প্রতিভা, সৌরভ ও গৌরবের চাষ করতে হবে।২. সুষম হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।

৩. টিল্ট ২৫০ ইসি ছত্রাক নাশক (০.০৪%) ১ মিলি আড়াই লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

গমের পাতার দাগ রোগ দমনঃ বাইপোরারিস সরোকিনিয়ানা নামক ছত্রাক এ রোগ ঘটায়। গাছ মাটির উপর আসলে প্রথমে নীচের পাতাতে ছোট ছোট বাদামি ডিম্বাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগ সমূহ আকারে বাড়তে থাকে এবং গমের পাতা ঝলস দেয়। রোগের জীবাণু বীজে কিংবা ফসলের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বাতাসের অধিক আদ্রতা এবং উচ্চ তাপমাত্রা (২৫ ডিগ্রী সে.) এ রোগ বিস্তারের জন্য সহায়ক।

. টিল্ট ২৫০  ছত্রাক নাশক

 

গমের ইঁদুর দমনে বিষ টোপের ব্যবহার

ইঁদুর গমের একটি প্রধান শত্রু। গম ক্ষেতে বিশেষ করে শীষ আসার পর ইঁদুরের উপদ্রব বেশি দেখা যায়।গম পাকার সময় ইঁদুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।বিএআরআই উদ্ভাবিত ২% জিংক সালফাইড বিষটোপ ইঁদুর দমনে ভাল ফলাফল দিয়েছে।

১১. ফসল কাটাঃ
whaet

সময়ঃ চৈত্র মাসের প্রথম থেকে মধ্য-চৈত্র (মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম) পর্যন্ত কেটে গম সংগ্রহ করতে হয়।

১২. পরিবহণ ব্যবস্থাঃ

পরিবহণ পদ্ধতিঃ মাঠ থেকে সাধারনত বাইঙ্কা/ গরুগাড়ি/ ভ্যান / ট্রাক্টরের সাহায্যে গম মারাই করার জন্য উঠানে আনা হয়।

পরিবহণের মাধ্যমঃ বাইঙ্কা / গরুগাড়ি / ভ্যান / ট্রাক্টর ইত্যাদি।

১৩. ফসল মারাইঃ

মারাই পদ্ধতিঃ ভালোভাবে শুকানোর পর পেডেল থ্রেসারের মাধম্যে গম মারাই করা হয়।

১৪. প্যাকেজিং:

প্যাকেজিং পদ্ধতিঃ সাধারনত পাটের তৈরী চটের বস্তা দিয়ে প্যাকেজিং করা হয়।

১৫. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ

স্বল্প পরিসরেঃ মাড়াই করার পর অন্তত: পক্ষে ২-৩ বার রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর পাটের তৈরী চটের বস্তা দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

বৃহৎ পরিসরে (উৎস):মাড়াই করার পর অন্তত: পক্ষে ২-৩ বার রোদে শুকিয়ে (১৪% আদ্র্তা) নিতে হবে। তারপর পাটের তৈরী চটের বস্তা দিয়ে গোডাউনে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

১৬. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

বাজার ব্যবস্থাঃ পার্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন।

১৭. তথ্যের উৎসঃ  AIS, BARI, কৃষি প্রযুক্তি হাত বই।

১৮. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@amaderkrishi.com

 

 

বেগুন

১. ফসলঃ
বেগুন
brin

২. জাতঃ

  • উচ্চ ফলনশীল জাতঃ উচ্চ ফলনশীল জাত গুলো হলো-

জাত

কোম্পানীর নাম

বীজ বপনের সময়

উত্তরা (বারি বেগুন ১)

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট(BARI)

শীতকাল

শুকতারা

BARI

শীতকাল

তারাপুরী (বারি বেগুন ২)

BARI

শ্রাবণ-ভাদ্র

কাজলা (বারি বেগুন ৪)

BARI

নয়নতারা (বারি বেগুন ৫)

BARI

হাইব্রীড বেগুন জায়েন্ট গ্রিন, সুরভী

ব্র্যাক সীড

হাইব্রীড বেগুন লবনী, বনানী, পার্থিব, শ্রাবনী, (উফশী-সিংনাথ, কাজলা, ইভা)

লালতীর সীড লি:

জুলাই থেকে নভেম্বর মাস

হাইব্রীড বেগুন বিজয়, উৎসব, আনন্দ, হাসি, খুসি

মল্লিকা সীড কো. (MSC)

আষাঢ় থেকে অগ্রহায়ণ

হাইব্রীড বেগুন কে.এস-১,২,৩

কৃষিবিদ গ্রুপ

সারা বছর চাষ করা যায়

হাইব্রীড বেগুন বিএসএস-৬৩৩,৫১৩/৭৩৯,৬২৬/৬১৯/৭৯০,৩৩২, হারসা/পান্না, জনক

বেজো শীতল সীডস (বাংলাদেশ) লি: (BCSBL)

সারা বছর

হাইব্রীড বেগুন চিত্রা, রওশনী, (উফসী- শিংনাথ, নয়নতারা)

গেটকো এগ্রো ভিশন লি:

হাইব্রীড বেগুন রঙ্গিলা, শ্রাবন্তী, লম্বা বেগুন

নামধারী মালিক সীডস (NMS)

হাইব্রীড বেগুন অলসিজন এফ-১, হারিয়া এফ-১, (ব্লাক বিউটি/লংপার্পল/ত্র্যান্তি)

পাশাপাশি সীড কো:

আষাঢ়-অগ্রহায়ণ

হাইব্রীড বেগুন মোহিনী, আনন্দ

ইউনাইটেড সীড ষ্টোর (USS)

১৫ ই আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিনের শেষ পর্যন্ত বীজ বপন করা যায়

হাইব্রীড বেগুন কাজল

বেজো শীতল সীডস (বাংলাদেশ) লি: (BCSBL)

সারা বছর

বেগুন উফশী বাশরী

ম্যাপল

বপন সময় ভাদ্র ও অগ্রহায়ন

 

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ বাংলাদেশের সব ধরনের মাটিতে ও সব এলাকায় বেগুন চাষ কারা যায়। তবে বর্ষাকালে পানি জমেনা এ ধরনের উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। তাছাড়া হালকা বেলে থেকে ভারী এটেল মাটি অর্থাৎ প্রায় সব ধরনের মাটিতেই বেগুনের চাষ করা হয়। হালকা বেলে মাটি আগাম জাতের বেগুন চাষের জন্য উপযোগী। এই ধরণের মাটিতে বেগুন চাষ করতে হলে প্রচুর পরিমাণ জৈবসারসহ অন্যান্য সার ঘন ঘন প্রয়োগ করতে হবে। এটেঁল দো-আঁশ ও পলি দো-আঁশ মাটি বেগুন চাষের জন্য উপযোগী এবং এই মাটিতে বেগুনের ফলন বেশী হয়।

৪. বীজঃ

ভালো বীজ নির্বাচনঃ ভালো বীজের বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নোরুপ-

  • রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও চিটামুক্ত হতে হবে।
  • সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

বীজের হারঃ সাধারন ভাবে প্রতি একরে ১১০-১১৫ গ্রাম বীজের চারা প্রয়োজন হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

বীজ শোধনঃ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ নামক ছত্রাকনাশক ও বীজ পাত্রে ঢেলে এমনভাবে ঝাকাতে হবে যেন বীজের গায়ে ছত্রাক নাশক ভালভাবে লেগে যায়। শোধনকৃত বীজ পাত্র থেকে বের করার পর ছায়াতে শুকিয়ে নিতে হবে। বীজ বপনের ছয় ঘন্টা আগে বীজশোধন করা ভাল।

৫. জমি তৈরীঃ

  • জমি চাষঃ সাধারণতঃ মাঠের জমি তৈরির জন্য ৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।
  • বীজ তলা তৈরীঃ বীজতলায় মাটি হতে হবে উর্বর। উর্বরতা কম থাকলে জৈব সার ও সামান্য পরিমাণ ফসফেট জাতীয় সার ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি বর্গ মিটার বীজতলার জন্য ১-২ ডালি পঁচা গোবর সার ও ৩০ গ্রাম টিএসপি সার ব্যবহার করা যেতে পারে। চাষের পর সম্পূর্ণ জমিকে কয়েকটি ছোট ছোট বীজতলাতে ভাগ করে নিতে হবে। প্রতিটি বীজতলা দৈর্ঘ্যে ৩-৫ মিটার, প্রস্থে এক মিটার ও পাশ থেকে ৬-৮ ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা রাখা উচিত। পাশাপাশি দুটো বীজতলার মধ্যে ১-১.৫ হাত ফাঁকা জায়গা রাখা উচিত। এ ফাঁকা জায়গা থেকে মাটি নিয়ে বীজতলা উঁচু করে নিতে হবে।
  • বীজ তলার পরিচর্যাঃ চারা গজানোর পর ২-৩ দিন অন্তর হালকা সেচ দেওয়া উচিত।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

  • বপন ও রোপন এর সময়ঃ আষাঢ়-অগ্রহায়ণ, তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে নির্দেশ মত বপন ও রোপন করতে হবে।
  • ছিটিয়ে বা লাইনে বপনঃ চারা রোপণ দূরত্ব জাত, মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন মৌসুমের উপর নির্ভর করে। সাধারণতঃ বড় আকারের বেগুনের জাতের ক্ষেত্রে ২-২.৫ ফুট দূরে সারি করে সারিতে ২ ফুট ব্যবধানে চারা লাগানো যেতে পারে এবং ক্ষুদ্রাকার জাতের ক্ষেত্রে ২ ফুট সারি করে সারিতে ১.৫-১.৭৫ ফুট ব্যবধানে চারা লাগানো যেতে পারে। জমিতে লাগানোর পর পরই যাতে চারা শুকিয়ে না যায় সে জন্য সম্ভব হলে বিকালের দিকে চারা লাগানোউচিত।
  • রোপনঃ ৩৫-৪৫ দিন বয়সের চারা রোপণের উপযোগী হয়। এ সময় চারাতে ৫-৬টি পাতা গজায় এবং চারা প্রায় ৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। বেগুনের চারার বয়স একটু বেশী হলেও লাগানো যেতে পারে। চারা তোলার সময় যাতে শিকড় নষ্ট না হয সেজন্য চারা তোলার ১-২ ঘন্টা আগে বীজতলায় পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে নিতে হবে।

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম   সার দেওয়ার সময়

একর প্রতি সারের পরিমাণ

গোবর বা

কম্পোষ্ট

শেষ চাষের সময় কম উর্বর জমি
০৬ টন
মধ্যম উর্বর জমি
০৪ টন
বেশী উর্বর জমি
২-২.৫ টন

ইউরিয়া

শেষ চাষের সময়     x     x      x
প্রথম কিস্তি ৬০ কেজি ৫০ কেজি ৪০ কেজি
দ্বিতীয় কিস্তি ৬০ কেজি ৫০ কেজি ৪০ কেজি
তৃতীয় কিস্তি ৬০ কেজি ৫০ কেজি ৪০কেজি

টিএসপি

শেষ চাষের সময় ১২০ কেজি ২৫০ কেজি ৮০ কেজি

এমপি

শেষ চাষের সময় ৬০ কেজি ৬০ কেজি ৮০ কেজি

টিএসপি

প্রথম কিস্তি ৬০ কেজি ৩০ কেজি ২০ কেজি

এম ও পি

দ্বিতীয় কিস্তি

৬০ কেজি

৩০ কেজি

২০ কেজি

জিপসাম

শেষ চাষের সময় ৬০ কেজি ৫০ কেজি ৪০ কেজি

 

 

৮. আগাছা দমনঃ

  • সময়ঃ জমিতে আগাছা দেখা দিলে পরিস্কার করে মাটি আলগা করে দিতে হবে। হালকাভাবে মাটি আলগা করে নির্দিষ্ট দিন পর পর নিড়ানি দেওয়া যেতে পারে এতে করে গাছের শিকড় বৃদ্ধি ভাল হবে।
  • দমন পদ্ধতিঃ নিড়ানি / কোদাল এর সাহায্যে আগাছা দোমন করা যেতে পারে।

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ

  • সেচের সময়ঃ বেগুন চাষের জন্য সেচ অত্যন্ত প্রয়োজন বেগুনের শিকড় মাটির খুব গভীরে যায় না বলে ভাল উৎপাদন পাওয়ার জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে।
  • সেচের পরিমাণঃ ঘন ঘন পরিমিত মাত্রায়।
  • নিষ্কাশনঃ জমে থাকা পানি বেগুন সহ্য করতে পারে না, তাই নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ
2009013050750301brinjal insect

রোগের নাম

লক্ষন

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

ঢলে পড়া বা নেতিয়ে পড়া রোগ

আক্রান্ত গাছের কচি পাতা প্রথমে ঢলে পড়ে কিংবা নীচের বয়স্ক পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়।শিকড়ের মাধ্যমে আক্রমন শুরু হলেও পরে তা কান্ডে ছড়িয়ে পড়ে।  রোগের জীবানু মাটি থেকে পানি গ্রহন ও সঞ্চালনে বাধা দেয়, ফলে গাছ ঢলে পড়ে ও শেষে মারা যায়। ১. ঢলে পড়া চারা দেখা মাত্রই তুলে তা ধ্বংস করতে হবে। ২. জমি সব সময় আর্দ্র বা ভিজা না রাখা এবং পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখা।৩. রিডোমিল গোল্ড ৬৮ ডব্লিউজি – প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে রিডোমিল গোল্ড মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন। রিডোমিল গোল্ড ৬৮ ডব্লিউজি

চারা ধবসা রোগ

 বীজতলায় চারা গজানোর পর থেকে মূল ক্ষেতে চারা রোপন পর্যন্ত এ রোগের আক্রমন হয়ে থাকে। অংকুরিত বীজের বীজপত্র, কান্ড এবং শিকড় নষ্ট করে দেয়।আক্রান্ত চারা প্রথমে হালকা সবুজ হয়ে ঢলে যায় এবং সম্পূর্ন চারাটিই মরে যায়। আক্রান্ত চারা ২-৪ দিনের মধ্যেই পচে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ১. শোধনকৃত বীজ বপন করা এবং রিডোমিল গোল্ড ৬৮ ডব্লিউজি (প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে ৫ শতাংশ জমির জন্য)। ব্যবহার করে বীজতলার মাটি শোধন করা যায়। ২. আক্রান্ত গাছ জমি থেকে তুলে ধ্বংস করতে হবে। রিডোমিল গোল্ড ৬৮ ডব্লিউজি

ডাউনি মিল্ডিউ

এর জন্য গাছের পাতা ধূসর হয়ে যায়। পাতায় সাদা পাউডার দেখা যায় ১. থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি- প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম থিয়োভিট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ১৫ দিন পর পর সেপ্র করুন। থিয়োভিট ৮০ ডব্লিউজি
মোজাইক কচি চারার বীজপত্র হলুদ হয় এবং চারা নেতিয়ে পড়ে। কচি ডগা জটলার মত দেখায়।  আক্রান্ত পাতা ছোট, বিবর্ণ, বিকৃত ও নীচের দিকে কুঁকড়ানো হয় এবং শিরা-উপশিরাও হলুদ হয়ে যায়। ১. আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংস করতে হবে।২. ক্ষেত আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।৩. বাহক পোকা সাদা মাছি দমন করতে হবে (একতরা ২৫ ডব্লিউজি- ২.৫ গ্রাম একতারা প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে)। (একতারা ২৫ ডব্লিউজি)

পোকামাকড়ের নাম

লক্ষন

প্রতিকার

কীটনাসকের নাম

বেগুনের ডগা ফল ছিদ্রকারী     পোকা

বেগুনের বোঁটার নীচে ছোট ছিদ্র দেখা যায়। কচি ডগা ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত ফলের ভিতরটা ফাঁপা ও পোকার বিষ্ঠায় পরিপূর্ণ থাকে।

নিমবিসিডিন, ৮০ এম এল/একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

নিমবিসিডিন

ফাইটার ২.৫ ইসি-৪১০ এম এল/লি. পানি

ফাইটার ২.৫ ইসি

রিপকরট ১০ ই সি ২০০ এম এল/একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে (১ এম এল /লি. পানি) রিপকরট ১০ ই সি
সবিক্রন ৪২৫ ই সি, ৪০০ এম এল / একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। সবিক্রন ৪২৫ ই সি,
আলফাটাফ ৫০ এস পি, ২৪৫-৩২৫ গ্রাম/একর(১২-১৬ গ্রাম/১০ লি. পানি)

আলফাটাফ ৫০ এস পি

মাছি পোকা

১. স্ত্রী মাছি কচি ফলে ডিম পাড়ে।২. ডিম ফুটে কীড়াগুলো বরে হয়ে ফলের শাস খায় এবং ফল পচে যায় ও অকালে ঝরে পড়ে। ১. প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি- আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে প্লেনাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। ২. সবিক্রন ৪২৫ ইসি- প্রতি লিটার পানিতে ২ এমএল হারে মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করুন। । প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি,সবিক্রন ৪২৫ ইসি
টিডো ২০ এস.এল-১০০-১০৫ এম এল / একর জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। টিডো ২০ এস.এল

কাটুই পোকা

কীড়া অবস্থায় এই পোকা দিনের বেলা মাটির ফাটলে বা গর্তে লুকিয়ে থাকে। রাতের বেলা বের হয়ে চারা গাছের গোড়ার মাটি বরাবর কেটে দেয়। ১. ক্যারাটে ২.৫ ইসি-বেগুনের চারা রোপনের পর প্রতি শতাংশ জমিতে ৩ এমএল ক্যারাটে প্রয়োজনীয় পানির সাথে মিশিয়ে সারি ভিজিয়ে স্প্রে করুন। ক্যারাটে ২.৫ ইসি
গোলা ৪৮ ইসি-১.৪০ লি./একর(৬৯ মিলি/১০ লি.- ৫ শতাংশ জমির জন্য) গোলা ৪৮ ইসি

ছাতরা পোকা/মিলিবাগ

ছাতরা পোকা বেগুন গাছের পাতার বোঁটা এবং কচি ডগার রস চুষে খায়। এর দেহ থেকে মধু জাতীয় পদার্থ নিঃসৃত হয় এবং আক্রান্ত অংশে কালো ছাতা বা শুটি মোন্ড ছত্রাকের আক্রমন হয়। গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয় এবং কোন ফুল/ফল ধরে না। অনেক সময় পাতা নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে গাছ মারা যায়। ১. রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছিঁড়ে ফেলা ।২. সম্ভব হলে হাত দিয় ডিমের গাদা বা পোকা ধ্বংস করা।৩. নিমবিসিডিন, ৮০ এম এল/একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

নিমবিসিডিন

বেগুনের কাঠালে পোকা

বাচ্চা ও পূর্ণ বয়স্ক পোকা পাতার উপরের সবুজ অংশ খেয়ে জালের মত ঝাঁঝরা করে ফেলে।আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। আক্রমন বেশি হলে গাছ মারা যায়। ১. আক্রমণের প্রথম অবস্থায় ডিমের গাদা এবং পাতাসহ কীড়া হাত দিয়ে সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।২. গাছের গোড়সহ বেগুনের সম্পূর্ন মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।৩. আক্রমনের মাত্রা তীব্র হলে সবিক্রন ৪২৫ ইসি (প্রতি লিটার পানিতে ২ এমএল হারে) প্রয়োগ করুন।

সবিক্রন ৪২৫ ইসি

পাতা মোড়ানো পোকা

কীড়া পাতা মুড়িয়ে ফেলে এবং ভিতরে বসে পাতার সবুজ অংশ কুড়ে কুড়ে খায়।ফলে মোড়ানো পাতা জালের মত ঝাঝড়া হয়ে যায় ও পরে সাদা হয়ে শুকিয়ে যায়।সবুজ ডগা ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে এবং ডগার ভিতরের অংশ খায় ফলে ডগা সাদা হয়ে যায়। ১. আক্রমণের প্রথম অবস্থায় ডিমের গাদা এবং পাতাসহ কীড়া হাত দিয়ে সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।২. গাছের গোড়সহ বেগুনের সম্পূর্ন মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।৩. আক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করা।

জাব পোকা

পূণবয়স্ক ও নিম্ফ উভয়েই পাতা, কচি কান্ড, ফুল ও ফলের কুঁড়ি, বোঁটা এবং ফলের কচি অংশের রস চুষে খায়। ফলে গাছ প্রথমে দুর্বল ও পরে হলুদ হয়ে যায়। গাছে ফুল ও ফল অবস্থায় আক্রমণ হলে ফুলের কুঁড়ি ও কচি ফল ঝরে পড়ে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে কচি ডগা মরে যায়। ১. আক্রান্ত পাতা, ডগা, ফুল পোকাসহ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।২. একতারা ২৫ ডব্লিউজি- আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে ২.৫ গ্রাম একতারা প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালভাব গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।৩. প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি- আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে প্লেনাম মিশিয়ে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। একতারা ২৫ ডব্লিউজি,  প্লেনাম ৫০ ডব্লিউজি
টিডো ২০ এস.এল-১০০-১০৫ এম এল / একর জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। টিডো ২০ এস.এল
ফাস্টাক ২ ই সি, ২০২ মি লি ১ একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে(১ এম এল/১ লি. পানি) ফাস্টাক ২ ই সি

 

১১. বিশেষ পরিচর্যাঃ
sex pheromone trap

ফেরমোন ট্রাপ দিয়ে ক্ষতিকর পোকা দমন করা যেতেপারে।

১২. ফসল কাটাঃ
brinjal palnt

  • সময়ঃ ফল সম্পূর্ণ পরিপক্ক হওয়ার পূর্বেই সংগ্রহ করতে হবে। ফল যখন পূর্ণ আকার প্রাপ্ত হয় অথচ বীজ শক্ত হয় না তখন ফল সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়। সংগ্রহের সময় ফলের ত্বক উজ্জ্বল ও চকচকে থাকবে।
  • পদ্ধতিঃ হাত / কাচ কাটা বাশের কঞ্চি দারা ফসল সংগ্রহ করা হয়।

১৩. পরিবহণ ব্যবস্থাঃ

  • পরিবহণ পদ্ধতিঃ ফসল সংগ্রহের পর প্রথমে ডালিতে কলা পাতা বিছিয়ে তার উপর বেগুন সাজায়ে রাখতে হবে যাতে কোনো দাগ না পরে।
  • পরিবহণের মাধ্যমঃ সাধারনত ঝুড়ি / ডালিতে করে পরিবহন করা হয় তবে বেশি আকারে হলে পিক-আপ / ট্রাকের মাধমেও পরিবহন করে হয়।

১৪. প্যাকেজিং:

  • প্যাকেজিংপদ্ধতিঃ প্যাকেজিং এর জন্য ফুড রেপিং পেপার, পেরফোরেটেড পেপার, ঝুড়ি, খাঁচা, প্লাস্টিক কেস  প্রভৃতি ব্যবহার করা জেতে পারে।

১৫. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ

  • স্বল্প পরিসরেঃ ৩-৫ দিন সংরক্ষণ করা যায়।

১৬. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

  • বাজার ব্যবস্থাঃ
    images

১৭. তথ্যের উৎসঃ  AIS, BARI, কৃষি প্রযুক্তি হাত বই, ekrishok.com, krishitey.com, ruralinfobd.com

১৮. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

 

ভুট্টা

১. ফসলঃ ভুট্টা
images

ভুট্টা একটি অধিক ফলনশীল দানা শস্য। ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমান বেশী। এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। চুয়াডাংগা, দিনাজপুর, লালমনির হাট, বগুড়া, চর অঞ্চলসহ বাংলাদেশের প্রায় বেশ কিছু যায়গায় ভুট্টার চাষ ব্যাপক ভাবে হচ্ছে। নিচে ভুট্টার জাত, ব্যাবস্থাপনা ও উৎপাদন প্রযুক্তি আলোচনা করা হলো-

২. জাতঃ বর্তমানে দেশে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে, নিচে তা উল্লেখ করা হলো-

জাত

বীজ বপনের সময়

কোম্পানীর নাম

বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৪, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫,

রবি মৌসুমে,নভেম্বরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। খরিফে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চ পর্যন্ত

BARI

হাইব্রিড ভূট্টা এম এস-৮৮৮, হাইব্রিড ভূট্টা এ এস-৯৯৯

খরিপ-রবি মৌসুম (রবি,অক্টোবর-নভেম্বর, খরিপ-মধ্য ফেব্রু-এপ্রিল

এ সি আই

হাইব্রিড –এসগ্রো ৯০০ এম., ৭১৭ K, ৯৮৭ K, মিরাকল,

রবি মৌসুম

কৃষি বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান

ডিকাল্ব ৯০০ এম গোল্ড, ৮২৭K

রবি ও খরিপ মৌসুম

ডি কে সি -৭০৭৪, ৭০০১ কে

খরিপ মৌসুম

এগ্রজি ডিএম এইচ-৭৩১৪, ৮৮৮, এগ্রজি সুপার এইচ পি ১০০,

সারা বছর (অক্টবর-নভেম্বর, খরিপ-মধ্য ফেব্রু-এপ্রিল)

এনার্জি প্যাক এগ্রো লি:

জেকে এম এইচ-৫০২, জেকে সুরভি

সারা বছর

মেটাল সীড

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ বেলে দোআশ ও দোআশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জমিতে পানি জমে না থাকে। বাংলাদেশের বেশ কিছু জায়গায় ভূট্টার চাষ ভালো হয়ে থাকে যেমন রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, চুয়াডাংগা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ইত্যাদি।

৪. বীজঃ

  • ভালো বীজ নির্বাচনঃ সাধারনত নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ভালো বীজ নির্বাচনে সহায়ক-
    • বীজ গজানোর হার ৮০% এর বেশী হবে। বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে এবং ভালো সুষ্ঠ বীজ নির্বাচনের জন্য কৃষক, নমুনা বীজ মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা করতে পারেন, এ ক্ষেত্রে বীজ গজানোর হার ৮০% এর বেশী হবে।
    • বীজ রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও পোকা খাওয়া মুক্ত হতে হবে।
    • সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।
    • বীজের হারঃ একরে ৬-৭ কেজি। উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
    • বীজ শোধনঃ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম ভিটাভেক্স-২০০ নামক ছত্রাকনাশক ও বীজ পাত্রে ঢেলে এমনভাবে ঝাকাতে হবে যেন বীজের গায়ে ছত্রাক নাশক ভালভাবে লেগে যায়। শোধনকৃত বীজ পাত্র থেকে বের করার পর ছায়াতে শুকিয়ে নিতে হবে। বীজ বপনের ছয় ঘন্টা আগে বীজশোধন করা ভাল।

৫. জমি তৈরীঃ

  • জমি চাষঃ ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে ২-৩ টা বা লাঙ্গল দিয়ে ৪-৫ টা আড়াআড়ি চাষ দিয়ে ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে সমতল করতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার করে জমি তৈরি করতে হবে।

৬. বপন এর পদ্ধতিঃ

  • বপন এর সময়ঃ বাংলাদেশে রবি মৌসুমে মধ্য-আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ (অক্টোবর-নভেম্বর) এবং খরিফ মৌসুমে ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মধ্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ) পর্যন্ত সময় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। আর উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।
  • লাইনে বপনঃ
    8-12-2013 6-20-44 AM Corn ISAAA
  • সাধারনত সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ ইঞ্চি, গাছ হতে গাছের দূরত্ব ১০ ইঞ্চি, বপনের গভীরতা ১ ইঞ্চি এবং বপনের সময় প্রতি গর্তে ১ টি বীজ দিতে হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশিকা অনুসরন করতে হবে।

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

সারের পরিমান/একর

কম্পোজিট

হাইব্রিড

রবি

খরিফ

রবি

ইউরিয়া

৬০-১২০ কেজি

৮৫-১০৫ কেজি

২০০-২২০ কেজি

টিএসপি

৬৫-৮৫ কেজি

৫০-৮৫ কেজি

৯৫-১০৫ কেজি

এমপি

৩৮-৫৮  কেজি

৩০-৪৮ কেজি

৭২-৮৮ কেজি

জিপসাম

৫৮-৬৮ কেজি

৩৮-৫৮ কেজি

৯৫-১০৫ কেজি

জিংক সালফেট

৪-৬ কেজি

২.৮-৪.৫ কেজি

৪-৬ কেজি

বোরিক এসিড

২-২.৮ কেজি

২-২.৮ কেজি

২-২.৮ কেজি

গোবর

১.৬-২.৪  টন

১.৬-২.৪ টন

১.৬-২.৪ টন

 

  • প্রয়োগ পদ্ধতিঃ জমি তৈরীর শেষ পর্যায়ে অনুমোদিত ইউরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এবং অন্যান্য সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া সমান ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি বীজ গজানোর ২৫-৩০ দিন পর এবং দ্বিতীয় কিস্তি বীজ গজানোর ৪০-৫০ দিন পর ছিটায়ে  প্রয়োগ করতে হবে। চারা গজানোর ৩০ দিনের মধ্যে জমি থেকে অতিরিক্ত চারা তুলে ফেলতে হবে।

৮. আগাছা দমনঃ

  • সময়ঃ চারার বয়স এক মাস হওয়া পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
  • দমন পদ্ধতিঃ নিড়ানী ও ছোট কোদাল দিয়ে কুপিয়ে আগাছা দমন (সার ও পানি সেচ দেয়ার সময় ও কুপিয়ে দিতে হবে) করা যেতে পারে। অথবা ডুয়েল গোল্ড ৯৬০ ইসি, ৪০০ এম এল / একর হারে জমিতে প্রয়োগ করে আগাছা দমন কতা যেতে পারে।

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ
agri_irrigationmgt_rice - Copy (6)_clip_image002

 

o       সেচের সময়ঃ উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টার আশানুরূপ ফলন পেতে হলে রবি মৌসুমে সেচ প্রয়োগ অত্যাবশ্যকউদ্ভাবিত জাতে নিম্নরূপ ৩-৪টি সেচ দেওয়া যায়

  •   প্রথম সেচ : বীজ বপনের ১৫-২০ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)
  •   দ্বিতীয় সেচ : বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)
  •   তৃতীয় সেচ : বীজ বপনের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)
  •   চতুর্থ সেচ : বীজ বপনের ৮৫-৯৫ দিনের মধ্যে (দানা বাঁধার পূর্ব পর্যায়)

o            সেচের পরিমাণঃ এমন ভাবে সেচ দিতে হবে যাতে জমিতে পানি জমে না থাকে।

নিষ্কাশনঃ ভুট্টাজলাবদ্ধতাসহ্যকরতেপারেনা তাই নালা কেটে পানি সুনিষ্কাশনের ব্যাবস্থা থাকতে হ

 

১০. রোগও পোকামাকড় দমনঃ
maize_blightOLYMPUS DIGITAL CAMERA

রোগের নাম

লক্ষণ

প্রতিকার

কীটনাশকের নাম

পাতা ঝলসানো রোগ

আক্রান্ত গাছের নীচের দিকের পাতায় লম্বাটে ধূসর বর্নের দানা দেখা যায় এবং পরবর্তিতে গাচের উপরের অংশে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের প্রকোপ বেশী হলে পাতা আগাম শুকিয়ে যায় ও মরে যায়। টিল্ট ২৫০ ইসি- রোগের লক্ষন দেখা মাত্রই প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল টিল্ট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে।  রোগের প্রকোপ বেশী হলে একই মাত্রায় ৭ দিন পর পর সেপ্র করুন। টিল্ট ২৫০ ইসি

কান্ড পচা

রোগের আক্রমনে প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে গাছের কাণ্ড পচে যায় এবং গাছ মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে। খরিপ মৌসুমে এই রোগ বেশী হয়। এছাড়া জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমান বেশী হলে ও পটাশের পরিমান কম হলে এই রোগ হয়। স্কোর ২৫০ ইসি, ০.৫ এম এল / লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। স্কোর ২৫০ ইসি
মোচা দানা পচা রোগ  আক্রান্ত মোচার খোসা ও দানা বিবর্ন হয়ে সমস্ত মোচা পচে যায়। দানা পুষ্ট হয় না, কুচকে অথবা ফেটে যায়।  মোচাতে দানার উপর বা মাঝে খালি চোখে ছত্রাক দেখা যায়। গাছে মোচা আসা থেকে পাকা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশী হলে এ রোগের আক্রমন বেশী হয়। টিল্ট ২৫০ ইসি, ০.৫ এম এল / লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। টিল্ট ২৫০ ইসি
প্রাউড ২০ এস পি, ১ এম এল/লিটার পানিতেমিশিয়ে স্প্রে করতে হবে, প্রাউড ২০ এস পি

 

পোকা

মাকড়ের নাম

লক্ষণ

                 প্রতিকার

কীটনাশকের নাম

কাটুই পোকা

কীড়া অবস্থায় এই পোকা দিনের বেলা মাটির ফাটলে বা গর্তে লুকিয়ে থাকে। রাতের বেলা বের হয়ে চারা গাছের গোড়ায় মাটি বরাবর কেটে দেয়। বেচে থাকার জন্য যা খায় তার চেয়ে বেশি কেটে নষ্ট করে। তীব্র আক্রমণে ক্ষেত প্রায় চারা শূন্য হয়ে পড়ে। সকাল বেলায় কেটে দেয়া চারার আশেপাশের মাটি খুড়ে কীড়া সংগ্রহ করে মেরে ফেলা। ক্যারটে ২.৫ ইসি- বীজ বপোনের আগে প্রতি শতাংশ জমিতে ৩ এমএল ক্যারাটে প্রয়োজনীয় পানির সাথে মিশিয়ে সারি ভিজিয়ে সেপ্র করুন। গাছের বয়স ২৫-৩০ দিন হলে এই মাত্রায় ক্যারাটে দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি ভিজিয়ে সেপ্র করুন। ক্যারটে ২.৫ ইসি
গোলা ৪৮ ইসি- ১০ লি. পানি/৬৯ এম এল মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। গোলা ৪৮ ইসি

মোচার কীড়া

কীড়া ভূট্টার কচি মোচা আক্রমন করে এবং সিল্ক নষ্ট করে। আক্রান্ত মোচা পচে যায়।

সবিক্রন ৪২৫ ইসি (৪০০ এমএল/একর)- প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ এমএল সবিক্রন মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে। পোকার আক্রমনের প্রকোপ বেশী হলে একই মাত্রায় ১৫ দিন পর পর সেপ্র করুন।

সবিক্রন ৪২৫ ইসি

উইপোকা

সাধারণত গাছে মোচা আসার পর উইপোকার আক্রমন হয়। উইপোকা গাছের গোড়ার দিকের মাটি উপরে তুলে ফলে, এর ফলে  গাছ শুকিয়ে মারা যায়। একতারা ২৫ ডব্লিউজি- ২.৫ গ্রাম একতারা ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে গাছ ভিজিয়ে সেপ্র করুন।

একতারা ২৫ ডব্লিউজি

টিডো ২০ এস এল; ১০ এম এল/১০ লি. পানি টিডো ২০ এস এল

 

 

১১. ফসল কাটাঃ
harvesting gru

  • সময়ঃ দানার জন্য ভুট্টা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মোচা চক্‌চক্‌ খড়ের রং ধারণ করলে এবং পাতা কিছুটা হলদে হলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। এ অবস্থায় মোচা থেকে ছড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যাবে। ভুট্টা গাছের ৭৫-৮০% মোচা পরিপক্ক হলে ভুট্টা সংগ্রহ করা যাবে।
  • পদ্ধতিঃ এ কাজের জন্য একটি বাঁশের সূঁচালো কাঠি দিয়ে মোচার আগার দিকের খোসাগুলিকে তিন ভাগ করে নিতে হয়। তারপর হাত দিয়ে টেনে সম্পূর্ণ খোসাগুলিকে মোচার গোড়া পর্যন্ত ভাগ করে এবং মোচাটি গোড়া থেকে ভেঙ্গে খুব সহজেই সংগ্রহ করা হয়। এর পর মোচাগুলো রোদে শুকানো হয়।

১২. পরিবহণ ব্যবস্থাঃ

  • পরিবহণ পদ্ধতিঃ পাটের তৈরী চটের বস্তা / পারফরেটেড প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পরিবহন করা হয়।
  • পরিবহণের মাধ্যমঃ  চটের বস্তায় ভরে ভ্যান / গরুগাড়ী / পিক-আপ / ট্রাকের মাধমে পরিবহন করে হয়।

১৩. ফসল মাড়াইঃ
seed

  • মাড়াই পদ্ধতিঃ সংগৃহীত মোচা পরপর ৩-৪ দিন খুব ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। মাটি বা পাকা মেঝের উপর বাঁশের চাটাই, ত্রিপল বা চাঁদর বিছিয়ে তার উপর মোচাগুলি রোদে দিতে হয়। মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে মোচা থেকে দানা ছাড়ানো যায়। মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে অনেক সহজেই এবং তাড়াতাড়ি ভুট্টার দানা ছাড়ানো যায়।

১৪. প্যাকেজিং:

  • প্যাকেজিংপদ্ধতিঃ পাটের তৈরী চটের বস্তা / পারফরটেড প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে প্যাকেজিং করা যেতে পারে। এর পর তা সংরক্ষণ বা পরিবহন কাতা হয়। ভুট্টা প্যাকেজিং এর জন্য ৬০ কেজি চটের বস্তা ব্যবহার করা ভালো।

১৫. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ

  • স্বল্প পরিসরেঃ ভুট্টা ভাল করে শুকানোর পর বস্তায় ভরে রাখতে হবে। এর পর ঠান্ড, শুষ্ক জায়গায় মাচার উপরে চটের বস্তার ভিতরে ০.০৫ মিমি পুরু পলিথিন দ্বারা ভুট্টার দানা সংরক্ষণ করা হয়।
  • বৃহৎ পরিসরে(উৎস): ভুট্টার দানা বা বীজ মোচা থেকে ছাড়ানোর পর রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। সাধারণত: ভুট্টার বীজ শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ কমিয়ে ১০-১২% (অর্থাৎ দাঁত দিয়ে কামর দিলে যদি কট শব্দ হয়) এর মধ্যে আনতে হয়। অনেক সময় গুদামে চটের বস্তার ভিতরে ০.০৫ মিমি পুরু পলিথিন দ্বারা ভুট্টার দানা সংরক্ষণ করা হয়।

১৬. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

  • বাজার ব্যবস্থাঃ পআর্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন। অথবা কোনো আড়তদার / বড় পাইকার /  এর কাছে ভিট্টা বিক্রয় করতে পারেন।

১৭. ভুট্টা বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ পদ্ধতিঃ মাঠ থেকে শস্য নিয়ে আসার পর বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ। বাল্ক বায়ার বা বৃহৎ ক্রেতার চাহিদা অনুসারে কৃষিজাত শস্য/পণ্য বিক্রয় করতে হলে মান নিয়ন্ত্রনের স্বার্থে বাছাইকরণ ও শ্রেণীকরণ করতে হবে। ভুট্টা শ্রেনীকরণের ক্ষেত্রে নিম্নে দেয়া নির্দেশকগুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে।

নূন্যতম নির্দেশকঃ

  • শুষ্ক ও পরিপুষ্ট দানা হতে হবে
  • কৃত্তিম রং ও প্রিজারভেটিভ মুক্ত হতে হবে
  • ছত্রাক ও অন্যান্য রোগ জীবাণু এবং পোকা-মাকড় মুক্ত হতে হবে
গ্রেড ১। আর্দ্রতাঃ সর্বোচ্চ ১২-১৩%২। রং: জাত অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যগত রং

৩। আকার- আকৃতিঃ একই ধরনের পুষ্ট বা মোটা দানা

৪। রোগবালাই এবং কীটপতঙ্গঃ পোকা ও রোগ মুক্ত ( ছত্রাক মুক্ত )

৫। ত্রুটির ধরণঃ ভাঙ্গা , টুকরা এবং অন্য কোন জাতের বা ধরনের দানার মিশ্রণ মুক্ত

৬। বিষাক্ততাঃ  আফ্লোটক্সিন মুক্ত

৭। অপ্রয়োজনীয় উপাদানঃ অপ্রয়োজনীয় উপাদান মুক্ত

 

গ্রেড বি১। আর্দ্রতাঃ সর্বোচ্চ ১৩-১৪%২। রং: জাত অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যগত রং

৩। আকার- আকৃতিঃ একই ধরনের পুষ্ট বা মোটা দানা

৪। রোগবালাই এবং কীটপতঙ্গঃ পোকা ও রোগ মুক্ত ( ছত্রাক মুক্ত )

৫। ত্রুটির ধরণঃ ০.৫% এর কম ভাঙ্গা , টুকরা এবং অন্য কোন জাতের বা ধরনের দানার মিশ্রণ যুক্ত

৬। বিষাক্ততাঃ  আফ্লোটক্সিন মুক্ত

৭। অপ্রয়োজনীয় উপাদানঃ সর্বোচ্চ ০.৫%-১%

 

গ্রেড সি১। আর্দ্রতাঃ সর্বোচ্চ ১৫%২। রং: জাত অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যগত রং

৩। আকার- আকৃতিঃ একই ধরনের নয় , মাঝারি আকারের দানা

৪। রোগবালাই এবং কীটপতঙ্গঃ পোকা ও রোগ মুক্ত ( ছত্রাক সর্বোচ্চ ২%)

৫। ত্রুটির ধরণঃ ১% এর কম ভাঙ্গা , টুকরা এবং অন্য কোন জাতের বা ধরনের দানার মিশ্রণ যুক্ত

৬। বিষাক্ততাঃ  আফ্লোটক্সিন মুক্ত

৭। অপ্রয়োজনীয় উপাদানঃ সর্বোচ্চ ১%

 

১৮. তথ্যের উৎসঃ  AIS (www.ais.gov.bd), কৃষি প্রযুক্তি হাত বই, খন্ড-১, BARI, Edt.  April, 2000 pp: 30-70, infokosh.bangladesh.gov.bd, কৃষি পণ্যের গ্রেডিং নির্দেশিকা,

২০. সর্বশেষ সংযোজন  : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

 

 

potato

আলু

১. ফসলঃ আলু

২. জাতঃ

উচ্চ ফলনশীল জাতঃ বারি আলু-১ (হীরা), বারি আলু-৪ (আইলসা),বারি আলু -৪ (ডায়মন্ট),  বারি আলু-৮ (কার্ডিনাল), বারি আলু-১১(চমক), বারি আলু-১২(ধীরা), বারি আলু-১৩ (গ্রানোলা), বারি আলু-১৫ (বিনেলা), বারি টিপিএস-১, বারি টিপিএস-২, বারি আলু-১৬ (আরিন্দা), বারি আলু-১৭ (রাজা), বারি আলু-১৮ (বারাকা), বারি আলু-১৯ (বিন্টজে), বারি আলু-২০ (জারলা)

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ  আলু চাষের জন্য বেলে দোআশ ও দোআঁশ ধরনের মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
৪. বীজঃ
true-potato-seeds

seed-potato
বীজের হারঃ  প্রতি একরে বীজের হার প্রায় ৬০০ কেজি।

বীজ শোধনঃ ১৩৬ লিটার (৩০ গ্যালন)  পানিতে ১২৪ গ্রাম (৪ আউন্স)  মারকিউরিক ক্লোরাইড দ্রবণ তৈরী করে তাতে বীজ আলু ১২ঘন্টা চুবিয়ে রাখতে হয়। ঠান্ডা পানিতে মারকিউরিক ক্লোরাইড দ্রবীভূত হয় না বলে পানি গরম করে দ্রবণ বানিয়ে ঠান্ডা করে বীজ শোধন করতে হয়। কাটা ও অংকুরিত বীজ শোধন করলে ক্ষতি হতে পারে।

৫. জমি তৈরীঃ

জমি চাষঃ জমি লাঙ্গল ও মই দিয়ে ৫-৬ টি আড়া আড়ি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুড়া করতে হবে।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

বপন ও রোপন এর সময়ঃ উত্তরাঞ্চলে মধ্য কার্তিক (নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ), দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রহায়ণ ১ম সপ্তাহ থেকে ২য় সপ্তাহ (নভেম্বরের মাসের মধ্য থেকে শেষ সপ্তাহ)।

লাইনে বপনঃ
planting_potatoes ridge-furrow

সারি থেকে সারির দুরত্ব : দেড় হাত (২৪-২৫ ইঞ্চি)। বীজ থেকে বীজের দুরত্ব : ১ বিঘাত (১০-১২ ইঞ্চি)

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম সারের পরিমাণ (গ্রাম/শতক)
ইউরিয়া ১০০০
টিএসপি ৫৩০
এমওপি ৯৫০
জিপসাম ৪৫০
জিংক সালফেট ৩৫
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (অমৱীয় বেলে মাটির জন্য) ৩৫০
বোরণ (বেলে মাটির জন্য) ৩৫
পঁচা গোবর ৪০ কেজি

প্রয়োগ পদ্ধতিঃ গোবর, অর্ধেক ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, ও জিংক সালফেট, (প্রয়োজনবোধে) রোপণের সময় জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া দ্বিতীয় বার অর্থাৎ রোপনের ৩০-৩৫ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। অম্লীয় বেলে মাটির জন্য ৩৫০ গ্রাম/শতক ম্যাগনেশিয়াম সালফেট এবং বেলে মাটির জন্য বোরণ প্রতি শতকে ৩৫ গ্রাম প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

৮. আগাছা দমনঃ

সময়ঃ অন্তবর্তী‌‍ পরিচর্যার সময় উপড়ে ফেলুন।

দমন পদ্ধতিঃ সরকার অনুমোদিত আগাছা নাশাক ব্যবহার করুন।

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ

সেচের সময়ঃ প্রথম সেচঃ আলু বীজ বপনের ২০-২৫ দিনের মধ্যে (ষ্টোলেন বের হবার সময়) দুই সারির মাঝখানে সেচ দিতে হবে। সেচের ব্যবস্থা না থাকলে কচুরীপানা দিয়ে মাটি ঢেকে রাখলে সুফল পাওয়া যায়। দ্বিতীয় সেচঃ আলু বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে সেচ দিতে হবে। তৃতীয় সেচঃ আলু বীজ বপনের ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে (শুটির বৃদ্ধি পায়) সেচ দিতে হবে।

নিষ্কাশনঃ সুনিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ

রোগের নাম লক্ষণ প্রতিকার কীটনাসকের নাম উৎস
 

 

লেট ব্লাইট / নাব্বী ধসা / মড়ক / পঁচন

প্রথামিক অবস্থায় পাতার কিনার বা উপরের অংশে বাদামী রংয়ের ভেজা দাগ পড়ে। আস্তে আস্তে এ সব দাগ কালচে রং ধারন করে এবং কান্ডে ছড়িয়ে পড়ে। সকালে আক্রান্ত পাতার নীচের দিকে সাদা পাউডারের মত রোগ জীবানু দেখা যায়। অনুকূল আবহাওয়ায় ২-৪ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ আলু ক্ষেত পচে নষ্ট হয়ে যায়। রিডোমিল গোল্ড এমজেড ৬৮ ডব্লিউজি/ফলিও গোল্ড ৪৪০ এসসি-প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম মিশেয়ে পাতার উপর নীচ সহ সমস্ত গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। রিডোমিল গোল্ড এমজেড ৬৮ ডব্লিউজি/ফলিও গোল্ড ৪৪০ এসসি সিনজেন্টা
রাজল্যান্ড ৮০ ডব্লিউ পি-১ কেজি / একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। রাজল্যান্ড ৮০ ডব্লিউ পি এ সি আই
এগ্রিজেব ৮০ ডব্লিউ পি(ম্যানকোজেব)-৪ গ্রাম/১ লি. পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। এগ্রিজেব ৮০ ডব্লিউ পি(ম্যানকোজেব) স্কয়ার ফা.লি.
 

 

আর্লি বাইট

পাতার উপর বিক্ষিপ্তভাবে ছোট ছোট বাদামী দাগ দেখা দেয়। সাধারণত নীচের পাতায় এই দাগ দেখা দেয়। দাগগুলো ক্রমেই বড় হয় এবং বিত্তাকার রেখার সৃষ্টি করে ও আক্রান্ত স্থান শুকিয়ে যায়। ফলিও গোল্ড ৪৪০ এসসি, মাত্রাঃ প্রতি লিটার পানিতে ৫ এমএল-ফলিও গোল্ড মিশিয়ে পাতার উপর নীচ সহ সমস্ত গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে সেপ্র করতে হবে। ফলিও গোল্ড ৪৪০ এসসি সিনজেন্টা
রাজল্যান্ড ৮০ ডব্লিউ পি-১ কেজি / একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। রাজল্যান্ড ৮০ ডব্লিউ পি এ সি আই
এগ্রিজেব ৮০ ডব্লিউ পি(ম্যানকোজেব)-৪ গ্রাম/১ লি. পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। এগ্রিজেব ৮০ ডব্লিউ পি(ম্যানকোজেব) স্কয়ার ফা.লি.
স্টেম ক্যাংকার আলু গজানো অংকুরের মাথায় দাগ দেখা যায়। বড় গাছের গোড়ার দিকে লম্বা লালচে দাগ বা ক্ষতের সৃষ্টি হয়।  কান্ডের সাথে ছোট ছোট টিউবার দেখা যায়। শষ্য আবর্তন (Crop Rotation) নিয়ম মানা।বীজ আলু মাটির বেশী গভীরে রোপন এড়াতে হবে।
আলুর দাদ  হালকা দাদ হলে টিউবারের উপর উঁচু এবং ভাসা বিভিন্ন আকারের বাদামী দাগ পড়ে।  প্রকোপ বেশী হলে দাদে দোলাকার গর্ত বা ডাবা দাগ পড়ে।  রোগ মুক্ত বীজ ব্যবহার করা।বেশী মাত্রয় ইউরিয়া সার দেয়া এড়াতে হবে।
পাতা মোড়ানো রোগ আক্রান্ত গাছের পাতা খসখসে, খাড়া ও উপরের দিক মুড়ে যায়। আগার পাতার রং হালকা সবুজ এবং গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।  কখনো আক্রান্ত পাতার কিনারা লালচে বেগুনী রং হয়, গাছ খাটো হয় এবং সোজা হয়ে উপরের দিকে দাড়িয়ে থাকে।  রোগ মুক্ত বীজ ব্যবহার করা।আক্রান্ত গাছ টিউবারসহ তুলে ফেলা।সরকার অনুমোদিত কটিনাশক ব্যবহার করুন।
পোকামাকড়ের নাম লক্ষণ প্রতিকার কীটনাসকের নাম উৎস
কাটুই পোকা মাটিতে বসবাসকারী কাটুই পোকা প্রথমে আলুর গাছ কাটে এবং পরবর্তিতে আলু ছিদ্র করে মারাত্মক ক্ষতি করে। ক্যারাটে, মাত্রাঃ একর প্রতি ৩০০ এমএল,প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল ক্যারাটে মিশিয়ে সারির উপর দিয়ে গাছের গোড়া বরাবর ভালভাবে মাটি ভিজিয়ে দিন। সেপ্র শেষে গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিন। ক্যারাটে সিনজেন্টা
ফুরাডান ৫ জি, ৮ কেজি / একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। ফুরাডান ৫ জি পদ্মাওয়েল কো. লই.
পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি(ক্লোরপাইরিফস)- ৩.৫ এমএল/লি. পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি(ক্লোরপাইরিফস) স্কয়ার ফা.লি.
এফিড পাতার রস চুষে খায় এবং পাতা কুকড়িয়ে যায়। ভাইরাস রোগের বাহন এবং পাতায় ক্লোরোফিল কমিয়ে দেয়। একতারা ২৫ ডব্লিউজি: মাত্রাঃ প্রতি লিটার পানিতে ০.২৫ গ্রাম বা প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম একতারা  মিশেয়ে পাতার উপর নীচ সহ সমস্ত গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে সেপ্র করুন। কতারা ২৫ ডব্লিউজি সিনজেন্টা
সুতলী পোকা কীড়া আলুর মধ্যে লম্বা সুড়ঙ্গ করে আলুর ক্ষতি করে। বসতবাড়ির সংরক্ষিত আলু এ পোকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বাড়িতে সংরক্ষিত আলু শুকনা বালি, ছাই, তুষ বা কাঠের গুড়ার পাতলা স্তর (আলুর উপর ০.৫ সে. মি.) দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সংরক্ষণের আগে সুতলী পোকা আক্রান্ত আলু বেছে ফেলে দিতে হবে। ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি (প্রতি লিটার পানিতে ৫ এমএল হাবে) ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি সিনজেন্টা

১১. বিশেষ পরিচর্যাঃ আলু লাগানোর ৩০-৩৫ দিন পর গোঁড়ার মাটি দেয়া প্রয়োজন।potato-growth potato-field

১২. ফসল কাটাঃ
potato-harvesting potato-harvesting2

সময়ঃ গাছ পরিপক্ক হলে নীচের পাতা হলুদ হয়ে যায়। বীজ বপনের ১০০ থেকে  ১২০ দিনের  মাথায় আলু উত্তোলন করা যায়।তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে গাছ কাটা বা উপড়ানোর সময় আঘাতে আলু কেটে না যায়।

পদ্ধতিঃ প্রখর রোদে আলু না তুলে সকালে এবং বিকালে তুলতে হবে। বীজতলা থেকে আলু তুলে সাথে সাথে ছায়াযুক্ত স্হানে নিয়ে ৫-৬ ইঞ্চি  উঁচু করে ছড়িয়ে, ঐ অবস্হায় ৮ দিন রেখে বাছাই করা হয়।

১৩. প্যাকেজিং:

প্যাকেজিং পদ্ধতিঃ আলু রাখার জন্য চটের পাতলা এবং নতুন বস্তা ব্যবহার করতে হবে।

১৪. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ

স্বল্প পরিসরেঃ সকালে এবং বিকালে তুলতে হবে। বীজতলা থেকে আলু তুলে সাথে সাথে ছায়াযুক্ত স্হানে নিয়ে ১০-১৫ সেমি উচু করে মেঝেতে বিছিয়ে রাখা দরকার।, ঐ অবস্হায় ৮-১০ দিন রেখে বাছাই করা হয়।১৫ দিন পর পর গ্রেডিং করে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে হয়।

১৫. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

বাজার ব্যবস্থাঃ পার্শবর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন।

১৬. তথ্যের উৎসঃ  AIS, BARI, কৃষি প্রযুক্তি হাত বই, ekrishok.com

১৭. সর্বশেষ সংযোজন :জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন- info@ekrishok.com

 

rice

ধান

১. ফসলঃ ধান

২. জাতঃ

দেশী জাতঃ হাসিকলমী, কালিজিরা, চিনিসাগর

উচ্চ ফলনশীল জাতঃ অধিক ফলন ও লাভের জন্য চাষ উপযোগী সঠিক জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে প্রচলিত উচ্চ ফলনশীল জাতের নাম ও তার উৎপাদনকারী কোম্পানীর নাম নিম্নরুপ-

জাত কোম্পানী / গবেষণা পতিষ্ঠান বীজ বপনের সময়/মৌসুম
ব্রি ধান ৫০ (বাংলামতি) BRRI বোরো
বিআর ১ (চান্দিনা) BRRI বোরো, আউশ
বিআর ২ (মালা) BRRI বোরো, আউশ
বিআর ৩ (বিপ্লব) BRRI বোরো, আউশ, আমন
ব্রি ধান ২৮ BRRI বোরো
ব্রি ধান ২৯ BRRI বোরো
হাইব্রিড সোনার বাংলা -৬ মল্লিকা সীড কো.
হাইব্রিড রূপসী বাংলা-১, রূপালী, সচ্ছল (চিকন) গেটকো এগ্রো সীড
হাইব্রিড চমক ১ আলমগীর সীড কোম্পানী
ব্রিধান- ২৮,২৯, ৪৫, ৪৭, বি. আর ১৪ (গাজী), বি. আর ১৬ (শাহী আলম) বি. আর ২৬ (শ্রাবনী) পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র (পদক্ষেপ বীজ ধান)
ব্রি-ধান-২৮, ২৯ Rangs Agro Biotech Ltd.
আফতাব এলপি ৫০, ৭০, ১০৮, ১০৬, ০৫ (হাইব্রিড) আফতাব সীড রবি (অক্টোবর-ডিসেম্বর), খরিপ-১ (ফেব্রুয়ারী-এপ্রিল) এবং খরিপ-২ (জুলাই-আগষ্ট)
ব্রিধান – ৩২,৪১, ৪৯, ২৮, ২৯হাইব্রিড – যমুনা (QDR-3) কৃষি বানিজ্য প্রতিষ্ঠান
হাইব্রিড হীরা-৯৯-৫, ২ (HS-273), হীরা -৪,৫,৬,১০, মিতালী- ১২ সুপ্রীম সীড কো.
সাথী (HB09), আলোড়ন (HB8), জাগরন (GB4), শক্তি-২ (ব্র্যাক-৫), শক্তি-৩ (ব্র্যাক-৬) ব্র্যাক সীড
বিনাধান-৭ (মংগা এলাকার জন্য) BINA
BRRI ধান -৪৭ (লবণাক্ত সহনীয় জাত) BRRI

 

৩. উপযোগী জমি ও মাটিঃ বাংলাদেশে প্রায় ৭০ ভাগ জমিতে ধান চাষ হয়ে থাকে। তবে ভা্লো ফলনের জন্য উর্বর, সুনিষ্কাশিত ও সেচের সুবিধা রয়েছে এমন জমি নির্বাচন করতে হবে।

 

৪. বীজঃ

ভালো বীজ নির্বাচনঃ

ভাল বীজের বৈশিষ্ট্যঃ রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট ও চিটামুক্ত হতে হবে।

সকল বীজের আকার আকৃতি একই ধরনের হবে।

ভাল বীজ বাছাইয়ের পদ্ধতিঃ প্রায় ৪০ লিটার পরিষ্কার পানিতে দেড় কেজি ইউরিয়া সার মিশিয়ে তার মধ্যে বীজ ধান ছেড়ে দিয়ে নেড়েচেড়ে দিতে হব। ভারী, পুষ্ট, সুস্থ ও সবল বীজ পাত্রের তলায় জমা হবে এবং অপরিপুষ্ট, হালকা, রোগা বা ভাঙ্গা বীজ ভেসে থাকবে। হাত অথবা চালনি দিয়ে ভাসমান বীজগুলো পৃথক করে নিতে হবে। ভারী বীজ নীচ থেকে তুলে নিয়ে পরিষ্কার পানিতে ৩ থেকে ৪ বার ভাল করে ধুয়ে ছায়াতে শুকিয়ে অথবা এভাবে বাছাইকৃত বীজ জাগ দিয়ে মুখ ফুটিয়ে বীজতলায় বোনা যেতে পারে। তাছাড়া কুলা দিয়ে খুব ভালোভাবে ঝেড়ে নিয়েও পরিপুষ্ট বীজ বাছাই করা যায়।

বিশেষ পরামর্শঃ বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে এবং ভালো সুষ্ঠ বীজ নির্বাচনের জন্য কৃষক, নমুনা বীজ মাঠ পর্যায়ে পরিক্ষা করতে পারেন, এ ক্ষেত্রে বীজ গজানোর হার ৮০% এর বেশী হবে।

বীজের হারঃ সাধারন ভাবে ১ কেজি অংকুরিত বীজ ১ শতক বীজ তলার জন্যে এবং ১ শতাংশের বীজ তলা দিয়ে ২২-২৫ শতাংশ জমিতে রোপন করা যায়। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে বীজের প্যাকেটে লেখা নির্দেশিকা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

বীজ শোধনঃ ভিটাভেক্স ২০০ / টিলথ অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করে বীজ় শোধন করা ভাল।

৫. জমি তৈরীঃ

জমি চাষঃ

মাটির প্রকার ভেদে প্রয়োজনমত ৩-৪ টি  চাষ এবং মই দিয়ে জমি সমান করতে হবে এবং থকথকে কাদা করতে হবে।

জমি উঁচু নীচু থাকলে মই ও কোদাল দিয়ে সমতল করতে হবে।

প্রথম চাষের পর অন্তত ৭ দিন পর্যন্ত জমিতে পানি আটকে রাখুন। এতে জমির খড় ও আগাছা পচে জমি উর্বর বেসকরবে।

বীজ তলা তৈরীঃ চারটি পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করা যায়। এগুলো হচ্ছে শুকনো, কাদাময়, ভাসমান ও ডাপোগ বীজতলা। শুকনো বীজতলা- উপযুক্ত আর্দ্রতায় ৫-৬ বার চাষ ও মই দিয়ে মাটিকে একেবারে ঝুরঝুরে করার পর জমি সমান করে শুকনো বীজতলা তৈরি করা যায়।দোঁআশ ও এটেল মাটি এ বীজতলায় জন্য ভাল। বীজতলার জমি উর্বর হওয়া প্রয়োজন। যদি জমি হয় তাহলে প্রতি বর্গমিটার জমিতে দুই কেজি হারে জৈব সার (পচা গোবর বা আবর্জনা) সুন্দরভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর জমিতে ২-২.৫ ইঞ্চি পানি দিয়ে দু-তিনটি চাষ ও মই দিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন রেখে দিন এবং পানি ভালভাবে আটকে রাখুন। আগাছা, খড় ইত্যাদি পচে গেল আবার চাষ ও মই দিয়ে থকথকে কাদাময় করে জমি তৈরি করতে হবে। এবার জমির দৈর্ঘ্য বরাবর ১ মিটার চওড়া বেড তৈরি করতে হবে। বেডের দুই পাশের মাটি দিয়ে বেড তৈরি করা যায়।এরপর বেডের উপরের মাটি বাঁশ বা কাঠের চ্যাপ্টা লাঠি দিয়ে সমান করতে হবে। কাদা বেশি হলে বীজ মাটিতে ডুবে যাবে এবং তাতে ভালভাবে বীজ গজাবে না। এ অবস্থায় বেড তৈরির পৌনে এক ঘন্টা পর বীজ বোনা দরকার।

বীজ তলার পরিচর্যাঃ বীজ তলার চার পাশে বেড়া/নেট দিয়ে ঘেরে দিতে হবে। সেচের প্রয়োজন হলে পরিমিত মাত্রায় সেচ দিতেন হবে।

৬. বপন ও রোপন এর পদ্ধতিঃ

বপন ও রোপন এর সময়ঃ সাধারণভাবে বীজ তলার বয়স আউশে ২০-২৫ দিন, রোপা আমনে ২৫-৩০ দিন(বীজ তলায় বীজ বপন-আষাঢ় মাস)এবং বোরাতে ৩৫-৪৫ দিন(বীজ তলায় বীজ বপন-১লা কার্তিক থেকে অগ্রাহয়ণের ১ম সপ্তাহ) হওয়া উচিত। তবে কোম্পানীর উৎপাদিত বীজের ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে লেখা  নির্দেশকা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

ছিটিয়ে বা লাইনে বপনঃ রোপা ধান সাধারনত লাইনে রোপন করা ভালো এতে করে ফসলে আলো বাতাসের প্রবেশ যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা করতে অনেক সুবিধা হয়।

রোপনঃ রোপনের ক্ষেত্রে সাধারনত লাইন থেকে লাইনের দুরত্ব ৯-১০ ইঞ্চি এবং প্রতি লাইনে গোছা/থোর থেকে গোছা/থোরের দুরত্ব ৬ ইঞ্চি। তবে

বিভিন্ন কোম্পানীর উৎপাদিত বীজের ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশকা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

৭. সার ব্যবস্থাপনাঃ

জমির উর্বরতা

প্রতি শতাংশে সারের পরিমাণ (গ্রাম)

ইউরিয়া টিএসপি/ডিএপি এমপি জিপসাম জিঙ্ক
অতি নিম্ন ১৪০০ ৪৯০ ৭০০ ৩১৫ ৬২
অতি নিম্ন ১২০০ ৪২০ ৬০০ ২৭০ ৫০
নিম্ন ১০০০ ৩৫০ ৫০০ ২২৫ ৩৭
নিম্ন মধ্যম ৮০০ ২৮০ ৪০০ ১৮০ ২৫
মধ্যম ৬০০ ২১০ ৩০০ ১৩৫ ১২
মধ্যম পরিমিত ৪০০ ১৪০ ২০০ ৯০ -
অতি নিম্ন ৯৪৫ ৩৫০ ৪৭২ ৩১৫ ৫০
অতি নিম্ন-নিম্ন ৮১০ ৩০০ ৪০৫ ২৭০ ৪০
নিম্ন ৬৭৫ ২৫০ ৩৩৭ ২২৫ ৩০
নিম্ন মধ্যম ৫৮০ ২০০ ২৭০ ১৮০
মধ্যম ৪০৫ ১৫০ ২০২ ১৩৫ ১০
মধ্যম পরিমিত ২৭০ ১০০ ১৩৫ ৯০ -
অতি নিম্ন ৭৮৭ ২৮০ ৪২০ ১৩১ ৫০
অতি নিম্ন-নিম্ন ৬৭৫ ২৪০ ৩৬০ ১৯৮ ৪০
নিম্ন ৫৬২ ২০০ ৩০০ ১৬৫ ৩০
নিম্ন মধ্যম ৪৫০ ১৬০ ২৪০ ১৩২ ২০
মধ্যম ৩৩৭ ১২০ ১৮০ ৯৯ ১০
মধ্যম পরিমিত ২২৫ ৮০ ১২০ ৬৬ -

 

প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

ইউরিয়া সারের কার্যকারিতা জমিতে কম সময় থাকে তাই এ সার তিন কিস্তি-তে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি- জমি তৈরির শেষ পর্যায়ে, ২য় কিস্তি- ধানের গোছায় ৪-৫ টি কুশি অবস্থায় ও ৩ য় কিস্তি- কাইচথোড় আসার ৫-৭ দিন পূর্বে দিতে হবে এবং ইউরিয়া ছারা অন্যান্য সার গুলো জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে দিতে হিবে।

৮. আগাছা দমনঃ

সময়ঃ সব ধরনের ধানের জমিতেই আগাছা জন্মে। আগাছা সময়মত পরিষ্কার না করলে তা ধানের সাথে খাদ্য ও জায়গা নিয়ে প্রতিযোগিতা করে। আগাছা ধান ফসলের সাথে আলো, পানি ও পুষ্টি নিয়ে প্রতিযোগিতা করে।

দমন পদ্ধতিঃ হাত / নিড়ানি / রাইস উইডারের সাহায্যে দমন করতে হবে। অথবা চারা রোপনের ৭-১৫ দিনের মধ্যে সুপার পাওয়ার ২০ গ্রম ৩৩ শতক জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।

৯. সেচ ব্যবস্থাঃ
rice-field-irrigation

সেচের সময়ঃ চারা রোপনের পর জমিতে পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত অবশ্যই ১-২ ইঞ্চি দাড়ানো পানি রাখতে হবে।

সেচের পরিমাণঃ কাইচ থেকে দানা শক্ত হওয়া পর্যন্ত সময় (১৫ দিন) জমিতে অবশ্যই ১-২ ইঞ্চি দাড়ানো পানি রাখুন। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে সেচ দেয় ও জমি শুকানোর জন্য পানি পাইপ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

১০. রোগ ও পোকামাকড় দমনঃ

রোগের নাম লক্ষণ প্রতিকার কীটনাসকের নাম উৎস
খোলপড়া রোগ প্রথমে ধান গাছের নীচের অংশে সবুজ ধূসর গোল দাগ দেখা যায়।আস্তে আস্তে দাগ বড় হয়ে খোলের উপরিভাগে ও সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে।খোল দেখতে গোখরা সাপের চামড়ার দাগের মত মনে হয়।একটি কুশী বা গাছ থেকে অন্য কুশী বা  গাছে রোগ ছড়ায়।ধান গাছের বৃদ্ধির যে কোন স্তরে এ রোগের আক্রমণ হতে পারে তবে কুশী ছাড়ার শেষ পর্যায় থেকে ধানের ছড়া বের হওয়া  র্পযন্ত খোলপচা রোগের প্রকোপ বেশী হয়। আক্রমণ তীব্র হলে ধান গাছ পোড়া মনে হয় এবং ক্ষেতের মধ্যে অংশ বিশেয় বসে যায় ও ধান গাছ মরে যায়। খোলপচা রোগের আক্রমণে শতকরাপ ২৫-৩০ ভাগ ফলন কমে যায়। টিল্ট ২৫০ ইসি, মাত্রা : ৪০০ এমএল/একর; ব্যবহার বিধি:প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ এমএল  টিল্ট মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ধান গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুন।আক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে প্রয়োজনে ১৫ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে স্প্রে করুন। অথবা স্কোর ২৫০ ইসি, মাত্রা : ২০০ এমএল/একর; ব্যবহার বিধি : প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল অথবা  স্কোর মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ধান গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুন।আক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে প্রয়োজনে ১৫ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে স্প্রে করুন। অথবা এনভিল ৫ এসসি, মাত্রা : ২০০ এমএল/একর, ব্যবহার বিধি : ১০ লিটার পানিতে ১০ এমএল এনভিল মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ধান গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুন।আক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে প্রয়োজনে ১৫ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে স্প্রে করুন। টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি, এনভিল ৫ এসসি সিনজেনটা
গোল্ডজিম ৫০০ এসসি, ২০ এম এল/১০ লি. পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। গোল্ডজিম ৫০০ এসসি এসিআই
বাদামী দাগ ধান গাছের পাতায় এবং বীজের খোসায় এই রোগের স্পষ্ট লক্ষন দেখা যায়। প্রথমে পাতার দাগগুলো ডিম্বাকৃতি এবং তিল বীজের মত মনে হয়। প্রায় একই রকম দাগ পাতার সমস্ত অংশে সমানভাবে দেখা যায়। দাগের কেন্দ্র ধূসর বা সাদা বর্নের এবং কিনারা হালকা রংয়ের হয়। টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি সিনজেনটা
সরু বাদামী দাগ পাতার মধ্যে ছোট, সরু ও চিকন লম্বা-লম্বি বাদামী দাগ খোলা বীজের বোটায় এবং ধানের তুষের উপর হতে পারে। লম্বা দাগগুলো পাতার শিরার সমান্তরালে থাকে। দাগের কেন্দ্রে হালকা রংয়ের এবং সরু। সাধারনত এই সরু বাদামী দাগ লাল বাদামী এবং দাগের কিনারা বাদামী রংয়ের হয়ে যায়। টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি সিনজেনটা
খোল পচা ধান গাছে থোড় আসার শেষ পর্যায় যে খোল ছড়াকে আবৃত করে রাখে সেই খোলে এই রোগ হয়। প্রথমে গোলাকার বা অনিয়মিত লম্বা দাগ হয়। দাগের কেন্দ্র ধূসর ও কিনারা বাদামী রং বা ধূসর বাদামী হয়। দাগগুলো একত্রে বড় হয়ে সম্পূর্ন খোলেই ছড়াতে পারে। থোড়ের মুখ বা শীষ পচে যায় এবং গুড়া ছত্রাংশ খোলের ভিতর প্রচুর দেখা যায়। শীষ আংশিক বের হয় ও খুব কম সংখ্যক ধান পুষ্ট হয়। স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর স্কোর ২৫০ ইসি সিনজেনটা
এমকোজিম ৫০ ডব্লিউ পি- প্রতি একরে ২০০-২০৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে। এমকোজিম ৫০ ডব্লিউ পি এ সি আই
পাতার ফোস্কা পড়া সাধারনত ধান গাছের বয়স্ক পাতার আগায় এই রোগ দেখা যায়। মাঝে মাঝে পাতার মাঝখানে বা কিনারায় হতে পারে। দাগ অনেকটা আয়তাকার বা হীরক আকৃতির জলছাপের মত মনে হয়। দাগ বড় হয়ে ডিম্বাকৃতি বা আয়তাকার ও জলপাই রংয়ের হয়। দাগের ভিতর গাড় বাদামী চওড়া রেখা ও হালকা বাদামী রেখা পরপর বেস্টনী করে থাকে এবং কিছুটা ডোরাকাটা দাগ মনে হয়। বেশী আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে খড়ের রং হয় ও দাগের কিনারা হালকা বাদামী এলাকার মত হয়। টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি সিনজেনটা
কান্ড পচা ছত্রাক সাধারনতঃ জমির পানির উপরের তল বরাবর কোন ক্ষতের মাধ্যমে গাছের ভিতর ঢুকে রোগ সৃষ্টি করে। প্রথমে গাছের বাইরের খোলে কালচে গাড়, অনিয়মিত দাগ পড়ে এবং আস্তে আস্তে বড় হয়। পরে ছত্রাক গাছের কান্ডের ভিতর ঢুকে কান্ডকে দুর্বল করে ও গাছ হেলে ভেঙ্গে পড়ে। টিল্ট ২৫০ ইসিঃ ৪০০ এমএল/একর বা স্কোর ২৫০ ইসিঃ ২০০ এমএল/একর টিল্ট ২৫০ ইসি, স্কোর ২৫০ ইসি সিনজেনটা
প্রাউড ২৫ ইসি-বিঘা প্রতি ১৩৫ এম এল প্রয়োগ করতে হবে। প্রাউড ২৫ ইসি এসিআই
পোকামাকড়ের নাম লক্ষণ প্রতিকার কীটনাসকের নাম উৎস
 

 

মাজরা পোকা( হলুদ মাজরা, কাল মাথা মাজরা, গোলাপী মাজরা)

হলুদ মাজরা পাতার উপরে ও নীচে ডিম পারে ও ডিমের গাদার উপর হালকা ধূসর রংয়ের আবরন পড়ে।  ডিম ফুটে কীড়া বের হয়ে আস্তে আস্তে কান্ডের ভিতর প্রবেশ করে ভিতরের নরম অংশ কুড়ে কুড়ে খায়। ক্রমে গাছের ডিগ ও পাতার গোড়া খেয়ে ফেলে ফলে ডিগ মারা যায়। শীষ আসার আগ পর্যন্ত এ ধরনের ক্ষতি হলে মরাডিগ দেখা যায় এবং ডিগ টান দিলে সহজেই উঠে আসে।  শীষ আসার পর মাজরা পোকা ক্ষতি করলে সম্পূর্ন শীষ শুকিয়ে যায়। একে সাদাশীষ বা মরাশীষ বলে। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি -৭৫ গ্রাম/হেক্টর: ১০ লিটার পানিতে ১.৫ গ্রাম ভিরতাকো মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন। ভিরতাকো শেষ প্রয়োগ ও ফসল তোলার মাঝে ২১ দিন ব্যবহার রাখা উচিত। রাইসন ৬০ ইসি–৬৮০ এমএল/একর : পোকার আক্রমন দেখা দিলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৩৪ এমএল রাইসন মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন। মিশ্রনের পরপরই কীটনাশক স্প্রে করুন। (জমিতে আড়আড়িভাবে হেঁটে ১০০ গোছায় কমপক্ষে ৫ টি পূর্নাঙ্গ মাজরা পোকা আছে তা নিশ্চিত হয়ে কীটনাশক প্রয়োগ করুন) ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, বাসুডিন ১০ জি, রাইসন ৬০ ইসি সিনজেনটা
ব্রিফার ৫ জি-১.৩৫ কেজি / বিঘাতে প্রয়োগ করতে হবে। ব্রিফার ৫ জি এসিআই
ফুরাডান ৫ জি-৪ কেজি/একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। ফুরাডান ৫ জি পদ্মাওয়েল কো.লি.
পাতা মোড়ানো পোকা পূর্ন বয়স্ক স্ত্রী পোকা পাতার মধ্য শিরার কাছে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে পাতার সবুজ অংশ খায় ও বড় হবার সাথে সাথে পাতা লম্বালম্বি ভাবে মুড়িয়ে একটা নলের মত তৈরী করে। মোড়ানো পাতার মধ্যেই কীড়া পুত্তলীতে পরিনত হয়। মোড়ানো পাতা ভিতরে সবুজ ও বাদামী রংয়ের গুড়া গুড়া মল দেখা যায়। থোড় আসার সময় এ পোকার আক্রমন হলে চিটা ধানের সংখ্যা বেশী হয়। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৭৫ গ্রাম/হেক্টর) অথবা রাইসন ৬০ ইসি (৬৮০ এমএল/একর): পোকার আক্রমন দেখা দিলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৩৪ এমএল রাইসন মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে ভালভাবে স্প্রে করুন। মিশ্রনের পরপরই কীটনাশক স্প্রে করুন। আক্রমন বেশী হলে ৭-১৪ দিন  পরপর এক ই নিয়মে স্প্রে করুন। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, রাইসন ৬০ ইসি সিনজেনটা
সবুজ পাতা ফড়িং   পূন বয়স্ক বাচ্চা উভয় অবস্থায় পোকা ধানের পাতার রস চুষে খায়।  ফলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় ও গাছ খাট হয়ে যায়।  এই পোকা টুংরো রোগের ভাইরাস ছড়িয়ে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করে। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৩০-৩১ গ্রাম/একর) ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি সিনজেনটা
বাদামী গাছ ফড়িং   বাচ্চা ও পূর্ন বয়স্ক পোকা একসঙ্গে ধান গাছের গোড়ায় বসে রস চুষে খায়। ফলে ধান গাছ দ্রুত শুকিয়ে খড়ের মত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সম্পূর্ন ধান খেত নষ্ট হয়ে যায়।  আক্রান্ত খেত “বাজ পোড়ার“ মত হয়ে যায়। একতারা ২৫ ডব্লিউজি – ২৫ গ্রাম/একর প্রতি গোছায় ২-৩ টি বাদামী গাছ ফড়িং দেখা দিলে একতারা স্প্রে করুন। ১০ লিটার পানিতে ১.২ গ্রাম একতারা মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে গাছের গোড়ায় ভালভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করুন। আক্রমনের তীব্রতানুযায়ী ৭-১৪ দিন পর পর একই নিয়মে স্প্রে করুন। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৩০ গ্রাম/একর) ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, একতারা ২৫ ডব্লিউজি সিনজেনটা
পামরী পোকা   পূর্ন বয়স্ক পামরী পোকা পাতার উপরের সবুজ অংশ এমনভাবে কুড়ে কুড়ে খায় যে শুধু পর্দাটাই বাকী থাকে।  কীড়াগুলো পাতার দুই পর্দার মধ্যে সুড়ঙ্গ করে সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। অনেকগুলি কীড়া এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা শুকিয়ে যায়। কীড়া ও পুত্তলী সুড়ঙ্গের মধ্যেই থাকে। সম্মিলিতভাবে একযোগে হাতজাল দিয়ে পূর্নবয়স্ক পোকা ধরে মেরে ফেলা। আক্রান্ত খেতের পাতা গোড়া থেকে ২ ইঞ্চে উপরে কেটে পাতাগুলে নষ্ট করা। ৩৫% ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্থ হলে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
ব্রাভো ৫০ এস্পি (কারটাফ)-১৬ গ্রাম/১০লি. পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। ব্রাভো ৫০ এস্পি (কারটাফ) স্কয়ার কো. লি.
গলমাছি  স্ত্রী গলমাছি পাতার নীচের পাশে ডিম পাড়ে।  ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ধান গাছের মাঝখানে বাড়ন্ত কুশীর গোড়ায় আক্রমন করে। ফলে মাঝখানে পাতাটা পেয়াজের পাতার মত নলাকার হয়ে যায়। এই অবস্থায় কুশীতে শীষ বের হয় না। ভিরতাকো সিনজেনটা
সিডিয়াল ৫ জি-৪ কেজি/একর প্রয়োগ করতে হবে। সিডিয়াল ৫ জি এসিআই
গান্ধী পোকা   পূর্ন বয়স্ক গান্ধী পোকা ধানের পাতা ও শীষের উপর সারি করে ডিম পাড়ে।  পূর্ন বয়স্ক পোকা বা বাচ্চা পোকা উভয়ই ধানের দানা আক্রমন করে। ধানের দানায় যখন দুধ সৃষ্টি হয় তখন আক্রমন করলে ধান চিটা হয়ে যায়।  সবুজ রংয়ের বাচ্চা এবং পূর্ন বয়স্ক গান্ধী পোকার গা থেকে বিশ্রি দুর্গন্ধ বের হয়।  ধানের মান খারাপ হয়, মাড়াইয়ের সময় চাল ভেঙ্গে যায়।   হাত জালের সাহায্যে গান্ধী পোকা সংগ্রহ করে মেরে ফেলা।  কেরোসিন ভিজানো দড়ি আক্রান্ত খেতে আড়আড়িভাবে টেনে পোকা দমন করা।  প্রতি গোছায় ২-৩ টি গান্ধী পোকা দেখা দিলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা। মিপসিন ৭৫ ডব্লিউ পি, ৪৫৩ গ্রাম / একর
লেদা পোকা লেদা পোকার কীড়া ধান গাছের পাতা পাশ থেকে এমনভাবে কাটে যে কেবল ধানগাছের কান্ডই অবশিষ্ট থাকে। সাধারনত শুকনা জমিতে এদের আক্রমন বেশী হয়। কোন কোন সময় চারা গাছের গোড়াও কাটে। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি (৩০ গ্রাম/একর) ব্যবহার করা। ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি

 

১২. বিশেষ পরিচর্যাঃ

এলসিসি
lcc
এলসিসি বা লিফ কালার চার্ট হলো একটি সাধারণ এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের তৈরি একটি ছোট স্কেল যা ব্যবহার করে ধান ক্ষেতে সঠিক পরিমাণে বেশি কার্যকরভাবে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যায়। স্কেলটিতে হাল্কা হলুদাভ সবুজ থেকে ক্রমান্বয়ে গাঢ় সবুজ রঙের ৪টি স্ট্রিপ আছে যা দিয়ে ধানের পাতার সবুজ রঙের সামঞ্জস্য বিশ্লেষণ করে জমিতে ইউরিয়া সারের প্রয়োগমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

পানি পাইপ

  • ধান ক্ষেতে সেচের সময় নিরুপনের জন্য ১২ ইঞ্চি লম্বা ও ৩-৪ ইঞ্চি ব্যাস বিশিষ্ট একটি পিভিসি পাইপ নিন ।
  •  উপরের ছিদ্রহীন ৪ ইঞ্চি মাটির উপর থাকবে ।
  •  নীচের ছিদ্রহীন ৮ ইঞ্চি মাটির নীচে থাকবে ।
  • ধান লাগানোর দিনই পানি পাইপ স্থাপন করুন ।
  •  একই সমান্তরাল জমির জন্য বিঘাপ্রতি ১ টি পানি পাইপ স্থাপন করুন ।
  •  পানি পাইপের ভিতর তেকে তলা পর্যন্ত কাদা মাটি সরিয়ে ফেলুন এবং সব সময় পরিষ্কার রাখুন ।

বিশেষ করনীয়

  • চারা রোপনের পর পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ১-২ ইঞ্চি পরিমান পানি রাখুন ।
  • এরপর পানি পাইপের উপর থেকে পর্যবেক্ষন করতে থাকুন। দেখবেন পানি পাইপের ভিতরের পানি দিন দিন নীচের দিকে যাচ্ছে।
  • যে দিন উপরে থেকে পানি পাইপের তলদেশের মাটি দেখা যাবে,সে দিনই পরবর্তী সেচ দিন ।
  • ফুল আসার শুরু থেকে পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত অবশ্যই ১-২ ইঞ্চি পরিমান পানি রাখুন।
  • মৌসুম শেষে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য পানি-পাইপ তুলে রাখুন।

১৩. ফসল কাটাঃ

সময়ঃ শীষের অগ্রভাগের ৮০% ধানের চাল শক্ত এবং নীচের ২০% ধানের চাল আংশিক শক্ত হলে বুঝতে হবে ধান ঠিকমত পেকেছে।

পদ্ধতিঃ কাস্তে / হাসুয়া ব্যাবহার করে।

১৪. পরিবহণ ব্যবস্থাঃ

পরিবহণ পদ্ধতিঃ মাঠ থেকে সাধারনত বাইঙ্কা/ গরুগাড়ি/ ভ্যান / ট্রাক্টরের সাহায্যে ধান মারাই করার জন্য উঠানে আনা হয়।

পরিবহণের মাধ্যমঃ বাইঙ্কা / গরুগাড়ি / ভ্যান / ট্রাক্টর ইত্যাদি।

১৫. ফসল মাড়াইঃ
pedal_thresher

মাড়াই পদ্ধতিঃ বর্তমানে ধান মাড়াইয়ের জন্যে ‘পেডেল থ্রেসার’ বেশ জনপ্রিয়। অবশ্য অনেকে পিড়িতে বা গরুর সাহায্যেও ধান মাড়াই করে থাকে।

১৬. প্যাকেজিং:

প্যাকেজিং পদ্ধতিঃ সাধারনত পাটের তৈরী চটের বস্তা দিয়ে প্যাকেজিং করা হয়।

১৭. সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
rice-drying

স্বল্প পরিসরেঃ মাড়াই করার পর অন্তত: পক্ষে ৪ থেকে ৫ বার রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর পাটের তৈরী চটের বস্তা দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

বৃহৎ পরিসরে (উৎস): মাড়াই করার পর অন্তত: পক্ষে ৪ থেকে ৫ বার রোদে শুকিয়ে (১৪% আদ্রতা) নিতে হবে। তারপর পাটের তৈরী চটের বস্তা দিয়ে গোডাউনে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

১৮. বাজারজাত ব্যবস্থাঃ

বাজার ব্যবস্থাঃ পার্শ্ববর্তী কোনো হাট-বাজারে বিক্রয় করতে পারেন।

১৯. তথ্যের উৎসঃ  AIS, BRRI,IRRI,BARI, knowledgebank-brri.org, আধুনিক ধানের চাষ, কৃষি প্রযুক্তি হাত বই, krishitey.com

২০. সর্বশেষ সংযোজন : জুলাই,২০১৪

আরো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন-info@ekrishok.com